Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2022

আসবে কি বাতিঘর ?

ঝড়ের শেষে এ দুঃসহ নীরবতা আমার সত্ত্বা জুড়ে এই খাঁ খাঁ শূন্যতা এ আমার প্রাপ্য নয় - বাতিঘর। রাতের আঁধারকে তুমি আপন গরবে ছিন্ন করে দিতে পারো নিমিষে অথচ দিনের নিস্পৃহ বিষাদময়তা আমাকে নিষ্প্রতিভ করে রাখে আপাদমস্তক। ভালোবাসাহীনতার বেদনা এত তীব্র ?   সেদিন সেলফিজোনে তোমার রাতচেরা রাতরানি হাসির ছটায় মূর্ছা যেত যে রাজপুত্তুর; যে অবোধ দয়িত তাকে তুমি কতটুকু চেনো বাতিঘর ? সে তোমার আলোর পথে আশায় আশায় কুসুম ছড়ায় রোজ, নতুন আশায় বুক বাঁধে রোজ তোমার জন্য বাতিঘর, তোমার জন্য সকাল সন্ধে পথ চেয়ে রয় অপলকে তোমারই জন্য। আসবে কি বাতিঘর ?

গভীর রাতের স্বপ্নেরা

গভীর রাতের ছলাৎছল শব্দ, উৎসমুখে উন্মুখ কিছু মুখ পলকহীন কিছু চোখ আর আগামীর ক্ষুৎকাতুরে হৃদয়। গভীর রাতে স্বপ্নেরাও নাকি ঘুমোয় জেগে ওঠে ভোরের আবেশে চোখে চোখে ছড়ায় স্বপ্নসুখ। এ সুখ অনন্ত দুঃখে গাঁথা বিভীষিকার যাপন শেষে অপলক চোখে ঘুম ভাঙানিয়া সুখ। উৎসমুখের রাতজাগা চোখে স্বপ্নেরা মরে মাথা কুটে ছড়ায় শুধু অলীক দিবাস্বপ্ন রাত আনি রাত খাই স্বপ্ন।

এক গবেষণালব্ধ প্রামাণ্য দলিল - ‘চরগোলা এক্সোডাস ১৯২১’

ইংরেজি Exodus অর্থে দলবদ্ধ ভাবে নিষ্ক্রমণ । করোনাকালীন সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের এই মহানিষ্ক্রমণ প্রত্যক্ষ করেছে আজকের প্রজন্ম ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে । অথচ এই তথ্যটি হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে আজ থেকে একশো বছর আগে আমাদের এ অঞ্চলেই সংঘটিত হয়েছিল ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসের সর্বপ্রথম সংগঠিত সম্মিলিত শ্রমিক আন্দোলনের ফলে উদ্ভুত এক মহানিষ্ক্রমণ । যা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে ‘চরগোলা এক্সোডাস’ বা ‘মুলুক চলো’ (মতান্তরে মুলকি চাল) অভিযান হিসেবে। হাতে এল গবেষক সাহিত্যিক বিবেকানন্দ মোহন্তের গবেষণামূলক গ্রন্থ ‘চরগোলা এক্সোডাস ১৯২১’। গ্রন্থটি কয়েক বছর আগ প্রকাশিত হলেও আজও এমনকি ভবিষ্যতেও এক অসামান্য দলিল তথা গবেষণাদির কাজে এক প্রামাণ্য গ্রন্থ হয়ে থাকবে নিশ্চিতভাবেই। গ্রন্থটি গ্রন্থকারের নিরলস গবেষণা ও নিষ্ঠার ফসল। মোট আটটি অধ্যায় এবং তথ্যসূত্র ও পরিশিষ্টের সমন্বয়ে পাকা বাঁধাইয়ে ২১০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট হয়েছে প্রামাণ্য বহু দলিলের প্রতিলিপি, তথ্যসূত্র, মূল্যবান বেশ কিছু ছবি এবং প্রাপ্ত ও স্বহস্তে অঙ্কিত একাধিক মানচিত্র। গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে বিশিষ্ট গবেষক-সাহিত্যিক সুজিৎ চৌধুর

আলো-ছায়া

পূর্ণিমা ভুবনে আলোর রোশনাই পথে পথে এবাড়ি ওবাড়ি, এঘর ওঘর আঁধার নেই, আছে আলো তাই আছে ছায়া। ছায়ারা কথা বলে ফিসিফিসিয়ে - আলোর কথা, আলোরা ছায়ার। কিছু ছায়াপথ আলোয় ভুবন ভরায় কিছু ছায়া আলেয়ার মতো ব্যর্থ দীপ্তি ছড়ায়। শূন্য চাতালে চাঁদের মায়া কথা বলে রোজ মায়ার কথা, ফানুস জীবন কথা দুঃখসুখের বিস্মৃত ইতিকথা। জলরঙে আঁকে ছায়াময় জলছবি মরীচিকা হয়ে ভোকাট্টা হয় সবই, রাতশেষে দল বেঁধে ফেরে আলো ছায়ারা হয় প্রলম্বিত আরো আরো।

স্বপ্ন-সিঁড়ি

স্বপ্নে আসে রোজ - অগণিত সব সিঁড়ি উত্‌রাই জুড়ে অফুরান - অনিঃশেষ শিখরে কখনও জটাজুটধারী , কখনও তিমিরবিদারী । কে যেন পিছুটানে আটকে রাখে আমাকে আমি পিছিয়ে পড়ি ক্রমাগত - উৎসমুখের দিকে , স্নিগ্ধ সকালের পথে । একে একে পেরিয়ে যাই দুঃসহ কাল গুল্ম থেকে গভীর বনানী পথে, শেষ ধাপে একরাশ ব্যর্থতা , টালমাটাল আমি প্রাণপণে সামলে রাখি নিজেকে - দিন রাত শুধু ট্রাপিজ - হাতলবিহীন ।   ভোরের সুবাতাসে ডুকরে উঠি হু হু কে যেন পাশে শুয়ে বলে - সাদরে ঘুমোও, রোজ কী যে দেখো ছাইপাশ। আমি চোখ মেলে খুঁজি সেই স্বপ্নসিঁড়ি আর বলি - শেষটুকু হোক অবিনাশ।

আশুতোষ দাস-এর পূর্ণস্বাদের উপন্যাস - ‘মালিনী বিলের আখ্যান’

আখ্যান অর্থে আমরা পাই কাহিনি , ইতিহাস । অর্থাৎ ইতিহাস অবলম্বনে লিখা কাহিনি । কাহিনি বা গল্পে লেখক তাঁর কল্পনায় রচে চলেন রচনার বিষয়বস্তু । অবাধ তাঁর বিচরণ । পাঠক বা অন্য কারো কাছে তাঁর কোন দায়বদ্ধতা নেই । অন্যদিকে ইতিহাস ভিন্ন ধারার বিষয়বস্তু । এখানে কারো হাত দেওয়ার অধিকার নেই । ইতিহাস লিপিবদ্ধ সত্য ঘটনার বয়ান মাত্র । যদিও কোন কোন ইতিহাসবিদ নিজ বা গোষ্ঠীগত স্বার্থপূরণে মিথ্যাকেই ইতিহাস বলে চালিয়ে দেওয়ার মতো নিন্দ্যনীয় প্রয়াস সময়ে সময়ে করে থাকেন বলে প্রমাণিত হয় কিন্তু তা নিতান্তই বিচ্ছিন্ন এবং গর্হিত বলে বিবেচিত হয় । কিন্তু ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনার অবলম্বনে কালজয়ী কাহিনি কিংবা উপন্যাস অর্থাৎ আখ্যানের সৃষ্টি হয়ে চলেছে কালাবধি । ইতিহাসকে অক্ষত রেখে কাহিনির বিন্যাস নিতান্তই সহজ কাজ নয়। ইতিহাসের রক্তমাংসের চরিত্রকে ঐতিহাসিক পটভূমিকায় স্থাপন করা তথা আবহ সৃষ্টি করাই এই পর্যায়ের ঔপন্যাসিকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। উদাহরণ স্বরূপ ‘বউঠাকুরাণীর হাট’, ‘রাজর্ষি’, ‘রাজসিংহ’ ইত্যাদি সহ অদ্যাবধি অসংখ্য বাংলা উপন্যাসের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষায় একের পর এক ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস কিংবা আখ্যান সৃষ্টি হয়ে চলেছ

‘পাতার আড়ালে’ - একরাশ স্নিগ্ধতা

অনেক আকুতি মিনতির পর গল্পের শেষে নেমে এল পর্বত শিখর থেকে এক রাজকন্যা পা পাতা জলে আরো একটু নামতে পারো, হাঁটুজল অব্দি হাত বাড়িয়ে রেখেছি, গত জন্ম থেকে এইটুকু কাছে এলে আমি তো বুক জল থেকে গলা জলে ডুব দিতে পারি। (কবিতা - পা পাতা জল) কিংবা - কেউ আর খবর রাখে না আজকাল ... তবে সরলা খবর রাখে ব্যস্ততার ফাঁকে পাতার আড়াল থেকে ... আচমকা তার ফোন এলে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি - যেন বিষাদ মুক্তি। (কবিতা - সরলা খবর রাখে)। এভাবেই প্রায় সব ক’টি কবিতায় ছড়িয়ে আছে বিষাদ মুক্তির আবহে একরাশ স্নিগ্ধতা। প্রেম, ভালোবাসা, প্রকৃতি আর শুদ্ধ পরম্পরার প্রেক্ষাপটে মোট ৪৬ টি কবিতার সমাহার জিতেন্দ্র নাথ-এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘পাতার আড়ালে’। যথার্থ নামকরণ। একাধিক কবিতায় উঠে এসেছে এই শব্দজুটি । এটি কবির চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত কবিতার সংকলন । প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য প্রকাশনী, হাইলাকান্দি থেকে। এছাড়াও কবির আটটি সম্পাদনা গ্রন্থ এবং একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি গ্রন্থ ইতিমধ্যেই প্রকাশের মুখ দেখেছে। আরোও আটটি গ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায়। আলোচ্য গ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেছেন - ডঃ ঊষারঞ্জন ভট্টাচার্য, অধ্যাপক নীতি রঞ্জন চৌধু

‘কাব্যশ্রী’ - কবিতার হাত ধরে কবিতা উৎসব

এ এক সত্যিকারের কবিতা উৎসব বইকী। দুই মলাটের ভেতর ৪৫ পৃষ্ঠায় যেখানে পাশাপাশি আপন আপন বৈভবে জ্বলজ্বল করছে ৫৭ জন কবির ৫৭ টি কবিতা - যার মধ্যে অধিকাংশ কবিই ডাকসাইটে, প্রথিতযশা। কী করে এতজন প্রতিষ্ঠিত কবির কবিতা সংগ্রহ করে সন্নিবিষ্ট করা যায় দুই মলাটের অন্দরে সে এক ভাবনার বিষয় বটে। আঞ্চলিকতার গণ্ডি ছাড়িয়ে এখানে গ্রন্থিত হয়েছে দূরান্তেরও কিছু কবির কবিতা। কবিদের তালিকায় চোখ বোলালেই দুই সম্পাদকের এলেমের তারিফ করতে হয়; যদিও নিজেরা প্রতিষ্ঠিত কবি হওয়ার সূত্রে তাঁদের এই এলেম থাকাটা ই স্বাভাবিক। কথা হচ্ছে বরাক উপত্যকার বদরপুর থেকে প্রকাশিত - সদ্য পেরিয়ে আসা বিশ্ব কবিতা দিবসের সন্ধ্যায় উন্মোচিত হওয়া ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘কাব্যশ্রী’ নিয়ে। আলোচ্য সংখ্যাটি পত্রিকার দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সংখ্যা। একটি আদ্যন্ত কবিতাময়তা এই পত্রিকার ঘরে-বাইরে। নামলিপির ক্যাপশনে লিখা আছে - ‘কবিতার হাত ধরে’ - অর্থাৎ কবিতার হাত ধরে কাব্যশ্রী। পত্রিকার নামকরণের পেছনে এক গৌরবের ইতিহাস - একাধারে মন খারাপেরও। বরাক তথা সামগ্রিকভাবে কবিতা বিশ্বে কাব্যশ্রী বক্‌সী ভট্টাচার্য এক বহুচর্চিত নাম। বহির্বরাকে তাঁর কবিতা ছড়িয়ে পড়েছিল ক

আরোপিত ভালোবাসা

কেউ আজকের দিনে , দিনশেষে অলীক হয়ে দাঁড়ায় এসে সামনে , কেউ নীরবে ফেলে অশ্রুজল এক অবাক সাক্ষাতে । মাঝে কিছু আরোপিত ভালোবাসা প্রাচীরের মতো আগলে রাখে সময় দ্বিধা এসে , দ্বন্দ এসে পোড়ায় আমাকে সময় সোপানে আমি নির্বাক এক পথিক । প্রথম আর শেষের কবিতার মাঝে বহু যুগের পথচলা , অনন্ত কালযাপন হতো যদি কিছু সময়ের হেরফের কিংবা কিছু যাপন বেলার আরোহ অবরোহ । পথ চেয়ে কেউ দাঁড়িয়েছে বহু কাল হয়নি মুরোদ , অস্থির জমি অনাবাদী , উর্বর ভূমিতে কেউ আসে অজানিতে - এ দিন    ফারাক আমার সব কালেই - আসমান জমিন ।   আমি যুগ যুগ ধরে কুড়াই আকাশ কুসুম কুসুমে কুসুমে আজ কথা বলে অনর্গল । অবাক , অনাকাঙ্ক্ষিত হাসি কান্নার এ যুগলবন্দি আমাকে উপহার দেয় শুধু একরাশ উপহাস পিয়াসি আমি খুঁজে বেড়াই আজীবন জলের মতো নিখাদ ভালোবাসা - আমার মতো । প্রাচীর হয়েছে আজ আরোপিত ভালোবাসা কিংবা ভালোবাসা আজ প্রাচীর হয়েছে যুগসন্ধিক্ষণে - চাওয়া পাওয়ার হিসেবনিকেশ অক্ষয় হোক নবজীবনে   নব নব রূপে - এ ব্যর্থ জীবনের অবসানে ।

একটি গোলাপ ও অনাকাঙ্ক্ষিত সন্ধ্যা

কোনো এক অপ্রিয় সন্ধ্যায় ঝরেই তো যাবে গোলাপ। কালের নিয়মে একে একে ঝরেই যাবে কত কত সব গোলাপ। তবু কিছু গোলাপ মন কাড়ে, প্রাণ টানে ঝরতে দেওয়া যায় না তাকে। কিছু দিনাবসান অনন্ত কষ্টময় ঝরা গোলাপের বেদনা পোড়ায় হৃদয়।   কিছু গোলাপ সুবাস ছড়ায় দূরান্তে সীমানা ছাড়িয়ে প্রজন্মে প্রজন্মে কিছু গোলাপের বেঁচে থাকতে হয় রং রূপ রসে আবেশ ছড়াতে আবিশ্বে।   রোজই তো এক সন্ধ্যা নামে নিক্তি ধরে সময়ের নাহয় নাই বা আসুক একটি সন্ধ্যা আজ নাহয় আরেকটি দিন পাপড়ি মেলে ছড়াক সুবাস বিশ্বময় একের পর এক ‘আরো একটি দিন’।   গোলাপ, তুমি ঝরো না গো আজ শোভায় তোমার দীপ্ত চরাচর। আজ আমাদের গন্ধবিধূর ক্ষুদ্র বসুন্ধরায় প্রজ্ঞা ছড়াও গুলবাগিচায় আগেরই মতো। আমরা তোমার গরবে আজন্ম গরবিত নাহয় একটি সন্ধ্যা আরেকটু হোক প্রলম্বিত।

দিনশেষে - একটি জীবন

একটি জীবন - নয় শুধু এক নিছক শূন্য কথামালার মহাফেজখানা জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে নীরব সাধনে কত অজানারে জানা।   একটি জীবন নয় শুধু বহমানতা কর্মবিহীন অলস নৈশব্দ্যের মুখরতা আহরণেই জীবনের দৃপ্ত আরোহন বাটোয়ারায় জীবনান্তে মৃত্যুর মান্যতা।   একটি জীবন নয় শুধু একটি জীবন নিরালায় এক দেহমনে একান্ত যাপন দিশারি পথে যতই আসুক ঝঞ্ঝা বাত্যা আরোহন শেষে অবধারিত অবরোহন।   একটি জীবন নয় শুধু আসা যাওয়া সংস্কৃত প্রাণে শুদ্ধ ভাবনাবিলাস উন্নত চিত্ত ভবিষ্যতের সত্যসোপান জীবন পেরিয়ে জীবনের বার্তাবিভাস।   একটি জীবন নয় শুধু বিস্মৃতি একরাশ পলে পলে সঞ্চিত মাটি মানুষের অনুভব প্রজন্ম থেকে একেতর প্রজন্মের উত্তরণ একটি জীবন দিনশেষে সার্থক কুশীলব।

মননশীল উপস্থাপনায় ব্যতিক্রমী - ‘মানবী’

মসৃণ , চাকচিক্যময় প্রচ্ছদের নীচের দিকটায় শীত - সবুজ বনানী আর একেবারে উপরে ক্ষুদ্র রেখাচিত্রে চারটি উড়ন্ত বিকেল - পাখি । মাঝে শৈল্পিক আখরে নামলিপি । হাতে নিয়েই এক অপার মন ভালো করা অনুভব । এবার পৃষ্ঠা না উল্টে গোটা পত্রিকাটিই যদি উল্টে দেওয়া হয় - শেষ প্রচ্ছদে সেই বনানীর উপরিভাগে দেখতে পাওয়া যাবে বিস্ময়ভরা , নিটোল একটি তন্বী কবিতা - ‘ পটুয়া - কন্যা ’ । সবার আগেই সেই ‘ শেষের কবিতা ’ টি এখানে তুলে ধরার লোভ সামলানো - এক কথায় অসম্ভব । ‘ নিজের মুদ্রাদোষে গিয়েছি ভেসে অনন্য আলো যা ছিল হারিয়েছে আমি তো পাখি ছিলাম , সাঁতারু বাতাসে ময়ূরী ছিলাম বর্ষা - জলে আগুনের বন্ধুও তো ছিলাম তখন অসীম সাহসী , দুরন্তের ঢেউ … চিনলো না কেউ …   এসব দুঃখের কথকতা নয় বন্ধু , সহজ উচ্চারণে জীবন …   আজও পটুয়া আমি , এঁকে চলেছি মরণ … - একটি কবিতা এক ও অদ্বিতীয় চন্দ্রিমা দত্তের , যিনি আবার বরাক উপত্যকার আলোচ্য ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘ মানবী ’ র অন্যতম এবং এই সংখ্যার সম্পাদকও । স্বভাবতই এই সহজ উচ্চারণে পটুয়ার মতোই দক্ষ শিল্পবোধের পরিচায়ক হয়ে রইল ‘মানবী’র এবারের এই যৌথ সংখ্যাটি। পঞ্চদশ বর্ষের চতুর্থ এবং ষোড়শ বর্ষে

বিন্যস্ত ভাষ্যে অনন্ত ব্যথার কাব্যগ্রন্থ - ‘নগ্ন পায়ের মেয়ে’

‘ ভালো লাগে ডিঙি নৌকায় চড়ে ভাসতে প্রজাপতি বুনোহাঁস ভালো লাগে দেখতে , জানালার কোণে বসে উদাসী বিকেল দেখে , ভালোবাসি এক মনে কবিতা পড়তে । ’ - এবং লিখতে , সম্ভবতঃ বাদ পড়ে গেছে কিংবা এড়িয়ে গেছেন স্বেচ্ছায় । এভাবেই নিজেকে মেলে ধরেছেন কবি সোমা মজুমদার ব্লার্বে । ‘ নগ্ন পায়ের মেয়ে’ কবির প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ । প্রচ্ছদ শিপ্রা দত্ত চৌধুরী, প্রকাশক অনুল্লেখিত যদিও পরিবেশনায় কথা বিকল্প পরিবার, শিলচর। অঙ্গসজ্জা ও প্রুফ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করেছেন ডঃ কাত্যায়নী দত্ত চৌধুরী ও ডঃ মধুমিতা ঘোষ। এর আগে কবির যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে দু ’ টি - জানা গেল ব্লার্ব থেকেই । মোট ৭১ পৃষ্ঠার কাব্যগ্রন্থে আছে ৬০ টি কবিতা। পৃষ্ঠাসংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা ছিল। দু’একটির বাইরে গদ্য কবিতা নেই অথচ অনেকটাই দীর্ঘ কবিতাগুলি। সেক্ষেত্রে কবিতার অবয়ব ভেঙে পংক্তিগুলোকে একত্রিত করে পৃষ্ঠাসংখ্যা কমানো হয়েছে। এতে কবিতার কাব্যধর্ম ব্যাহত হয়েছে, অনেকটাই উবে গেছে কবিতাময়তাও। কবিতার পংক্তিবিন্যাস যথাযথ না হলে যা হয় আরকি। এভাবে স্বকৃত অবিন্যস্ততার বিড়ম্বনা সত্ত্বেও কবিতার শরীরে কবি এঁকে দিতে পেরেছেন যথাযথ শব্দবিন্যাসের মুনশিয়ানা

দিনশেষে

মাঝে মাঝে কেউ আসে , দিনশেষে।   রাতের বিছানায় ঘুমের দেশে যাই যাই তনুহীন আসে অতনু , হাতে ধরি হাত পেরিয়ে যাই রাতের মায়াবী কালভাৰ্ট যেখানে আগুন জ্বলে পাশাপাশি , মুখোমুখি দেশলাই কাঠি চেয়ে রোজকার হাঙ্গামা। যাই গোবিন্দদের বাড়ি পেরিয়ে -   ইসলামদের বাড়ির আল ধরে , চোখে - পাশে ঘুঘুপাখি আর টসটসে ক্ষীরা, মাসকলাই, কুমড়োফুল আয় পাখি আয় , জল ফল এক থালা ভাত।   পর্ণকুটিরে এক রাতে কত জলসুখ দলছুট চারমাথা চাল দেয় হাসি কান্নায় দিনভর মাটি খুঁজে দাঁড়াবার - সন্ততিসুখ।   দিনশেষে ভরা সংসার উদ্বৃত্ত আহার তবু কে যেন রোজ আসে রাতের বিছানায়   শূন্য থেকে ঘুমের দেশে টেনে নিয়ে যায় হাতে ধরে হাত , পাশে কেউ সুখ নিদ্রায়।