Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2021

দেশপ্রেমের কপিরাইট

সেই অমোঘ বাক্যে কত যে শিহরণ -   কবির হাতিয়ার নাকি দুরন্ত বহুগুণ যুদ্ধবাজের হাতিয়ার তুচ্ছ নিতান্তই।   আজ বহতা কালের বস্তাপচা চিন্তায়   জং ধরেছে জবর, সস্তা নামের নেশায়।   কুঁড়িতেই ধরে বেঁধে যে মন্ত্র করেছে দান ফুল হয়ে ফুলে ফেঁপে প্রতিদানে আজ কুহুরব ছেড়ে কুমন্ত্রণায় কুরবে মেতেছে অন্ধ হয়ে রুদ্ধ করেছে জনদৃষ্টি।   করুণা জাগে মনে যখন দেশপ্রেমকে ব্যঙ্গ করে কেউ। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না আদৌ। তবে কোন সে জ্বালা,   কোন সে ভ্রান্ত শিক্ষা,   কোন সে মগজ ধোলাই ? দেশপ্রেমের ঠিকা নিয়েছো অনন্ত কাল ? কুমন্ত্রণার কপিরাইট ? এবার পায়ের তলার সরছে মাটি ব্রাত্য এখন সবদিকে। তবু স্বভাব যায় না ম'লে। স্বার্থবাজের আন্দোলনে কুম্ভীরাশ্রু ঝরে। দেশভর আজ দেশপ্রেমের জেয়ার দেখে জ্বলে পুড়ে মরে - পদ্যে মানুষ ধরে হাতছাড়া হয় কপিরাইট - কাঁদে হাহাকারে।

কোলাজ পথ

এভাবেই কখনো দিন কেটে যায় অলস, অকাজের কাজে নিষ্ফলা সময়। দিনশেষে সঞ্চয়ের ঘরে আস্ত একটি গোল্লা শিরায় উপশিরায় মাথা কুটে মরে নিরেট শূন্য। এক নিপাট অস্থিরতা খেলে বেড়ায় সর্বাঙ্গে সৃষ্টিহীনতার বিষাদ কালো গরজ - পোড়ায় শুধু। কেটেছে এমন কত তালহীন যাপন বেলা কত সুরহীন শব্দের দলছুট কালবেলা, এবার পাততাড়ি জুড়ে শ্রাবণধারার মতো আছড়ে পড়ুক সব যুগান্তরের সঞ্চিত অবহেলা। এত অবান্তর কথার পরে মনে হয় যেন আজ কিছুই তো হলো না বলা, জমে আছে সব কাজ সময় আছে তো - সাজাতে অফুরান কথামালা ? কেউ জানে না, ছুটছে কোথায় মানব জমিন মিছিল চলেছে অনিঃশেষ পথ ধরে - লৌহকপাট ভাঙার ছলে ভাঙছে অবিরাম পরম্পরা, ঐতিহ্য, উশৃঙ্খলতার লাগাম।   কালের আবহে তিল তিল করে বদলে গেছে জীবন ধারা, অবয়ব, মনের বেড়ে ওঠা নতুন নয় কিছুই, আবহমানের এই তো ধারা নির্ধারিত পথ ধরে আমি তুমি সে ও সবাই চলেছি আপন ধারায়, পেছনে থেকে যায় অতীত। কেউ তাকায় পেছন ফিরে, কেউ সোজাপথে অলক্ষ্যে হারিয়ে যায় প্রবাহিত সময়ের গতিপথে। পিছুটান ঘিরে, পথের দাবি মেনে, ফিরে আসে অনন্ত কোলাজ - ছন্নছাড়া, এলোপাথাড়ি, আঁকাবাঁকা পথ ধরে - তবু আসে জ্বলন্ত আগুনের মতো নিখাদ সত্য ধরে আসে জীবনমুখী দিনযাপনের

সুখের গান

মন গগনে উঠছে ভেসে সুর যে বিষম ধুপছায়ে ছেয়ে আছে অনন্ত প্রশ্ন শুধু রঙিন যত সুখের ছবি - গেছে বহু দূর তোমাকে আজ খুঁজি শুধু আগের মতো। মাঠের শেষে দিগন্ত যেখানে ছুঁয়েছে নীলিমা রচে যাই আজ ইচ্ছে ছন্দ সেখানে। শেষ বেলাতে মিলবো আবার কোন বা দেশে ষড়ঋতু জুড়ে শুধুই যে তুমি - শুরু থেকে শেষ যে পথ ধরে গেছ তুমি, আমি খুঁজি সেই পথ যে না বলা কথার ভাষায় বসে রচি গান অজানা। পাহাড় প্রতিম প্রভু হে আমার চাই না শিরোপা ইচ্ছে শুধু দুঃখ ভুলে সুখের গান যে গাই। 

একটি জীবন

এ জীবন একরাশ পালাবদলের ইতিকথা ছুটে চলা শুধু বেঁচে থাকা প্রয়োজনে সে তো শুধু যুদ্ধ কথা , তাগিদ - গরজ যত। এর বাইরে , পাশাপাশি চলে মনের খোরাক বিচিত্র সব খেয়াল খুশি আপন বিশ্ব রচে। আধেক জীবন শুধুই অপচয় , নিষ্ফল যাপন বেলার মানগত অবক্ষয়। বেঁচে থাকা স্বল্প দিনের কল্পকথায় আপ্রাণ শুধু মুক্তো কুড়ানোর বেলা ,  শেষের বেলার বেগময় ছুটে আসা তনু মন জুড়ে সঞ্চিত সুখস্পৃহা।   এক জীবনে হয় না যে সব সারা - সবটুকু বেলা নিঃশেষ মিছে অভিনয়ে বাকি থাকা কাল - শেষ যুদ্ধে ছুটে চলা একটি জীবন আদ্যন্ত পথ চলা।

সময় সোপান

আমার একটি ঝলমলে অতীত চাই আজ কেউ কি আমায় দিতে পারো , এমন একটি অতীত - যেখানে সুখ আছে আছে অনন্ত ভালোবাসার ছড়ানো সময় , যুগ যুগ ধরে বয়ে চলে অবিরাম। সব অতীতই কি এক একটি মৃত সময় , নাকি আলেয়ার মতো ফিরে ফিরে আসা - প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে ইথার হয়ে ? সাপ সিঁড়ি বেয়ে সাত সিঁড়ি নেমে আসে বিনির্মাণে যখন তখন - মনন স্বপন জুড়ে। অদেখা সেই স্বপ্ন নদীর ঢেউ - এর মতো অনাবিল , অবিরল - অমৃত পথের যাত্রা - মহামিলনের অনিন্দ্য রূপকথা , কেউ জানে না পথের শেষটি কোথায় একটি একটি যাপন শেষে একটি সমাপন সে তো নিছক দৃশ্যান্তর , অনন্তেরই পথে খুঁজে ফিরি সেই সোপানের অদেখা ধাপ যে পথ ধরে অতীত রেখেছে ছাপ। প্রজন্ম জুড়ে বিছানো ছাপ - বিষণ্ণ অতীত ,  এমনি করেই সৃষ্টি করে সময়ের পথ চলা এমনি আসে ভবিষ্যতের সুরম্য সঙ্গীত।

আছো প্রভু অন্তরে

মনে দ্বিধা অহরহ - অস্তিত্বের প্রশ্নে সঘন পালাবদল। কে শেখালো জীবন চর্চা , কে শেখালো ভাবতে এমন প্রশ্ন ? সেই যে প্রথম আলোয় আসা কে শেখালো মাতৃদুগ্ধ পান - ধাপে ধাপে কার ইশারায় জীবনমুখী গান ? জন্মদাতা জন্মদাত্রীর প্রথম শিক্ষা শেষে হালটি ধরেন শিক্ষাগুরুকূল পথের শেষে আবার তো সেই একলা একা। এই একলা পথে হালটি ধরেন যিনি মন গগনে ভরসা জোগান তিনি।   বাড়িয়ে দিয়ে আশীর্বাদের হাত কঠিন ক্ষণে দেখান সঠিক দিশা একলা আমি এমন বড় নই করবো যাপন আপন মতে ঠিক।   অলক্ষ্যে তাই উপস্থিতির পাই যে সাড়া চলার পথে রোজ ,  জীবন গুরু আছো নিরন্তর তবে কেন দ্বিধা অবান্তর ? পার্থিব অনুভবে সেও তোমার দান তাই তো আমি গাই জীবনের গান। গুরোর্ব্রহ্মা গুরোর্বিষ্ণো গুরোর্দেবো মহেশ্বর গুরোরেবঃ পরম ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরোবে নমঃ।

স্বেদবিন্দু ভালোবাসা

ঘৃণাগুলো এমন করে   কেমন যেন ফিরে আসে ভালোবাসা হয়ে।   তবু কেমন খটকা লেগেই থাকে ,   এমন দানীর মতো অকাতরে   ভালোবাসা বিলিয়ে দিতে চায় না মন।   কী যে ঘৃণা - কী বা ভালোবাসা   মাঝে মাঝেই সব একাকার , অনির্দিষ্ট ,   জীবন জোড়া ঋদ্ধ মনন   নিরুপণে ব্যর্থ বারম্বার।   সব কথা কি বলতে পারি সহজ করে ,   সব ব্যথা কি ভুলতে পারি নিক্তি ধরে ?  পথের শেষের সেই যে কঠিন সৃষ্টিকথা যে পথ ধরে এই বিকেলের উদযাপন মনে কি আর থাকে সে পথ ,  দিনশেষে আসে কি সে মনন জুড়ে   রোজকার সেই ধকল শেষের স্বেদবিন্দু ধারা ?  যে পথ ধরে ঘৃণায় ভালোবাসায় সৌধ গড়ি এই দিনে আজ স্বপ্ন বাঁধনহারা।

সুখের ঘুর্ণিপাকে

সকাল বেলার মন খারাপের রোদ্দুরে মাঝে মাঝেই খেলে বেড়ায় মন্দ হাওয়া, সদ্য উদাসী বালিকা হৃদয়ে - ফোটে লাগামবিহীন সুখ-স্বেদ-বিন্দু। হাওয়ায় উড়িয়ে ফুল কাটা জামা জানান দিয়ে যায় - চোখ জুড়ানোর সমাগত কাল, টোল পড়া গালের ঘুর্ণিপাকে হারিয়ে যাওয়ার ক্ষণ। 

বন্দিত বনসাই

একটি জীবন - বনসাই জীবন শখ আহ্লাদ কেটেছেঁটে চলে যেতে হয়। পেছনে পড়ে থাকে জন্মভিটে শেকড় বলতে প্রায় কিছুই থাকে না আর। এক দল উন্মাদ থাকে - হিংস্র পশু - যারা   উপড়ে ফেলতেই জানে শুধু চিরদিন।   মূলোৎপাটিত পথে আগাছার মতো থরে থরে পড়ে থাকে   এমনি কত সতীর্থ , দোসর। পথে দু ' চার কথার কুশল বিনিময় - শূন্য থেকে গড়ে ওঠে নতুন পরিচয় এর পর একত্রবাসের অঙ্গীকারে   নতুন ঠিকানার সন্ধান।   তবু হয় কি একত্রবাস ? কেউ জানে না।   হারিয়ে যেতে যেতে অবশেষে থিতু হওয়া   নতুন মাটির নতুন ভিটে জুড়ে   অনন্ত কালের ফেলে আসা ভালোবাসা।   প্রোথিত হয় ভালোবাসা - ছড়ায় প্রজন্মে আবার প্রশাখা ছড়ায় নতুন শেকড় মাঝে মাঝে পশ্চিম আকাশে   জমাট বাঁধে নতুন কালো মেঘ ,   তবু অটল থাকে উত্তরসূরী বনসাই।   শক্ত শেকড় এবার অটুট থাকে জোর পূর্বসূরীর আশীর্বাদে সৃষ্টি হয় না আর কোনও নতুন এক্সোডাস্।   প্রজন্মান্তরে দুর্ভাগা সে বনসাই এখন শাখা প্রশাখায় উত্থিত এক   আস্ত মহীরুহ - নন্দিত , বন্দিত।

মহাপ্রস্থান পথে

চলো পথ হাঁটি -   পথেই তো আছি। শুধু রূপ পাল্টায় পথ। দীর্ঘ জীবন পথের কত অলিগলি পদপথ সব পথে জমা হয় অনুভব অনুভবে ঋদ্ধ হয় জীবন ধারা। একদিন দুই পথ এসে মিলেছিল একখানে এরপর আবার - ভিন্ন হয়েছে পথ। চাওয়া পাওয়ার মূল্য ছিল না কোনও মন জানালা রুদ্ধ হয়েছে বার বার। অবশেষে আঘাতের পর আঘাতে আঘাতে দীর্ণ হতে হতে অন্ত হয়েছে পথ চাওয়া হাতে হাত ধরে একসাথে পথ চলা। জানি , সেই পথও ফুরাবে এক দিন আবার রুদ্ধ হবে পথ - আগুপিছু। সেই একলা একা পথ চলার পুনরাবৃত্তি শেষের সেদিন কাঁদায় বড় থাকবে কি কেউ লাগিয়ে দিতে ব্যাথায় প্রলেপ ,   পথের শেষে বলবে এসে এসো - পথ চলি পায়ে পায়ে   এগোই খানিক মহাশূন্যের পথে মহাপ্রস্থান পথে ?

শুভ সুন্দর

কিছু অস্থির সময় এসে ধারণা পাল্টে দেয় কখনো , বুদ্ধিভ্রষ্ট ক্ষণে বেজে ওঠে ভুলের দামামা। লজ্জার কালো আবরণে সত্য থেকে যায় আড়ালে ,   অন্তরে জমা হয় যুগ যুগ ধরে।   জ্বলন্ত মিথ্যার মোড়কে অধরা সত্য মাথা কুটে মরে আক্রোশে। কখনো সুপ্ত কথার তোড়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বিদ্রোহী সত্ত্বা ,   থমকে থাকে সময় তখন।   অবশেষে নতুন ভাবনা এসে খুলে দেয় নতুন চলার পথ - নতুন যাপন কাল। পলি জমে জমে পোক্ত হয় মনন ক্ষমা এসে দূর করে যত অভিমান   বেজে ওঠে জীবনের শুভ সুন্দর গান।

সাপ সিঁড়ি

  সন্ধ্যারাতে তুলসীতলায় সরোজিনীর কন্যা নিয়ম করে রোজ জ্বালায় সান্ধ্য পিলসুজ। তেল-সলতে সাজায় বিনোদিনী -   কাঁধ পেঁচিয়ে আঁচলখানা টেনে ,   স্নিগ্ধ আলোয় জ্বলে প্রদীপখানি।   বিনোদিনীর কন্যা হলো শহুরে নন্দিনী ফ্ল্যাটবাড়িতে তুলসীতলা নেই ,   নন্দিনী রোজ দেয়াল খোপে একবার   মাথা ঠেকায় ঈশ্বরের ছবিতে।   সারাদিনে ছবিতে আর আসেন না ঈশ্বর।   সান্ধ্য প্রদীপ বিনোদিনীর নিত্যদিনের অশ্রু ফেলে আসা তুলসীতলার স্মৃতি জ্বালায় পোড়ায় , অতীত এসে কাঁদায়।   ঠিকরে উঠে উদ্ভাসিত করুণ আলোয়   বাস্তুচ্যূত , মৃত মায়ের দরদী মুখখানি।   ইতিহাসের ইতিবৃত্ত সব জানে নন্দিনী বিনোদিনীর মায়ের স্মৃতি প্রজন্মে ম্রিয়মান ঘুরপথে আসে - সাপ সিঁড়ির ওই সাপ বিষবাস্প ছড়ায় আজও তিন প্রজন্মে ভাসে তুলসীতলায় সরোজিনীর লাশ।   তার বুঝি আর পর নেই - শুধু   হাহাকার আছে মন আকাশটি জুড়ে   ক্রোধের আগুন নির্বাচিত কালেরই গর্ভে।   হারিয়ে গেছে ছকের সিঁড়ি , উত্তরনের ধাপ আসে ফিরে বারেবারে বিষাক্ত সব সাপ।

কবিতার শতদল

অবেলায় দিয়েছে সে ধরা , বিন্দু বিন্দু ভাবনার মায়াজালে মেলেছে পাপড়ি আপন খেয়ালে বৃষ্টি অবিহনেই কেটেছে খরা ।   কতদিন আবাহনে কেটেছে প্রহর শূন্য ভিক্ষা পাত্র থাকে অগোচরে নিষ্ফল যাপন ক্ষণ হাহাকার করে তবু সে আসে না , থাকে রিক্ত চরাচর ।   আজ এ কোন পরম শুভ লগনে অজানা গরজে ভেসে আসে ছন্দ অনন্ত সুখ স্বপনে মন্দ্রিত আনন্দ এসেছে মন্দ লয়ে আবাহন অবিহনে ।   সৃষ্টি মানসে ফুটে যত ফুলদল আবেশে আবেগে প্রেম অনুভবে বর্ষা বসন্তে , কুহু কেকা রবে নয়ন জড়িয়ে আসে কবিতার শতদল ।   মন সৃষ্টি সুখের আনন্দে মাতোয়ারা আজ আবার এসেছে স্নিগ্ধ আষাঢ় কূজন কলকাকলি ভরা সুখ সংসার এসেছে মানসী কবিতা বাঁধন হারা ।   ঘুচে যায় যত নিয়ম কানুন ছন্দ   কবিতা রভসে হাওয়ায় হারায় লাগাম শব্দেরা সব উচ্ছ্বাসে মাতে উদ্দাম মন গগনে সৃষ্টি বেলায় অপত্য আনন্দ।

ইচ্ছামৃত্যু

মনের অতল থেকে নিটোল স্বপ্নময়তায় মাঝেমাঝেই প্রসবিত হয় কিছু নিষ্কলুষ , তরতাজা ইচ্ছে - অবিকল রাতের আঁধার শেষে , মন্দ ভালোর যুদ্ধ যাপন শেষে - সকাল বেলার স্নিগ্ধ মুখচ্ছবির মতো । মায়াবী চোখের অপাপবিদ্ধ চাউনি যেন কঠিন সংসারময়তাকে ছিন্ন করে সারল্যের পাহাড় চূড়ায় ধ্যানমগ্ন ঋষি । জন্মেই সন্তর্পণে ডানা মেলে - ইচ্ছে , উড়ে যাওয়ার পথ খুঁজে আপন খেয়ালে ।   এর পর বিলীয়মান স্নিগ্ধ সকালের মতোই জাগতিক কলুষতা এসে জাঁকিয়ে বসে , মলিনতায় জাপটে ধরে নিঃশেষ করে দেয় সদ্যোজাত ইচ্ছেগুলো । এক সময় পাখসাটে পাখসাটে গুমরে মরে গর্ভগৃহে । ঠিক যেমন আবার আসে দুঃস্বপ্নের রাত - যে রাতে ঝরে পড়ে অলীক সত্য সব ভেসে আসে রাত জাগা পাখিদের - ইচ্ছামৃত্যু রব ।

পথ চলা

ছবির মতো আবছা মনে পড়ে -   অপ্রশস্ত পদপথ। ঢাল বেয়ে আসা একদিকে পাহাড় - আকাশ ছোঁয়া   আরেক দিকে জাহান্নামের গভীরতায় ,   ট্র্যাপিজের খেলায় স্থির রাখা নিজেকে। চড়াই না উৎরাই - চড়াই না উৎরাই দু ' চোখে পতঙ্গ পাখনা মেলে দোলে পাখিদের অগণিত চোখ , খেই নেই -   আছে শুধু মায়ার বাঁধন ,   আছে অদেখা ললাট লিখন।   এবার ট্রাপিজ শেষে , ফুরায় খেলা -   শিহরণ শেষে অবাক , বিমূর্ত জনতার উচ্ছ্বাস , হাততালি কুড়ানোর পালা।   অমনি ভেসে আসে লাল চোখ ফরমান তুলে ধরো জীবনের সব খতিয়ান।   পড়েনি সে জীবনের পাঠ ,   আমি মহা বিশ্ব মানব , হেঁটে যাই সব পথ বিজয়ীর হাসি নিয়ে পথ চলি রোজ।   বাঘজান থেকে ময়না দ্বীপ আর আমাজন থেকে সিরিয়া - আমার পথ।   ' আমি কি ডরাই সখী ' কুটিল শ্বাপদ ? ছবি হয়ে ভাসে সেই - অপ্রশস্ত পদপথ।

কেমন আছো তিতাস ?

' তিতাস একটি নদীর নাম’ যদিও, তবু তিতাস এখন আর শুধুই একটি নদী মাত্র নয়। যুগন্ধর ঔপন্যাসিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ-এর হাত ধরে তিতাস এখন নদীমাতৃক অখণ্ড ভারতবর্ষ তথা অখণ্ড বাংলার সমাজদর্পণ হয়ে উঠেছে। উপন্যাসের সবটুকু শর্ত না মেনেও একটি ক্লাসিকের মর্যাদা পাওয়া এই উপন্যাসটি যারাই পড়েছেন তারা তিতাসকে ভালো না বেসে পারেন না।  আমি বয়সের সাথে রূপ পাল্টাই নদী ঋতুর সাথে। ঝাঁপিয়ে পড়েছি তার উদোম বুকে সন্তরনের নবিশ যখন - কুল ছাপানো উদ্বৃত্ত তটে, যেন কাঁখে ধরা এক বেষ্টিত সন্তান। এর পর ভরা শ্রাবনে মদমত্ত যৌবন প্লাবনে জলকেলিতে গেয়েছি প্রেমের গান, নদী আমায় দিয়েছে উপহার উজাড় করা ভালোবাসায়  সন্তানসুখ প্রতিদানে নিশ্চিত পরপার।  আজও তাই অমোঘ আকর্ষণে ছুটে চলি নদীর পানে,  নদী, তুমি স্থাপন করো ভালোবাসার অপার সুখের বিশ্ব।  কালহীন ঋতুমতী স্রোতে -  ঋতুহীন অবিরত। নদীর কুলুকুলু জলধারা শেষে মোহনায় বিলীন হয়ে যাওয়ার মতোই আমাদের জীবনধারা। এবং ধারাশেষে অনিবার্য মৃত্যুর মধ্য দিয়েই যেন নদীর সাথে আমাদের সখ্য, এত সাযুজ্য, এত ভালোবাসা। আমাদের নদীমাতৃক দেশের অগুনতি নদ-নদীকে পাশে সরিয়ে রেখে ভৌগোলিক সূত্রে ভিন দেশের একটি নদী