Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2021

চেরি ফুল ও শেষের কবিতা

কত কত দিন পর - সেই ঝিলের জল , কাঠের সেতু জানা অজানা ফুলের বাহার। সেই পাইন আর দেবদারুর ছায়া মাড়ানো মায়াবী পথ। সেই মলমল ঘাসে আমেজ মাখা রোদ গাঁদা , ডালিয়ার আকাশ ভরা চেরিফুলের রঙিন ছাতা , সেই মুহুর্মুহু শেষের কবিতার স্মৃতি। গেছে যে দিন - একেবারেই কি গেছে ? হয়তো তাই - হয়তো নয় , আকাশছোঁয়া ইউকেলিপটাসের ছায়ায় একফালি পথ ধরে বৃষ্টিভেজা সেই সন্ধ্যা ভিন দুই হাতে একই ছাতা ধরা। হয়তো হারিয়ে গেছে সেই পথ তবু হারায়নি তো স্মৃতির সরণি। হারিয়ে গেছে কিছু মুখ , কিছু অবয়ব তবু হারায়নি তো সেই চোখ যে চোখে স্পষ্ট ধরা দিয়েছিল কিছু দায় , কিছু বিস্ময় আর কিছু বুক ধুকপুক ভালোবাসা - শেষের কবিতাও হয় না তো শেষ।

সময়ের ক্যানভাস - 'সময়ে অসময়ে'

তুমি ভাবছো কবিতা কেন লিখি ? লিখে লিখেই সময়টাকে ধরি । তুমি ভাবছো এই সময়ে গান ? আমি চাই যে গানের মধ্যেই ভাসিয়ে দিতে প্রাণ । - - - - - - - - - তোমার জন্যই কবিতা লিখতে হয় । বন্ধু , তোমার জন্য গানটি গাইতে হয় । (কবিতা - কেন ??) এই সময়টাকে বড্ড যতনে ধরে রাখার কবিতা সংকলন - ‘সময়ে অসময়ে’। কবি সুপ্রদীপ দত্তরায়ের দ্বিতীয় কবিতা সংকলন। প্রথম সংকলন ‘প্রথম পঞ্চাশ’-এর পর স্বল্প দিনের মধ্যেই প্রকাশিত হলো তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটি। মনের অতলে লুকিয়ে থাকা অজস্র ভাবনা, সমাজের পরতে পরতে যত অনিয়ম, অরাজকতা সেই সব দুঃখবোধকে সমক্ষে এনে হৃদয়টাকে হালকা করার তাগিদে কবির মননে জন্ম নেয় যত কবিতা, যত কথা - তারই স্পষ্ট প্রকাশ এই সংকলন। অনেকটাই ‘প্রথম পঞ্চাশ’-এর অনুরণন পরিলক্ষিত হয় এখানেও। তবু, কবির কবিতা এক রোখে চলে না। বিস্তৃত তার পথ চলা। ভাবনার পরিধি সুবিশাল, তাই অতৃপ্তির ক্ষোভকে উগরে দেওয়ার বাইরেও , হয়তো নিজেরই অজান্তে, মূর্ত হয়ে ওঠে ভাবনার বৈচিত্র। তাই তো কবিতায় ভেসে আসে প্রেম, ভালোবাসা, করোনার ভয়াবহতার চিত্র, নদী, নারী, কল্পনা। একজন সফল কবি হয়ে ওঠার যাবতীয় রসদ। কিছু কবিতা যেন সজোরে আঘাত করে পাঠকের সর্বাঙ্গ জুড়ে। স্

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে - দ্বিভাষিক কাব্যগ্রন্থ ‘অনুরণন’

কবি রঘুনন্দন ভট্টাচার্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ অনুরণন ’ প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি । দৃষ্টিনন্দন বাঁধাই , প্রচ্ছদ - গ্রন্থপাঠের স্পৃহা বাড়িয়ে দেয় স্বভাবতই । এবং পাঠশেষের প্রতিক্রিয়াটিও অনায়াসে এক কথায় বলে নেওয়া যায় ভূমিকাতেই। চাকচিক্যমণ্ডিত বহিরঙ্গের মতোই অন্তরঙ্গেও রঘুনন্দন পারদর্শিতা দেখিয়েছেন সাবলীল উচ্চারণে। সহজ সুরে গ্রন্থিত করেছেন যাবতীয় কথা ও বার্তা। বাস্তব জীবনে আজকের কর্মমুখর বাতাবরণে কবিতা লিখা ও তার গ্রন্থনা যে কত বড় বালাই সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই বালাইকে যে উন্মাদনায় সম্পাদন করা যায় তারই নাম গরজ। অন্তরের এই গরজটুকুই সম্পূর্ণ এই গ্রন্থের নির্যাস। সময়ের কালক্রমে যে ভাবনার পাহাড় জমে উঠেছিল মনের গহীনে তাকেই সহজ বোধে গ্রন্থিত করে পাঠকের দরবারে হাজির করেছেন রঘুনন্দন। কবিতার কবিতাময়তাকে তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছাপিয়ে গেছে ভাবনার সপাট উচ্চারণ। মোট ১১২ পৃষ্ঠার এই জমজমাট দু’মলাটের মধ্যে সংকলিত হয়েছে ৬০টি বাংলা কবিতা এবং ১৫টি ইংরেজি কবিতা। জীবনবোধকে সরল কথনে লিপিবদ্ধ করেছেন নিখুঁত ভাবে। অধিকাংশ কবিতায়ই যেন উচ্চারিত হয়েছে এক না পাওয়ার বেদনা, এক অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা। বস্তুতঃ জীবনকে স্

গোছালো ছোট পত্রিকা - ‘মানবী, পূজা সংখ্যা’

মানবী পত্রিকা আমাকে যেভাবে ভাবালো ....... বরাক উপত্যকা থেকে যে বাংলা ছোট পত্রিকাগুলো বেরোয় নিয়মিত তার মধ্যে ‘মানবী’ উল্লেখযোগ্য । উল্লেখযোগ্য তার বৈচিত্রে , তার সম্পাদনার কারিকুরিতে । সাহিত্য পথের নিত্যযাত্রী চারজন সম্পাদকের পালাক্রমে সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘মানবী’। ২০২১ (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর), পঞ্চদশ বর্ষ ২য় ও ৩য় যৌথ সংখ্যাটি প্রকাশিত হলো পূজা সংখ্যা হিসেবে। এবারের সম্পাদক কবি ও গল্পকার দোলনচাঁপা দাসপাল। কী নেই এ সংখ্যায় ? উত্তর একটাই - সব আছে। আছে ‘উনিশের আলো’তে একটি নিবন্ধ এবং চারটি কবিতা, আছে একটি অণুগল্প, ‘কবিতার ভালোবাসায়’ শিরোনামে আছে দশটি কবিতা। ‘গল্পের বৈঠা হাতে’ শিরোনামে আছে দশটি ছোটগল্প, আছে একটি দীর্ঘ কবিতা। এবং সব শেষে, শেষ পাতে মিষ্টিমুখের মতো আছে ‘অনুভবের আকাশে’ শিরোনামে কিছু বইপত্রের আলোচনাও। সব মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আয়োজন। এবং যে কথাটি না লিখলেই নয় তা হলো এই - সচরাচর বিভিন্ন কারণে যখন বিভিন্ন ছোট পত্রিকায় কিছু লেখার মানের ক্ষেত্রে আপোষ করতে হয়, ‘মানবী’ সেখানে ব্যতিক্রমী। প্রতিটি লেখাই সুচিন্তিত এবং সুচয়িত। গদ্য হোক কিংবা পদ্য - প্রতিটি লেখার গুণগত মান বজায় থেকেছে ব

নবরূপে - ‘নবপর্যায় মাজুলি’

“বিশ বছর, দীর্ঘ সময়। এই অবকাশে পরিবর্তন অবধারিত। সেদিনের তরুণ কবি, লেখক আজ পরিণত, প্রতিষ্ঠিতও বটে। সময়ের ছোঁয়া ‘মাজুলি’র গায়ে লাগেনি, সে অনুপস্থিত সাহিত্যের জোয়ারে। ফিরে দেখা নয়, অনুধাবনও নয়। নতুন করে নতুন আর পুরনোর মধ্যে সংযোগ গড়তেই ফিরে আসা।” সম্পাদকীয়র শুরুতেই এভাবে একটি ইতিহাসকে বর্তমানের প্রেক্ষাপটে পাঠকের দরবারে তুলে ধরেছেন পোড় খাওয়া সম্পাদক তথা কবি দিলীপ দাস। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমৃদ্ধ ছোট পত্রিকা ‘মাজুলি’র গৌরবোজ্জ্বল দিনের শেষে দীর্ঘ বিরতিকে কাটিয়ে নব উদ্যোমে ফিরে এলো ‘নবপর্যায় মাজুলি’ - প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা - তাঁরই হাত ধরে। সংক্ষিপ্ত সম্পাদকীয়র শেষ লাইনে সামগ্রিক ভাবে ফুটে উঠেছে এই গরজের ছোঁয়া - “অবশেষে, পাঠক, একটি বিনীত অনুরোধ, একটি লিটল ম্যাগ কিনে উত্তর-পূর্বে যে লিটল ম্যাগ বৃক্ষ রোপিত হয়েছিল তার গোড়ায় জলদান করুন।” ঝকঝকে ছাপাই আর প্রায় একশো ভাগ নির্ভুল বানান সমৃ দ্ধ পত্রিকায় দীপঙ্কর কর-এর মানানসই প্রচ্ছদ যেন ১০৭ পৃষ্ঠার এই পত্রিকাটিকে তুলে ধরেছে এক অনতিক্রম্য উচ্চতায়। এই উচ্চতাকে ধরে রেখেছে ভেতরের উপকরণ। সুচিন্তিত, সুচয়িত সব লেখাগুলো না পড়লে পিছিয়ে পড়তে হতো। শুরুতেই চ

কলকাতায় উন্মোচিত বৃষ্টিকথা

অবশেষে ‘ বৃষ্টিকথা ’ র ঢেউ আছড়ে পড়লো সাহিত্য সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতায়ও। কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অব কালচারের তুরীয়ানন্দ হলে ১৩ই নভেম্বর ২০২১ তারিখে ISISAR (International Society for Intercultural Studies And Research), কলকাতা আয়োজিত ( সহায়তায় সুচেতনা শিলচর , প্রোগ্রেস লিটারারি ক্লাব এবং প্রাচ্য পাশ্চাত্য ) " ওয়ার্ল্ড থিঙ্কারস্ এন্ড রাইটার্স পীস মীট " শীর্ষক অনুষ্ঠানে একঝাঁক গুণীজনের উপস্থিতিতে পুনর্ন্মোচিত হলো বরাকের সাহিত্য মাইল ফলক ‘ বৃষ্টিকথা ’ । বরাকের ২৫৩ জন কবির বৃষ্টি বিষয়ক কবিতা সংকলন ' বৃষ্টি কথা ' বইটি উন্মোচন করেন বিশিষ্ট কবি , অনুবাদক এবং পরিব্রাজক অমরেন্দ্র চক্রবর্তী । উন্মোচনের পূর্বে ‘ বৃষ্টিকথা ’ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন সঞ্চালক তথা বিশিষ্ট কবি , ডাক্তার সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। এ উপলক্ষে বরাকের কবি সাহিত্যিকদের এক প্রতিনিধি দলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন কল্লোল চৌধুরী, সুপ্রদীপ দত্তরায়, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ও দোলনচাঁপা দাসপাল। আকস্মিক মাতৃবিয়োগের ফলে বরাকের বিশিষ্ট কবি তথা ‘ সুচেতনা ’ র কর্ণধার সুশান্ত ভট্টাচার্য ও তাঁর সহধর্মিণী

ছোঁব না তোমাকে

রাত গভীর, এবার আমি ঘুমোতে যাব ঘুমানোর আগে খানিকটা সময় ধরে আমি তোমার কথা ভাববো তোমাকে খুঁজবো এ সময়, আমার একান্ত সময় শুধু আমি আর তুমি। তোমাকে দেখতে চাইব, সামনে থেকে কথা বলব খানিক, ছোঁব না তোমাকে কী কথা বলবো ? জানি না এখন আমি তোমার হবো তুমি যা বলবে তাই শুনবো জুড়াবে প্রাণ - তুমি এখন ধীরে ধীরে আমার হতে থাকবে - রাত পাখি হয়ে। ঘুমের অতলে তলিয়ে যাওয়ার আগে আবারো একরাশ হতাশা আমাকে আচ্ছন্নতায় ভরিয়ে দেবে অদেখার নিত্য নিরাশা - খানিক এপাশ ওপাশ - আর ঘুমশেষে আরেক প্রত্যাশার ভোর।

অনন্য প্রেম

কোনও এক শারদ আশ্বিনে প্রথম দেখেছি তাকে -   কাঁচা , কচি ঘাসফুলের এক কলি নজরকাড়া রূপসাগরের অরূপ মুক্তোদানা নজর ফেরানো দায়।   এর পর দু ' জনেই দেখেছি দুই যুগ ,   ঘাসফুল আজ গুল্ম থেকে তরু খাস পুড়ে পুড়ে আমি প্রায় এক মহীরুহ।   পেরিয়ে এসেছি অনন্য পঁচিশটি বসন্ত ভিন দিশায় , ভিন্ন প্রান্তে - একান্তে। সেই একান্তবাসেরও একটি কবিতা আছে আছে কবিতার পরতে পরতে কত যে গোপন কথা - এদিকে ওদিকে ,   কত কল্প কথার কোলাজ কত বিচিত্র আলাপন - নীরবে একান্তে। জাগ্রত নিশার প্রহরে প্রহরে গভীর রাতশেষের আবেশে , প্রত্যুষে। কত যে অফুরান কথার পাহাড়ে কাজ অকাজের মাঝে গহনে সঘনে সরবে নীরবে ইথারে , দরশনে। কেটেছে কত যে বেলা স্বপনে মননে একসাথে পায়ে পায়ে কত যে চড়াই পাশাপাশি মুখোমুখি ঢল বেয়ে বেয়ে   অনন্ত উৎরাই , সানন্দে - অভিমানে। নির্মোহ বাস্তব এসে ঘুরিয়ে দিয়েছে পথ ঋদ্ধ অনুভবে পাল্টে গেছে সব সংজ্ঞা   কল্পনায় ছড়িয়ে দিয়েছে রামধনু রঙ সেই কলি থেকে কুসুমের উত্তরণ গাথা আজ জন্ম দিয়েছে প্রেমের শ্রেষ্ঠ কবিতা।    গর্বিত আমি - আমার তুমি আছো না থাকার আবডালে চিরন্তনী তুমি আমাকে ভাসিয়ে দিতে পারো পলকে দীর্ঘ প্রশ্বাসেও কুড়িয