Skip to main content

Posts

Showing posts from February, 2024

স্মরণে শ্রদ্ধায় প্রয়াত কবি বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য ‘সাহিত্য’ - ১৬১ তম সংখ্যা

বরাক কিংবা উত্তরপূর্বের ভৌগোলিক সীমানা পেরিয়ে যে ক ’ জন কবি, সাহিত্যিক হয়ে উঠতে পেরেছিলেন সীমাহীন সাহিত্যবিশ্বের ভাস্বর নাগরিক তাঁদের অন্যতম কবি বিজিৎকুমার ভট্টাচার্যের পরলোক গমনে তাঁর স্বভূমে অবধারিত ভাবেই সৃষ্টি হয়েছিল এক গভীর শূন্যতা । শূন্যতা শুধু সাহিত্য সৃষ্টির ক্ষেত্রেই নয় , শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তাঁর আপন সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ সাহিত্য পত্রিকা ‘ সাহিত্য ’ র ভবিষ্যৎ নিয়েও । কবিরাও মানুষ এবং মানুষ মরণশীল । এই সূত্রে তাঁর মৃত্যুকে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মেনে নিতে সবাই বাধ্য যদিও এই সাহিত্য ভুবন থেকে হারিয়ে যাবে ‘ সাহিত্য ’ নামের একটি অভিজাত তথা সমৃদ্ধ পত্রিকা এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছিল না । হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় যখন নিমগ্ন পাঠকবৃন্দ অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তখনই যাবতীয় দুশ্চিন্তাকে দূর করে প্রকাশিত হল পত্রিকার ১৬১ তম সংখ্যা । ‘ সাহিত্য ’ পত্রিকার এই যাত্রাকে যাঁরা বিরামবিহীন করে তুললেন তাঁরা হলেন এই সংখ্যার সম্পাদক কবিপত্নী শিখা ভট্টাচার্য যিনি বহুদিন ধরেই নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন এই কর্মযজ্ঞে যখন কবি , সম্পাদক বিজিৎকুমার ভট্টাচার্যকে অসুস্থতার কবলে পড়ে সুচিকিৎসার জন্য প্রায়শই পাড়ি দ

বিষয়ে, বৈচিত্র্যে সংগ্রহযোগ্য ২৯/৩০ যুগ্ম সংখ্যা ‘সেবা’

যথাসময়ে , অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর আসামের করিমগঞ্জ থেকে আন্তর্জাতিক প্রবীণ নাগরিক দিবসে প্রকাশিত হল বরিষ্ঠ নাগরিকদের প্রতি নিবেদিত ‘ সেবা ’ পত্রিকার পঞ্চদশ বর্ষ , ২৯ / ৩০ যুগ্ম সংখ্যা । এখন এই ষাণ্মাসিক পত্রিকার যুগ্ম সংখ্যাই প্রকাশিত হয় । ফলে স্বভাবতই ‘ ভারে ’ যথেষ্ট ওজনদার হয়ে ওঠে পত্রিকাটি । যুগ্ম সংখ্যার নামে একই পরিমাণ লেখালেখি সন্নিবিষ্ট করে পাঠকদের বঞ্চিত করেন না অভিজ্ঞ সম্পাদক অপর্ণা দেব । সম্পাদকমণ্ডলীতে এছাড়াও রয়েছেন প্রবালকান্তি সেন, অনুপকুমার বণিক, বনানী চৌধুরী।    ‘ ধারে ’ কেমন হল এ সংখ্যা ‘ সেবা ’ দেখে নেওয়া যাক এবার । একই সংস্থা দ্বারা পরিচালিত বৃদ্ধাবাস ‘ বেলাভূমি ’ র বছরজোড়া যাবতীয় কর্মকাণ্ডের গুচ্ছ ছবি তথা পৃষ্ঠাজোড়া প্রতিবেদন জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের প্রতি সংস্থাটির দায়বদ্ধতা তথা গরজের পরিচায়ক । এ ছাড়াও রয়েছে দেশ বিদেশের বহু অনুষ্ঠানে ‘ সেবা ’ পত্রিকার অংশগ্রহণের বহু ছবি । সম্পাদকীয় বিন্যস্ত হয়েছে দু ’ ভাগে - ‘ চোদ্দ বছরে বেলাভূমি ’ ও ‘ পনেরো বছরে সেবা ’ । বিস্তৃত প্রতিবেদন । ভেতরের পাতায় রয়েছে দেশ বিদেশের কবি সাহিত্যিকদের বিশাল সম্ভার । পরিসরের অভাবে প্

প্রাচুর্যে না হলেও গুণগত মানে সমৃদ্ধ ‘সৃজনী’ বর্ষ-২০ সংখ্যা

নিয়মিত পত্রিকার সংখ্যাগুলোকে নান্দনিক তথা অধিক আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে প্রায়শ এক পরীক্ষা নিরীক্ষার পথে চলতে হয় সম্পাদকদের। এমনটা পরিলক্ষিত হয় আকছার। এতে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবর্তনের ছোঁয়ায় ফুটে ওঠে নতুনত্ব এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই নতুনত্বের আকর্ষণে পত্রিকার গুণগত মানের কেমন তারতম্য ঘটে তার বিচারক একমেবাদ্বিতীয়ম পাঠকবৃন্দ। বিশ বছরে পা দিয়েছে ‘সৃজনী’। প্রকাশিত হয়েছে অক্টোবর ২০২৩ সংখ্যা। পত্রিকা প্রকাশে বিশ বছর চলা মানে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পথ চলা বড় সহজ কথা নয়। নেপথ্যের নিরলস যত্ন, লালন ও চর্চার যে শ্রম তা কিন্তু সহজে প্রবেশ করে না সহজ পাঠকের চিন্তনে। এ দায় শুধুই সম্পাদকের। আর এ দায় নিয়েই এবারের সংখ্যায় সম্পাদকীয়ের পরিবর্তে ‘সৃজনী’র শুরুতে দুই ভিন্ন বিষয়ে দুটি গদ্য উপহার দিয়েছেন সম্পাদক মৃদুলা ভট্টাচার্য। এই ব্যতিক্রমের ভালোমন্দ বিচারের ভারও তাই তোলা রইল পাঠকদের জন্য। এটুকু শুধু বলা যায় যে দুটি গদ্যের উপরি পাওনা হল পাঠকদের। ‘উৎসব’ শিরোনামে দুর্গোৎসব নিয়ে দুই পৃষ্ঠার এবং ‘শব্দসন্ধান’ শিরোনামে শব্দভাবনা নিয়ে এক পৃষ্ঠার গদ্য দুটি আর যাই হোক না কেন সুখপাঠ্য হয়েছে নিঃসন্দেহে -

সপ্তদশ বর্ষে - গরজে, উৎকর্ষে ‘মানবী’

ঘন কালো প্রচ্ছদের মধ্যিখানে একটি হ্রদ কিংবা বিলের জলে পড়ন্ত সূর্যের আবছা আঁধার। প্রেক্ষাপট সম্ভবত বরাকভূমের গর্ব শনবিল। কারণ জলে হিজলজাতীয় গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশিষ্টতার প্রতীক হয়ে। ভেতরের পাতা ওলটালে কবিতায়, নিবন্ধে পার্শ্ববর্তী রাজ্য মণিপুরের অমানবিক ঘটনার বিস্তৃত প্রতিবেদন। ভাবনার আবর্তে নিমজ্জিত হতে বাধ্য পাঠক মন। এক কালো অধ্যায় , অথচ এই মণিপুরেই আছে এমনি এক গর্বের জলাশয়। মহাদেশের সর্ববৃহৎ স্বচ্ছ জলের হ্রদ - লো গ তাক। আজ গোটা দেশে এবং সমাজে মণিপুর এক অস্বচ্ছতা তথা কলঙ্কগাথার নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে । প্রতীকী এবং প্রাসঙ্গিক হিসেবে তাই অভিহিত করা যায় বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্যের ছিমছাম প্রচ্ছদ।   এমনই এক অমানবিকতা, অশান্তি, অব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি শিলচর থেকে প্রকাশিত হল ‘মানবী’ পত্রিকার সপ্তদশ বর্ষ, তৃতীয়-চতুর্থ যুগ্ম সংখ্যা। জুলাই - ডিসেম্বর ২০২৩। আজকাল এভাবেই যুগ্ম সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে মানবী। শেষ কবে ত্রৈমাসিক একক সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে জানা নেই। এবারের সংখ্যার সম্পাদনার চারজনের গোটা সম্পাদনামণ্ডলী। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭২। সম্পাদকীয়তে বরাবরের মতোই আছে কিছু চমৎকার কথন - ‘আ

কবি, গদ্যকার গৌতম বসুকে নিয়ে ‘আদম’-এর বিশেষ সংখ্যা

এই পৃথিবীতে মানুষ জন্মগ্রহণ করে , আবার এক সময় হারিয়েও যায় চিরতরে - বিস্মৃতির অতল গহ্বরে । এর মধ্যে কিছু মানুষ নিজ মেধা দক্ষতা ও কাজের মাধ্যমে পার্থিব মৃত্যুর পরও তাঁদেরই অনুসারী মানুষের উদ্যোগে বেঁচে থাকেন অনন্ত কাল - প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে । সেক্ষেত্রে ব্যক্তি এবং তাঁর অনুসারী উভয়েই সমান বরেণ্য হয়ে থাকেন অগণিত মানুষের মননে , চিন্তনে । ‘ আদম ’ - একটি ‘ অনিয়মিত কবিতা পত্রিকা ’ । যেহেতু অনিয়মিত তাই পাঠকের চাহিদায় থাকে না সময়ের নিক্তি ধরে পত্রিকার প্রকাশ । এবং এর ফলে পত্রিকা প্রকাশে যথোপযুক্ত যত্ন ও গরজের ছাপ হয়ে ওঠে স্পষ্ট । আবার কবিতাপত্র হলেও কবিতার বাইরে কিছুই নেই বা হতে পারে না এমন কোনও দিব্যিও কেউ দেয়নি বা দেওয়ার দরকারও নেই । কবি কিংবা কবিতার বিশ্লেষণেই তো গদ্য এসে পড়ে অবধারিতভাবে । সুতরাং গদ্য , পদ্য বা সময়ের নিক্তি কোনোটাই মুখ্য নয় । বিষয় এবং উৎকর্ষই এখানে মুখ্য । ‘ আদম ’- এর জানুয়ারি ২০২৩ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে ‘ গৌতম বসু ( ১৯৫৫ - ২০২১ )’ সংখ্যা হিসেবে । কবি , গদ্যকার , অনুবাদক , সম্পাদক এবং সর্বোপরি ব্যক্তি গৌতম বসুর সম্পূর্ণ জীবনকে একের পর এক সুগ্রন্থিত বিষয়বৈচিত্

জন্মের প্রথম শুভক্ষণ

কিছু কথা তীব্র অপ্রিয় হলেও বলতে হয় বইকী । তবু এসব কথা অপ্রিয় বলেই শুধু বলেন না অনেকে । এতে ভবিষ্যতে বড়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় । বাবাও কোনোদিন বলেননি আগে । কিন্তু মাস ছয়েক আগে একদিন নিভৃতে কাছে ডেকে আমাকে বললেন কথাগুলো । বাবা এমন একটা সময় বেছে নিয়েছিলেন যখন মা ঘরে নেই । আমার প্রচণ্ড অস্বস্তি হচ্ছিল যদিও , বোধ করি আমরা এই যুগের ছেলে মেয়েরা হৃদয়ের দিক দিয়ে অনেকটাই শক্তপোক্ত হয়ে জন্মাই । জন্ম থেকেই এই পৃথিবীর রং রূপ দেখে অনেকটাই প্র্যাকটিক্যাল হয়ে পড়ি নিজেরই অজান্তে । সেদিন তাই অপ্রিয় হলেও , বারকয়েক বাবাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুরোটা শুনেছিলাম মন দিয়েই । কী বলেছিলেন সেদিন বাবা ? তার আগে একটু পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার আছে বাবার সঙ্গে । বাবাকে আমি মোটেও রাশভারী বলব না । খুব আমুদে এবং হইহই টাইপের ছিলেন তিনি । জীবনটাকে সামর্থ্যের মধ্যে উপভোগ করতে জানতেন । বাজে খরচ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতেন । এ নিয়ে আমি আর মা মুখ টিপে টিপে হাসতাম । কৃপণ মনে হতো বাবাকে । অথচ কত বার কত জায়গায় যে আমাদের নিয়ে বেড়াতে গেছেন তার ইয়ত্তা নেই । বলতেন ভ্রমণে জ্ঞান বাড়ে । এদিকে নিজের জন্য খরচের বেলায় ভীষ্ণ র

শৈশবের অনন্ত আলোয় কাটানো আশ্চর্য খনন..... 'বোধের উঠোন'

অনন্ত অনুষঙ্গ, ঘাত প্রতিঘাত, দুঃখ ব্যথা, সমাজ সংসার, কল্প-বাস্তব, মুখ ও মুখোশ আর স্বভূমি স্বজনের আজন্ম অনুভব, অনুভূতির সংমিশ্রণে যাবতীয় বোধের কর্ষণক্ষেত্র এই পৃথিবী নামক উঠোনে কবিতার বীজ রোপন করতে পারেন শুধুই একজন কবি। আর এই কবিতাময় উঠোনে সেই প্রতিচ্ছবিই আঁকতে সচেষ্ট হয়েছেন দীর্ঘ দিন ধরে কবিতার অঙ্গনে পদচারণায় স্বচ্ছন্দ কবি মৃদুলা ভট্টাচার্য।  ৯৫ পৃষ্ঠার ‘বোধের উঠোন’ কাব্যগ্রন্থে নয় নয় করে ৮৭ টি কবিতা গ্রন্থিত আছে আপন স্বাতন্ত্র্যে। দু’চার লাইনে আটকে রাখেননি নিজেকে। কবিতা নিয়ে কোনও পরীক্ষা নিরীক্ষা নয়, অবোধ্য বাক্যবন্ধে পাঠককে বিভ্রান্ত করার কোনও অভিপ্রায় নেই। যতটুকু বলার সবটাই বলেছেন প্রাণ খোলে। নানা রূপে, ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে। কবি বোধের উঠোনে এঁকেছেন যাপিত সময়। শতাব্দীর মোক্ষম ঘটনা করোনা মহামারিকে দেখেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন, উপস্থাপন করেছেন ভিন্ন ভিন্ন পরিসরে, কাব্যিক অনুষঙ্গে। নিয়মের মাঝে অনিয়ম, সভ্যতার মোড়কে কালো ছোপ এসে ধরা দিয়েছে কবি মননে - দুঃখ-সুখে ডুবে ডুবে শূন্য গোলোক ধাঁধায় দেখি আহত পৃথিবীর বুক এই বুকে কারা যেন রেখে গেছে সভ্যতার মোড়কে কিছু কালো কালো ছোপ...। (কবিতা - ডায়েরির পাত

নিথর লেখনী, সরব কবিতা - ‘কথকতা’

যেন এক নীরব যাপন কথার বিষণ্ণ এপিটাফ। কবি সুকন্যা চৌধুরী। জন্ম ১৫ জুন ১৯৫৯, মৃত্যু ১১ মে ২০২১। করিমগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘কথকতা’ গ্রন্থের প্রকাশক কবির অগ্রজা সুনন্দা চৌধুরী। ‘প্রকাশকের নিবেদন’-এ আক্ষেপবশত সুনন্দা লিখছেন - ‘সুকন্যার সীমাহীন পারাবারে চলে যাওয়ার দুই বছরের মধ্যেও আমি বইগুলি ছাপাতে পারলাম না……’ যদিও শেষ পর্যন্ত বইটি প্রকাশ্যে এসে গেছে গত অক্টোবর ২০২৩-এ। ‘কবিতা, অণু কবিতা, ছড়া এগুলো এতো ছড়ানো ছিটানো যে এতগুলি ডাইরি, মোবাইল ঘাটাঘাটি করতে হয়েছে …… সুকন্যা ডাইরির পাতায় লিখে গেছে - আমি কবি নই। বাচিক শিল্পীও নই। আমার মনের ভাবনাকে আমি নিজের ভাষায় লেখার চেষ্টা করি……।’ সেই প্রয়াত কবির ২৭টি ছড়া, ৫৫১টি অণু কবিতা, ৫টি কবিতা ও ১টি অণুগল্প নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘কথকতা’। ১৩৫ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে এতগুলি কবিতা/ছড়ার সমাহার সত্যিই বিস্ময়কর। কেমন ছিল সেসব ? চোখ রাখা যাক - স্বাধীনতা তুমি সত্তর শতাংশের অনাহার,/ তুমি কর্পোরেটের লক্ষ কোটি ছাড়।/ স্বাধীনতা তুমি নেতা-মন্ত্রীর হাতের মুঠোয়/ আরাম, আয়েশ, মিথ্যে কথার ঢপ/ আমার কাছে কেবলমাত্র একটা ললিপপ। (ছড়া - ললিপপ)। প্রতিবাদী সত্তার প্রকাশ। আবার - দাদা আমার ভাল