Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2023

কবিতা বিশ্বে নন্দিত সংকলন ‘দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের নির্বাচিত কবিতা’

‘ গালে হাত , অধোমুখে ম্লান ম্লান ছায়া , এরকম পিছু ফিরে থাকা কেমন অসহ্য মনে হয় ……… সক্ষম যুবক আমি , এই পৃথিবীর বুকে চেঁচিয়ে বলতে পারি - আমার যা কিছু ত্রুটি সব নিয়ে আমি … ক্রমশ এগিয়ে যাব ভুলের কাঁটার ঘায়ে গোলাপ ফুটেছে এ - তো প্রামাণ্য নজির এমন বিষণ্ণ ছবি শরীরে এঁকো না নারী , নিজেকে ছড়িয়ে দাও গালে হাত , অধোমুখে … কেমন অসহ্য মনে হয় আমার ভেতরে এক দুরন্ত শিশুর ছবি , তুমি কি বোঝো না তার ভাষা ? ’ ( কবিতা - ‘তুমি কি বোঝো না তার ভাষা’র অংশ বিশেষ ) বস্তুত এই একটি কবিতা - যা কিনা আবার বিশাল এই কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাও - গ্রন্থের নির্যাস নির্ধারণ করে দেয় কাব্যশৈলী এবং কবিতার ভাব, নির্মিতি ও অন্তর্নিহিত নান্দনিকতার নিরিখে। প্রসঙ্গত এই কবিতার পঙ্‌ক্তি বিন্যাস এবং যতি চিহ্নের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। কবি দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের সম্প্রতি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের নির্বাচিত কবিতা’। সার্বিক নবম সংকলন - যেখানে রয়েছে ইতিপূর্বে প্রকাশিত প্রতিটি গ্রন্থ থেকে নির্বাচিত গুচ্ছ কবিতার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত এক গুচ্ছ অগ্রন্থিত কবিতা। সব মিলিয়ে ১৬০ পৃষ্ঠার এই আলোচ্

সাহিত্য সম্ভারে ছোট পত্রিকার বড় আয়োজন - ‘সেবা’

“বেলাভূমি মিলনক্ষেত্র যেন শান্তিনীড়, চিরবিদায়ের আগে এখানে ভূমিকন্যারা শেষ প্রণাম রেখে যায়” - স্মৃতি পাত্র।  বৃদ্ধ এবং স্বভাবতই বৃদ্ধাশ্রম শব্দতে আজকাল এক মৃদু আপত্তির সুর শোনা যায়। সেক্ষেত্রে বৃদ্ধাবাস কিংবা বৃদ্ধাশ্রমের জায়গায় এই ’মিলনক্ষেত্র’ শব্দটি পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। তাই করিমগঞ্জ শহরের সুকল্প ভট্টাচার্য মেমোরিয়েল ওল্ড এজ হোম ‘বেলাভূমি’ প্রকৃতার্থেই এক মিলনক্ষেত্র। পরিচালনায় বরিষ্ঠ নাগরিকদের কল্যাণে নিয়োজিত সংস্থা - ‘সেবা’। এবং তাঁদেরই প্রচেষ্টায় নিয়মিত প্রকাশিত ছোট পত্রিকা ‘সেবা’। নামেই ‘ছোট’। আয়তনে কিংবা সম্ভারে তা নয় মোটেও। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘সেবা’ পত্রিকার চতুর্দশ বর্ষ, ২৭/২৮ - অক্টোবর ২০২২ যুগ্ম সংখ্যা। ১লা অক্টোবর দিনটি বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বিশ্ব বরিষ্ঠ নাগরিক দিবস হিসেবে । এবং ‘সেবা’ পত্রিকাটিও ‘বরিষ্ঠ নাগরিকদের প্রতি নিবেদিত’ একটি পত্রিকা। যার প্রতিটি বিষয়বস্তু এই সুরেই থাকে বাঁধা। তাই এর প্রকাশকালও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। বরাবরের মতোই এবারের সংখ্যার সম্পাদকও কবি, গল্পকার এবং ‘বেলাভূমি’র তত্ত্বাবধানে থাকা বিশিষ্ট সমাজকর্মী অপর্ণা দেব। উপরোক্ত উদ্ধৃতিটি ‘

গদ্য পদ্যের বৈচিত্র্যময় সম্ভার - পূজা সংখ্যা ‘তৃতীয় ভুবনের সাহিত্য’

যথারীতি নিয়ম মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে মহালয়ার সন্ধ্যায় করিমগঞ্জ থেকে প্রকাশিত হল ‘ তৃতীয় ভুবনের সাহিত্য ’ - ১৪২৯ বাংলা , পূজা সংখ্যা । সম্পাদক নারায়ণ মোদক । বছর জুড়ে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত তিন তিনটি পত্রিকার মধ্যে কলেবরে , ধারে ও ভারে সর্ববৃহৎ আয়োজন এই তৃতীয় ভুবনের সাহিত্য । এবারের সংখ্যাও তার ব্যতিক্রম নয় । ২৫১ পৃষ্ঠার এই বিশাল ধারাবাহিক বরাক তথা উত্তর পূর্বের সাহিত্য জগতে এক ব্যতিক্রমী প্রকাশ । পরিশ্রম ও গরজের ফসল এই সংখ্যার সহযোগী সম্পাদক - গৌতম চৌধুরী এবং শিখা দাশগুপ্ত । সংখ্যাটি উৎসর্গ করা হয়েছে ‘ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের পুণ্যকালে দেশের জন্য আত্মবলিদান দেয়া শহিদ বিপ্লবীদের ’ । ব্যতিক্রমী উৎসর্গ । ‘ মুখপৃষ্ঠা …’ শিরোনামে সম্পাদকীয়তে রয়েছে সেই পত্রিকা প্রকাশের গরজ , সামাজিক সমস্যাবলির উল্লেখ । আছে স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছরের পাওয়া না পাওয়ার নিরিখ । এবারের সংখ্যাটি গত কয়েক বছরের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত এবং পরিশোধিত বলে মনে হওয়ার বহু কারণ রয়েছে । মোট ৪৯ জন কবি সাহিত্যিকের রচনা । প্রত্যেকেরই গদ্য পদ্য মিলিয়ে গড়ে পাঁচটি পৃষ্ঠা বরাদ্দ করেছেন সম্পাদক । কয়েকটি ক্ষেত্রে

সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক এক সংগ্রহযোগ্য পত্রিকা বাক্প্রবাহ

শুধুমাত্র সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর লিখা প্রবন্ধ নিবন্ধ নিয়ে বরপেটা রোড থেকে প্রকাশিত হয়েছে ত্রিভাষিক (বাংলা, অসমিয়া ও ইংরেজি) সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা ‘বাক্‌প্রবাহ’। এটি প্রথম সংখ্যা, প্রকাশকাল - জুন ২০২২। সম্পাদক শংকর কর। করোনাকালীন ত্রস্ত সময় এবং ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার গরজ নিয়ে দুই পৃষ্ঠা জোড়া প্রাসঙ্গিক সম্পাদকীয় রয়েছে তিনটি শুভেচ্ছাবার্তার পরই। শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা মুখ্য উপদেষ্টা তপোধীর ভট্টাচার্য, হাউলি বি এইচ কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ ভূষণ চন্দ্র পাঠক এবং বরপেটা রোডের জি এল চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ (নাম উল্লেখ নেই)। সূচিপত্রের সূচনায় বিভাগ বিন্যাসের উল্লেখ নেই যদিও প্রথমেই রয়েছে বাংলা বিভাগের প্রবন্ধ নিবন্ধ। পুরো পত্রিকার প্রতিটি রচনা অত্যন্ত উচ্চ মানের এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ বিভাগে প্রথমেই রয়েছে ইলিয়াসের ‘যুগলবন্দি’ নিয়ে তপোধীর ভট্টাচার্যের বিস্তৃত ও সারগর্ভ আলোচনা। এর পর আছে বেলা দাস-এর তথ্যসমৃদ্ধ নিবন্ধ ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা - সূচকীয় আলোচনার সীমাবদ্ধতা’ এবং আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক তথা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

বিষয় বৈচিত্র্যে মনের কথা 'গুলমোহর'

শরৎসুন্দরী হাসি হাসি মুখে আবার দিলেন দেখা চারিদিকে তার খুশীর বাহার সোনা রোদ্দুরে মাখা । মাথার উপরে নীল চাঁদোয়া চুমকিখচিত তায় নীচে বিছানো সবুজ চাদর ফুলে ফুলে ফুলময় । …… ( কবিতা - মা ’ কে বরণ করি ) কিংবা - কাশের বনে লাগল দোলা শরৎ এল বুঝি শিউলি ফুলে সুবাস ছড়ায় - ফিরি পরশ খুঁজি । … সকালবেলায় রবির আলোয় ভুবনভোলা রূপ শরৎ কালের প্রতিটি দিন মাদকতাভরা রূপ । …… ( কবিতা - শরৎ এল বুঝি ) ঋতু পর্যায়ের অগুনতি কবিতায় সেজে উঠেছে ডঃ গীতা সাহার সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘গুলমোহর’ । মোট ৫৮ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট হয়েছে ৪৬ টি কবিতা। দু’একটির বাইরে সবক’টিই অন্ত্যমিলের ছন্দে লিখা লিখা। ডঃ গীতা সাহা করিমগঞ্জের রবীন্দ্র সদন মহিলা কলেজের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ। দীর্ঘ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকা। নবতম সংযোজন এই ‘গুলমোহর’। পেপারব্যাকে মানানসই প্রচ্ছদ। প্রচ্ছদ শিল্পীর নাম ঊহ্য। কবি তাঁর এই গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর - ‘মাকে ও বাবাকে’। ঋতু - বিশেষ করে শরৎ বিশেষ ভাবে স্থান পেয়েছে এই গ্রন্থে। এছাড়াও ভিন্ন স্বাদের - এমনকি কিছু হাস্যরসাত্মক ছড়াগোত্রের কবিতাও রয়েছে যা শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই পঠনোপযোগী। এ নিয়ে ক

মৌনী ভালোবাসা

কিছু ভালো লাগে না নীরব চরাচর , নেই কোলাহল , নেই কলহ কলরব   অনন্ত সময় , শুধু পথ চাওয়া।   নেই অভিযোগ , নেই তির্যক কথাশর নেই পিছু তাড়া , নেই নিঃশব্দ পদচারণা। তুমিহীন গৃহকোণ স্তব্ধতার মৌনী পাহাড় অসহ্য নীরস যাপন বেলা শুধু   ভাবনার অতলে ডুবে যাওয়া ক্ষণ।   শেষের সেদিন তুমি একা , কিংবা আমি থাক সে কথা - এসো পুলকে কেটে যাক এই অসহ যাপন - চোখের পলকে।

শহিদ সরণি বেয়ে

আজো বয়ে চলি উত্তরাধিকার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ......। বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল কেউ শিরায় শিরায় বয়ে চলে সেই রক্ত তবু আজ ম্রিয়মান সেই ধারা সেই তপ্ত রুধির গৌরব গাথা।   আছে আজীবন - আমৃত্যু লালন কখনো রয়ে সয়ে , কখনো অনর্গল। স্মিত হাসিতে, অশ্রুধারায় - আলাপে কথায় নীরবে, ইঙ্গিতে কিংবা সরব ভঙ্গিতে, ভিন গেরামের সলাজ যুবতি পানে প্রথম ভাবের সেই বিনিময় ক্ষণে - এগারো প্রাণের নীরব আত্মত্যাগে সব পেয়েছির এক যে নিপাট সঙ্গী।   লক্ষ কোটি হরফ সাজিয়ে জীবন জোড়া কথার কথামালায় সে আমার বড়ই কাছের , নিত্য সহচরী আমার এবং বিশ্ব জনের ভাষা জননী প্রযত্নে ১৯, শহিদ সরণি।

সেই ভাষাতেই বাঁচি

আমার অন্তরে সেই ভাষা যেখানে আমার শেকড় আছে , যেখানে শেকড়ের ভাষা আছে । আছে সকাল বেলার ব্যথা আছে দিনমানের অগুনতি সব কথা , আছে গভীর রাতের পদ্মা মেঘনা ক্ষণ ।   আমার মননে সেই ভাষা আমার মন পড়ে রয় নিশি দিন , যে ভাষাতে সুখের আঁতুড় ঘর ।   আমার হৃদয়ে সেই ভাষা আমার বিশ্বাসে সেই ভাষা যে ভাষাতে অতীত সাদা কালো মাঝপথে আজ সঘন হারাই খেই।   আমার সত্তায় সেই ভাষা কালের স্রোতে জীবন যাপন বেলা । উর্বর সেই ভাষা য় বাজে সুর মহাজীবনের আত্মত্যাগের গাথা  একুশের সেই শহিদ-বিষাদ সুর।

ভাটিয়ালি

ভোর রাতে দূর থেকে কোন সুর ভেসে আসে রোজ ? কান পেতে শুনি রোজ প্রাতে । দিনভর তাই বাজে কানে - মরমিয়া সুর আমি আনমনে খুঁজি সেই রাখালিয়া ধুন কে গায় , কে বাজায় ? কোন সে সুদামা সখা এই পোড়া গাঁয় ?   এখানে ঝিলের জলে বলাকার দল এখানে পাতার ফাঁকে শিশির সজল ।   এক শীতে চলে গেল পরান মাঝি চিতার উত্তাপে জাগে কিশোর তনয় দূরে হিজলের ছায়ে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল এক মা আর এক কিশোরী অপরাজিতা ।   দিন দিন উড়ে যায় নিষ্ফলা শিমূলের তুলো কত শীত শেষে আসে উর্বরা বসন্ত খসে যায় , জেগে ওঠে সংসার অনন্ত ।   পরান মাঝির ছেলে ভাটিয়ালি গায় পাশে অপরাজিতা সুর ধরে যায় বুঝি সেই সুর রোজ আমারে জাগায় ।

তিনটি শ্রুতি নাটকের সংকলন 'এক পলকে'

  তিনটি আকর্ষণীয় শ্রুতি নাটকের সংকলন -  ‘এক পলকে’ বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটা সময় ছিল যখন মঞ্চে নাটকের অভিনয় করতে হলে প্রথমেই যে কাজটি করতে হতো তা হল কলকাতা থেকে ভালো নাটকের বই আনানো। এর বাইরে কোনো বিকল্প ছিল না। আজকের দিনে পরিস্থিতি আর তেমনটা হয়ত নেই। এই উত্তর পূর্বের সাহিত্য জগতে একাধিক মঞ্চোপযোগী নাটকের সৃষ্টি হয়েছে। তবে শ্রুতি নাটক ব্যাপারটি অনেকটাই আলাদা। এখানে অভিনয়ের কোনো ব্যাপার নেই। শুধু সংলাপের মাধ্যমে শ্রোতাদের নিয়ে যেতে হয় বিষয়বস্তুর গভীরে। শ্রোতাদের গভীর মনোযোগের পাশাপাশি নাট্যকারের রয়েছে এক বিশাল দায়িত্ব। সংলাপ এমন হবে যে চোখের সামনে কোনো অভিনেতা অভিনেত্রীদের না দেখেই শুধু সংলাপ শুনে শ্রোতারা অনুধাবন করতে পারবেন নাটকের কাহিনি। এখানে শ্রুতি নাটক খুব একটা লিখা হয়েছে বলে জানা নেই। সেদিক দিয়ে নাট্যকার, কবি, সাহিত্যিক ও কৃতী শিক্ষাবিদ শিল্পজিৎ পাল-এর তিনটি শ্রুতি নাটকের সংকলন ‘এক পলকে’ একাধারে ব্যতিক্রমী এবং নান্দনিক সাহিত্যকর্ম। সংকলনটিতে আছে সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ের উপর লিখিত তিনটি শ্রুতি নাটক। নাটক, শ্রুতি নাটক এবং শিল্পজিৎ পাল-এর এই গ্রন্থটি নিয়ে আছে বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মহুয়া