Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2024

সমকালীন সাহিত্যের সুচয়িত মুখপত্র ‘অনিবার্য’

উৎকর্ষে ভরপুর একটি সাহিত্য পত্রিকা। পত্রিকানামের ট্যাগলাইন হচ্ছে ‘সময় ও সাহিত্যের মুখ’। এবং এই মুখ বা পরিচয়ের যাথার্থ্য জ্ঞাপনে বিন্দুমাত্র অবহেলা করেননি সম্পাদকদ্বয় তথা সম্পাদনামণ্ডলী। বার্ষিক এই পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ সংখ্যা হাতে এসেছিল বেশ কিছুদিন আগেই। তৃতীয় বর্ষ অর্থাৎ মে ২০২২, বৈশাখ ১৪২৯। প্রকাশিত হয়েছিল ‘কোভিড-উত্তর সংখ্যা’ হিসেবে। স্বভাবতই ভেতরে কোভিডকালীন অনুভবের ছোঁয়া ছড়িয়ে রয়েছে ইতস্তত। প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে শেষ পৃষ্ঠা অবধি এক নান্দনিক পাঠযাত্রা। মননশীলতার পরিচায়ক এই সংখ্যাটির বিষয় তথা লেখা চয়নে যথেষ্ট সাবধানতা ও রুচিবোধের পরিচয় দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। বিন্যস্ত সূচিপত্র ধরে এগোলে প্রথমেই সংক্ষিপ্ত ‘সম্পাদকের কথা’য় উঠে এসেছে কিছু স্পষ্টবাক নিবেদন - ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ এলেও। এক দীর্ঘ বদ্ধ সময়কালে মহামারি পেরিয়ে অতিমারির ইতিহাস রচনা করলেও, মানুষের জীবনের মর্যাদাকে বেআব্রু করে লজ্জায় ঢাকা এই শতাব্দীকে হাজারো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেও, শিল্প তার নিজের পথ নিজেই রচনা করে গেছে। ...... আমরা বিশ্বাস করি ভাষিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চেতনাই উনিশ। যে বোধ নিজের ভাষার প্রতি ঋণী করে আর শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায় স

নিরবচ্ছিন্ন পাঠের উপযোগী সংকলন ‘আলোকন’

‘ ভালো ছিলাম । খুব ভালো ছিলাম । আনন্দে ছিলাম , যখন ছোট ছিলাম । অথচ যখন সত্যি ছোট ছিলাম , তখন খুব খারাপ লাগত । মনে হতো কবে মেজদার মতো বড় হব , বাজারে যাব , যখন তখন বেরিয়ে যাব , কেউ কিছু বলবে না । যখন মেজদার মতো হলাম , তখন মনে হতো কবে বড়দার মতো বড় হব , চাকরি করব , হাতে পয়সা থাকবে । যখন যা ইচ্ছে হবে তাই খাব এবং পড়াশোনাটাও থাকবে না । যখন বড়দার মতো হলাম , মনে হতো কবে বাবার মতো হব । সবাই আমার কথা শুনবে । আমাকে মান্য করবে । যখন বাবার মতো হলাম , মনে হল কখন দাদুর মতো হব । সবাই অনেক অনেক সম্মান করবে , সময়ে খাবার এগিয়ে দেবে , শুয়ে বসে রেডিও শুনব , সংবাদপত্র পড়ব । আর যখন সত্যি সত্যি দাদুর মতো হলাম তখন বুঝলাম আমি ভুল ছিলাম । ছোটোবেলাটাই ভালো ছিল । কারণ তখনই যেন খুব ভালো ছিলাম , আনন্দে ছিলাম । ’ এমনই সব ছোট ছোট কথা, ছোট ছোট দুঃখ ব্যথা নিয়ে একেকটি গল্প যা কিনা প্রতিটি মানুষের জীবনের সারকথা, এসব নিয়েই আস্ত একটি সংকলন। উপরে উদ্ধৃতিতে দেওয়া অংশটুকু আলোচ্য গল্পটির অর্ধেক থেকেও বেশি। গল্পের নাম - ‘ভালো ছিলাম - যখন ছোট ছিলাম’। ৮৮ পৃষ্ঠার এই গল্প সংকলনের ৭৮ পৃষ্ঠা জোড়া মোট ৪৪টি গল্পের সংকলন ‘আলোকন’

মননশীল শারদ সংখ্যা 'বহ্নিশিখা'

উত্তর পূর্বাঞ্চলে বাংলা সাহিত্য চর্চার ইতিহাস যতটা পুরোনো ততটাই বৈচিত্র্যময়। শুধু ইতিহাস নয়, বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহত্তর এই ক্ষেত্রে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য যে ত্রিপুরা রাজ্য এতে কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়। ধারে ও ভারে নিশ্চিতই বহু এগিয়ে রয়েছে এ রাজ্যের বাংলা ভাষা সাহিত্যের চর্চা ও প্রসার। স্বভাবতই সেকাল থেকে একাল অবধি কবি সাহিত্যিক গবেষকদের পাশাপাশি সাহিত্যক্ষেত্রটি ভরন্ত হয়ে আছে পত্র পত্রিকা, পুথি, গ্রন্থ আদি সম্ভারে। সেই প্রবহমান ধারাকে অক্ষুণ্ণ রেখে আজও নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে অগণিত সাময়িকী তথা বইপত্তর। সীমান্তবর্তী শহর ধর্মনগর থেকে ও প্রকাশিত হয় একাধিক পত্রপত্রিকা। আছেন বহু কৃতী কবি সাহিত্যিক গবেষক। এই প্রবাহে অন্যতম এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন সাহিত্য পত্রিকা ‘বহ্নিশিখা’। নেই নেই করে ৩৩ বছরে পদার্পণ করেছে এই পত্রিকা। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই পত্রিকার শারদ উৎসব সংখ্যা। সম্পাদক নিভা চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টা মন্টু দাস। শিল্পী অহীন্দ্র দাসের নজরকাড়া প্রচ্ছদ প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে নেয় পাঠকের। পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকাও যথেষ্ট চমকপ্রদ। এখানে মুখ্য উপদেষ্টার বাইরেও উপদেষ

যমুনাপারে আচমকা

সবগুলো বর্ষা একই রকম হয় না । কিছু বেয়াড়া বর্ষা কুক্ষিগত করে নেয় আদ্ধেক শরৎ । এবার যদিও তেমনটি হয়নি । বৃষ্টিবিহীন শরতের সকাল বেলার আমেজ গায়ে মেখে যাদের দিন শুরু হয় তারা ভাগ্যবান , পয়মন্ত ।    রেলে করে যমুনাপার স্টেশনে বা বাস ধরে স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডে নেমে প্রায় দু ’ মাইল পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয় স্বপনপুর । আসলে প্রীতমের গৃহশহর থেকে ট্রেনে সরাসরি এখানে আসার কোনো উপায় নেই । তাই বাসে করে আসাই সহজতর পথ । স্বচ্ছ শরতের এক নির্ঝঞ্ঝাট সকালে বাস থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে ওরা দু ’ জন সরাসরি ঢুকে গেল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন চা - জলখাবারের সারি সারি দোকানগুলোর একটিতে । প্রীতমের সঙ্গে আজ উৎপলও এসেছে । দুই বন্ধু মিলে দু ’ দিনের জন্য বন্ধু অজিতের বোন শ্রীলেখার বিয়েতে জমিয়ে ফুর্তি করার অভিপ্রায়ে বেরিয়েছে । বিবাহ নামক বন্ধনে জড়িয়ে পড়ার আগে এই বয়সে এই যৌবনযাপন বড্ড উপভোগ করে প্রীতম । যেন এক বন্ধনহীন উড়ন্ত বেদুইন । উৎপলও বাকচাতুর্যে কম যায় না । বলতে গেলে নন - স্টপ বকবক করেই চলেছে । প্রীতম আবার খানিকটা স্বল্পবাক । খুব সতর্ক নজর রেখে চলে বাইরে বেরোলে । তার চোখালো দৃষ্টির বাইরে থেকে থাকে না কিছুই । দোকানগ