স্বপ্নতরী
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
গ্রন্থ বিপণী প্রকাশনা
বাবা - স্বর্গীয় সুধীর চন্দ্র চক্রবর্তী
মা
- শ্রীমতী বীণাপাণি চক্রবর্তী
জনম দিয়েছ মোরে এ ভব ধরায়
গড়েছ সযতনে শিক্ষায় দীক্ষায়
জীবনে কখনো কোথা পাইনি দ্বন্দ্ব
দেখিনি হারাতে পূত-আদর্শ ছন্দ
বিন্দু বিন্দু করি গড়ি পদ্য সংকলন
তোমাদেরই চরণে করি সমর্পণ
গড়েছ সযতনে শিক্ষায় দীক্ষায়
জীবনে কখনো কোথা পাইনি দ্বন্দ্ব
দেখিনি হারাতে পূত-আদর্শ ছন্দ
তোমাদেরই চরণে করি সমর্পণ
প্রথম ভাগ (কবিতা)
স্বপ্নতরী
১
স্বপ্ন-তরী
নিটোল, নিষ্পাপ
কচিপাতার
মর্মর আর
কাঁচা-রোদের আবোল-তাবোল
পরিধিস্থ
নতুন আমি।
আনকোরা
নতুন ঝরনাবারি নিয়ে
এখন নদীর জলও নতুন
বয়ে যায়, তাই শেওলা জমে না।
দুঃখ
আমার রয়ে গেছে
এবার আসবে স্বপ্ন-তরী
চেনা
পথ, অচেনা ঠিকানা।
২
পাখমারা
সেই
উথাল-পাথাল পাখশাট
আজও
আনে আরণ্যক অনুভূতি।
একটু একটু হেঁটে গিয়ে
বয়সের ফল্গুধারায়
জগৎ নদীর দু’পার ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস -
সময়ের
কাঠগড়াতে আমি বন্দি।
স্বপ্ন-তরী
কাঁচা-রোদের আবোল-তাবোল
এখন নদীর জলও নতুন
বয়ে যায়, তাই শেওলা জমে না।
এবার আসবে স্বপ্ন-তরী
পাখমারা
একটু একটু হেঁটে গিয়ে
বয়সের ফল্গুধারায়
জগৎ নদীর দু’পার ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস -
চেয়েছিলাম পাখি
পেয়ে গেলাম খাঁচা।
খাঁচার ভেতর ধরতে গিয়ে পাখি
খাঁচাকেই করলাম সসাগরা
সে খবর কি রাখো ?
আজ কোথায় ?
৩
আমার একদিন
আমার
একদিন স্বপ্নরঙিন
আমার একদিন কবিতা লেখা
আমার একদিন সাংবাদিকতা
আমার একদিন সংগীত মুখর
আমার একদিন জমিয়ে আড্ডা
হঠাৎ সেদিন যোজন পাড়ি।
আমার
একদিন সাদা কালো
আমার একদিন নিষ্ফল প্রচেষ্টা
আমার একদিন ঘরমুখো
আমার একদিন কৃত্রিমতা
আমার একদিন নির্বান্ধব
হঠাৎ কবে প্রত্যাবর্তন ?
আমার একদিন
আমার একদিন কবিতা লেখা
আমার একদিন সাংবাদিকতা
আমার একদিন সংগীত মুখর
আমার একদিন জমিয়ে আড্ডা
হঠাৎ সেদিন যোজন পাড়ি।
আমার একদিন নিষ্ফল প্রচেষ্টা
আমার একদিন ঘরমুখো
আমার একদিন কৃত্রিমতা
আমার একদিন নির্বান্ধব
হঠাৎ কবে প্রত্যাবর্তন ?
৪
স্মৃতির পরশ
শুরু
হল উপরটা ক্রমশ খালি হওয়া।
সুখ-সাগরের পরিপূর্ণতা
একটা
বিশাল ঝড়ে নিঃশেষ।
আমার স্বর্গ-ধর্ম-পরমতপ
আমার
জনক-পালক-গুরু-আদর্শ
কিছুক্ষণ
পরেই হবে স্মৃতি।
নির্ভীক অন্তরাত্মা নচিকেতা-কাতর
চিরবিদায়ের
এ কেমন অনুভূতি ?
পরম
নির্ভরতাকে পাশ কাটিয়ে
জীবন-ভর খাইয়ে-দাইয়ে
অবশেষে
চিরবিদায়।
এ দুঃখ-ব্যথা বয়ে বেড়াই।
অবশেষে
বিশ্বদর্শন ?
প্রশান্ত
মুখমণ্ডলে নির্মল আলোকচ্ছটা
বৈশ্বানরে বিলীন...
সেই
ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের উপর ছাতাটা এখন
সারা আকাশ জুড়ে দিয়ে যায়
মমতার ছায়া
আর স্মৃতির পরশ।
স্মৃতির পরশ
সুখ-সাগরের পরিপূর্ণতা
আমার স্বর্গ-ধর্ম-পরমতপ
নির্ভীক অন্তরাত্মা নচিকেতা-কাতর
জীবন-ভর খাইয়ে-দাইয়ে
এ দুঃখ-ব্যথা বয়ে বেড়াই।
বৈশ্বানরে বিলীন...
সারা আকাশ জুড়ে দিয়ে যায়
মমতার ছায়া
আর স্মৃতির পরশ।
৫
মা
তোমায়
ন্নিয়ে লিখি
এমন সাধ্য আছে ?
তোমার
বিশালতা তুমি নিজেই
রক্ত-জল, অন্ন-জীবন
সব
দিয়ে তুমি গড়েছ
তবু নিতে চাও না কিছুই।
তুমি
আমার পূর্ণ আকাশ,
মমতা
ভরা বিশাল ছাতাটা
আমায় আগলে রাখে প্রতিক্ষণ।
আমার সম্পূর্ণ সত্তা তোমারই ফসল।
তোমার বিহনে আমার শূন্যতা
আজ ভাবিয়ে তোলে আমাকে।
এমন নিস্তব্ধতা কি সহ্য হবে ?
তুমি
তো যাবেই
বিধির নিয়মে
আমারও হবে পুনর্জন্ম
হব এক নতুন আমি
তুমি-হীন আমি।
মা
এমন সাধ্য আছে ?
রক্ত-জল, অন্ন-জীবন
তবু নিতে চাও না কিছুই।
আমায় আগলে রাখে প্রতিক্ষণ।
আমার সম্পূর্ণ সত্তা তোমারই ফসল।
তোমার বিহনে আমার শূন্যতা
আজ ভাবিয়ে তোলে আমাকে।
এমন নিস্তব্ধতা কি সহ্য হবে ?
বিধির নিয়মে
আমারও হবে পুনর্জন্ম
হব এক নতুন আমি
তুমি-হীন আমি।
৬
প্রতীক্ষা
আধখানা
আকাশ জুড়ে আজ
অস্থির ঘনঘটা
নেই কোনো আবদার
আদুরে হাসির শিঙ্গার।
অজ্ঞান অস্থির
সারাটা দিন
শুধু মাঝে মাঝে আজ
ঘরকন্না কাজ।
এইতো
সেদিন
আনন্দ উচ্ছ্বাস ভরা
ঝিলমিল খিলখিল
বাঁধন হল শিথিল।
অসময়ে
অকালে
শেষ হল সুখের দিন
এখন শুধু অনন্ত প্রতীক্ষা
ফেরার অপেক্ষা।
প্রতীক্ষা
অস্থির ঘনঘটা
নেই কোনো আবদার
আদুরে হাসির শিঙ্গার।
অজ্ঞান অস্থির
সারাটা দিন
শুধু মাঝে মাঝে আজ
ঘরকন্না কাজ।
আনন্দ উচ্ছ্বাস ভরা
ঝিলমিল খিলখিল
বাঁধন হল শিথিল।
শেষ হল সুখের দিন
এখন শুধু অনন্ত প্রতীক্ষা
ফেরার অপেক্ষা।
৭
মানবী ভ্রুণ
ভয়ে
ভয়াতুরা আমি
মানবী ভ্রুণ
অকাল মৃত্যুর অজানা আশঙ্কায়
দোদুল্যমান আমার জন্ম।
লুকিয়ে বেড়াই এদিক ওদিক
পাছে ধরা পড়ে যাই
যান্ত্রিক নিয়মে, যন্ত্রের নয়নে।
রং-রূপ-গন্ধে এ বসুধায়
বেড়ে
উঠতে চাই শিক্ষায়,
আলোকে - জঠরে
ধরে রাখতে চাই
দূর
ভবিষ্যৎ,
সৃষ্টি।
চুপ করো। শখের অন্ত নেই
তুমি মানবী ভ্রুণ।
মানবী ভ্রুণ
মানবী ভ্রুণ
অকাল মৃত্যুর অজানা আশঙ্কায়
দোদুল্যমান আমার জন্ম।
লুকিয়ে বেড়াই এদিক ওদিক
পাছে ধরা পড়ে যাই
যান্ত্রিক নিয়মে, যন্ত্রের নয়নে।
চুপ করো। শখের অন্ত নেই
তুমি মানবী ভ্রুণ।
৮
যে যার সে তার
শীতল
শরীরের কোটরগত অক্ষিপট
তা থেকে কেমন করে বিকিরণ ঘটতে থাকে
উষ্ণ স্ফুলিঙ্গ আর বহ্নিশিখার ছটা।
– এ শুধু তোমাতেই মানায়
যেন কলস উদ্ভিদের ফাঁদে বিষাক্ত কীট
বিদ্রোহী গদ্যের বাসস্থান
ছক না মেনে সব ওলট-পালট হয়ে যায়।
স্বর্গের পিচ্ছিল ধাপ বেয়ে
বাঁদরের ওঠা-নামা
একটা
সময় -
পপাত ধরণীতলে।
অমন বিশুদ্ধ, চিন্তাধারা নিয়ে
আজ
আর চলে না। বড্ড গেঁয়ো
আর গোঁয়ার। এখন -
যে
যার সে তার
যখন যার তখন তার সব।
এখন ঘরের মধ্যে ঘর
সবাই তার নিজের মর্জির মালিক।
ভিন্ন রুচি, ভিন্ন ভাবনা - এখন নির্ভয়ে
বাঘের
ঘরে ঘোগের বাসা -
এক
বৃন্তে দুটি কুসুম।
যে যার সে তার
তা থেকে কেমন করে বিকিরণ ঘটতে থাকে
উষ্ণ স্ফুলিঙ্গ আর বহ্নিশিখার ছটা।
– এ শুধু তোমাতেই মানায়
যেন কলস উদ্ভিদের ফাঁদে বিষাক্ত কীট
বিদ্রোহী গদ্যের বাসস্থান
ছক না মেনে সব ওলট-পালট হয়ে যায়।
স্বর্গের পিচ্ছিল ধাপ বেয়ে
বাঁদরের ওঠা-নামা
অমন বিশুদ্ধ, চিন্তাধারা নিয়ে
আর গোঁয়ার। এখন -
যখন যার তখন তার সব।
এখন ঘরের মধ্যে ঘর
সবাই তার নিজের মর্জির মালিক।
ভিন্ন রুচি, ভিন্ন ভাবনা - এখন নির্ভয়ে
৯
অভিলাষ
হে
অন্তর্যামী
আজ কৃতজ্ঞতার ভাষা নেই
যেখানে রেখেছ মোরে
ধন্য আমি সেখানেই।
যেমন
করে চেয়েছি তোমায়
তুমি করোনি বিমুখ
দিয়েছ মোরে যতটা দুঃখ
তার চেয়ে বেশি সুখ।
যেমন
চেয়েছি হতে
তুমি দিয়েছ মুক্ত করে
তাই আজ পূর্ণ আমি
স্মরি তোমায় ভক্তিভরে।
দুর্বলেরে
করিনি আঘাত
দুঃখীরে দিইনি দুঃখ
তাই তো এমন সদয় তুমি
হয়েছে আমার মোক্ষ।
মিথ্যাকে
করেছি পরিহার
বিশ্বাসকে করেছি আপন
তাই তো তোমার সান্নিধ্যে মোর
তৃপ্ত এ তুচ্ছ জীবন।
কামনা
করিনি কভু
অপরের মন্দ
দিয়েছ জীবনে তাই
অপার আনন্দ।
ঘৃণা, বিভেদ
করিনি কখনো
অপরে
করিনি হিংসা
তাই তো পেয়েছি সবার থেকে
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
কেঁদেছি
অনেক অপরের শোকে
হৃদয় হয়েছে সমব্যথী
তাই বুঝি তুমি দিয়েছ মোরে
বিপদের বহু সাথি।
গুরুবাক্য
করিনি কখনো
অবজ্ঞা কিংবা লঙ্ঘন
অহরহ তাই পেয়েছি জীবনে
প্রাণভরা আশীর্বচন।
এমনি
করেই যায় যেন প্রভু
যে কটা দিন থাকি
অভিলাষ মোর - ফিরায়ো তোমার
চরণে, দিও
না ফাঁকি।
অভিলাষ
আজ কৃতজ্ঞতার ভাষা নেই
যেখানে রেখেছ মোরে
ধন্য আমি সেখানেই।
তুমি করোনি বিমুখ
দিয়েছ মোরে যতটা দুঃখ
তার চেয়ে বেশি সুখ।
তুমি দিয়েছ মুক্ত করে
তাই আজ পূর্ণ আমি
স্মরি তোমায় ভক্তিভরে।
দুঃখীরে দিইনি দুঃখ
তাই তো এমন সদয় তুমি
হয়েছে আমার মোক্ষ।
বিশ্বাসকে করেছি আপন
তাই তো তোমার সান্নিধ্যে মোর
তৃপ্ত এ তুচ্ছ জীবন।
অপরের মন্দ
দিয়েছ জীবনে তাই
অপার আনন্দ।
তাই তো পেয়েছি সবার থেকে
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
হৃদয় হয়েছে সমব্যথী
তাই বুঝি তুমি দিয়েছ মোরে
বিপদের বহু সাথি।
অবজ্ঞা কিংবা লঙ্ঘন
অহরহ তাই পেয়েছি জীবনে
প্রাণভরা আশীর্বচন।
যে কটা দিন থাকি
অভিলাষ মোর - ফিরায়ো তোমার
১০
জন্মদিন
আমি
মাঝে মাঝেই অবাক হয়ে
একলা বসে আকাশ পাতাল ভাবি।
সংগোপনে, কোনখানেতে
চুপটি
করে লুকিয়েছিলে
আগে থেকে থাকত যদি জানা…
আবদারে
আর অধিকারে
অনুনয়ে হাতটি ধরে
অনেক আগেই দিতেম গিয়ে হানা।
জন্মদিনের
শুভক্ষণে
একটি কথাই আসছে মনে
বলছি, তাই শোন পাগলপারা
অগ্রজের
এই জীবনটারে ভরিয়ে দিও
থরে থরে
প্রেমের ডালি হোক বাঁধন-হারা।
তোমার আপন সংসারে সবাই যেমন ঘর করে
‘বিশেষ’ হয়ে উচ্ছ্বাসে আর আনন্দে
তোমারও তাই সবার কাছে একটা ‘বিশেষ’ মূল্য আছে
থাকব সবাই তোমার ভালো মন্দে।
আজকের
এই দিনটাকে তাই
হৃদয় ভরে ধন্য জানাই
শব্দমালার শুভেচ্ছা এই রচি -
থাকি
যেন সবাই মিলে
আনন্দে আর হট্টগোলে
যে ক’টা দিন যেমন সবাই বাঁচি।
জন্মদিন
একলা বসে আকাশ পাতাল ভাবি।
আগে থেকে থাকত যদি জানা…
অনুনয়ে হাতটি ধরে
অনেক আগেই দিতেম গিয়ে হানা।
তোমার আপন সংসারে সবাই যেমন ঘর করে
তোমারও তাই সবার কাছে একটা ‘বিশেষ’ মূল্য আছে
হৃদয় ভরে ধন্য জানাই
শব্দমালার শুভেচ্ছা এই রচি -
আনন্দে আর হট্টগোলে
যে ক’টা দিন যেমন সবাই বাঁচি।
১১
দূরত্ব
জেট্, পেজার,
ইন্টারনেট
পৃথিবীর
পরিধি
নেমেছে শূন্যতে।
যোজন দূরত্ব কমে না
ব্রহ্মপুত্র থেকে মনু।
মনের দূরত্ব কমাবে কে ?
সময়ও
হার মেনেছে।
বয়স আর সময়
ব্যবধান বাড়ায়,
বাড়তে
দেয় না বন্ধুত্ব,
আপন
করে না নতুনকে।
তাই শুধু স্মৃতি রোমন্থন
আর ফিরে যাবার
বিচ্ছিন্ন, বিফল প্রচেষ্টা।
জীবনের তাগিদে
ফ্যাকাশে জীবনকে
রঙিন করার অদম্য ইচ্ছা।
তাই রঙিন যোগসূত্র
গল্প-কবিতা-উপন্যাস,
মনু-বরাক-ব্রহ্মপুত্র।
দূরত্ব
নেমেছে শূন্যতে।
যোজন দূরত্ব কমে না
ব্রহ্মপুত্র থেকে মনু।
মনের দূরত্ব কমাবে কে ?
বয়স আর সময়
ব্যবধান বাড়ায়,
তাই শুধু স্মৃতি রোমন্থন
আর ফিরে যাবার
বিচ্ছিন্ন, বিফল প্রচেষ্টা।
জীবনের তাগিদে
ফ্যাকাশে জীবনকে
রঙিন করার অদম্য ইচ্ছা।
তাই রঙিন যোগসূত্র
গল্প-কবিতা-উপন্যাস,
১২
সাদা-কালো
ওরা পেরিয়ে
যেতে চায়
শৃঙ্খলহীন, সেকাল থেকে একাল
শৈশব-কৈশোর ডিঙিয়ে
আপন খেয়ালে
স্রোতস্বিনী সম।
কিন্তু খায় প্রতি পদে তিন দোল
দুর্গম পথে কন্দর বিস্তর
গভীর সব শাসানি, ধীরে বল,
কান ফোঁড়াও, ভীত হও।
রজঃস্বলার অন্দরমহলে
নিস্তব্ধতার গন্ধমাদন।
অন্ধকার জানালার পাশে বসে
দেখো, খেলা করে তোমার
বালক বন্ধু। আনন্দ নাও।
সহস্র সূর্যের তাপে
পুড়ে যায় তার লক্ষ আশা।
সবকাল তালগোল
তিনভুবনে তার - সাদাকালো হিন্দোল।
সাদা-কালো
শৃঙ্খলহীন, সেকাল থেকে একাল
কিন্তু খায় প্রতি পদে তিন দোল
দুর্গম পথে কন্দর বিস্তর
গভীর সব শাসানি, ধীরে বল,
রজঃস্বলার অন্দরমহলে
নিস্তব্ধতার গন্ধমাদন।
অন্ধকার জানালার পাশে বসে
দেখো, খেলা করে তোমার
সহস্র সূর্যের তাপে
পুড়ে যায় তার লক্ষ আশা।
সবকাল তালগোল
তিনভুবনে তার - সাদাকালো হিন্দোল।
১৩
আমি তোমার কী
আমি
যে কী,
কেমন করে
বোঝাই
তোমায় বলো
আমি তোমার একাল সেকাল
সঠিক বোঝা গেল ?
আমার
জঠর ছিল যখন
তোমার বাসস্থান
বলত সবাই - বুঝো তোমার
আসছে
যে সন্তান
?
বহন
করে আনলে যেদিন
আমায় ঘটা করে
বাসর ঘরটা আনন্দে আর
আহ্লাদে যায় ভরে।
আঁতুড়
ঘরের প্রথম কান্না
হৃদয় ভরে শুনে
ভাবছিলে আজ ধন্য আমি
আপন কন্যা সনে।
এখন
হয়তো বুঝবে আমায়
নারী শাশ্বত
আমি হলেম সৃষ্টি, স্থিতি
এবং
ভবিষ্যৎ।
আমি তোমার কী
আমি তোমার একাল সেকাল
সঠিক বোঝা গেল ?
তোমার বাসস্থান
বলত সবাই - বুঝো তোমার
আমায় ঘটা করে
বাসর ঘরটা আনন্দে আর
আহ্লাদে যায় ভরে।
হৃদয় ভরে শুনে
ভাবছিলে আজ ধন্য আমি
আপন কন্যা সনে।
নারী শাশ্বত
আমি হলেম সৃষ্টি, স্থিতি
১৪
মেয়েটা জানে
মেয়েটাকে
ওরা আসতে দেবে তো ?
কিংবা
নিদেনপক্ষে
গিয়েও দেখে আসতে পারি।
তা, যদি যেতে পারি…
কারণ
সময় পালটে যায়,
দিন
রং বদলায়।
মেয়েটাকে
সবে ঘুম পাড়িয়েছি
হঠাৎ করে লোডশেডিং।
এখন হাতপাখার হাওয়া সম্বল।
হাতপাখা বন-বন ঘুরছে।
হাতে ব্যথা হয়ে গেছে, মেয়েটা ঘুমোচ্ছে
ও
জানে না কোথা থেকে হাওয়া এল
জানবেও না কোনোদিন।
কিন্তু
কেউই কি জানে না ?
কে
সারা রাত জেগে আদর জোগায় ?
আজ
আমার মৃত্যু শিয়রে কে ?
স্পর্শ
কি কাঙ্ক্ষিত ?
না
কঠোর অবহেলা ?
আমার
ঘুমন্ত মেয়েটা জানে।
মেয়েটা জানে
গিয়েও দেখে আসতে পারি।
তা, যদি যেতে পারি…
হঠাৎ করে লোডশেডিং।
এখন হাতপাখার হাওয়া সম্বল।
হাতপাখা বন-বন ঘুরছে।
হাতে ব্যথা হয়ে গেছে, মেয়েটা ঘুমোচ্ছে
জানবেও না কোনোদিন।
১৫
এক চিলতে রোদ্দুর
এক
চিলতে রোদ্দুর আমি
ধা করে সেঁধিয়ে যাই
তৃতীয় গ্রহের আনাচে কানাচে
লুকিয়ে দেখি
মলিন হৃদয়ের গোপন কাণ্ড
নিগ্রহ নিপীড়ন -
যন্ত্রণা
ধর্ষণ।
অসহায়া ছুটে যায় দিগ্বিদিক
অনুসৃতা - লোলুপ
হিংসার
লজ্জায়
মুখ ঢেকে
বিদেয় হই, হে সন্ধ্যা।
এক চিলতে রোদ্দুর
ধা করে সেঁধিয়ে যাই
তৃতীয় গ্রহের আনাচে কানাচে
লুকিয়ে দেখি
মলিন হৃদয়ের গোপন কাণ্ড
নিগ্রহ নিপীড়ন -
অসহায়া ছুটে যায় দিগ্বিদিক
বিদেয় হই, হে সন্ধ্যা।
১৬
গাঁয়ের ছেলে
একটি
ছিল ছোট্ট ছেলে বড্ড সরল শান্ত
পড়তে ভীষণ বাসত ভালো সবার কথা মানতো।
মাঝে মাঝেই ঘুরতে যেত গাঁয়েই এদিক ওদিক
ঘোরের বশে থাকত চেয়ে, ভ্রান্ত দিগ্বিদিক।
সোনালি ধান, ছোট্ট নদী, বিলের জলে হাঁস
বলাকা
আর মাছরাঙাটি থাকত বারোমাস।
আলের রাস্তা, বাঁশের সাঁকো, গোরু মোষের পাল
ধানের
খেতে হাল দেখতে উঠত সাতসকাল।
শিমূল গাছের ফুল খেত সব কতই শালিক ময়না
প্রজাপতির দল যেন ঠিক অতসীরই গয়না।
বনের মাঝে ভাই-বোন ফুল আপন মনে দোলে
পুকুর
জলে মাছেরা সব বেড়ায় পাখনা মেলে।
সেসব
নিয়েই সেই ছেলেটা, থাকত আপন মনে
পড়াশোনার
অবকাশেই ছুট দিত কাশবনে।
ভাবত হয়তো এমনি করেই দিনগুলো তার যাবে
কল্পনাতেও ছিল না তার বাইরে দু’পা দেবে।
কিন্তু দিন তো যায় না এমন বাড়তে থাকে বয়সটা
একদিন তাই সেই ছেলেকে ছাড়তে হল গ্রামটা।
পেয়েছিল সেদিন যত দুঃখ-ব্যথা-কষ্ট
অন্তরে
তার সেই কথাটি আজও ভাসে স্পষ্ট।
সেই ছেলে আজ বড় হয়ে মস্ত লেউকেটা
কিন্তু ফিরে ফিরেই তাকায় ক্লান্ত যখন মনটা।
অতীত দিনের সেসব কথা যেন লাগে সদ্য
স্মৃতি রোমন্থনের তরেই লিখতে বসে পদ্য।
গাঁয়ের ছেলে
পড়তে ভীষণ বাসত ভালো সবার কথা মানতো।
মাঝে মাঝেই ঘুরতে যেত গাঁয়েই এদিক ওদিক
ঘোরের বশে থাকত চেয়ে, ভ্রান্ত দিগ্বিদিক।
সোনালি ধান, ছোট্ট নদী, বিলের জলে হাঁস
আলের রাস্তা, বাঁশের সাঁকো, গোরু মোষের পাল
শিমূল গাছের ফুল খেত সব কতই শালিক ময়না
প্রজাপতির দল যেন ঠিক অতসীরই গয়না।
বনের মাঝে ভাই-বোন ফুল আপন মনে দোলে
ভাবত হয়তো এমনি করেই দিনগুলো তার যাবে
কল্পনাতেও ছিল না তার বাইরে দু’পা দেবে।
কিন্তু দিন তো যায় না এমন বাড়তে থাকে বয়সটা
একদিন তাই সেই ছেলেকে ছাড়তে হল গ্রামটা।
পেয়েছিল সেদিন যত দুঃখ-ব্যথা-কষ্ট
সেই ছেলে আজ বড় হয়ে মস্ত লেউকেটা
কিন্তু ফিরে ফিরেই তাকায় ক্লান্ত যখন মনটা।
অতীত দিনের সেসব কথা যেন লাগে সদ্য
স্মৃতি রোমন্থনের তরেই লিখতে বসে পদ্য।
১৭
হৃদয় নাচে
বৈশাখী
হিন্দোলে আজ
হৃদয় নাচে।
বর্ষবরণ, বর্ষাবরণ
কালবোশেখির
অনুরণন
তবু - পূজার আবাহনে আজ
হৃদয়
নাচে।
বিস্মৃতিরই
দোলায় আজ
হৃদয় নাচে।
এদিক ওদিক ছন্দপতন
আন্দোলিত তনুমন
তবু - অস্তিত্বের অস্মিতায় আজ
হৃদয়
নাচে।
সমর্পণের
আশায় আজ
হৃদয় নাচে।
জীবন - শয়ন - স্বপন
ভাবনা
অনুক্ষণ
তবু - বন্দনার এ লগনে আজ
হৃদয়
নাচে।
হৃদয় নাচে
হৃদয় নাচে।
বর্ষবরণ, বর্ষাবরণ
তবু - পূজার আবাহনে আজ
হৃদয় নাচে।
এদিক ওদিক ছন্দপতন
আন্দোলিত তনুমন
তবু - অস্তিত্বের অস্মিতায় আজ
হৃদয় নাচে।
জীবন - শয়ন - স্বপন
তবু - বন্দনার এ লগনে আজ
১৮
তুমি আছ
আমার
তুমি আছ
সহস্র পথে সহস্র বিষাক্ত আলিঙ্গন
তবু হয়না ছন্দপতন
অস্তিত্বের নেই কোনো সংকট
আমার তুমি আছ।
বৃষ্টির
টাপুর টুপুর
গুঞ্জরিত মর্মর
স্বপ্নভঙ্গের আকুল বেদন
এমনি করেই শুরু
শেষ কোথা ?
আদি
আছে অন্ত নেই
অন্তের অন্বেষণে হারিয়ে যাবে
একটি জীবন, তবুও
শাশ্বত
গরিমা
আমার তুমি আছ।
১৯
জন্মভূমি
আকাশের
লক্ষকোটি তারা
কিংবা পাতাবাহার
রুক্ষপীবর কিংবা শস্পকোমল
এমনি করেই এরা নাচেন, কাঁদেন
হেঁটে
বেড়ান,
গান।
ধরতে
গেলেই ফুসমন্তর।
তাঁদের কাছে হারিয়ে যাওয়ায় তো নেই মানা
অন্তত কাগজে কলমে।
ক্ষুদ্রান্ত্র যোজন পাড়ি দিলেও
প্রত্যয়িত আমি - অধরা মোর জন্মভূমি।
২০
ব্যর্থ গ্রহীতা
শুধু
একটি হৃদয়ের জন্য
কত প্রতীক্ষা, কত প্রচেষ্টা
ব্যর্থতা
নাকি সফলতার ধাপ
তাই এক দুই তিন…।
শত ব্যর্থতার পরেও ফের
মাথা তোলে, উঠে দাঁড়ায়।
এখানে-ওখানে, এভাবে-ওভাবে,
একে-ওকে
বারে বারে
অভীপ্সা
নিবেদনে উজাড় করে দেয়।
প্রতিবারেই শুধু প্রত্যাখ্যান।
অবশেষে প্রতীক্ষার হল অবসান।
চরিতার্থ হল প্রত্যাঘাত
বিদীর্ণ হল দুটি হৃদয়।
গররাজি দাতা
আর পিয়াসি গ্রহীতা।
তুমি আছ
সহস্র পথে সহস্র বিষাক্ত আলিঙ্গন
তবু হয়না ছন্দপতন
অস্তিত্বের নেই কোনো সংকট
আমার তুমি আছ।
গুঞ্জরিত মর্মর
স্বপ্নভঙ্গের আকুল বেদন
এমনি করেই শুরু
শেষ কোথা ?
অন্তের অন্বেষণে হারিয়ে যাবে
একটি জীবন, তবুও
আমার তুমি আছ।
কিংবা পাতাবাহার
রুক্ষপীবর কিংবা শস্পকোমল
এমনি করেই এরা নাচেন, কাঁদেন
তাঁদের কাছে হারিয়ে যাওয়ায় তো নেই মানা
অন্তত কাগজে কলমে।
ক্ষুদ্রান্ত্র যোজন পাড়ি দিলেও
প্রত্যয়িত আমি - অধরা মোর জন্মভূমি।
কত প্রতীক্ষা, কত প্রচেষ্টা
তাই এক দুই তিন…।
শত ব্যর্থতার পরেও ফের
মাথা তোলে, উঠে দাঁড়ায়।
এখানে-ওখানে, এভাবে-ওভাবে,
প্রতিবারেই শুধু প্রত্যাখ্যান।
অবশেষে প্রতীক্ষার হল অবসান।
চরিতার্থ হল প্রত্যাঘাত
বিদীর্ণ হল দুটি হৃদয়।
গররাজি দাতা
আর পিয়াসি গ্রহীতা।
২১
রোজনামচা
আজ সারাটি দিন কী ধকলটাই না গেল।
সকাল থেকে শুধু ছুটোছুটি আর অগুনতি
নপুংসক মুহূর্ত। আমার কালো খাতায়
বাঁধিয়ে রাখার মতো সব অন্তরঙ্গ কাহিনি।
ঘুম থেকে ওঠেই মনটা কেমন যেন তিক্ত
স্বাদে ভরে ওঠে। মেয়েটাও ঘরে নেই।
মায়ের সাথে মামাবাড়ি। ভাবলুম অবসরে
কবিতা লিখি। বসে গেলুম ঘটা করে।
সঙ্গে নিলুম কাগজ-কলম-অভিধান...
মোবাইল ফোন,
রিমোট কন্ত্রোল আর বাদাম।
বসে বসে ধ্যান করে ইস্তক ভেবে চিন্তেও
দু’ছত্র মেলাতে পারলুম না। ধুস্, উঠে পড়ি।
পেটে কিছু চালান না দিলে নয়।
নস্যি মহাজনের চাউমিনও যেন আজ বিস্বাদ।
তাই গিলে যাচ্ছিলুম অফিসে। রাস্তায় এক
দুর্ঘটনা। আমার দ্বিচক্রযানের আলতো চুমোয়
আহত এক অচেনা পথিক। উত্তেজিত জনতাকে
সামলাতে গিয়ে হিমসিম। শেষে বলতেই হলো
আমি পুলিশে চাকরি করি। মিথ্যে কথা।
বলতেই হয়, না হলে রক্ষে নেই। যাহোক্
মুক্তি পেয়ে চলে গেলুম। কিন্তু মুক্তি কোথায় ?
অফিসে গিয়েই খবর পেলুম বস আসছেন।
পিত্তি জ্বলে যায় মাইরি। একটুখানি শান্তির
আশা নেই। বস এলেই খামোকা হম্বিতম্বি।
আমারও মাথার এদিন ঠিক নেই। বস্কে
রেখেই বেরিয়ে এলুম। কোথায় যাই ?
সিনেমা দেখব ? ওহ ! বোরিং তিনটি ঘণ্টা
এক জায়গায় বসে থাকার পাত্র আমি নই।
আমার অশান্ত মন, কাজ চাই কাজ।
উপায় একটা মাথায় এল। ঘরে গিয়ে
একটা ছোটগল্প সাজালে কেমন হয় ? দারুণ
কিছু প্লট এসেছে কাল। ভাই অনিমেষ
বিয়ে করেছে। জব্বর বিয়ে, অনোখা শাদি।
কোর্টেও নয়,
ছাঁদনাতলায়ও নয়। সম্ভবত
কোনো এক মন্দিরে। এখনো পুরোটা জানি না
মেয়েটার সাথে এক সপ্তাহের খানিকটা বেশি
দিন হল প্রেম। ভীতু অনিমেষও প্রেম করে ?
মেয়েটি নাকি জোর গলায় অনিমেষকে বলেছিল -
তুমি পুরুষ হয়েও ভয় পাও ? অথচ
কী আশ্চর্য আমি তো পাই না। ঘাবড়ে গিয়ে
সাহসী হয়ে উঠেছিল অনিমেষ, জেগে উঠেছিল
ওর পুরুষ সত্ত্বা। তার দুদিন পরের কাহিনি -
মেয়েটাকে দুদিন পরই নিয়ে পালিয়েছে অনিমেষ।
ওরা দুটিতে নাকি গত আট বছর ধরে ভাবছিল
একে অপরকে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’
এ কথাটা বলবে। পারেনি। যেদিন পেরেছে
ভেঙে পড়েছে পাহাড়, আর দেরি হয়নি। ক্ষেপে গেছেন
ওদের পরিবারের অভিভাবকরা। লাঠি বল্লম নিয়ে
বেরিয়ে গেছেন যুগল প্রণয়ীর খোঁজে। মেনে নিতে
পারেনি কেউ। হাসি পায় আমার। উত্তেজনার
পারদ নেমে এলে সবাই ক্ষান্ত হবে। এ সার সত্যটা
আমার জানা। নদীর জল যত গড়াবে
অনিমেষের গ্রহণযোগ্যতাও ততই বাড়বে। না
আজ আর গল্প লেখা হল না, খেয়ে দেয়ে
ঘরে এসে মেয়ের কাছে ফোন করে জানলুম
ওরা আসছে। আমার শূন্য ঘরের মরুভূমিতে
বৃষ্টি আসবে। কূল ছাপিয়ে বইবে শুধু হাসির বন্যা।
ভেবে ভেবে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
রোজনামচা
সকাল থেকে শুধু ছুটোছুটি আর অগুনতি
নপুংসক মুহূর্ত। আমার কালো খাতায়
বাঁধিয়ে রাখার মতো সব অন্তরঙ্গ কাহিনি।
ঘুম থেকে ওঠেই মনটা কেমন যেন তিক্ত
স্বাদে ভরে ওঠে। মেয়েটাও ঘরে নেই।
মায়ের সাথে মামাবাড়ি। ভাবলুম অবসরে
কবিতা লিখি। বসে গেলুম ঘটা করে।
সঙ্গে নিলুম কাগজ-কলম-অভিধান...
দু’ছত্র মেলাতে পারলুম না। ধুস্, উঠে পড়ি।
নস্যি মহাজনের চাউমিনও যেন আজ বিস্বাদ।
তাই গিলে যাচ্ছিলুম অফিসে। রাস্তায় এক
দুর্ঘটনা। আমার দ্বিচক্রযানের আলতো চুমোয়
আহত এক অচেনা পথিক। উত্তেজিত জনতাকে
সামলাতে গিয়ে হিমসিম। শেষে বলতেই হলো
আমি পুলিশে চাকরি করি। মিথ্যে কথা।
বলতেই হয়, না হলে রক্ষে নেই। যাহোক্
পিত্তি জ্বলে যায় মাইরি। একটুখানি শান্তির
আশা নেই। বস এলেই খামোকা হম্বিতম্বি।
আমারও মাথার এদিন ঠিক নেই। বস্কে
রেখেই বেরিয়ে এলুম। কোথায় যাই ?
আমার অশান্ত মন, কাজ চাই কাজ।
একটা ছোটগল্প সাজালে কেমন হয় ? দারুণ
বিয়ে করেছে। জব্বর বিয়ে, অনোখা শাদি।
মেয়েটার সাথে এক সপ্তাহের খানিকটা বেশি
দিন হল প্রেম। ভীতু অনিমেষও প্রেম করে ?
সাহসী হয়ে উঠেছিল অনিমেষ, জেগে উঠেছিল
ওরা দুটিতে নাকি গত আট বছর ধরে ভাবছিল
একে অপরকে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’
ভেঙে পড়েছে পাহাড়, আর দেরি হয়নি। ক্ষেপে গেছেন
বেরিয়ে গেছেন যুগল প্রণয়ীর খোঁজে। মেনে নিতে
পারেনি কেউ। হাসি পায় আমার। উত্তেজনার
পারদ নেমে এলে সবাই ক্ষান্ত হবে। এ সার সত্যটা
আমার জানা। নদীর জল যত গড়াবে
অনিমেষের গ্রহণযোগ্যতাও ততই বাড়বে। না
আজ আর গল্প লেখা হল না, খেয়ে দেয়ে
ওরা আসছে। আমার শূন্য ঘরের মরুভূমিতে
বৃষ্টি আসবে। কূল ছাপিয়ে বইবে শুধু হাসির বন্যা।
ভেবে ভেবে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
২২
ভালোবাসা
কতকাল খুঁজি
তোমায়
এখন আস না কেন আর ?
ওহ্ ! এখন আর ভালো লাগে না ?
আগে তো লাগত।
আচ্ছা, ভালো লাগা কী করে বদলায় ?
কেমন করে
ফিকে হয় রং ?
কে দোষী ? জিন ?
এমন খোঁজ
নিয়েছে কেউ ?
কিন্তু জিন
তো আগেও ছিল
তাহলে কি সেরিবেলাম ?
সেও তো একই
আছে।
হৃদয়ও তো একটাই
শুধু খেয়েদেয়ে বড় হয়েছে।
হতে পারে যুগ -
তা আমি তুমি
তো একই যুগের
আসলে তুমি আগেও
ভালোবাসতে না আমায়
ভুল বললাম ? জানিও। কেমন ?
ভালোবাসা
এখন আস না কেন আর ?
আচ্ছা, ভালো লাগা কী করে বদলায় ?
তাহলে কি সেরিবেলাম ?
হৃদয়ও তো একটাই
শুধু খেয়েদেয়ে বড় হয়েছে।
হতে পারে যুগ -
আসলে তুমি আগেও
ভালোবাসতে না আমায়
ভুল বললাম ? জানিও। কেমন ?
২৩
ওয়াই-টু-কে
সহস্রাব্দের
লাটিম
পরেছে দ্রৌপদীর বসন
নাম তার ওয়াই-টু-কে।
পাড়ে বেঁচে
থাকা
অঞ্চলে নাওয়া-খাওয়া।
দুর্যোধন
উগ্রপন্থী
শকুনি, নেতা চুনোপুটি,
ভীস্ম - তাবড় তাবড়।
ধৃতরাষ্ট্র সরকার।
কিংবা দুঃশাসন, জরাসন্ধ
হায়
কৃষ্ণার্জুন।
হারানো ছন্দ কবিতার ওয়াই-টু-কে
আরো আছে অন্য
অন্ন
পদ্য-পদ্মও ওয়াই-টু-কে
হায় সুকান্ত-সত্যেন্দ্র।
কঙ্গো, বঙ্গো, সিন্থেসাইজার
সুরেও ওয়াই-টু-কে
আরো আছে বাবা-ঊষা,
নাকি রিকি, ককো
হায় কে এল্, গীতা।
ওয়াই-টু-কে
পরেছে দ্রৌপদীর বসন
নাম তার ওয়াই-টু-কে।
অঞ্চলে নাওয়া-খাওয়া।
শকুনি, নেতা চুনোপুটি,
ধৃতরাষ্ট্র সরকার।
কিংবা দুঃশাসন, জরাসন্ধ
হারানো ছন্দ কবিতার ওয়াই-টু-কে
পদ্য-পদ্মও ওয়াই-টু-কে
২৪
মৃত্যুদণ্ড
আমি
এলিট্,
আমি রয়্যাল
আমার
চকবারান্দায়
বনসাই ক্যামেলিয়া আর রডোডেন্ড্রণ
বাইরে আমার মান-সম্মান
ঘরে
আমি শ্রীচরণেষু
যোষিৎ পূজিতা।
তপন তাপিত নির্ঘণ্টে
আমার নেই কোনো ক্ষুধা
কিন্তু তিমিরাবৃত ক্ষণে আমার
উত্তেজিত রুধিরানল
আকাশছোঁয়া বুভুক্ষা
অভীপ্সা আমায় পাগল করে দেয়
প্রোদ্ভিন্ন যৌবন-জল-তরঙ্গ
মনের
মধ্যে,
শরীরের অভ্যন্তরে।
তাই অলিন্দে অলিন্দে, ঘুরঘুট্টিতে
আমার
নিঃশব্দ পদচারণা।
জীবন যুদ্ধের নিকৃত পথিক
কাঠগড়ার বাইরে কী চাও তুমি ?
ফাঁসির
মঞ্চ বেয়ে ওপারে
অভব্য-বর্জিত সমাজে
কোথায়
থাকবে তুমি ?
মৃত্যুদণ্ড
বনসাই ক্যামেলিয়া আর রডোডেন্ড্রণ
বাইরে আমার মান-সম্মান
যোষিৎ পূজিতা।
তপন তাপিত নির্ঘণ্টে
আমার নেই কোনো ক্ষুধা
কিন্তু তিমিরাবৃত ক্ষণে আমার
উত্তেজিত রুধিরানল
আকাশছোঁয়া বুভুক্ষা
অভীপ্সা আমায় পাগল করে দেয়
প্রোদ্ভিন্ন যৌবন-জল-তরঙ্গ
তাই অলিন্দে অলিন্দে, ঘুরঘুট্টিতে
জীবন যুদ্ধের নিকৃত পথিক
কাঠগড়ার বাইরে কী চাও তুমি ?
অভব্য-বর্জিত সমাজে
প্রিয়তমা তোমায়
বছরটাকে পেছন ফেলে
আড়মোড়াটা ভেঙে নিয়ে
নতুন করে বসব ওঠে
করবো এবার পণ।
আসবে
ছেড়ে অনেক পিছু
রাখব শুধু ভালোয় ভরা
শুদ্ধ একটা মন।
রাখব শুধু ভালোয় ভরা
শুদ্ধ একটা মন।
এমনি করেই বছর যায়
এমনি করেই বয়স গড়ায়
এমনি করেই অন্ত এগোয়
স্মৃতি পেছন যায়।
এমনি করেই অন্ত এগোয়
স্মৃতি পেছন যায়।
তাইতো বলি নেইকো সময়
জেগে ওঠার বিলম্ব নয়
এখন শুধুই ভবিষ্যতের
স্বপ্ন দেখা দায়।
এখন শুধুই ভবিষ্যতের
স্বপ্ন দেখা দায়।
নতুন বছর নতুন
আশা
অটুট থাকুক
ভালোবাসা
দুজন মিলে গড়ব মোরা
নতুন সুখের বাসা।
দুজন মিলে গড়ব মোরা
নতুন সুখের বাসা।
দোষ ত্রুটি
তো নয় বিচার্য
চাই সান্নিধ্য
আর সাহচর্য
এবার - সুখ
সাগরে ভাসব মোরা
সংসার হোক খাসা
২৬
পরখ
বৃত্তের
ভেতরে থাকাটাই সমীচীন
বড়জোর পরিধি
এর বাইরে যাওয়াটা
মোটেই শোভন নয়।
এমনি আমার ভাবনা
দিন আনি দিন খাই করে
সুট্ বুট্ পরা কিংবা
ব্যাংকের
লকারে জহরত রেখে
মলিন, কোঁচকানো বসন
কোনোটাই
নয় মানানসই।
তাই তো বলি -
প্রেম-ভালোবাসা,
বিয়ের আগে
পরখ
করে নাও
নিজের ভেহারাটা
ট্যাঁক ও টাকের।
বড়জোর পরিধি
এর বাইরে যাওয়াটা
মোটেই শোভন নয়।
এমনি আমার ভাবনা
দিন আনি দিন খাই করে
সুট্ বুট্ পরা কিংবা
মলিন, কোঁচকানো বসন
তাই তো বলি -
নিজের ভেহারাটা
ট্যাঁক ও টাকের।
২৭
আবাহন
দিন
তো এমনি যাবে না
ধ্বস্তগৃহে
প্রতিচক্ষুহীন হয়ে
পটে তোমায় আঁকবো
নই আমি নিস্নাত পটুয়া।
প্রতিবদ্ধ
জীবন পথে
কতবার তোমায় চাইব ?
কতবার
করেছি আহ্বান
তথাপি রয়ে গেছ অধরা।
অভীপ্সা
তব চরণরেণু
কিন্তু নই আমি অক্লান্ত মধুভৃৎ।
আজ
আমি নিকৃত সৈনিক।
স্পষ্টবাদী আমি নাটুকেপনা আমার সয় না।
তাই
আজ করি অন্তিম আবাহন
আজ নির্লজ্জ কদমবুসির হোক সমাপন
জ্ঞাপন করি সমর্পিত,
সুবাসিত
প্রেমাঞ্জলি।
আবাহন
পটে তোমায় আঁকবো
নই আমি নিস্নাত পটুয়া।
কতবার তোমায় চাইব ?
তথাপি রয়ে গেছ অধরা।
কিন্তু নই আমি অক্লান্ত মধুভৃৎ।
স্পষ্টবাদী আমি নাটুকেপনা আমার সয় না।
আজ নির্লজ্জ কদমবুসির হোক সমাপন
জ্ঞাপন করি সমর্পিত,
২৮
প্রথম দেখা
আমার
মনটা ছিল তরল চপল বয়সটাও তেমনি
কিন্তু তোমায় প্রথম দেখেই কী হল কী জানি ?
এমন
আমি অমল কোমল
হয়ে গেলাম গহিন ভীষণ
এক পলকেই বুড়িয়ে গেলাম
প্রেমের ফাঁদে হারিয়ে গেলাম
তুমি হেসে হেসে ছিনিয়ে নিলে আমার হৃদয়খানি।
সেদিনের
সেই প্রথম দেখা ভুলতে আজো নারি
হারিয়ে যেতে পড়লে ধরা আমি হেসে মরি।
এক পলকের দেখার পরেই
উতলা হল মন
আমি তখন জানতেম না
প্রেমটা কেমন
কিন্তু বুকে বাজল বড় এ কোন বাদ্য ভারী।
মনে
মনে নিলাম করে তোমায় জীবনসাথি
হলাম তোমার সকল ব্যথায় আমি সমব্যথী।
হল আকুল আমার হৃদয়
ফেলতে নারি পলক - তোমায় হারানোর যে ভয়
সকাল
সন্ধ্যা এক আশাতেই তখন আমি মগ্ন
হোক সে কঠোর কল্পনা, কিংবা দিবাস্বপ্ন
তুমি
তখন লক্ষ্য শুধুই আমি মহারথী।
বলতে
পারো কেন তুমি সেদিন এমনি করে
থেকে থেকেই পালাচ্ছিলে এঘরে ওঘরে
সেকি শুধুই বিঁধতে আমায় ?
তুমি
সেদিন ছিলে বড্ড লাজুক মায়াময়
আমার ছিল অন্য কাজ, কিন্তু আমার চপল মন
শুধুই
করে তোমার অন্বেষণ
পায় না কোনো লাজ শুধুই মরমে যে মরে।
এমনি
করে বুকের ভাষা উথলে ওঠে চোখের নেশায়
বারেবারেই তাকাই শুধু তোমায় দেখার আশায়।
তুমিও মোর ভাষা কী সে
পড়তে পেরে বললে হেসে
না বলোনি
বলতে চেয়েছিলে কি ?
কিন্তু
তোমার লজ্জা এসে আটকে দিল তোমায়।
ইতিমধ্যে
সবাই মিলে ধরল আমায় কষে
রইল না তো কিছুই গোপন লুটালো সব হেসে।
হয়তো সবাই উড়িয়ে দিল
যে যার কথায় মত্ত ছিল
আমি কিন্তু ততক্ষণে চাইছি মনে প্রাণে
প্রথম প্রেমের এ ঘোর যেন নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে
থাকে সদাই, যায় যেন দিন তোমায় ভালোবেসে।
শুধাই
তোমায় সংগোপনে ভাবনা আমার এলোমেলো
সেদিন তুমি ভাবছিলে কী সত্যি করে বলো -
আমায়
অমন পাগল করে
তুমিও কি একটি বারে
হারিয়ে যেতে চাওনি আমায়
ভালোবাসার নেশায় নেশায়
দোহাই তোমার পালিও না দিব্যি করে বলো।
প্রথম
দিনের সেই যে দেখা
প্রথম প্রেমের পাঠটি শেখা
সে যে সারা জীবন এমনি করে
বাঁধবে আমায় প্রেমের ডোরে
জানিনি তা এখন শুধুই স্মৃতির সালতামামি
চিরতরে দূরে এসেও ভুলিনি গো আমি
অন্তরে মোর তোমার কথা থাকবে সদাই লেখা।
যখন
কল্পনারই রঙিন খেলায় মাতব আমি আপনহারা
চুপটি করে একলা হয়ে দিবে তুমি ধরা।
না বলা সব কথার খেলায়
মাতব আমি বলব তোমায়
এমনি করে এসো গো মোর প্রিয়ে
কাটাবো পল মনের কথা কয়ে
দুজন মিলে উড়ব খানিক হব বাঁধনহারা
প্রথম দেখার সেই পুলকে হারিয়ে যাব মোরা।
২৯
জীবনের লেখাজোখা
বহুদিন
সুখস্মৃতি রাখিনু যতনে
রূপ রস গন্ধে ভরা জন্মভিটেখানি
প্রাণপণে ধরে রেখে দেহতনু মনে
শৈশবের গুঞ্জরিত তান আজো শুনি।
অন্তরের ভালোবাসা সবারে বিলায়ে
সুখেতে দুখেতে একে অপরের সাথি
দুঃখ যাতনা ক্লেশ মুখ বুজে সয়ে
সুখ সাগরের সুধা ভাগে সমব্যথী।
সেইসব দিনগুলি ফেলে এসে পিছু
নীরস কঠিন যত কঠোর বাস্তব
জীবনের লেখাজোখা আছে যত কিছু
মিলে না হিসেব কিছু যোগ করে সব।
বুঝলাম ছকে বাঁধা জীবনের ছবি
এই লয়ে আসা যাওয়া অবুঝ কবি।
প্রথম দেখা
কিন্তু তোমায় প্রথম দেখেই কী হল কী জানি ?
হয়ে গেলাম গহিন ভীষণ
এক পলকেই বুড়িয়ে গেলাম
প্রেমের ফাঁদে হারিয়ে গেলাম
তুমি হেসে হেসে ছিনিয়ে নিলে আমার হৃদয়খানি।
হারিয়ে যেতে পড়লে ধরা আমি হেসে মরি।
এক পলকের দেখার পরেই
উতলা হল মন
আমি তখন জানতেম না
প্রেমটা কেমন
কিন্তু বুকে বাজল বড় এ কোন বাদ্য ভারী।
হলাম তোমার সকল ব্যথায় আমি সমব্যথী।
হল আকুল আমার হৃদয়
ফেলতে নারি পলক - তোমায় হারানোর যে ভয়
হোক সে কঠোর কল্পনা, কিংবা দিবাস্বপ্ন
থেকে থেকেই পালাচ্ছিলে এঘরে ওঘরে
সেকি শুধুই বিঁধতে আমায় ?
আমার ছিল অন্য কাজ, কিন্তু আমার চপল মন
পায় না কোনো লাজ শুধুই মরমে যে মরে।
বারেবারেই তাকাই শুধু তোমায় দেখার আশায়।
তুমিও মোর ভাষা কী সে
পড়তে পেরে বললে হেসে
না বলোনি
বলতে চেয়েছিলে কি ?
রইল না তো কিছুই গোপন লুটালো সব হেসে।
হয়তো সবাই উড়িয়ে দিল
যে যার কথায় মত্ত ছিল
আমি কিন্তু ততক্ষণে চাইছি মনে প্রাণে
প্রথম প্রেমের এ ঘোর যেন নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে
থাকে সদাই, যায় যেন দিন তোমায় ভালোবেসে।
সেদিন তুমি ভাবছিলে কী সত্যি করে বলো -
তুমিও কি একটি বারে
হারিয়ে যেতে চাওনি আমায়
ভালোবাসার নেশায় নেশায়
দোহাই তোমার পালিও না দিব্যি করে বলো।
প্রথম প্রেমের পাঠটি শেখা
সে যে সারা জীবন এমনি করে
বাঁধবে আমায় প্রেমের ডোরে
জানিনি তা এখন শুধুই স্মৃতির সালতামামি
চিরতরে দূরে এসেও ভুলিনি গো আমি
অন্তরে মোর তোমার কথা থাকবে সদাই লেখা।
চুপটি করে একলা হয়ে দিবে তুমি ধরা।
না বলা সব কথার খেলায়
মাতব আমি বলব তোমায়
এমনি করে এসো গো মোর প্রিয়ে
কাটাবো পল মনের কথা কয়ে
দুজন মিলে উড়ব খানিক হব বাঁধনহারা
প্রথম দেখার সেই পুলকে হারিয়ে যাব মোরা।
রূপ রস গন্ধে ভরা জন্মভিটেখানি
প্রাণপণে ধরে রেখে দেহতনু মনে
শৈশবের গুঞ্জরিত তান আজো শুনি।
অন্তরের ভালোবাসা সবারে বিলায়ে
সুখেতে দুখেতে একে অপরের সাথি
দুঃখ যাতনা ক্লেশ মুখ বুজে সয়ে
সুখ সাগরের সুধা ভাগে সমব্যথী।
সেইসব দিনগুলি ফেলে এসে পিছু
নীরস কঠিন যত কঠোর বাস্তব
জীবনের লেখাজোখা আছে যত কিছু
মিলে না হিসেব কিছু যোগ করে সব।
বুঝলাম ছকে বাঁধা জীবনের ছবি
এই লয়ে আসা যাওয়া অবুঝ কবি।
৩০
প্রজাপতি
সকালের
শিশিরিভেজা অতসীগুলোর মাঝেই
ওরা দল বেঁধে আসত।
বড্ড রঙিন, বড্ড চঞ্চল
ধরতে
গেলেই বিতিকিচ্ছিরি সব কাণ্ড
যেন মরমে মরে যেত।
বেলা বাড়লে যখন ফুলগুলো তরতাজা
তখন আর কারো টিকিটিরও দেখা নেই
আসলে ওরা উড়ে যায়
যেখানে সকাল।
ওদের চরিত্রটা বড্ড ধাঁধালো
ওদের ধরতে উড়তে জানতে হয়
সে তো পাখা গজালে -
ফুল
থেকে ফুলান্তরে যেতে
দেশ থেকে দেশান্তরী হতে হতে।
ভাবনা
থেকে ভাবনান্তরে হারিয়ে থাকতে থাকতে
অতসী ফুলের সেই অজানা গন্ধটা
আজো মাঝে মাঝে ভেসে আসে
মন্দ নয়, সে বড্ড সুখকর।
ভালোবাসার অধরা মাধুরী
যেন জানান দিয়ে যায় -
সকালের
অজানা সৌরভ।
প্রজাপতি
ওরা দল বেঁধে আসত।
বড্ড রঙিন, বড্ড চঞ্চল
যেন মরমে মরে যেত।
বেলা বাড়লে যখন ফুলগুলো তরতাজা
তখন আর কারো টিকিটিরও দেখা নেই
আসলে ওরা উড়ে যায়
যেখানে সকাল।
ওদের চরিত্রটা বড্ড ধাঁধালো
ওদের ধরতে উড়তে জানতে হয়
সে তো পাখা গজালে -
দেশ থেকে দেশান্তরী হতে হতে।
অতসী ফুলের সেই অজানা গন্ধটা
আজো মাঝে মাঝে ভেসে আসে
মন্দ নয়, সে বড্ড সুখকর।
ভালোবাসার অধরা মাধুরী
যেন জানান দিয়ে যায় -
দ্বিতীয় ভাগ (ছড়া)
সাত সাগরের সময় নাই
(শিশুদের জন্য লিখিত এই পর্বের ছড়া ও কবিতাগুলি আমার পরম আদরের আত্মজা সুচয়িতা এবং পুত্রসম দুই ভ্রাতুস্পুত্র সুজয় ও সৌভিক (পল)কে উৎসর্গ করলাম)।
১
প্রভাত
সংগীত
আজ প্রভাত পাখির তানে
গুঞ্জরিত দিগ্বিদিক
উদয় রবির প্রথম কিরণ
প্রস্ফুটিত পুস্পের প্রথম সুবাস
করি জগদীশ্বর স্মরণ
স্মরি ভাগ্য বিধাতা চরণ।
লখি শিশিরস্নাত তৃণরাজি
মন মোর হয় মাতোয়ারা
দেখিও সঠিক পথ
হে প্রভু করুণাময়, আমি দিশাহারা।
যেন আপন পরে না করি বিভেদ
মাতা-পিতা আর যত গুরুজন
বন্ধু-বান্ধব যত আত্মীয় স্বজন
প্রেম-প্রীতি আশিস যেন পাই সারাক্ষণ।
হে আজি প্রভাতের প্রথম আলো
যায় যেন দিন মোর ভালো - আরো ভালো।
করি জগদীশ্বর স্মরণ
স্মরি ভাগ্য বিধাতা চরণ।
২
সন্ধ্যা
সংগীত
আবার প্রভু ফুরালো মোর দিন
অস্তরবির রঙিন ছটা দিগন্তে হল লীন।
ওরে বিহঙ্গ ফিরে যা কুলায়
যামিনী লুটালো এসে পথেরই ধুলায়।
এবার তিমির পৃথিবী হবে প্রশান্ত
কর্মভারে ধ্বস্ত-শ্রান্ত-ক্লান্ত।
রূপসি গোধূলির আকুলি আহ্বান
মন্দ্রিত হল ফের দিবাবসান।
দূরাকাশে উদ্ভাসিত একফালি চাঁদ
ধ্বাস্ত রজনী যেন বিশ্বময় ফাঁদ
দিন-রজনীর মাঝে স্মরি বিধাতা
আমার যা কিছু তোমায় সমর্পিনু তা।
সন্ধ্যা সংগীতে করি গুরু বন্দনা
ধন্য আমি সফল আমার সকল কল্পনা।
সায়াহ্নে বিদায় মাগি একটি নমস্কারে
আবার আসিব ফিরে তোমাদেরই তরে।
গুঞ্জরিত দিগ্বিদিক
প্রস্ফুটিত পুস্পের প্রথম সুবাস
করি জগদীশ্বর স্মরণ
স্মরি ভাগ্য বিধাতা চরণ।
মন মোর হয় মাতোয়ারা
দেখিও সঠিক পথ
হে প্রভু করুণাময়, আমি দিশাহারা।
মাতা-পিতা আর যত গুরুজন
যায় যেন দিন মোর ভালো - আরো ভালো।
করি জগদীশ্বর স্মরণ
স্মরি ভাগ্য বিধাতা চরণ।
অস্তরবির রঙিন ছটা দিগন্তে হল লীন।
ওরে বিহঙ্গ ফিরে যা কুলায়
যামিনী লুটালো এসে পথেরই ধুলায়।
এবার তিমির পৃথিবী হবে প্রশান্ত
কর্মভারে ধ্বস্ত-শ্রান্ত-ক্লান্ত।
রূপসি গোধূলির আকুলি আহ্বান
মন্দ্রিত হল ফের দিবাবসান।
দূরাকাশে উদ্ভাসিত একফালি চাঁদ
ধ্বাস্ত রজনী যেন বিশ্বময় ফাঁদ
দিন-রজনীর মাঝে স্মরি বিধাতা
সন্ধ্যা সংগীতে করি গুরু বন্দনা
ধন্য আমি সফল আমার সকল কল্পনা।
সায়াহ্নে বিদায় মাগি একটি নমস্কারে
আবার আসিব ফিরে তোমাদেরই তরে।
৩
শোন শিশু
শোন শিশু বলছি তোমায় হবে যখন বড়ো
তোমার তরেই লিখছি পদ্য মন দিয়ে তা পড়ো।
চলার পথে অন্যায়কে কোরবে নাকো ভয়
বাসবে ভালো অধ্যয়নটা - তাতেই হবে জয়।
হৃদয়টাকে মহৎ করে রেখো চিরদিন
করবে নাকো ঘৃণা দ্বেষ - দীন যারা হীন।
মাথা উঁচু করে থেকো, বলবে সবাই বেশ
রেখো মান জন্মভূমির - এ আমাদের দেশ।
সমাজ যেন গর্বিত হয় তোমার কর্মফলে
মান বাড়িয়ো ধর্মে কর্মে বিদ্যা বুদ্ধি বলে।
সেদিন হব ধন্য আমি তোমার মুখটি চেয়ে
ছাড়ব সেদিন এ ধরাতল তোমায় মহান পেয়ে।
শোন শিশু
তোমার তরেই লিখছি পদ্য মন দিয়ে তা পড়ো।
চলার পথে অন্যায়কে কোরবে নাকো ভয়
বাসবে ভালো অধ্যয়নটা - তাতেই হবে জয়।
হৃদয়টাকে মহৎ করে রেখো চিরদিন
করবে নাকো ঘৃণা দ্বেষ - দীন যারা হীন।
মাথা উঁচু করে থেকো, বলবে সবাই বেশ
সমাজ যেন গর্বিত হয় তোমার কর্মফলে
মান বাড়িয়ো ধর্মে কর্মে বিদ্যা বুদ্ধি বলে।
সেদিন হব ধন্য আমি তোমার মুখটি চেয়ে
ছাড়ব সেদিন এ ধরাতল তোমায় মহান পেয়ে।
৪
(ছড়ায় কাহিনি - ১)
পশুরাজের পরাক্রম
বনের রাজা সিংহ মামা মস্ত পরাক্রম
মারছে দেদার পশুপাখি খাচ্ছে কিন্তু কম।
বুদ্ধি করে সবাই মিলে রাজার কাছে ধায়
বলল - ‘রাজা বেঘোরে আজ প্রাণ যে মোদের যায়।
বৃদ্ধ তুমি কষ্ট করে কেন শিকার করা ?
তার চে’ রোজ একটি করে খাবার দেবো মোরা’।
রাজি হল সিংহ রাজা বলল - ‘সই তাই
রোজ কিন্তু একটি করে খাবার আমার চাই’।
দিন যায় এমনি করে একটি পশু রোজ
মনের দুঃখে এগিয়ে যায় হতে রাজার ভোজ।
একদিন পড়ল পালা চতুর খরগোশের
দেরি করে বলল গিয়ে ‘মস্ত বড় শের -
পথ আটকে বলল মোরে খাবেই খাবে আজ’।
শুনেই রাজা ধৈর্যহারা ‘এত সাহস কার ?
চল দেখি আজ আচ্ছা করে মটকাবো তার ঘাড়’।
রাজায় নিয়ে বুদ্ধি করে জলের কাছে গেল
নিজের ছায়া দেখে রাজা জলেতে ঝাঁপ দিল।
খরগোশটা বুদ্ধি করে মারল পশুরাজ
হাঁফ ছেড়ে বাঁচল সবাই মস্ত খুশি আজ।
(ছড়ায় কাহিনি - ১)
পশুরাজের পরাক্রম
বুদ্ধি করে সবাই মিলে রাজার কাছে ধায়
বৃদ্ধ তুমি কষ্ট করে কেন শিকার করা ?
রাজি হল সিংহ রাজা বলল - ‘সই তাই
দিন যায় এমনি করে একটি পশু রোজ
একদিন পড়ল পালা চতুর খরগোশের
শুনেই রাজা ধৈর্যহারা ‘এত সাহস কার ?
রাজায় নিয়ে বুদ্ধি করে জলের কাছে গেল
খরগোশটা বুদ্ধি করে মারল পশুরাজ
৫
(ছড়ায় কাহিনি - ২)
সোনার ডিম
এক যে ছিল সোনা মিঞা
কাটতো সুখে দিন
তার ছিল এক হাঁস, রোজ
পাড়ত সোনার ডিম।
দুষ্ট লোকে বলল - ‘হাঁসের
পেটটি কেটে নাও
তবেই তুমি এক সাথে
অনেক সোনা পাও’।
তাই না শুনে সোনা মিঞা
কাটল সোনার হাঁস
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
সুখের হল নাশ।
(ছড়ায় কাহিনি - ২)
সোনার ডিম
কাটতো সুখে দিন
তার ছিল এক হাঁস, রোজ
দুষ্ট লোকে বলল - ‘হাঁসের
তবেই তুমি এক সাথে
অনেক সোনা পাও’।
তাই না শুনে সোনা মিঞা
কাটল সোনার হাঁস
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
সুখের হল নাশ।
৬
(ছড়ায় কাহিনি - ৩)
সুর-সাধনা
একটি অজ পাড়া গাঁয়ে
এক যে ছিল গাধা
কাজ ছিল না - সারাটা দিন
কেবলই সুর সাধা।
একদিন গাইতে গেল
ভিন গাঁয়ের এক জলসায়
জানত না আজ শ্রোতারা সব
সত্যিকারের গান চায়।
গাইতে গিয়ে হাঁ করে যেই
বেসুরো তান ধরল
এল তেড়ে সবাই মিলে
পিঠেও ক’ঘা পড়ল।
ঠ্যাং উঁচিয়ে লাফিয়ে পড়ে
পালিয়ে বাঁচায় প্রাণ
অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী
রাখা দায় মান।
(ছড়ায় কাহিনি - ৩)
সুর-সাধনা
এক যে ছিল গাধা
কাজ ছিল না - সারাটা দিন
একদিন গাইতে গেল
ভিন গাঁয়ের এক জলসায়
জানত না আজ শ্রোতারা সব
সত্যিকারের গান চায়।
গাইতে গিয়ে হাঁ করে যেই
বেসুরো তান ধরল
এল তেড়ে সবাই মিলে
পিঠেও ক’ঘা পড়ল।
ঠ্যাং উঁচিয়ে লাফিয়ে পড়ে
পালিয়ে বাঁচায় প্রাণ
অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী
রাখা দায় মান।
৭
(ছড়ায়
কাহিনি - ৪)
শালিক
ও শিয়াল
একটি শালিক থাকত সুখে
একটি গাছের কোটরে
কিচিরমিচির করত ছানা
সেই কোটরের অন্দরে।
ওই শালিকের বন্ধু ছিল
পাশের ঝোপের শেয়াল
সন্ধে হতেই ধরত কষে
উচ্চকণ্ঠে খেয়াল।
একদিন সেই শালিক যখন
ফিরে এল কুলায়
চক্ষু হল ছানাবড়া
না দেখে তার ছানায়।
এদিক ওদিক খুঁজে খুঁজে
ছানাকে না পায়
মনের দুঃখে কেঁদেকেটে
সখার কাছে যায়।
বলল শেয়াল করো নাকো
দুঃখ মিছিমিছি
উপায় একটা হবেই হবে
আমি যখন আছি।
দুটি মিলে সারাটা দিন
করল জোর তলাশ
মিলল শেষে গাছের নীচে
আশীবিষের বাস।
চতুর শেয়াল বুদ্ধি করে
বাতলালো উপায়
তাই শুনে সেই শালিক মা’টা
রাজার কাছে যায়।
রাজকন্যার গলা থেকে
ছোঁ মেরে নেয় হার
এনে ফেলে সাপের বাসায়
তা - দেখল ভৃত্য চার।
এল ছুটে সবাই মিলে
হার কুড়িয়ে নিতে
দেখতে পেয়ে সাপটাকে তাই
মারল কয়েক ঘা-তে।
এরপর দুই বন্ধু মিলে
সুখেই দিন কাটায়
ভরে গেল গাছের কোটর
ফের শালিকের ছানায়।
৮
বিশ্বে সবাই সবার মিতা
ও দাদুভাই যাচ্ছ কোথা ?
বলিসনি ভাই ওই যে হোথা।
সাতসকালে কীসের কাজ ?
ও বাড়িতে জলসা আজ।
তুমি সেথায় করবে কী ?
নাচব গাইব আবার কী ?
ও মা, তুমি নাচও জান ?
ও নিয়ে তুই ভাবিস কেন ?
আমায় একটা গান শোনাবে ?
সময় কই ? তা পরে হবে।
নাচতে গাইতে পারই না।
না পারলে খাবই না।
ও বুঝেছি, ভোজ লেগেছে।
বড্ড জ্বালাস এমনি মিছে।
আমায় তোমার সঙ্গে নেবে ?
কীজানি কী খেতে দেবে ?
ডাল দুখানা, বেগুন ভাজা
মাছ মাংস খাস্তা খাজা
টক দই আর রসগোল্লা
খাবে বামুন, পাদরি, মোল্লা।
একই পঙ্ক্তি, ভিন্ন জাত
যার যা ইচ্ছে পোলাও, ভাত
সেই সুখেতে কষ্ট করা
মানব ধর্ম প্রচার করা।
আমায় একটু বলবে ভাই ?
চল তবে একসাথে যাই
মন দিয়ে শোন বলছি যা
সত্যি যা আজ বলব তা।
সবার দেহে একই রক্ত
কেউ বা নরম, কেউ বা শক্ত।
তুই যেমন আমিও তা
বিশ্বে সবাই সবার মিতা।
কেউ বা হিন্দু, কেউ বা খ্রিস্ট
কেউ মুসলিম একই ইষ্ট।
কেউ বলে জল কেউ বা পানি
মিথ্যে শুধুই হানাহানি।
বল তো ভাই বুঝলি কী ?
জাত ধর্ম বুজরুকি।
আমরা সবাই সবার ভাই
ভুলতে হবে মিথ্যে বাই।
ঠিক বলেছিস দাদুভাই
রাখবি মনে এ কথাটাই।
জিভের জল আর জঠর জ্বালা
বাড়ছে এবার দু’পা চালা।
বিশ্বে সবাই সবার মিতা
সাতসকালে কীসের কাজ ?
নাচতে গাইতে পারই না।
না পারলে খাবই না।
বড্ড জ্বালাস এমনি মিছে।
আমায় তোমার সঙ্গে নেবে ?
টক দই আর রসগোল্লা
খাবে বামুন, পাদরি, মোল্লা।
মানব ধর্ম প্রচার করা।
মন দিয়ে শোন বলছি যা
সত্যি যা আজ বলব তা।
কেউ বা নরম, কেউ বা শক্ত।
তুই যেমন আমিও তা
বিশ্বে সবাই সবার মিতা।
কেউ বলে জল কেউ বা পানি
মিথ্যে শুধুই হানাহানি।
আমরা সবাই সবার ভাই
ভুলতে হবে মিথ্যে বাই।
রাখবি মনে এ কথাটাই।
জিভের জল আর জঠর জ্বালা
বাড়ছে এবার দু’পা চালা।
৯
সাত সাগরের সময় নাই
‘সাত সাগরের সময় নাই’
এখন সারা দিনটাই
এমনতরো পদ্য লিখে
মেয়েটা বেশ জমিয়ে রাখে।
ভুল বললাম লিখে না
লিখতে তো সে জানেই না
বয়স হল মাত্র চার
কিন্তু সে কী প্রশ্ন তার।
বাতাস কেন বয় বলো
দাদু কোথায় হারিয়ে গেল ?
এসব কথার জবাব কী ?
বলি শুধু - ‘এ-ম-নি’।
জবাবটা তার পছন্দ
মেয়েটা নয় মন্দ।
সাত সাগরের সময় নাই
এখন সারা দিনটাই
এমনতরো পদ্য লিখে
মেয়েটা বেশ জমিয়ে রাখে।
ভুল বললাম লিখে না
লিখতে তো সে জানেই না
বয়স হল মাত্র চার
কিন্তু সে কী প্রশ্ন তার।
দাদু কোথায় হারিয়ে গেল ?
মেয়েটা নয় মন্দ।
- - - - - - - - - -
Comments
Post a Comment