Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2024

যে দিয়েছে মুখের ভাষা, যে দিয়েছে প্রাণ

(২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গুয়াহাটির ‘জনমত’ প্রতিষ্ঠান আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘স্বরলিপি সাংস্কৃতিক সংস্থা’ দ্বারা পরিবেশিত আলেখ্য। আলেখ্যপাঠ - সপ্তমিতা নাথ)।   ভাষা তো নয় কোনো বিদ্বেষবিষ ছুতো সাঁকো হয়ে ভাষা দুরকে করে আপন , ভাষাই তো গড়ে মিলনের শুভ পথ   ভাষা হতে পারে একতার দৃঢ় বন্ধন।   তবু কে বা কারা - অবোধ , অলস জেনেশুনে বিষ করে যায় পান , ভাষায় ভাষায় বিভেদের বীজ বোনে কানে কানে গায় বিদ্বেষবিষ গান।   সীমানা ছাড়িয়ে আমরা সবাই যুগে যুগে গাই তাদেরই জয়গান , বাঁচিয়ে রাখতে মায়ের ভাষা  হাসিমুখে যাঁরা জীবন করেছে দান।   যে দিয়েছে মুখের ভাষা যে দিয়েছে প্রাণ আমরা তাঁদের অমৃতের সন্তান।   আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। এমনই এক শীতের শেষে বসন্তের আগমনে রক্তের হোলিতে , বুলেটের ঘায়ে ভাষাজননীর আব্রু বাঁচাতে , মুখের ভাষার অধিকার আদায়ে যাঁরা প্রাণ করেছিল দান , আমরা কি তাঁদের ভুলতে পারি ? (গান) - আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ......   পৃথিবীর বুকে যে ভাষার সদাসতর্ক সেনানী তার অধিকার রক্ষার তাগিদে রক্ত ঝরিয়েছে বহুবার , এদেশে ওদেশে শহিদ হয়েছে বারবার , আমরা সেই বাংলাজননীর অমৃতের সন্তান। পৃথিবীর বুকে আ

দীপালিকায় জ্বালাও আলো

শরতের চলে যাওয়া মানেই এক উৎসবমুখরতার সমাপনে, শিউলির ম্রিয়মান সুবাসে, দাবদাহের অবসানে এক নতুন অনুভবের জন্ম। এ অনুভব কিছু পেতে চায় আঁজলা ভরে। অনাস্বাদিত কিছু মুহূর্তের খোঁজে চঞ্চল হয়ে ওঠে মন। ‘আরো আরো প্রভু আরো আরো, এবার যা করবার তা সারো সারো। আমি হারি কিম্বা তুমি হারো’। মন হারিয়ে যেতে চায় মহাকাশে, মাটির গন্ধে। ধীরে ধীরে হৈমন্তী আকাশ-মাটি এসে জায়গা করে নেয় ঝরা কাশের মন বনানীতে। ধানি রং মন মেঠো গন্ধে হয়ে ওঠে পাগলপারা। সৃষ্টির অপরূপ পালাবদলের মহিমায় সৃষ্টিকর্তার আভাস ফুটে ওঠে চরাচর জুড়ে । মনগগনে ধরা দেয় অবাক বিস্ময়, নয়ন মেলে দেখে তাঁর ভুবন জোড়া আসনখানি - ভুবন জোড়া আসনখানি - ১ ফুলের হরষ, ঝড়ের পরশ, ভুবনবীণার সকল সুরের মূর্ছনায় অলক্ষ্যে মনোবীণায় আসন পেতে বসেন ভুবনলক্ষ্মী। আরাধনার মনোবাসনা এসে জড়ো হয় অন্তরের অন্তঃস্থলে। বাইরে ঘরে মৃদু রবে ধ্বনিত হয় যেন কার পুনরাগমন ধ্বনি। ঘরে ঘরে বেজে ওঠে মঙ্গলশঙ্খ। বিষাদিত সাঁঝ পুলকিত হয়ে ওঠে প্রেম আরতির আকুল আহ্বানে। ভবনে ভবনে জ্বলে ওঠে আঁধার নাশের আলো, শস্যসুখের আকুল কামনায় ধানের খেতে জ্বলে ওঠে হেমন্তের প্রথম প্রদীপ - প্রথম প্রদীপ জ্বালো- ২ বিধাতার বরে নীরব

শরতে আজ কোন অতিথি

আবার এসেছে স্নিগ্ধ শরৎ শিউলি শিশিরে আলিঙ্গন , শারদ সুবাসে দোদুল হৃদয় ভোরের আমেজে উতলা মন । শরৎ মানেই কাশফুলে আর ঘাসফুলে যত আলাপ তান শরৎ মানেই শিমূল পলাশে কিচিরমিচির মধুর গান ।   নীলাকাশ জুড়ে বলাকার ঝাঁক পারাপার শুধু সাঁঝসকাল পেঁজাতুলো মেঘে পথে যেতে যেতে মুচকি হাসিতে টালমাটাল । শরৎ মানেই সুপ্রভাতের আধফোটা ফুল চয়নসুখ ভরে নিয়ে সাজি মণ্ডপ পানে বালিক বেলার সহাস মুখ ।   সকাল হতেই হিসেবনিকেশ শারদোৎসব নির্ঘন্ট মনাকাশ জুড়ে একখানি মুখ সবার উপরে নীলকণ্ঠ । শরৎ মানেই প্রান্তর জুড়ে কিশোরী ধানের উত্তরন শরৎ মানেই জল সহচরে হংসমিথুন সন্তরণ ।   পাহাড়ি ধারার মন্দ্রবিভোর কুলুকুলু পথে অবরোহন পথে যেতে যেতে বনানীর সাথে স্নিগ্ধ হাসিতে সম্বোধন । শরৎ মানেই নতুন সকাল নতুন বন্ধু বাহির ঘর শরৎ মানেই নব পত্রিকা নতুন গুচ্ছে কাশের চর ।   প্রিয় শ্রোতা দর্শকবৃন্দ , শরতের স্নিগ্ধ আগমনে আকাশে বাতাসে যেখানে দাবদাহের জ্বলন্ত সময় পেরিয়ে, অতিমারীর বিভীষিকাময় বছর পেরিয়ে আগমন ঘটেছে মৃদুমন্দ সুখযাপনের উন্মাদনা ঠিক তখনই আমরা এসেছি এই বৈঠকী আসরে অতিথি হয়ে। আমাদের একান্ত আপন স্বরলিপি পরিবারে এমন আমাদের নিত্য আসা যাওয়া। তবু আজ

সীমানা ছাড়িয়ে

“শরতে আজ কোন অতিথি, এলো প্রাণের পরে আনন্দ গান গা রে হৃদয়, আনন্দ গান গা রে।” বর্ষাশেষে এই শরতের স্নিগ্ধ, কোমল পরশে সত্যি আনন্দিত হয়ে ওঠে আমাদের মন, প্রাণ। আমাদের প্রাণের পরে উৎসবের আমেজ এসে অনাবিল মুগ্ধতায় ভরিয়ে দেয় যাপিত এই জীবন পথ। অথচ কেমন করে যে ধাপে ধাপে সীমানা ছাড়িয়ে মানুষ পেরিয়ে যায় এই জীবন পথ তা সে নিজেই জানে না। একটা সময় হৃদয়ে অনুভূত হয় শেষের সঙ্গীত। বেজে ওঠে জীবন পথের সালতামামি গান। প্রভাত থেকে অপরাহ্নের এই যাত্রাপথে কবিগুরুর বৈরাগ্যসাধনে মুক্তির অনীহার মধ্য দিয়ে ধ্বনিত হয় মরণের জয়গান - মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান। ‘অপরাহ্ন’ কবিতায় কবিগুরু লিখছেন - প্রভাতে যখন শঙ্খ উঠেছিল বাজি তোমার প্রাঙ্গণতলে , ভরি লয়ে সাজি চলেছিল নরনারী তোয়াগিয়া ঘর নবীন শিশিরসিক্ত গুঞ্জনমুখর স্নিগ্ধ বনপথ দিয়ে । আমি অন্যমনে সঘনপল্লবপুঞ্জ ছায়াকুঞ্জবনে ছিনু শুয়ে তৃণাস্তীর্ণ তরঙ্গীনিতীরে বিহঙ্গের কলগীতে , সুমন্দ সমীরে ।। - - - - - - - আজকের এই শিশিরসিক্ত ক্ষণে অপরাহ্নের ভাবনায় - সাজি ভরানোর শুভ সূচনায় গীত হোক -   আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে। বাঁশি , তোমায় দিয়ে যাব কাহার হাতে। তোমার বুকে বাজল ধ্বনি বি