Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2023

উত্তর পূর্বের বাংলা সাহিত্য বিষয়ক গবেষণাধর্মী সংগ্রহযোগ্য পত্রিকা ‘প্রবাহ’

ধারাবাহিকতার ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে দক্ষিণ অসমের লালা থেকে উৎকৃষ্টতায় ভরপুর হয়ে আবারও আত্মপ্রকাশ করল সাহিত্যিক আশিসরঞ্জন নাথ সম্পাদিত গবেষণাধর্মী ছোট পত্রিকা ‘ প্রবাহ ’। প্রকাশিত হল বর্ষ ৩৫ , সংখ্যা ২। এবারের বিষয় উত্তর পূর্বের বাংলা সাহিত্য (পর্ব-২ , আসাম, মণিপুর ও নাগাল্যান্ডের বাংলা সাহিত্য)। উত্তর পূর্বের বাংলা সাহিত্যের বিশাল সম্ভারকে একটিমাত্র পর্বে গ্রন্থিত করা প্রকৃতার্থে অসম্ভব। তাই এই বিভাজন বিন্যাস। বাংলা আহিত্য বিষয়ক এই গবেষণামূলক পর্বে মোট ১৪টি রচনার মধ্যে ১২টিই অসমের সাহিত্য বিষয়ক। একটি করে রচনা রয়েছে মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের বাংলা সাহিত্য নিয়ে। অসমের সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধগুলোর মধ্যেও আছে তিনটি ভাগ। ৮টি রচনা বরাক উপত্যকার বাংলা সাহিত্যের উপর, তিনটি ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উপর এবং একটি রচনা সার্বিকভাবে আসাম রাজ্যের লেখালেখি বিষয়ক। এছাড়াও পাঠকের রসাস্বাদনের নিমিত্তে রয়েছে তিনটি ছোটগল্প। পেপারব্যাকে এভাবেই সেজে উঠেছে বিশাল ২৩৩ পৃষ্ঠার সাড়া জাগানো পত্রিকার এই সংখ্যাটি। সম্পাদকীয় থেকেই স্পষ্ট যে এবারের সংখ্যায় আসামের সাহিত্য চর্চাই প্রাধান্য পেয়েছে কারণ অন্য দুই রাজ্যের বাংলা পঠনপাঠ

মাটি ও মানুষের গল্প সংকলন - ‘ধুলামাটির আখ্যান’

  ‘ ধুলামাটির আখ্যান ’ - আক্ষরিক অর্থেই একেবারে মাটির সোঁদা গন্ধ মাখা একগুচ্ছ কাহিনির উপস্থাপনা । সার্থক নামকরণ । এ হচ্ছে প্রথম ভাগের কথা । গ্রন্থটিতে দু ’ টি ভাগ আছে । প্রথম ভাগ ‘ গল্পগাছা ’ - ১৫ টি গল্পের সমাহার - ধুলামাটির গল্প । দ্বিতীয় ভাগ ‘ কোভিডকালের দহন কথা ’ - ৮ টি গল্প - যেভাবে শিরোনামাঙ্কিত । বরাক উপত্যকার নবীন গল্পকার তৃণময় সেন বহু দিন ধরেই লিখে চলেছেন পত্র পত্রিকায় । সেসব গল্প এবং নতুন গল্পের সংযোজনে এই গ্রন্থ - ১২৮ পৃষ্ঠার এক প্রত্যাশার ইতিকথা । কলকাতার ‘একুশ শতক’ থেকে প্রকাশিত এবং গীতা প্রিন্টার্স থেকে মুদ্রিত গ্রন্থের দেবাশীষ সাহার স্বচ্ছ সুন্দর প্রচ্ছদ ওলটালেই গ্রন্থের ‘কথামুখ’। লিখেছেন খ্যাতিমান কথাকার রণবীর পুরকায়স্থ। দুই পৃষ্ঠাজোড়া কথামুখে উঠে এসেছে পুরো গ্রন্থের নির্যাস। তিনি লিখছেন - ‘সাত ভাই চম্পার দেশ উত্তর পূর্ব ভারতে বঙ্গসাহিত্যের এক রত্নখনি বর্তমান। কথাসাহিত্যের রয়েছে এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। সময়ের সঙ্গে তাল রেখে বারবার সৃষ্টি হয়েছে নবীন সব পাঠকৃতি। দেখার চোখ পালটে গেছে, প্রবীণরা তাদের নির্ধারিত অভার শেষ করে ফিরে গেছেন প্যাভেলিয়নে। যখন পালটে যাচ্ছে কথাভা

সময়ের প্রেক্ষাপটে চিত্রিত স্মৃতি দাস-এর গল্প সংকলন ‘ভোঁ-কাট্টা’

হাতে এল কবি, গল্পকার স্মৃতি দাস-এর সদ্য প্রকাশিত গল্প সংকলন ‘ভোঁ-কাট্টা’। বইটি হাতে নিতেই তার আকর্ষণীয় প্রচ্ছদের জন্য অন্তরে এক ভালো লাগার জন্ম নেয়। সাথে একরাশ ঔৎসুক্য। পাতা ওলটানোর তাগিদ। এক এক করে মোট ১৯ টি গল্পের সমাহার এই সংকলন। এর মধ্যে অধিকাংশই অণুগল্প থেকে কিছুটা বড় আকারের এবং একটি গল্প ‘দিয়ার বৌভাত’ বড় গল্প। কিছু গল্পকে আবার অণুগল্পই বলা চলে। গল্প অর্থে সেরকম মার মার কাট কাট ক্লাইম্যাক্স হয়তো নেই তবু কিছু নেহাতই সাদামাঠা ঘটনাবলি কিংবা কোনও ঘটনা অবিহনেই কিছু অনুভূতি, কিছু কথার বাখানে কোনও বার্তা ছাড়াই এক একটি গল্প সেজে উঠেছে - বলা যায় খানিকটা ব্যতিক্রমী ধাঁচেই। ‘লীলাবতী’, ‘ফেক পোস্ট’, ‘অনমনীয়’ এবং ‘ভীমরুলের বাসা’কে সে অর্থে হয়তো গল্প বলাই যাবে না। আবার শেষ গল্প ‘ছাঁচ’ হয়ে রইল একটি অসমাপ্ত গল্প। ‘শেষ না হয়েও হইল শেষ’। এর বিপরীতে আবার ‘ছোটলোকের বড়লোক হওয়ার সিঁড়ি’, ‘সায়ন্তিকার চাওয়া পাওয়া’ এবং ‘সৎ মা’ যথেষ্ট ভালো গল্প এবং পাঠক মনে উদ্রেক করে যথার্থ পঠনসুখ। অলৌকিক গল্প ‘শিশুর কান্না’ একটি চমৎকার গল্প। তবে শেষটা ভিন্নতর হতেই পারত। বলা ভালো সুযোগ ছিল ভিন্ন আঙ্গিকে সমাপনের। তবে গল্পকার

প্রথম আদি তব শক্তি

Frailty - Thy name is Woman ......... W. Shakespeare. অথচ বাইরে ঘরে দশটি হাতে কী অপার সাবলীলতায় রেখেছ বেঁধে আপন আপন বিশ্ব। হে নারী, হে জননী, হে প্রিয়তমা সৃষ্টি থেকে অন্তিম শয্যা পর্যন্ত প্রতিটি পুরুষ তোমারই দান,   তুমিহীন এ বিশ্ব নিছকই নিষ্প্রাণ। আমি বলি - Power - Thy name is Woman.

শিশির সেনগুপ্তের স্বনির্বাচিত গল্প সংকলন - ‘প্রতিভাস’

“ভবতোষবাবু আমাদের পাড়াতেই থাকেন। নিঃসন্তান, খিটখিটে মেজাজের, বাচাল প্রকৃতির। আমরা জেঠু জেঠু বলেই ডাকি। ডাকি মানে পারতপক্ষে ডাকি না, নে হা ত মুখোমুখি হয়ে গেলে…। আর জেঠিমা ঝগড়ুটে, ফাটা বাঁশের মতো গলার স্বর, কেউ বা বলে দাঁ ড়কাকের মতো। শুনলেই মেজাজ বিগড়ে যায়… এই সাত সকালে ওখানেই নাকি যেতে হবে। বাবার হুকুম। প্রথমে বাবা কিন্তু দাদাকেই বলেছিল যেতে, কিন্তু দাদা কটাস করে না বলে দিল। বলল, তুমি কি আমার মরা মুখ দেখতে চাও ? আমি কি তোমার পর ? সৎ ছেলে ? তবে এত পয়সা খরচ করে পড়াতে গেলে কেন ? তারপর ছোটভাইকে বলতে গেলেই ফোঁস করে উঠে বলল, আমার তো দাড়ি-গোঁফই ওঠেনি। ওই বাড়ি থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পারব না। অগত্যা আমি মানে সবেধন নীলমণি। মেজ ছেলে যে। না ঘরকা, না ঘাটকা। গেলেই বা কী ? আমিও মুখের উপর না বলে দিতে পারতাম, পারতাম কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে, কিন্তু করিনি। কারণ আমি না গেলে যে বাবাকেই যেতে হয়। আর এই দুর্দিনের বাজারে বাবার যদি কিছু হয়ে যায় তো পুরো সংসারটাই যাবে। সরকারের দয়ায় যদি চাকরিও হয়, হবে তো দাদার। আমার তাতে কী ? তাই রাজি হয়ে যাই। গুটি গুটি চলি ওই মহাপুরুষের বাড়ির দিকে।” (গল্প - শ্রাদ্ধ সমাচার)। ..