Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2021

‘প্রথম পঞ্চাশ’ - কবিতায় গ্রন্থিত সমকাল

‘প্রথম পঞ্চাশ’ - কবিতায় গ্রন্থিত সমকাল   ‘শতাব্দীর মধ্যরাত্রিতে মানুষের মনুষ্যত্ব এখন গভীর নিদ্রায়। দিকে দিকে ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। মহাসড়ক থেকে প্রতিটি গলির আনাচে কানাচে শোনা যায় জন্তু জানোয়ারের আস্ফালন। সময় বুঝে প্রকৃতি দীর্ঘদিনের নির্যাতনের প্রতিশোধে ব্যস্ত। সমাজের বুক জুড়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে অসংখ্য মাকড়সা। অসহায় গান্ধারীর বুক কুরে কুরে খেয়ে বেড়ে উঠছে ওরা। যারা অভাগা তারা ভোগ বিলাসের বলি। রাত্রি ক্রমে গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। সময়ের এই সংকটে কবির কবিতা কখনো কাব্যিক কল্পনা হতে পারে না, সামাজিক চালচিত্রের সে প্রতিবিম্ব মাত্র। ফুল, লতা, পাতা নিছকই বিলাসিতা। রক্তাক্ত হৃদয় নিংড়ানো লাল মসি কলমের ঠোঁটে বিষাক্ত ফেনার জন্ম দিচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। প্রতিবন্ধী শিশুদের চাপা আর্তনাদ প্রতিধ্বনিত হয় সমাজের শব থেকে শবান্তর’। - এভাবেই কবি সুপ্রদীপ দত্তরায় তাঁর আত্মকথায় অসামান্য বক্তব্যের মাধ্যমে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম পঞ্চাশ’-এর খেইটি ধরিয়ে দিলেন প্রথম প্রচ্ছদের ভেতরের পাতায়। সামাজিক মাধ্যমে সুপ্রদীপ দত্তরায় বহুল পরিচিত কবি। পরিচিত এবং জনপ্রিয়ও বটে। সেই সূত্রে তাঁর প্রথম কাব্যগ

একলা বৈশাখ

  একলা বৈশাখ ১লা মানে পয়লা হবে, জানতাম তা। একদিন যে সত্যি হবে পয়লা মানে একলা থাকা ভাবিনি তা। সময়ের তো অবিশ্রান্ত পথ চলা বিশ্ব জোড়া টালমাটালেও ফিরে আসা নিক্তি ধরে, ইচ্ছে হয় আজ বলি তারে - এই অশুভ যাপন বেলায় নাই বা এলে হে নূতন, আর ক'টা দিন পরেই নাহয় এসো। এখন থেকে ফি বছরে একঘেয়েমি কথা পয়লাতে যে একলা থাকার বাধ্যবাধকতা। এসেছে আজ নতুন বর্ষ অকাল বেলায় গরহাজির আবারও সব আনন্দ আর হর্ষ। মন ভালো নেই আজ পৃথিবীর চূর্ণ দম্ভ বিশ্ব মানব জাতির, মিথ্যে যত বড়াই, যত ঠুনকো অহংকার। পাপবিদ্ধ কৃতকর্মের গুনছি মাশুল আজ পদে পদে দিচ্ছি শুধু ভুলের খেসারত। চুলোয় রেখে সমাজ নীতি আপনজনকে দূরে ঠেলে আঁকড়েছি সব রাজার নীতি। সংস্কারকে ঠাট্টা করে উঠছি মেতে নূতন নূতন খেলায়। এবার শুধু হাহাকারে করছি প্রায়শ্চিত্ত, তাও বলি নববর্ষে নতুন আশায় - আসুক ফিরে হারানো সেই দিন, শুদ্ধ হোক এ মন, উঠুক ভরে চিত্ত।

দেশটা

  দেশটা   একটুখানি বসবো যে তোর পাশে সেই সুখ তো নেই এ কপালে। তীরে বসে দেখবো তরী আসা যাওয়ার রোজ পারানি , নীরবে তোর বয়ে চলা - একলা পথে ইচ্ছে আমার সাক্ষী হয়ে থাকবো বসে। রোজ সকালে সোনারোদের সঙ্গসুখে অমন যে তুই স্মিতহাস্যে থাকিস মজে সাধ কি আমার হয় না ক্ষণিক বসি , একটি সকাল তোর হাসিতেই হাসি , দিনের শেষে পাহাড় পথে এসে জোছনা এসে মিলবে সবার শেষে। আমার তো ভাই যা আছে তা , সবাই জানে সোজাসাপটা। ছোট্ট ছড়া সরল রেখায় চলে টিলার নিচের পুকুর সাকুল্যে - ওতেই আমি তৃপ্ত মানুষটা ,   এই তো আমার ভালোবাসার দেশটা।

সুনামগঞ্জের বদনাম

সুনামগঞ্জের বদনাম   কত বার শোনা সেই নাম , ছিলেন তাঁরা যতদিন বেঁচে কথায় কথায় উঠতো গল্পগাথায়। মা আমার ছিলেন নাকি বড্ড আদুরে বেড়ে ওঠা সেইখানে - সুনামগঞ্জে। আমি তো দেখিনি কখনো সেই জনপদ তবু যেন কতই কাছের - আমার মায়ের শৈশব। আজ আবার ইথার বেয়ে আসছে ভেসে দীর্ণ করে বুক সুনাম শেষে শুধুই যে বদনাম। আমার মায়ের প্রতিবেশীর বংশধর যাঁরা - শিকার তাঁরা নিত্য অত্যাচারের। মান সম্ভ্রম ধন ও প্রাণ রইল না আর কিছুই। আমরা কিন্তু আছি যে বিন্দাস্ খাওয়া দাওয়া , আড্ডাবাজি , নিত্যদিনই মারছি রাজা উজির। দোল ফাগুনের রঙ লাগিয়ে গায় স্ট্যাটাস লাগাই ফুল বাগিচার ছবি। রামধনুকে ' রংধনু ' আর বুকের দুঃখ উথলে ওঠে দেশকে বলি ' দ্যাশ ' । সেই দ্যাশ নিয়ে আবার নির্বাক নিশ্চুপ হারিয়ে গেছে প্রতিবাদের মুখ। প্রতিবাদ করলে তো রইব না আর ধর্ম নিরপেক্ষ বুঝি না এ কেমন নিরপেক্ষতা। ঘরের কোণে রচি ঠাকুরঘর নিভৃতে সাজি পূজার উপচার ফি বছরে উৎসবে পরবে দু ' হাত ঠেকাই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। আপনজনের শেষের শেষে ছুটে চলি শ্মশানে - অথচ হিন্দু আমি নৈব নৈব চ। বলতে হয় না এমন কথা উচ্চারণে হায় , হারিয়ে যাবে নিরপেক্ষতা। ধিক্কার দেই ধ

প্রবাহ - ৩৩/২

অনুবাদ সাহিত্যের সম্ভার নিয়ে প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা ‘প্রবাহ’ প্রকাশিত হলো গবেষণাধর্মী, সমৃদ্ধ সাহিত্য পত্রিকা ‘প্রবাহ’। প্রচ্ছদে লিখা আছে যদিও - ‘লিটল ম্যাগাজিন’ অর্থাৎ ছোট পত্রিকা, কিন্তু একটি আড়াইশো পৃষ্ঠার পত্রিকা কী করে লিটল হয় , কিংবা লিটল বা ছোট হতে পারে কি না সে আলোচনার দায় বোদ্ধাদের জন্য তুলে রাখা হলো।  বর্ষ ৩৩, সংখ্যা দুই। অর্থাৎ ‘প্রবাহ’ এখন যথেষ্ট পরিণত। এবং একের পর এক সংখ্যায় সেই ছাপটুকু চূড়ান্ত পেশাদারিত্বে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন বহু যুদ্ধের ঘোড়া -  সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথ। হাইলাকান্দি জেলার ক্ষুদ্র শহর লালাবাজারের মতো জায়গায় থেকে একের পর এক অসাধ্য সাধন করে চলেছেন এই অক্লান্ত সাহিত্যিক তথা সফল সম্পাদক।  এবারের সংখ্যার বিষয় - অনুবাদ সাহিত্য। অনুবাদ অর্থাৎ Translation বা Transmission. মানুষ আজীবন তো এই অনুবাদের মাধ্যমেই তার যাবতীয় বোধকে আহরণ করে চলেছে। মায়ের মুখের ভাষাকে নিজের ভাবনায় অনুবাদ করেই তো শুরু পথ চলা। সাহিত্যের এক অবিচ্ছেদ্য ধারা এই অনুবাদ সাহিত্যকে নিয়ে ‘প্রবাহ’-এর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অভিনন্দনযোগ্য। অনুবাদ নিয়ে ৪টি প্রবন্ধ এবং ২১টি অনুবাদ গল্প, একগুচ্ছ অনুবাদ কবি