Skip to main content

Posts

Showing posts from February, 2023

সুচয়িত সম্ভারে উৎকৃষ্ট আয়োজন - ‘ঈশান’

দীর্ঘ বিরতির পর নবোদ্যমে নব আঙ্গিকে এবং সাথে ধারাবাহিক পথ চলার নব প্রতিশ্রুতি নিয়ে গত ডিসেম্বরে শিলচর থেকে পুনঃপ্রকাশিত তথা উন্মোচিত হল ‘ ঈশান ’ পত্রিকার ‘ ৩৪ বর্ষ ডিসেম্বর সংখ্যা ২০২২ ’ । ৫২ পৃষ্ঠার আয়োজনে সন্নিবিষ্ট হয়েছে গুণমানে সমৃদ্ধ এক গুচ্ছ রচনা। আকার কিংবা আয়তন দেখে মুখ ফিরিয়ে - বলা ভালো - চোখ ফিরিয়ে নিলে আত্মবঞ্চনার শিকার হবেন পাঠকবৃন্দ। স্বল্প পরিসরে এত উৎকৃষ্ট লেখালেখির সম্ভার সচরাচর ছোটপত্রিকায় নজরে আসে না। সেদিক দিয়ে বিচার করলে ‘ঈশান’ ব্যতিক্রমী তকমা পাওয়ার যোগ্য। সম্পাদকের তীক্ষ্ণ নজরদারির সুস্পষ্ট ছাপ পরিলক্ষিত হয় বিষয় নির্বাচনে। বহুচর্চিত বিষয়ের উপর উপুর্যুপুরি প্রবন্ধ নিবন্ধ নিয়ে হয়তো তেমন উৎসাহী ছিলেন না সম্পাদক কিংবা সম্পাদকীয় দপ্তর। তবে বাদ পড়েনি কিছুই। কী নেই এবারের সংখ্যায় ? কবিতা, বিদেশি সাহিত্যের উপর নিবন্ধ, গ্রন্থ পর্যালোচনা, গল্প - আছে সবকিছুই। কিন্তু এসবকেই ছাপিয়ে গেছে তিন তিনটি ধারাবাহিক রচনা। একটি ছোট পত্রিকায় একসাথে তিনটি ধারাবাহিক রচনার সমাবেশ - নিশ্চিতই এক অভিনব এবং অভাবনীয় প্রয়াস। আর সেই ধারাবাহিকের স্রষ্টারা যদি হন বহু প্রশংসিত, বহু চর্চিত তাহলে পত্র

এ মায়াবী শহর

এ মায়াবী শহর তোমাকে দিয়েছে কি ঠাঁই নিভৃতে দু’দণ্ড বসে কবিতা লিখার ? কোথায় বেঁধেছ ঘর কোথায় ঠিকানা ? এ জীবন ঠিকানাবিহীন, শুধু পথ চলা মাঝে মাঝে খানিক থমকে থাকা শুধু সেখানেই ঘর, ঘর নেই তার সবখানে ঘর।   মাঝরাতে এ শহর ছলছল পালটায় রূপ আমি কান পেতে শুনি তার নিভৃত সংলাপ হারানো ছবির কোলাজে ডুকরে ডুকরে কথা বলে শহর, চুপি চুপি নৈঃশব্দ্যের ঘেরাটোপে। এ শহরের বুকে পা পড়েনি আমার পূর্বপুরুষের ঘরছাড়াদের কী আর গ্রাম, কী আর শহর  আমার জন্মজল বহন করেছে যে গ্রাম তার কাছে বাঁধা আমার আমৃত্যু যাপন।   এ শহরের মাটি, সে আমার নয় - আকাশে বেঁধেছি ঘর যে ঘরে ডাগর হয় আমার সন্তান, যে ঘরে রোজ বেড়ে ওঠে কবিতার অবয়ব আর রাত গভীর হলে প্রগাঢ় হয় ভালোবাসা… এভাবেই তিলে তিলে কোথা যেন সুখটান নিশিদিন   এ শহরের মাটি হোক আমার অন্তিম বাসা কোলাজে নিঃশব্দে এখানেই হব আমি লীন।

তবু আজ বসন্ত উৎসব

নীরবে এসেছে বসন্ত - শহর জুড়ে পথে পথে স্খলিত পাতাদের ভিড় উদাস, বিষণ্ণ দুপুর ... নাছোড় বেহায়া পাতারা ধুলোমাখা আশরীর। সব হারিয়ে নিঃস্ব বৃক্ষরা ঠায় দাঁড়িয়ে সারি সারি - পথপাশে বৃষ্টিমুখো নির্জলা বসন্তে। পাহাড়ের বুক থেকে খসে আসা মাটির বুক থেকে ধুলোরা সব উড়ে এসে জুড়ে বসে শহর জুড়ে - বাতাসের গায়ে গায়ে। এক হাতে মুখ ঢেকে পাতাদের ফাঁক গলে হেঁটে যায় এক কিশোরী বালিকা - চেনা অচেনার ঘেরাটোপে। এক হাতে সাজি তার ভরন্ত ফুলে দেবতার দুয়ারে আজ বসন্ত উৎসব বনানী জুড়ে তাই ঝিঁঝিঁ পোকার নহবত। যতই উড়ুক ধুলো, ধূসর চরাচর কিশোরীর চোখ জুড়ে আগত আনন্দ গুল্ম পাতার ফাঁকে ফুটেছে কুসুম কিশোরী হৃদয় জুড়ে আজ মধুর বসন্ত।

আনন্দ বার্তা

কিছু স্মৃতি স্বপ্ন হয়ে আসে ফিরে অগোছালো ফর্মাটে কিছু স্বপ্ন অর্ধসত্য হয়ে আসে বাস্তবে।   কাল রাতে স্ব প্ন সুখে গেয়েছি আনন্দ গান কত দৌড়ঝাঁপ কত এদিক ওদিক ছোটাছুটি আনন্দ বার্তা ছড়িয়েছি দিগবিদিক হাঁক পেড়েছি দুয়ারে দুয়ারে।   এমন স্বপ্ন কত দেখেছি দিনের আলোয় আবার রেখেছি গোপন করে সযতনে , নিভৃত অন্তরে। বসন্তের ঝরা পাতার মতো ঝরে যায় স্বপ্নেরা - ওড়ে যায় , ফিরে যায় হাওয়ায় হাওয়ায় সব স্বপ্ন কি আর মেলে হুবহু ? তবু সাধ জাগে মনে - অন্তত একবার...   স্বপ্ন দেখেছি কাল রাতে দেশ জুড়ে , বনানী জুড়ে পাতায় পাতায় ছয়লাপ আমার কবিতাগুচ্ছ আর...... সামনে আকাদেমি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আমার সঞ্জয়..... আমাদের সঞ্জয়.....

ধূসর বসন্ত

ঘুমিয়ে আছে কেউ পরম নিশ্চিন্ততায় কেউ প্রস্ফুটিত হচ্ছে রোজ একটু একটু করে যেন ফুলের হাটে বিকোবে উঁচু দরে , আমি তিলে তিলে পুড়ছি পলে পলে হাটে আমার প্রবেশ বন্ধ হয়েছে কবেই আমি ব্রাত্য হচ্ছি রোজ একটু একটু করে ।   সামনে কারো কুসুমে কুসুমে বসন্ত আগত দ্বারে অসীম আকাশে কাঙ্ক্ষিত সুখমুখ দুই চোখে কারো অপার সুখের হাতছানি , আমার বসন্ত ধূলি ধূসরিত পথ ধরে আজ ছেয়ে রাখে ইতিহাস নিশিদিন আমারও তো হাতে ছিল একদিন সেই হাতখানি ।   কোন সে ছলনাময়ী , কার সুখে আমার মরণ একদিন সব কথা লিখা হবে ইতিহাসে নক্ষত্র আলোকছটায় ধরা দেবে ধরাধামে , ততদিনে ধরা হতে মুছে যাবে সব নাম বসন্ত শেষে ঝরে যাবে যত প্রস্ফুটিত কুসুম কেউ আর ফেলবে না অশ্রু আমাদের নামে ।

মেলা ও রবীন্দ্রনাথ

সংস্কৃত ‘ মিল ’ শব্দ থেকেই মেলা শব্দের উৎপত্তি। যার অভিধানগত অর্থ হচ্ছে উৎসব , পার্বণ ইত্যাদি উপলক্ষে আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থাযুক্ত অস্থায়ী হাট। অর্থাৎ মূলত আমোদ প্রমোদের জন্য আয়োজিত মিলন উৎসবই হচ্ছে মেলা যেখানে থাকছে বিকিকিনিরও ব্যবস্থা। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র অনুযায়ী মেলার বিন্যাস , নামকরণ। যেমন সময় অনুযায়ী - চৈত্র মেলা , বৈশাখি মেলা , পৌষ মেলা ইত্যাদি। আবার স্থান অনুযায়ী - যেমন সোনাঝুরির মেলা। বিশেষ দ্রব্যাদির প্রদর্শনী ও বিক্রি উপলক্ষে - পিঠেপুলির মেলা , বইমেলা , বাণিজ্য মেলা ইত্যাদি। উৎসবাদির নামে মেলা - যেমন গাজনের মেলা , চড়ক মেলা , শিবরাত্রি মেলা ইত্যাদি । বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম অনুসারে চিহ্নিত মেলা - যেমন গান্ধিমেলা , নেতাজি মেলা , রবীন্দ্র মেলা , বিবেকানন্দ মেলা ইত্যাদি। সরকারি তরফেও নিয়মিত আয়োজিত হয়ে থাকে বিভিন্ন মেলা। সেখানে বাণিজ্যই প্রধান , মিলন নয়। এখানেই একটা বিরোধ ছিল রবীন্দ্রনাথের। তিনি চেয়েছিলেন শহর থেকে গ্রামে , পল্লীতে আয়োজিত হোক সমাগম , নিখাদ মিলন মেলা। ‘ স্বদেশী সমাজ ’ প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন , ‘ যেমন আকাশের জলে জলাশয় পূর্ণ করিবার সময় বর্ষাগম , তেমনি বিশ্বের ভাবে পল

ভুল

কিছু কথা ভুল হয়ে থেকে যায় আজীবন যাব কি যাব নার দোলাচলে থেকে গেল যারা ওপারে, বিশ্বাসে ভরসায় আজ তারা নিঃস্ব, নিরুপায়। এসেছিল যারা বাদুড়ঝোলা হয়ে বাঁচিয়েছে ইজ্জত, হারিয়েছে সঞ্চয় তবু তারা হারায়নি সম্ভ্রম। এসেছিল যে মেয়েটি কবির কল্পনায় কানে তার কর্ণফুলি, চোখে তার সুরমা আঁকা একদিন যার গরম চায়ের মায়ার চুমুক উথলে উঠেছে কবিতা জুড়ে, আজ চায়ের কাপে তুফান তুলেছে সে।   ভুলের সোপান হয়েছে যেখানে শেষ সেখানেই আছে সাপের মুখগহবর। আবার তবে শুরু হোক পথচলা   শূন্য থেকে উত্তরণের চলাচল ভেঙে যাক সব অলীক মায়ার ভুল কত আর মাপা যায় রোজ অন্ধকারে ঝুল ?

তোমাকে...

কেউ চিঠি লিখে তোমাকে। বহু কাল ধরে তিলে তিলে সঞ্চিত এক বুক আশা নিয়ে শঙ্কিত চিত্তে কেউ বার্তা পাঠায় আকাশপথে - “আমি তোমাকে ভালোবাসি”।   তুমি কি জানো ? এই বার্তা পাঠাতে পোড়ে কত কাঠ খড়, ভাঙে কত কলমের নিব ? ছিঁড়ে যায় কত কাগজের পাতা, রুদ্ধ হতে চায় কত বুক ধুকপুক নিঃশ্বাস,   ভেঙে পড়ে কত বাধা নিষেধের বেড়াজাল ?   এ ঘোর ভাঙন শুধু জুড়ে থাকার দায় ভালোবেসে, অঙ্গীকারে জীবনজোড়া পথ চলা - হাতে হাত ধরে।   দিন শেষে আমি কী করে বলি তোমাকে মোক্ষম সেই কথাটি ? নাই বা হল গোলাপ পথে পথ চলা নাই বা হল বলা।  ভালোবাসা যদি থাকে এতটুকু কাঁটার পথেও তো অনায়াসে যায় বলা - “আমার হৃদমাঝারে আছ তুমি আজ ভালোবাসারই দায়ে - সবটুকু জড়ায়ে।”

চার অধ্যায়

একদিন এসেছিল সে কোন যে মায়ার টানে সন্তরণের নবিশ আমি পড়েছি অথই জলে কিছু কথা ছিল, ছিল কিছু নিজ হাতে আঁকা ছবি। হারিয়েছি আমি সকাল বেলার প্রথম কদম ফুলে আসলে সবই ছিল হিজিবিজি কথারা আছে আজও যেমন ছিল - সবই।     আমি তো চেয়েছি তারে, ফিরিয়েছে সে মুখ মুখ ফেরালেই কি মুছে যায় সব কিছু ? যায় না - সে কথা জেনেছি বহু পরে। নিভৃত অন্দরে সাজিয়ে রেখেছিল ছবি শেষের বেলায় বলেছিল সে কথা প্রতিভাসে বুকে আগলে রেখেছি ধরে।   এ কেমন চাওয়া, স্বর্ণমৃগ মরীচিকা ? তরু নেমে আসে গুল্ম সকাশে ভালোবেসে নিষেধের বেড়াজাল ঘিরে প্রেমের অমোঘ টান। উথাল পাথাল ভাবনা বিশ্ব, অস্ফুটে গুমরে হৃদয় এ হৃদয়ে চির ভাস্বর হয়ে নীরব বাতিঘর   দাঁড়িয়ে রয়েছে ভালোবাসা নিয়ে, প্রেম চির অম্লান।   আমি তো দেখিনি তারে, তবু সে আমার। স্বপনে আসে না সে, বলে না তোমাকে ভালোবাসি মনের মানুষ হয়ে দিয়েছে নিজেকে বিলিয়ে। গোপন যে কথাটি বলিনি কোনোদিন অজানিতেই সে মায়েরই এক রূপ এক দেহ এক প্রাণ - আরশিতে দেখেছি মিলিয়ে।

নীরব কথারা

সব কথা আর যায় কি লিখা ? লিখেও মুছে দিতে হয় চিরতরে কিছু কথা রেখে দিতে হয় অন্তরে হৃদয় মহাফেজখানার অন্দরে। কত অনিয়ম, বিধির করাল নিদান সম্পর্কের কত জটিল বেড়াজাল গোপন কথারা সব থেকে যায় গোপনে জানে শুধু এ মন আর জানে মহাকাল। থেকে যায় কথা, হারায় কুশীলব এ পৃথিবী তাদের ধরে রাখে বুকে তবু তারা বেঁচে থাকে যুগ যুগ আসে ফিরে ফিরে সঘন সুখে ও শোকে। আছে সঞ্চিত যুগান্তরের কত কথা সব কথা কি আর বলা যায় অতঃপর ? তাই তো নীরবে যুগ যুগ ধরে একাকী দাঁড়িয়ে থাকে বাতিঘর। ছবি হয়ে যায় কেউ অকাল আঁধারে কেউ থেকেও চলে যায় বহু দূর তবু বেঁচে থাকে অনন্ত কথারা সব মাঝে মাঝেই উথলে ওঠে হৃদয়পুর।

বোরিয়লা সুখ

এক দিন মাঝদরিয়ায় …… লুইত এখানে অপার দরিয়া ঠিক জলে জলে একাকার সব দিক। সোমেশ্বরের নৌকো যাবে ঘাটে তখন পশ্চিমে সূর্য সবে পাটে।   প্রাণপনে বইঠা ধরেছে হরিচরণ বাহুমূলে তাগড়া হাতের পেশি জারি সারি সুর শেষে জোর দেয় হাঁক,    পড়ন্ত সূর্যের রক্তিমাভা মেখে গায়ে জোর টানে দাঁড় পাড়ের দিকে সোমেশ্বর সামলে রাখে বোরিয়লা ঝাঁক ।   আজ রাতে ধলা গ্রামে হবে উৎসব গঞ্জে গঞ্জে বিকোয় বোরিয়লা সব। সিলেটের ভাষা জানে সোমেশ্বর কেওট   দেখেনি সে দেশ । কোন সে মুলুক সে কত নদী পার হরিচরণ নমশূদ্র চেনে শুধু ধলাপার আর চেনে সুদামা সখা সোমেশ্বর নাম।   আজ রাতে দুই ঘরে মাছের কেত্তন সখা দুই দিনশেষে আয়েসের ঘোরে কথায় কথায় দেশ বিদেশ ঘুরে। পাকশালে গৃহিণীর মাছময় রাত বাইরে মদার তলে গাঢ় আঁধারে ফিসফাস ভালোবাসা জল হয়ে ঝরে।   হরির ‘পুয়া’র নাম বাছা ‘জোনমণি’ আদরের ‘শ্যামা’ আজ সোমের ‘ছোঁয়ালি’ হাসে গাঁয়ের লোক এ কী হেঁয়ালি ? তিলে তিলে গাঢ় হয় ভালোবাসাবাসি ডাগর নয়ন জুড়ে কান্না হাসি।   এক দিন জানাজানি হয় কানে কানে, ক্রমে ক্রমে এক রাতে চার হাত হয় একাকার দুই ঘরে বয়ে যায় আনন্দ অপার।   উৎসব শেষে আজ লুইতের বুকে ফের ভাসে বোরিয়লা নাও, দুই সখা ভাবে এ কী হলো

যাওয়া আসা

যেতে চেয়েও কি কেউ যেতে পেরেছে কখনো ? আসতে চেয়েও কি কেউ আসতে ? জীবন মানেই তো আসা আর যাওয়ার মাঝের খেলাটুকু শুধু বলয়েরই মাঝে ঘুরপাক শুধু …… আসা যাওয়া শুধু এধার ওধার। যখন যেতে মন চায়, যাওয়া কী যায় ? চলে যাওয়া মানেই কি হারিয়ে যাওয়া ? একেবারেই নয়।   এই যে তুমি যাবে বলে বাড়িয়েছ পা আনন্দে কিংবা বিষাদে একাকী একা এ তো শেষ যাওয়া নয় তুমি তো রয়েই যাবে - যেমন ছিলে আমার মতো লক্ষ মানুষের মাঝে। মানুষ সত্যি বড় অসহায় তাই তো না চাইলেও যেতে দিতে হয় ছুটন্ত মনকে লাগাম পরাতে হয় টেনে ধরতে হয় রাশ - জোর করে নাহলে …… অপমানে হতে হয় সবার সমান কিংবা …… নিজেও বাড়াতে হয় পা অজানার উদ্দেশে …… সাথি হয়ে একা একা যুগান্তরের যাওয়া আসা।   এই যে আনন্দের তুমি বাড়িয়েছ পা উন্মুখ হয়ে গুনছ বসে প্রহর আর বিষাদের তুমি, এসেছিলে একদিন না চাইলেও চলেছ একা পথে কী অবাক সাযুজ্য …… আনন্দে বিষাদে আপন আপন যাত্রাপথ নিয়েছ নিজের পথে। আমার আছে শুধু বিষাদ বীণার সুর বুক জোড়া হাহাকার …… না, যেয়ো না। থেকে যাও আরো কিছু পল এত যদি ত্বরা তবে একদিন নাহয় একদিন …… চলো তবে এক সাথে যাই দূরে, ধরে হাতে হাত। আনন্দে বিষাদে - বলয় পেরিয়ে এ জীবন হোক কিস্তিমাত।

মৃত্যুর ঈশ্বর তুমি সত্যিকারের অন্ধ

এই তো সেদিন .... ডানা মেলে উড়েছিল মন থমকেছিল সময়, মুখোমুখি পাশাপাশি গরাদে ঘাপটি মেরে বসেছিল সুখপাখি। সেদিন কথার ফাঁকে মুক্তোদানার বৃষ্টি দেখে দূর আকাশে তাকিয়েছিল সুখপাখি। ঘোর ছিল সেই সুখ পাখিটির দু'চোখ জুড়ে।   আজ দুয়ারে দাঁড়ায়ে এ কোন বসন্ত ? অকাল বেলায় শেষের হাতছানি এ কেমন বিচার, কেমন বিধির দণ্ড ? হারিয়ে যাবে মুক্তোঝরা হাসির ঝিলিক ডাগর নয়ন চিরতরে হবে বন্ধ হে মৃত্যুর ঈশ্বর, তুমি সত্যিকারের অন্ধ। যা পাখি তুই থাকিস ভালো আরো আরো ভালো - অচিন সোপানে।   সত্যি কি আজ সুখপাখিটি হারিয়ে যাবে দূর নীলিমায় ? উধাও হবে রামধনু রঙ আকাশ হতে ? উড়বে না আর মেঘের ভেলা শরৎ আকাশে ? অবিশ্বাস্য ……. চেয়ে থাকি তাই অলৌকিকের পথে।

বসন্ত ভোরাই

কোন দূর থেকে ভেসে আসে বসন্ত ভোরাই। বাজে কানে, বাজে মন মন্দির জুড়ে কত খেলা কত নহবত কথামালা। তরুশাখা কতটা ডাগর হলে ফুলে ফুলে ভরে চরাচর ? ক’টি বসন্ত পেরিয়ে এলে বৃক্ষ হয়ে বাঁচে অন্তর ? আমি বৃক্ষ হব প্রভু বসন্ত আসুক ঝেঁপে নিরন্তর।

বসন্ত মধুপী

সে কেমন ছিল, কোথায় ছিল তার হদিশ মেলেনি আজও। কী ছিল তার মনে - সে কথাটিও রইল গোপনে। হয়তো আপন খেয়ালে মেলেছিল ডানা খানিক সাধ জেগেছিল মনে। হয়তো ছিল আমারই মনের গহিনে কিংবা খেলাচ্ছলে দূর বহু দূরে ফুলে ফুলে মধু আহরণে। তবু সে ছিল, এক চিলতে ভালোবাসা নিয়ে কারো হৃদয়ের নিভৃত ঠাঁই জুড়ে রঙিন প্রজাপতি হয়ে সে ছিল সে ছিল রূঢ় বাস্তব হয়ে - সে ছিল জীবন্ত আলেয়া হয়ে, বসন্ত মধুপী হয়ে।

সুসংহত ধারাবাহিকতার অনন্য প্রকাশ - ষষ্ঠ সংখ্যা ‘সীমান্তরশ্মি’

হাঁটি হাঁটি পা পা করে তিনটি বছর অতিক্রম করল ‘সীমান্তরশ্মি’। বইমেলা ২০২২ সংখ্যা রূপে আত্মপ্রকাশ করল তার তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ষষ্ঠ সংখ্যা। হামাগুড়ি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পথ চলা শুরু করার মধ্যে যে দীর্ঘ সময় এবং নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রয়োজন তা একটি পত্রিকার ক্ষেত্রেও একই রকম প্রাসঙ্গিক। ‘সীমান্তরশ্মি’ ও পথ চলতে শুরু করেছে উত্তরণের মধ্য দিয়ে, নিজেকে পরিমার্জন ও পরিশোধনের মধ্য দিয়ে। পোড় খাওয়া সম্পাদক নারায়ণ মোদক বছরে তিন তিনটি পত্রিকার সম্পাদনা করে থাকেন। সুতরাং এ উত্তরণ অবশ্যম্ভাবী। এবারের সংখ্যা জমে উঠেছে এ অঞ্চলের এবং তার বাইরে থেকে আসা মোট ৪৪ টি কবিতা ও একটি প্রবন্ধের মাধ্যমে। পূর্ববর্তী সংখ্যা সমূহ সম্ভবত শুধু কবিতাতেই সজ্জিত থাকত। সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরার বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক জহর দেবনাথের প্রবন্ধ এবারের নবতম সংযোজন। মূল্যবোধ নিয়ে লিখিত এ প্রবন্ধ জ্ঞানতই হোক কিংবা অজানিতে - শিরোনামহীন হয়ে রইল। সম্ভবত দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে সম্পাদকের। কবিতা বিভাগে বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে যাঁদের কবিতা তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জ্যোতির্ময় রায়, সুদীপ ভট্টাচার্য, অরুণ চট্টোপাধ্যায়, ঋতা