Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2020

পুরুষকার

পুরুষকার ---------------   পুরুষ তুমি কার ? নির্ভরতায় যে বাঁচে আজ, প্রজন্ম জুড়ে যে যোগান ধরে জীবনের অঙ্গীকার পুরুষ তো শুধুই তার। পুরুষ তুমি নীলকণ্ঠের যোগ্য উত্তরসূরী যুগ যুগ ধরে হলাহল পানে শিখেছো দুনিয়াদারি উদোর পিণ্ডি যেখানে আছে যত সব অভিযোগ সব কলঙ্ক নিতে হবে সব মাথা পেতে আজ বুধোর ঘাড়ের মতো। নীচ অধমের অসৎ কাজে যখন যেথায় হাহাকার, বিশ্ব পুরুষ তোমার ভাগে জুটবে শুধুই তিরস্কার। আজ পুরুষের দশটি হাত দশদিক সামলায়, যা ছিল - তার অনেক কিছুই আজ শুধু কাঠগড়ায়। ভাইফোঁটা শেষ বোনফোঁটা শুরু হাস্য রসের হাল ফ্যাশন, পুরুষ তুমি শুধু মাত্র - কল্পতরু আজ ভাসাও জলে পুরুষকার, ভাসাও যত প্যাশন সামলে যত বদনাম আর মিথ্যে কটাক্ষ আজকে পুরুষ তোমার জন্য হাজার নমস্কার।

জন্মদাতা

আজ মহালয়া। মহা আলয় থেকে পিতৃপুরুষের নেমে আসার দিন। পিতৃপুরুষে মাতৃরাও আছেন সসম্মানে। তাই তো মাতা , মাতামহ , প্রমাতামহরাও তিল তর্পণের অধিকারী। মাতামহী , প্রমাতামহীও আছেন তালিকায়। আজকের দিনটি আমার সত্যিকার অর্থেই শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের দিন। আজকের ভোর আমার ফেলে আসা অতীতের বুক চিরে আমার সত্ত্বা জুড়ে বিছিয়ে দেয় বাবা ও মায়ের অনবদ্য স্মৃতিমঞ্জরী। তখন আমি ১০ থেকে ১২র নাবালক। তীব্র গরিবির ঝাপটা সামলে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সংগ্রামে ব্যতিব্যস্ত বাবা ও মা। আমরা চার ভাই বোন মিলে শুধু স্নেহ মমতা আর সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এগোচ্ছি ভবিষ্যতের পথে। মা ছিলেন সরস্বতীর নীরব পূজারী। কেউ জানতাম না। আজ বুঝি। মা ' কে কোনও দিন কিছু লিখতে দেখিনি। এমনকি বাজারের ফর্দটিও নয়। মা বলতেন , বাবা লিখতেন। অপূর্ব হস্তাক্ষর তাঁর। তার ছিটাফোঁটাও পেলাম না - দুঃখ। সেই মা রাত জেগে লন্ঠনের আলোয় অগুনতি বইয়ের সদ্ব্যবহার করতেন। এর থেকে বঙ্কিম তো ওর থেকে শরৎ। নিজে কিনে পড়ার সাধ্য ছিল না। ঘুম থেকে উঠতে স্বভাবতই দেরি হতো মায়ের। সেই অভেস থেকে গেছিল আজীবন। বাবা ঠিক উল্টো। যত রাতেই ঘুমোন না কেন ভোর রাতে শয্যাত্যাগ ছিল রুটিন ব

জন্মদাত্রী

বসন্ত শুধু প্রস্ফুটিল কুসুমের বেলা নয় , বসন্ত ঝরা পাতারও বেলা। ঝরা পাতারই মতো আমি যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম এমনই এক বসন্তে। তাই বসন্ত এলেই আমার অন্তরে সৃষ্টি হয় এক শূণ্যতা , এক দুঃখবোধের পালা। এমনি এক বিশেষ উদাস বসন্তের দুপুরে আজ গিয়ে হাজির হয়েছিলাম গুয়াহাটি বশিষ্ঠ মন্দির এলাকায়। আমার ঘরের খুবই কাছে। প্রায়ই যাই। সব কিছু চেনা। বশিষ্ঠ নদীর ঝরনার মতো প্রবাহিত জলধারা আর আসা যাওয়ার পথে ঝরা পাতার উড়ে যাওয়া দেখে মনে হলো আমাদের এই জীবনটাওতো এমনি এক ধারাবাহিক ঝরে যাওয়ারই বৃত্তান্ত বৈ আর কিছু নয়। নদী , নালা , ঝরনার জল ক্রমাগত বয়ে চলেছে - নানা পথ , নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে সাগরের পানে। ঝরা পাতা বৃন্তচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিচ্ছে ধরিত্রীরই বুকে। মানব জীবনও এমনি করে বয়ে চলে ধারা হয়ে , জীবন ধারা। বয়ে চলে  শেষ গন্তব্য পার্থিব চোখে পঞ্চভূতে , অপার্থিব মননে অজানার পানে। মন্দিরের সামনে থাকা সব দোকানপাট বন্ধ। মারণ ভাইরাসের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত মানবজাতি। বেঁচে থাকার অদম্য স্পৃহা। মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ। পুজো হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু দলে দলে লাফালাফি করতে থাকা বাঁদরগুলো সব গেল কোথায় ? অন্যদিন এদের জ্বালায় অতিষ

কবিতার লিগ্যাসি - তপন মহন্ত-র ‘স্বনির্বাচিত কবিতা’

কবিতার লিগ্যাসি - তপন মহন্ত - র ‘ স্বনির্বাচিত কবিতা জীবন বোধের এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন যে কবিতার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া যায় চরাচরে , আধুনিক কবিতা মানেই যে শুধু কিছু অবোধ্য স্বগতোক্তি নয় , কবিতারও যে একটা নিজস্ব ধারা , স্বাতন্ত্র্য কিংবা আধুনিক কালের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বলা যায় একটা লিগ্যাসি আছে সেটাই কবিতার স্বচ্ছতোয়া ফল্গুধারায় একেবারে স্পষ্ট করে তুলে ধরলেন কবি তপন মহন্ত - তাঁর স্বনির্বাচিত কবিতা কাব্যগ্রন্থে । কোনও সলতে পাকানো নেই , ভণিতা নেই । সোজাসাপটা প্রবেশ কবিতার অন্দর মহলে । অন্তরে বয়ে বেড়ানো দুঃখের বহিঃপ্রকাশ কাব্যগ্রন্থের নিবেদন । লিগ্যাসির কবিতায় তীব্র যাতনা , ক্লেশ , মানসিক অত্যাচারের বলি যাঁরা তাঁদেরই ব্যথায় ব্যথিত কবি তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করলেন তাঁদেরই - ‘ দেশ পেলো না যাঁরা ’ । কবির স্বনির্বাচিত কবিতায় স্বভাবতই তাঁর পছন্দের কবিতা সন্নিবিষ্ট হয়ে থেকে । ফলে পাঠক যাঁরা তাঁর ইতিমধ্যে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলি পড়েছেন তাঁদের পছন্দের সব কবিতা আলোচ্য গ্রন্থে নাও পেতে পারেন । সেক্ষেত্রে পাঠক মননে একটা আফসোস থেকে যেতেই পারে । কিন্তু তপন মহন্তের এই ‘ স্বনির্বাচিত কবি

হারিয়ে পাওয়া

বছর পাঁচেক আগে ' নিরুদ্দেশ সংবাদ ' ধাঁচের একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকের পাতায় । হারিয়ে যাওয়া বালক বেলার একটি অধ্যায়ের খোঁজে একটি পরিবারকে হাতড়ে বেড়াচ্ছিলাম গত প্রায় চল্লিশটি বছর ধরে । তখন আমার পাঠশালা জীবন । জগতের যাবতীয় জটিলতার প্রবেশদ্বারে পৌঁছইনি তখনও । গ্রামেরই এক অন্য প্রান্তে দু ' টি টিলার নীচে ছিল তাঁদের বাড়ি । তখন বুঝতাম না , এখন বুঝি কী অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল সেখানে । যেন ছবির মতো সাজানো গোছানো একটি নিটোল ছিমছাম সুখ - বনানী । পরিবারের সবাই ছিলেন আমার বড় । মাসিমা ছিলেন । আর ছিল ওরা দুই ভাই , অশোক - দা আর দীপক - দা । ছিল ওরা দুই বোন , বন্দনা - দি আর বাসনা - দি । আমার কত যে দিন কেটেছে তাদের ঘরে , তাদেরই তত্ত্বাবধানে । সকাল থেকে সন্ধ্যা । সেখানেই খাওয়া দাওয়া । দু ' ভাই এর ন্যাওটা হয়ে পিছু পিছু ঘুরে বেড়াতাম দিনভর । অশোক - দা কবিতা লিখতো । আমার হাতে কাগজ কলম ধরিয়ে দিয়ে নিজে লেগে যেত কোদাল নিয়ে সব্জি ক্ষেতের পরিচর্যায় । অনর্গল বল