Skip to main content

উত্তর-পূর্বের বাংলা গল্পে সমৃদ্ধ পত্রিকা - ‘প্রবাহ’


কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার প্রাপ্ত (২০২১) গবেষণাধর্মী লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রবাহ’-এর বর্ষ ৩৪, সংখ্যা - ২, ডিসেম্বর ২০২১ (অগ্রহায়ণ ১৪২৮) সংখ্যাটি প্রকাশিত হলো সাড়ম্বরে। ‘প্রবাহ’ কে এখন আর কোনোভাবেই ‘লিটল’ বলা চলে না। একের পর এক সংখ্যা জুড়ে পত্রিকায় সন্নিবিষ্ট থাকছে বিশাল সম্ভার। এবারেও ব্যতিক্রম হয়নি তার। সম্পাদকের চরম নিবেদন পরিস্ফুট হয়ে ওঠে বিষয় বৈচিত্রে, বিষয়ের বিশালত্বে। সময়ের পেছনে ছুটে ছুটে এভাবে গুচ্ছ লেখা সংগ্রহের মধ্যে লুক্কায়িত থাকে যে অসীম অধ্যবসায় এবং অকৃত্রিম গরজ তার কথা আলাদা করে উল্লেখ না করলে এ আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়বে শ্রীগণেশেই।
উত্তর পূর্বের প্রতিষ্ঠিত ও উঠতি মোট ২৬ জন গল্পকারের গল্পের বাইরেও এ সংখ্যায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে সদ্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে ভূষিত অসমিয়া সাহিত্যের বিদগ্ধ কবি নীলমণি ফুকনের উপর দীর্ঘ ৩৭ পৃষ্ঠার একটি ক্রোড়পত্র।
উত্তর পূর্বের বাংলা গল্পের এক আলাদা বিশ্ব। ভাষা, লিখনশৈলীর এক নিজস্ব পরিমণ্ডল। এখানে গল্পের অভ্যন্তরে উদ্ভাসিত হয় আপন বিশ্বের হাসিকান্না, পথ চলার অম্লমধুর বর্ণনা। প্রেক্ষাপটে ভেসে আসে আঞ্চলিক জীবনযাত্রার নিত্যনৈমিত্তিক যাপনকথা। পত্রিকার এই সংখ্যাটিতে লিপিবদ্ধ ২৬ টি গল্পের অভ্যন্তরেও তেমনি বিচিত্র সব বিষয়, বিস্তৃত কথা ও কাহিনি। সম্পাদকীয়তে পোড় খাওয়া সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথ তাই যথার্থ অর্থেই লিখছেন - “... গল্পকে সময়ের মুকুর বলা যায় নিঃসন্দেহে। ... এক বিচিত্র পরিমণ্ডলে অবস্থান করে উত্তর-পূর্বের গল্পকাররা গল্প লিখেছেন এবং লিখছেন। সেরকম পরিমণ্ডল কিন্তু অন্যত্র বিরল। তা বলে বাংলা গল্পের মূলধারা থেকে মোটেই ভিন্ন নয়। যদিও গল্পের শৈলী ও বিষয় একান্তই স্থানিক ও ব্যক্তি মানসিক ......।”
উপর্যুক্ত ভূমিকার এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন হয়ে আছে পত্রিকার প্রথম গল্পটি। উত্তর পূর্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্পকার মিথিলেশ ভট্টাচার্যের গল্প ‘জোছনা কেমন ফুটেছে’তে একদিকে যেমন ফুটে উঠেছে বরাক উপত্যকার গ্রামীন পরিবেশ, আর্থ সামাজিক বিন্যাস অন্যদিকে তেমনি মানুষের আত্মিক বন্ধনের এক নিটোল ছিমছাম চিত্র। সংলাপ এবং শৈলীর অপূর্ব সংমিশ্রণে এক সার্থক ছোটগল্প হয়ে উঠেছে তাঁর এ গল্পটি।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক সঞ্জীব দেবলস্কর ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ কথাটিকে এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে অনবদ্য মুনশিয়ানায় তাঁর ‘রায়বাহাদুর বৃত্তান্ত’ গল্পে লিপিবদ্ধ করেছেন। এক পঠনে শেষ করার বাইরে গত্যন্তর নেই। সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথের ছোট্ট গল্প ‘সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আগে-পরে’ ভাবতে বাধ্য করে পাঠককে। শেষটাও যথাযথ। ‘শ্মশান বন্ধু’ শিরোনামে কোভিড কালের রুঢ় বাস্তবকে গল্পের মাধ্যমে সফল ভাবে তুলে ধরেছেন এখনকার নবীন গল্পকার তৃণময় সেন। তাঁর গল্পের হাতটি ধারালো হয়ে উঠছে ক্রমান্বয়ে। কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্যের গল্প ‘যখন দাবানল’। শব্দ ও ভাষার ব্যবহারে চমৎকার একটি গল্প যেখানে শেষ কথা বলেছেন গল্পকার - ‘...... বিলকিস্‌ রে, মেয়েগুলো যেন জ্যান্ত লাশ ...... মেয়েদের সত্যিকারের লড়াই বোধহয় এখনো শুরুই হয়নি। আরো আরো কত হিমযুগ পেরিয়ে গেলে ছুরির ধারে ফালা কাটা জীবন দেখবে নারী।’ এই গল্পে স্থানীয় প্রেক্ষাপটের নদীসমূহের নাম উল্লিখিত হলেও শেষটায় হঠাৎ করে টেমস্‌ নদী এসে গেল অথচ জাটিঙ্গা নদীর নাম এল না কেন বুঝা গেল না।
কিছু ব্যতিক্রমী সংলাপসমৃদ্ধ ছোট গল্প - সোমা মজুমদারের ‘হলুদ খামে মনের কথা’। ছোটগল্পের ধাঁচ পেতে পেতেও যেন অধরা থেকে গেল। তবে প্রতিশ্রুতি জাগাতে সফল হয়েছেন গল্পকার। সমর দেব-এর ছোট গল্প ‘মধ্যরাতের পট - ইভানের সময়ের অস্থিরতা’। প্রেক্ষাপটে, লিখনশৈলীতে, চরিত্রসমূহের নামে স্পষ্ট এক বিদেশি অনুবাদ গল্প যদিও উল্লেখ নেই তার। ব্যতিক্রম শুধু গল্পের শুরুতে ব্র্যাকেটে গল্পের নায়কের ‘পিতৃপদবী চক্রবর্তী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিছক হাস্যরসের মধ্যেও নিটোল বুনোটে এক সামাজিক চিন্তাচর্চার গল্প - অভিজিৎ চক্রবর্তীর ‘গড়গড়ি ও এক কোটির বাম্পার লটারি’।
আদিমা মজুমদার ও পরিতোষ তালুকদার এ অঞ্চলের নামিদামি গল্পকার। উভয়ের গল্প সন্নিবিষ্ট হয়েছে এখানে। আদিমা মজুমদারের ‘লক ডাউনের শেষ দিন’ এবং পরিতোষ তালুকদারের ‘ধর্মাধর্ম’। উভয় গল্পই নিখুঁত বাঁধনে লিখিত ধর্মাধর্মের গল্প। দিনযাপনের বিন্যস্ত ছোটগল্প - অলকা গোস্বামীর ‘এমনি করেই’। কবি কমলিকা মজুমদারের গল্প ‘জাস্ট ফ্রেণ্ডস্‌’। আধুনিক যুগের প্রেম ভালোবাসা বন্ধুত্বের উপর সংলাপনির্ভর এক মানানসই গল্প। যদিও আরেকটু বিস্তৃতির পরিসর ছিল। ত্রিপুরার লুপ্ত সংস্কৃতির উপর অসাধারণ গল্প প্রখ্যাত সাহিত্যিক শঙ্খশুভ্র দেববর্মনের ‘রোসেম’। গল্পের চমৎকার বিন্যাস পাঠককে থেমে থাকতে দেয় না। প্রখ্যাত গল্পকার শ্যামল ভট্টাচার্যের গল্প ‘সাঁতার’ চমৎকার থীমের উপর এক চলন্ত বর্ণনাত্মক গল্প যেখানে গল্পময়তার পাশাপাশি বর্ণনাও এগিয়েছে সমান্তরাল ভাবে। কিন্তু কিছু চরিত্র, যেমন - সাগর, শ্বেতা, শশাঙ্ক যে আদপে কারা সেটা বুঝাই গেল না।
এর বাইরেও রয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠিত এবং নবীন গল্পকারের গল্প। গল্প লিখেছেন - অমিতাভ দেব চৌধুরী, মনোমোহন মিশ্র, অঞ্জলি সেনগুপ্ত, শ্যামল বৈদ্য, তমা বর্মন, কিশোর রঞ্জন দে, অনুপ ভট্টাচার্য, রাধা দত্ত, শিপ্রা চৌধুরী, কল্পনা রায়, শংকু চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী প্রমুখ। তবে এ অঞ্চলের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য গল্পকার কিন্তু রয়ে গেছেন অনুপস্থিতও। আসলে একটি ছোট পত্রিকার পরিসরের এক সীমাবদ্ধতার কথাও চিন্তা করতেই হয়।
গল্পের শেষে রয়েছে নীলমণি ফুকনের উপর ক্রোড়পত্র। এক সংগহযোগ্য অধ্যায়। আছে তাঁর জীবনপঞ্জি, লিখেছেন - মনোতোষ চক্রবর্তী, অনুভব তুলসী (তপন মহন্তের অনুবাদে), স্বর্ণালি বিশ্বাস ভট্টাচার্য, তপন রায়। একগুচ্ছ কবিতার অনুবাদ করেছেন বিশিষ্ট অনুবাদক অভিজিৎ লাহিড়ী। এক কথায় এক মূল্যবান ক্রোড়পত্র যা ভবিষ্যতের গবেষণার ক্ষেত্রে পথনির্দেশক হয়ে থাকবে।
শেষ পাতে রয়েছে কিছু আলোচনা পর্যালোচনা। সাহিত্যপত্র - ‘বাসভূমি ২০১৯’এর উপর আলোচনা করেছেন তুষারকান্তি নাথ। প্রখ্যাত গল্পকার কুমার অজিত দত্তের উপন্যাস ‘মরণ্যা চরের ইতিকথা’র উপর বিস্তৃত আলোচনা করেছেন কৃতি আলোচক সেলিম মুস্তাফা। চুলচেরা বিশ্লেষণে পাঠককে উপন্যাসের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিয়েছেন অনবদ্য লিখনীতে। একেবারে শেষে রয়েছে গত সংখ্যার উপর তিনটি ‘পাঠকের মতামত’ - চিঠি - যা আজকাল ‘চিঠি’র লুপ্তপ্রায় ধারার সঙ্গে অবলুপ্তির পথে বিদ্যমান অধিকাংশ পত্রপত্রিকায়।
প্রচ্ছদ করেছেন অজিত দাস (বাংলাদেশ)। তুলনামূলক ভাবে এবারের সংখ্যায় বানান ভুলের আধিক্য। মাঝে মাঝে ফন্টও বদলে গেছে কিছু পৃষ্ঠায়। পরবর্তীতে এ নিয়ে আরেকটু বেশি যত্নবান হতে হবে বৈকি। সব মিলিয়ে এবারের সংখ্যাটিও অনবদ্য এক সংগ্রহযোগ্য সংখ্যা। সম্পাদকের প্রত্যয়িত উদ্যোগ ‘প্রবাহ’ পত্রিকার মূল সম্পদ। পত্রিকার ধারাবাহিক প্রকাশ এ অঞ্চলের সাহিত্য ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য অবদান - নিঃসন্দেহে।

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

‘প্রবাহ’
বর্ষ - ৩৪, সংখ্যা - ২
সম্পাদক - আশিসরঞ্জন নাথ
মূল্য - ২২০ টাকা
যোগাযোগ - ৮৮১১০১০৫৪০

Comments

Popular posts from this blog

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হয়তো কবি করোনার

অবশ্যপাঠ্য এক সার্থক উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’

উত্তরপূর্বের বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টিক্ষেত্রে একটি উপন্যাসের সৃষ্টি কিংবা জন্মের ইতিহাস বহু পুরোনো হলেও এই ধারা যে সতত প্রবহমান তা বলা যাবে না কোনওভাবেই। বিশেষ করে আজকের দিনে অন্তত এই ঘটনাকে একটি ‘বিরল’ ঘটনা বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়। এমনও দেখা যায় যে ৪০ থেকে ৮০ পৃষ্ঠার বড় গল্প বা উপন্যাসিকাকে দিব্যি উপন্যাস বলেই বিজ্ঞাপিত করা হচ্ছে। তবে প্রকৃতই এক উপন্যাসের জন্মের মতো ঘটনার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সংযোজিত হয়েছে সাহিত্যিক সজল পালের উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’। ২৫৩ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটির প্রকাশক গুয়াহাটির মজলিশ বইঘর। তথাকথিত মানবপ্রেমের বা নায়ক নায়িকার প্রেমঘটিত কোনো আবহ না থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসটিকে মূলত রোমান্সধর্মী উপন্যাস হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায় যদিও আঞ্চলিকতা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও উপন্যাসটিকে যথার্থই এক সার্থক উপন্যাস বলা যায় নির্দ্বিধায়। প্রেম এখানে বিচিত্র এক অনুষঙ্গ নিয়ে এসেছে। সংস্কৃতিমনষ্কতা, নান্দনিকতা এবং প্রেম একসূত্রে গ্রথিত হয়ে আছে এখানে। উপন্যাসটি ‘সার্থক’ অর্থে এখানে সচরাচর একটি উপন্যাসের আবশ্যকীয় ধর্মসমূহ যথা প্রাসঙ্গিক ঘটনাবিন্যাস , কাহিনির জমজমাট বুনোট , মানানসই চরিত্র

ভালোবাসার আস্তরণে ঢেকে রেখেছি, না-বলা কথা……'

তোমাকে দেখব বলে, প্রতিদিন জেগে উঠি। তোমার নবযৌবনার সৌন্দর্য আমাকে প্রাণ চঞ্চল করে তোলে।   তোমার রূপ, তোমার স্বর্ণআভা সৌন্দর্য, আমার দেহমনে শিহরণ জাগায়……। (কবিতা - স্বর্ণআভা)   গ্রন্থের নাম স্বর্ণআভা। কবি পরিমল কর্মকারের সদ্য প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ভাবনা ও ভালোবাসার বিমূর্ত প্রকাশ - কবিতায় কবিতায়, পঙক্তিতে পঙক্তিতে। অধিকাংশ কবিতাই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে। সুতরাং এই গ্রন্থকে অনায়াসে প্রেমের কবিতার সংকলন বলতেও আপত্তি থাকার কথা নয়। কবির কাব্যভাবনা, কাব্যপ্রতিভার ঝলক দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিভাত হয়ে আসছে উপত্যকা ও উপত্যকার সীমানা ছাড়িয়ে। তারই একত্রীকরণের দায়ে এই কাব্য সংকলন। তবে এই গ্রন্থে ভালোবাসার বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে অন্য স্বাদের কিছু কবিতা। এর মধ্যে আছে জীবনবোধ ও জীবনচর্চার ভাবনা, শরৎ, স্মৃতি, উনিশের ভাবনা, দেশপ্রেম, সমাজের অন্দরে লুকিয়ে থাকা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আদি। ‘পাঠকের উদ্দেশে’ শিরোনামে ভূমিকায় এমনটাই ব্যক্ত করেছেন পরিমল - ‘আমার কবিতার গরিষ্ঠাংশই জীবনমুখী। বাস্তব জীবনের নির্যাসসম্পৃক্ত এই কবিতাগুলি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবে সমাজের অনেক গভীর ও অনস্বীকার্য রূঢ়