Skip to main content

Posts

Showing posts from December, 2020

আমরা ও ওরা

  আমরা ও ওরা   আমরা - জমায়েতে বিদেশ থেকে রোগ বীজাণু ছড়াব - মাস্ক্ না পরে ভাইরাসকে আলিঙ্গনে জড়াব। আমরা - ডাক্তার নার্স দেখলে পরেই খুব করে থু ছিটাব পুলিশের গায় হিসির বোতল ফেলেই ছুটে পালাব। আমরা - হাসপাতালে সুযোগ পেলেই ডাক্তারদের পেটাব নার্সগুলোকে দেখলে পরেই অশ্লীলতায় ক্ষেপাব। আমরা - হুমড়ি খেয়ে করব বাজার না খেয়ে না মরব অসুখ নিয়েই থাকব ঘরে ধরতে এলে দৌড়াব। আমরা - বাইরে থেকে রাজ্যে এসে রাজার আদর চাইব তা না পেলে নাটক করে সরকারি ঘর ভাঙব। আমরা - তলে তলে আঁটব ফন্দি বিদ্রুপে বিষ ছড়াব শব্দে আলোয় সম্মানিত না করে রঙ চড়াব।   ওরা মরছে খেটে সবার জন্য ঘর সংসার গোল্লায় আজ দিনে রাতে মৃত্যু শিরে অবিশ্রান্ত কাজ আর কাজ। মাস্কটি পরে এক মিনিটেই সবাই যখন বেদম হয় ওরা তখন পি পি ই কিটে ঘন্টা জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়। লক ডাউনে সবাই যখন পথে পথে রোগ ছড়ায় ওরা তখন রোদে জলে   শৃঙ্খলারই পাঠ পড়ায়। অবুঝ মানুষ রাস্তা ঘাটে আবর্জনার স্তুপ গড়ে ওরা তখন হাসি মুখে সাফ করে সব রোদ , ঝড়ে। এমনি করে জগৎ জুড়ে চলছে যুদ্ধ অবিরাম পদ্যে তোমায় - হে সেনানী কৃতজ্ঞতা আর প্রণাম।

প্রত্যেকে আমরা পরের তরে

কে বলে আমরা কাছে নেই ? কাছে না থাকলে কি ১০০ কোটি মানুষের ঘরে একসাথে জ্বলে ওঠে প্রদীপ, বাঁজে শঙ্খ ঘন্টা ধ্বনি ? কাছে না থাকলে কি হাজার হাজার করোনা রোগী সুস্থ হয়ে ফিরতে পারতেন নিজের ঘরে ? কাছে না থাকলে কি দেশের সীমান্তে শত্রু রাষ্ট্রের নষ্টামিকে প্রতিহত করা যেত ? কাছে না থাকলে কি এত এত অপপ্রচারের পরেও আমরা একে অপরের স্বজন বন্ধু হয়ে থাকতে পারতাম ? কাছে আছি, পাশে আছি বলেই তো নিস্বার্থ ভাবে একে অপরের সৃষ্টিকে তুলে ধরছি সবার কাছে। কাছে আছি বলেই চেনা অচেনা সবার কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানাতে দ্বিধা হয় না এতটুকু। আজ খানিকটা গর্বঘন মুহূর্ত খুব ইচ্ছে করছে সবার সাথে ভাগ করে নিতে। বরাক উপত্যকা তথা এই ভুবনের স্বনামধন্য কবি কল্লোল চৌধুরী। আজ শিলচরের সুচেতনা লিটল ম্যাগাজিন ফেসবুক গ্রুপের একটি লাইভ অনুষ্ঠানে তিনি আমার একটি কবিতা পাঠ করলেন। কবি কল্লোল চৌধুরীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় গড়ে ওঠেনি এ যাবৎ। এমনকি আমার ফেসবুকেও তিনি নেই। অথচ - - - । ঠিক এমনি - দিন দশেক আগে গুরুচরণ কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক উত্তম রায় মহাশয়ও আমার অন্য দু'টি কবিতা পাঠ করেছিলেন। তাঁরা দু'জনকেই জানাই আমার সশ্রদ্ধ কৃত

শ্রীরামচন্দ্র ভগবান

মানুষ হাতের আঙুলে নানা ধরণের রত্নসম্বলিত আংটি পরে কেন ? কবচ মাদুলি তাগা, কবজিতে মন্ত্রঃপূত সুতো কেন পরে ? এ প্রশ্নের উত্তর দু'ভাগে দেওয়া যেতে পারে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা সাধারণত মানসিক ভাবে অতৃপ্ত এবং অসন্তুষ্ট থাকেন। খুব খুঁতখুঁতে ধরণের হয়ে থাকেন। ছোটখাটো ব্যাপারেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের 'আছে'টা যত বাড়তে থাকে সেই সুবাদে 'নেই'টাও বাড়তেই থাকে। আর এই সুযোগে রত্ন ব্যবসায়ী জ্যোতিষীদের খপ্পরে পড়ে একের পর এক রত্ন ধারণ করে আঙুলের শোভা বর্ধন করে যান। অন্যদিকে যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য কম তাঁরা অনেক কষ্টে একটি বা দু'টি রত্ন ধারণ করে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করে থাকেন। বলাই বাহুল্য এসব কিছুই কোনও কাজে আসে না বলে আমার ধারণা। এসব হচ্ছে সোজা ভাষায় মগজ ধোলাই এর ফল। দীন দরিদ্র যাঁরা তাঁদের ব্যাপারটা পুরোই ভিন্ন। রত্ন এবং জ্যোতিষী দুইই তাঁদের অধরা। সেক্ষেত্রে সেই কবচ মাদুলিই ভরসা। আরেকটি দিকও আছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে আধুনিক জীবন যাত্রায় অভ্যস্ত মানুষও একটা সময় যখন সব পথ রুদ্ধ হয়ে যায় তখন যাবতীয় আধুনিকতাকে বিসর্জন দিয়ে নিজের কিংবা প্রিয় জনের আশু বিপদকে দূ

ভ্যাকসিন

বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে উদ্বাস্তুর শহর রামকৃষ্ণ নগরে  কিরণকাকু ছিলেন এক মূর্তিমান বিভীষিকা। হালকা নীল রঙের শার্ট আর প্রায় বুক অবধি ওঠানো লং প্যান্ট। দীর্ঘদেহী সুঠাম গড়ন।তাঁকে দেখলেই অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। গলাটা যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেত। তাঁর আসার কারণটা না জানা অবধি বুকের ভেতর একটা হাতুড়ি পেটার শব্দ বেজে যেত এক নাগাড়ে। নজর থাকতো তাঁর হাতের ছোট্ট ব্যাগটির দিকে। যত গণ্ডগোল ওতেই।ওটি না খোলা অবধি সব ঠিকঠাক। ব্যাগটি খোলার জো যা করলেই চমকে উঠতো পিলে। ### নিজের বাঁ হাতের বাহুমূলে গোলাকার দু'টি দাগ দেখে আসছি - বুঝতে শিখেছি যবে থেকে। বড়দের কাছ থেকে পরবর্তীতে জানতে পেরেছি এগুলো বসন্তের টিকার দাগ। চারপাশের লোকজন সবার হাতেই এই দাগ। মানুষের হাতের এই দাগটাই স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ালো চোখে। এই দাগহীন হাত যেন কেমন বিসদৃশ লাগে। বসন্ত রোগের বিভীষিকায় এক সময় প্রচুর প্রাণহানি ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত এই টিকার আবিষ্কারে জীবন রক্ষা হয়েছে লক্ষ লক্ষ লোকের। এর পর এলো কলেরা। সে কী মড়ক। শুনেছি গ্রামের পর গ্রাম সাফ্ হয়ে গেছে। মড়া পোড়ানোর মতো জায়গা ছিল না। কী ভয়াবহ অবস্থা। ভাবলেও শিউরে ওঠে গা। শেষ পর্যন্ত

শেষের স্বপ্ন

শেষের স্বপ্ন   হে নুতন - আমার - ‘কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা’ আজ তুমিও তো পুরাতন। মনে আছে কি আর ? সেদিন নতুন আবেশে পাশেই আমি - দিবস দুই। আকালের সন্ধানে থাকা এতগুলো বছরে - সেদিনই তো বৃষ্টি নেমেছিল অঝোর ধারায় । বৃষ্টিভেজা শীত দুপুরে উত্তাপ শুধু উত্তাপ - সেই পথ যদি শেষ না হতো তবে কেমন হতো ?   এর পরেই তো প্রতি রাতে মৃগয়ার শেষে কিংবা সারা অবেলায় স্বপ্ন দেখার শুরু - একদিন প্রতিদিন। আবার একদিন এমনি করেই - সমাপনে দূর বহুদূরে, দৃষ্টি অগোচরে অঙ্গ শোভায় মানস যাপনে - তোমার অবস্থান। সুখে থেকো হে ক্ষণিকের প্রতিবিম্ব ।   - - - - পুনঃশ্চ , আবার হবেই দেখা  অন্যখানে , দিবাবসানে। বর্ষশেষের বিদায় ক্ষণে কিংবা আরেক নতুন সূর্যোদয়ে, নববর্ষে, নবীন হর্ষে - কে জানে কোন নতুন সুখের স্পর্শে।

পুজো ২০২০

সপ্তমী অনাদি অতীত ও অনন্ত ভবিষ্যৎ যত বড়োই হোক, তবু মানুষের কাছে এক মুহূর্তের বর্তমান তাহার চেয়ে ছোটো নয় - - - - - (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। আসলে এই এক মুহূর্তের বর্তমান নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকা। নাহলে আমাদের মতো আটপৌরে মানুষদের মরা বাঁচায় এই বিশাল ধরিত্রীর কী আসে যায় ? পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার গড়ে 0.1% মানুষই শুধু জীবনে কিছু একটা ছাপ রেখে যেতে সমর্থ হোন। 99.9% এর মধ্যে থেকে আমরা কোনও ছাপটাপ রাখি না, বরঞ্চ ছাপোষা হয়েই কাটিয়ে দেই আমাদের জীবন জোড়া বিন্দাস বর্তমান। জীবনের এক একটা সময়কালের অনুভবের গ্রাফটি বড়ই বিচিত্র। যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে বয়সোজনিত অভিজ্ঞতার ঝুলিটিও ভরে উঠতে থাকে খুব দ্রুত। এক কুড়ি বয়স হওয়ার পর নিজেই খুঁজে পেতে বের করেছিলাম 0 বয়সের মাহেন্দ্র ক্ষণটি। দুই কুড়ি তে নিজের চাইতে নির্ভরশীল মানুষগুলোর চিন্তা এসে জড়িয়ে ধরেছিল আষ্টেপৃষ্ঠে। তিন কুড়ির বেলাটি যতই এগোচ্ছে ততই যেন আরেকটি 0-এর দিশায় পুষ্ট হচ্ছে জীবনবোধ। এবারের ব্যতিক্রমী পুজোয় যেখানে সামাজিক বিধি নিষেধের কড়াকড়ি সেখানে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবেই এক ব্যতিক্রমী জন্মদিন এসে সবকিছু যেন কেমন ওলোটপালট করে দিল।

বরাক ২০২০ - ৩য়

এবারের স্বল্পকালীন বরাক ভ্রমণের প্রথম দিনে হাইলাকান্দি জেলার দ্বিতীয় শহর লালাবাজারে মুখোমুখি দুই 'প্রিয়'র। দীর্ঘ কয়েক দশক পর সান্ধ্য বাজারে দেখা পেলাম শনবিলের সেই বিশেষ প্রজাতির মাছের। 'ভুজিয়া মাছ' ছাড়া দ্বিতীয় কোনও নাম আমার জানা নেই। জীবনের সব চাইতে কম খরচে কেনা সুস্বাদু মাছ - ভুজিয়া। 25 পয়সার মাছ দিয়ে পাঁচ জনের সংসারে দুবেলার খোরাক। (জানি অনেকেই গুলবাজ ভাববেন। কিন্তু এটাই সত্যি)। শনবিলের ফেরিওয়ালাদের টুকরিভর্তি ভুজিয়া মাছের দিকে 'কিশোর আমি'র অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টির পুনরাবৃত্তিতে ভুজিয়া হলো ক্যামেরাবন্দি। ছবিতে ভুজিয়ার সঙ্গে বহু পরিচিত ট্যাংরা মাছও আছে। শেষ সন্ধ্যায় পূর্ব নির্ধারিত কথামতো চাচক্রে মিলিত হলাম এ অঞ্চলের বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষণা ধর্মী ছোট পত্রিকা 'প্রবাহ'- এর সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথ মহাশয়ের সঙ্গে। সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় শুধুমাত্র সাহিত্যপ্রীতি ও সাহিত্যের দায়বদ্ধতায় 'প্রবাহ'কে অবলম্বন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক সর্বজন পরিচিত ব্যক্তি হিসেবে। কথায় কথায় জানালেন তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মসূচি। গভীর চিন্তাপ্রসূত এই সব ভবিষ্য

বরাক ২০২০ - ১ম

গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ আমার মন ভুলায় রে। ওরে কার পানে মন হাত বাড়িয়ে লুটিয়ে যায় ধুলায় রে॥ ও যে আমায় ঘরের বাহির করে, পায়ে-পায়ে পায়ে ধরে-- ও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে যায় রে কোন্‌ চুলায় রে। ও যে কোন্‌ বাঁকে কী ধন দেখাবে, কোন্‌খানে কী দায় ঠেকাবে-- কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে ভেবেই না কুলায় রে॥ গরমের রেশ - যেন 'শেষ হইয়াও হইল না শেষ'। ওদিকে সন্ধে হতেই হালকা হিমের আমেজ। এই আমেজে তখনই তো হয় সোনায় সোহাগা যখন ছেলেবেলার একদল বন্ধু মিলে চলে হৈ হৈ আড্ডা। চায়ের কাপে জীবন চর্চা। আহা কোথা দিয়ে যে চার চারটি ঘন্টা বেমালুম খতম - টেরই পেলাম না। মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ-- ভুবন জুড়ে রইল লেগে আনন্দ-আবেশ ॥ দিনান্তের এই এক কোনাতে সন্ধ্যামেঘের শেষ সোনাতে মন যে আমার গুঞ্জরিছে কোথায় নিরুদ্দেশ ॥ সায়ন্তনের ক্লান্ত ফুলের গন্ধ হাওয়ার 'পরে অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে সকল অঙ্গ ভরে। এই গোধুলির ধূসরিমায় শ্যামল ধরার সীমায় সীমায় শুনি বনে বনান্তরে অসীম গানের রেশ ॥ অসীম গানের রেশ নিয়েই নিগমানন্দ সুইটস্ এর আড্ডাঘর থেকে বেরিয়ে আট বন্ধু যে যার আস্তানায়। আমার গন্তব্য আমার জন

বরাক ২০২০ - ২য়

লিখেছিলাম - কবির শহর শিলচর। স্বভাবতই এবারের একদিবসীয় শিলচর ম্যাচের প্রথম অভারেই অর্থাৎ সকালেই আমার সারাক্ষণের ছায়াসঙ্গী তথা শহর শিলচরের জনপ্রিয় সামাজিক ব্যক্তি পীযূষ দেবরায় কে সঙ্গে করে কবি সান্নিধ্যে শুরু হলো দিনভর দৌড়ঝাঁপ। বিশিষ্ট কবি সুশান্ত ভট্টাচার্যের আবাসগৃহটিই আমার কাছে নস্টালজিক। গুরুচরণ কলেজে উঠে যাওয়ার পথের মুখেই ছবির মতো সাজানো কাব্যনীড়। আমার কলেজ জীবনের 'আসা যাওয়ার পথের ধারে' এই ঘরের সামনে দিয়ে ছিল নিত্যদিনের পথ মাড়ানো। মেন গেট দিয়ে ঢুকতেই উঠোন ভরা শেষ শরতের ঝরা শিউলি পেরিয়ে পোর্টিকোর সদর দরজায় সদাহাস্য চিরনবীন অগ্রজকবি সুশান্ত-দা।পম্পা বৌদির বদান্যতায় চা মিষ্টি সহযোগে জম্পেশ হলো আড্ডা। সুশান্ত-দা দিলেন তাঁর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ BLUE HORIZON এবং ছিমছাম ছোট পত্রিকা শারদীয়া বালার্ক। এক ঘন্টার জমজমাট আড্ডা শেষে বাইরে বেরিয়েই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সরাসরি মুখোমুখি আত্মীয়সম তরুণ কবি নীলাদ্রি ভট্টাচার্যর সঙ্গে। আবার একপ্রস্থ আলোচনা। এই মুহূর্তে আমার কাছে নীলাদ্রি হলো এ অঞ্চলের সবচাইতে সফল কবি যার কবিতার শৈলী আমাকে আকৃষ্ট করে নিরন্তর। ন

জন্মদিন

এই শীতের রাতে জন্ম। মায়ের না জানি কত কষ্ট। প্রায় বছর জোড়া শারীরিক কষ্ট। তার পর নবজাতক/নবজাতিকাকে মূর্তিমান বিভীষিকারূপী শীতের হাত থেকে রক্ষা করা এবং পাশাপাশি নিজেকেও বাঁচিয়ে রাখা। এমন জীবন মরণ কষ্ট স্বীকার করেই জগৎ সংসারকে রক্ষা করে চলেছে নারী জাতি। সেদিনের সেই 'মা'-এর কষ্টের ফলে আমার অজান্তেই বহু দূরে বসে লিখা হয়েছিল আমারও জীবনগাথা। সেই সূত্র ধরেই আজকের এই দিন। আমার জীবন সঙ্গিনীও আজ একই ধারায় চিরন্তনী এক স্ত্রী এবং একটি সন্তানের মা। আমার জীবনটাকে একাধারে ভালোবাসার মোহাবেশে আর সহজ ছকে জীবন্ত করে রেখেছে যে নারী - আজকের এই বিশেষ দিনে তাঁর প্রতি জন্মদিনের শুধু এই এক বিশেষ উপহার। আমার কাছে এ সোনা গয়নার চাইতে কম কিছু নয়। ### ### ### এমনও আসে কিছু দিন থাকে না সে চোখের কাছাকাছি তবু থাকে অবাক মানস নয়নে - সবটুকু চরাচর জুড়ে। দৃষ্টি বিভ্রমে - সব পথিকের আদল জুড়ে - সে, অবিকল যেন স্বপন সঙ্গিনী। এক একটা পল বিশেষ হয়ে আসে শুধুই 'সে' যখন - 'তোমাকে চাই' 'এর বাইরে জগৎ আছে' - আমি মানি না। আজ বাঁকা চাঁদের জ্যোৎস্না মেখে সবাই যখন জোর মেতেছে বদ্ধ ঘরে আমি তখন মেঘ পাহা

সান্ধ্য আলাপন

সান্ধ্য আলাপন   আবার এলো হারানো সেই ছন্নছাড়া   বর্ষ শেষের খেই হারানো ক্ষণ ছবি থেকে শুরু হয়ে ছবিতেই সমাপন। মন আকাশে উছল নদী নতুন অতিথি   এমন করে সান্ধ্য সাহচর্যে আগমন অবাক যত আলাদিনের ইচ্ছেপূরণ।   সৃষ্টি বেলায় কোন খেয়ালের বশে পাহাড়গুলো সাজায় থরে থরে নতুন দিনে সেই সবুজে আকুল মন।   মন্দ ভালোর বাছবিচারের নেই বালাই   পাহাড় পথেই নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ   সেই নদীতেই ছবি হয়ে সাজাই বিসর্জন। আবারও সেই আগের মতোই -   নতুন করে হোক না আবাহন। হোক না আবার সাঁঝ সকালে বোলতানের ওই অফুরান আলাপন।

খুঁজে ফিরি বাতিঘর

খুঁজে ফিরি বাতিঘর     আজও আবার আগের মতো খুঁজে ফিরি বাতিঘর - তুমি জানো না। পলকে পলকে তাকাই বারে বারে গরজে গরজে আসি ফিরে ইথারে নতুন সম্বোধন - তুমি তা মানো না। আমি এমনি করেই চাইব তোমায় হাওয়াই ফানুস ওড়াবো আজীবন। ইথারে তোমার চমক আমার শিহরণ আমার অপ্রাপ্তির তামাম সম্পূরণ। আমি শেষের দিনেও থাকবো চেয়ে পথ যে পথ দিয়ে তোমার আসা যাওয়া অলীক স্বপ্ন বেলার সাত কাহন। বিকেল বেলার কোন যে বালাই ক্ষণ কেন কাঁদে এ পরাণ ভোরাই কুসুম তানে নিষেধের বেড়াজালে , দিনমান ব্যবধানে অবৈধ অমোঘ টানে ইতিউতি - বাতিঘর ,   আমার খেয়ালি মনের ঝঙ্কৃত তারানা -   তোমাকে নিয়ে রচি যে প্রেমের সৌধ   অপার বিশ্বে জানি শুধু আমি ,   অপর বিশ্বে - তুমিও তা জানো না।

এমন দিনটি আসুক ফিরে ফিরে

এমন দিনটি আসুক ফিরে ফিরে   আজ বাঁকা চাঁদের জ্যোৎস্না মেখে সবাই যখন ভাসছে প্রেমের সুখস্বপনে আমি তখন মেঘ পাহাড়ে নিঝুম রাতে স্বপ্নে সাজাই অলীক কল্পনা।   আজ অতল থেকে ঘুমের ঘোরে   গুমরে ওঠে মিলন তান। এমন দিনটি আসুক ফিরে ফিরে   এমনি করে বর্ষ শুরুর বেলায়   এক দিন তো মিলবো আবার   অন্য কোনো জীবন নদীর তীরে জুম পাহাড়ি নতুন পথের ধারে।   আবার তবে রইব চেয়ে   গভীর বনানীতে - একই ছাতার তলায়   বৃষ্টিভেজা এক দুপুরে -   গরম চা-এর চুমুক সাথে চুমুর দূরত্বে   ফারাক বিহীন অবাক কাছাকাছি।

নতুন পথে তাঁরেই স্মরণ

নতুন পথে তাঁরেই স্মরণ   এমনি হয়তো চলেই যেতো দিন সুপ্রভাতে চেনা মুখের স্বস্তি সুখ, তোড়জোড়হীন নিত্যকর্মে দিনযাপন, আবার, সন্ধে হলেই উদভ্রান্ত ভবিষ্যৎ, মনন জুড়ে নতুন পথের হাল হকিকত। বাড়লে বেলা চড়ে পারদ অস্বস্তির এমনি করে আলসেমিতে জড়িয়ে, বাঁধে বাসা অসময়ে সর্বনাশা আগন্তুক। মাঝে মাঝে ওপাশ থেকে দৃষ্টি কিছু জাগায় ব্যথা তাচ্ছিল্যের সন্দেহে। এমনি করে যাবে কি দিন - প্রশ্নে ভাসি, দোটানার সব দ্বিপ্রহরে শুধুই সমর্পণ একলা একা প্রশ্ন সাজাই - উত্তরও, ভরসা যোগান যিনি - শুধুই তাঁরে স্মরণ। ### এবার আবার নতুন করে নতুন পথে নতুন করে সাজাই আবার দিনগুলি, আবারো এক দোলাচলে দিন যাপন আপন হারা - তাঁরই কথায় পথ চলি। সুজন সাথে আবার শুরু হারানো পল স্বজন হারা হলেও তো কেতায় বাঁচা, সেই যে ছিল শেষ বিকেলের নতুন খেলা। কোন পথে যে আছে আমার শান্তি সুখ জানি না তা, জানি শুধু সুখেই অসুখ, মনের অসুখ সে তো শুধুই একলা আমার। জীবনযাত্রা - সে তো শুধু বাঁধা ছকের পথ কেউ ছাড়ে ঘর সকালে কেউ দিনের শেষে জগৎ জানে সুখী আমি - শেষ কথা সবার সুখে আমি সুখী শুধুই তাঁরে স্মরণ।

জীবন নদীর তান

  জীবন নদীর তান নদী এমনি ধারায় আসে ফিরে দ্রষ্টা নয়ন জুড়ে, জীবন এমনি করেই ফেরে বাঁকে বাঁকে কল্পনা অগোচরে। সেই নদীটি বইছে আগেরই মতো জীবন নদী পাল্টে গেছে কত। তবুও কদাপি কখনো আহ্বান রবে বাজে ফিরতি রেলা বাজে সেতার, সানাই, বেহালা। সেই যে আগের ঘরফেরতা বাখান ত্রস্ত দিনের কালবেলা শেষে এলো ফিরে আবার যে সেই দিন, সেই সে পথের চেনা মুখের সাথী সেই নদীরই কূলটি ঘেঁষে আজ আবার লিখে আবোলতাবোল গান। আমি তো বলিনি প্রথম যাত্রা শেষে 'আবার আসিব ফিরে' ধানশিরি জনপদে কিংবা আবার সুগভীর বনানীতে, তবুও তো এলো অজানা পথে আজ জীবন নদীর হারিয়ে যাওয়া বন্দনা কলতান, ফিরতি বেলার মনমাতানো গান।