“এক কবিতা দুবার লেখা যায় না।" - বলেছিলেন জনৈক কবি। খুব
সত্যি, একটি কবিতার মতো আরেকটি কবিতা লেখা হয় না, কিংবা ইচ্ছে করে কবিতা লিখতে বসলেও কবিতা আসে না। অথচ
কোনো বিশেষ সুখ-দু:খ, আনন্দ-বেদনা, শোক-হতাশা মনে দাগ কাটলে অন্তর থেকে আপনিই বেরিয়ে আসে কথাকলি - হয়ে ওঠে কবিতা…।’ - কী ভীষণ একটি
সত্য কথা বলেই ‘আমার কথা’ শীর্ষক ভূমিকাপর্ব
শুরু করলেন কবি ড. রুণা পাল। তাঁর
সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ যা আবার তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থও বটে - ‘নবারুণা’র স্বকৃত ভূমিকার কথাই হচ্ছে এখানে। ৬৯ পৃষ্ঠার
কাব্যগ্রন্থটিতে দুই ভাগে সন্নিবিষ্ট হয়েছে ৫০টি কবিতা। বিষয়ভিত্তিক
নয় যদিও কী আছে তাঁর কবিতায় ? সেই উত্তরও পাওয়া যায় ‘আমার কথা’য় - ‘….কিছু পুরোনো এবং
কিছু নতুন অপ্রকাশিত কবিতা এই গ্রন্থে প্রকাশের পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছে। …আছে প্রকৃতি বিষয়ক, রোমান্টিক মনোভাবাপন্ন, বাংলা ভাষা শহিদ দিবস বিষয়ক, অস্তিত্ব সচেতনতামূলক,
বৈশ্বিক মহামারি বিষয়ক এবং অন্যান্য স্বাদের আরো কয়েকটি কবিতা।’
গ্রন্থের কবিতাসমূহ
দুটি বিভাগে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ‘ক’ বিভাগে বিচিত্র স্বাদের কবিতা এবং ‘খ’ বিভাগে অধ্যাত্মবিষয়ক কবিতাসমূহ। গ্রন্থের
মুখবন্ধে শিলচর রাধামাধব কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী
প্রাঞ্জল করে কবিতাসমূহের উপর সম্যক আলোকপাত করেছেন। তাঁর
কথায় - ‘ভালো লাগল তার স্বভাব বোধের তাড়নায় কবিতার চরণে চরণে সহজতর সুন্দর
বিচরণ। …তার কবিতায় কেবলমাত্র যে সহজতাই লক্ষ করা যায়
তা নয়। সহজতা প্রকাশে যে উপমা-উদাহরণ চয়ন করা হয়েছে - তাতেও তার অন্তরের ভাব-অনুভাব একটি সাবলীল বোধের বিকাশ ঘটায়…।’
আসলে কবি এই
গ্রন্থে উজাড় করে দিয়েছেন তাঁর যাবতীয় ভাবনা। ভাবনার
ভাষা তো গদ্য। সেই ভাষা, সেই ভাবনাকে কী করে পদ্যের রূপ দিতে হয় তাই করে দেখিয়েছেন কবি রুণা পাল।
আশা-নিরাশার দোলাচলের প্রতিফলন প্রত্যক্ষ করা যায় অধিকাংশ কবিতায়। মূলত ‘মা’ এবং
‘মাটি’ই এসেছে কবির ভাবনায় প্রবলভাবে। কিছু সরল সহজ সপাট কথা, কিছু আবেগ অনুভূতিই
কবিতার সম্পদ। তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া যায় কবিতায় -
মনের আঙ্গিনায় ভিড় করে আছে
বহু ভাবনা বিচিত্র চিন্তা
প্রকাশের ভাষা নেই...।। (কবিতা - ‘কবিতা’)
কবির কবিতার শব্দেরা কখনও শান্ত স্রোতস্বিনীর মতো আবার কখনও ঢক্কানিনাদে ঝংকৃত। ফলত তৎসম শব্দের বাহুল্য পরিলক্ষিত হয় কবিতায়। ‘বরাকের বুকে’ শীর্ষক কবিতায় কবি তুলে ধরেছেন তাঁর লেখালেখির খতিয়ান - কবিতায়। প্রতিটি কবিতার ফুটনোটে প্রকাশকাল ও প্রকাশিত পত্রিকার নাম রয়েছে। রয়েছে বেশ কিছু অপ্রকাশিত কবিতাও। কিছু কবিতা ব্যতিক্রমী হয়ে নিশ্চিতই দাগ কাটবে পাঠক-হৃদয়ে। যেমন - ‘দিতে পারি কিন্তু কেন দেব’, ‘বাঁচার অধিকার’, ‘কবিগুরু’, ‘নিরসন’, ‘জীবনের রঙিন মলাট’ ইত্যাদি। ‘মায়ের শেষের দিনে’ শীর্ষক দীর্ঘ কবিতা আবেগিক ভাবনায় বিমূর্ত। রয়েছে বেশ কিছু অন্ত্যমিলের কবিতাও।
আধুনিক বানান অনুসৃত হয়েছে যদিও রয়ে গেছে বেশ কিছু পুরোনো বানান। প্রথম কাব্যগ্রন্থ হিসেবে রয়ে গেছে কিছু জড়তা। সচরাচর প্রথমদিককার কবিতায় যেমন হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পুরুষের সম্বোধনসমন্বিত পঙ্ক্তি এসেছে বহু কবিতায়। অন্তরের ভাবনা ছাপিয়ে গেছে কাব্যভাবনার প্রয়োজনীয়তা। আবার পরবর্তী কাব্যগ্রন্থে এসব কাটিয়ে ওঠার এক স্পষ্ট ইঙ্গিতও ধরা পড়েছে বহু কবিতায়।
‘খ’ বিভাগে রয়েছে প্রার্থনা সংগীতের ধাঁচে ১৩টি অধ্যাত্মভাবনামূলক কবিতা। বিশেষ কিছু পাঠকের কাছে যা সমাদৃত হবে নিশ্চিতই।
স্পষ্ট ছাপা ও অক্ষর-শব্দ-পঙ্ক্তিবিন্যাস। নীলাক্ষি পাল (রিয়া)র প্রচ্ছদ ছিমছাপ নান্দনিক। ভাবনার প্রতিরূপ। কবি গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর বাবা স্বর্গীয় অরুণ চন্দ্র পাল ও মা স্বর্গীয়া ছায়ারাণী পালকে। সব মিলিয়ে এক ভবিষ্যৎ প্রত্যয়ের কাব্যগ্রন্থ যেখানে নিশ্চিতই কবি-ভাবনাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকবে কাব্যময়তা।
মনের আঙ্গিনায় ভিড় করে আছে
বহু ভাবনা বিচিত্র চিন্তা
প্রকাশের ভাষা নেই...।। (কবিতা - ‘কবিতা’)
কবির কবিতার শব্দেরা কখনও শান্ত স্রোতস্বিনীর মতো আবার কখনও ঢক্কানিনাদে ঝংকৃত। ফলত তৎসম শব্দের বাহুল্য পরিলক্ষিত হয় কবিতায়। ‘বরাকের বুকে’ শীর্ষক কবিতায় কবি তুলে ধরেছেন তাঁর লেখালেখির খতিয়ান - কবিতায়। প্রতিটি কবিতার ফুটনোটে প্রকাশকাল ও প্রকাশিত পত্রিকার নাম রয়েছে। রয়েছে বেশ কিছু অপ্রকাশিত কবিতাও। কিছু কবিতা ব্যতিক্রমী হয়ে নিশ্চিতই দাগ কাটবে পাঠক-হৃদয়ে। যেমন - ‘দিতে পারি কিন্তু কেন দেব’, ‘বাঁচার অধিকার’, ‘কবিগুরু’, ‘নিরসন’, ‘জীবনের রঙিন মলাট’ ইত্যাদি। ‘মায়ের শেষের দিনে’ শীর্ষক দীর্ঘ কবিতা আবেগিক ভাবনায় বিমূর্ত। রয়েছে বেশ কিছু অন্ত্যমিলের কবিতাও।
আধুনিক বানান অনুসৃত হয়েছে যদিও রয়ে গেছে বেশ কিছু পুরোনো বানান। প্রথম কাব্যগ্রন্থ হিসেবে রয়ে গেছে কিছু জড়তা। সচরাচর প্রথমদিককার কবিতায় যেমন হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পুরুষের সম্বোধনসমন্বিত পঙ্ক্তি এসেছে বহু কবিতায়। অন্তরের ভাবনা ছাপিয়ে গেছে কাব্যভাবনার প্রয়োজনীয়তা। আবার পরবর্তী কাব্যগ্রন্থে এসব কাটিয়ে ওঠার এক স্পষ্ট ইঙ্গিতও ধরা পড়েছে বহু কবিতায়।
‘খ’ বিভাগে রয়েছে প্রার্থনা সংগীতের ধাঁচে ১৩টি অধ্যাত্মভাবনামূলক কবিতা। বিশেষ কিছু পাঠকের কাছে যা সমাদৃত হবে নিশ্চিতই।
স্পষ্ট ছাপা ও অক্ষর-শব্দ-পঙ্ক্তিবিন্যাস। নীলাক্ষি পাল (রিয়া)র প্রচ্ছদ ছিমছাপ নান্দনিক। ভাবনার প্রতিরূপ। কবি গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর বাবা স্বর্গীয় অরুণ চন্দ্র পাল ও মা স্বর্গীয়া ছায়ারাণী পালকে। সব মিলিয়ে এক ভবিষ্যৎ প্রত্যয়ের কাব্যগ্রন্থ যেখানে নিশ্চিতই কবি-ভাবনাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকবে কাব্যময়তা।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
প্রকাশক -
পান্থজন প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন, শিলচর
মূল্য - ২০০ টাকা
যোগাযোগ - ৭০০২২৭৫১৮২
মূল্য - ২০০ টাকা
যোগাযোগ - ৭০০২২৭৫১৮২
Comments
Post a Comment