Skip to main content

'সেবা' - অপর্ণা দেব


গরজ ও সাহিত্যের যুগলবন্দি - ছোট পত্রিকাসেবা 

১১৮ পৃষ্ঠার বিশাল এক সাহিত্য সম্ভার শুধু পৃষ্ঠাসংখ্যার বিচারে মূল্যায়ন করলে ভুল হবে পত্রিকাটির বিশেষত্ব হচ্ছে তার আয়তন আট বাই বারোর বিশাল পরিমাপের ১১৮ পৃষ্ঠা সাধারণ হিসেবে অন্তত ১৮০ পৃষ্ঠার কাছাকাছি হতে পারে অর্থাৎ পৃষ্ঠাসংখ্যা ১১৮ হলেও এর ভেতরে গুঁজে দেওয়া হয়েছে অন্তত ১৮০ পৃষ্ঠার আয়োজন এবং প্রথমেই বলে দেওয়া ভালো যে এই মাপের পত্রিকা পড়তে কিন্তু পাঠকের যথেষ্ট অসুবিধে হয় ধারে কিংবা ভারে নয়, শুধুই পরিমাপে। দু’হাতে ধরে বইটি সামলাতেই হিমিশিম খেতে হয় তাই সম্পাদকীয় দপ্তর ভবিষ্যতে এই ব্যাপারটিতে মনোযোগী হবেন বলে আশা করা যেতে পারে
সেবাপত্রিকা আসামের করিমগঞ্জ থেকে প্রকাশিত বরিষ্ঠ নাগরিকদের প্রতি নিবেদিত একটি ষাণ্মাসিক ছোট পত্রিকা প্রকাশক - ‘সেবা - এ হেল্প এজেড গ্রুপ’ - যাঁরা পরিচালনা করেন বৃদ্ধাবাস - ‘বেলাভূমি আলোচ্য সংখ্যাটি ত্রয়োদশ বর্ষ, ২৫/২৬ যুগ্ম সংখ্যা ১ অক্টোবর, ২০২১
প্রথমেই এই ঢাউস পত্রিকার দুই পৃষ্ঠাজোড়া সম্পাদকীয় গোটা বছরে বহু কথা জমে রয়েছিল তারই প্রকাশ সময়কে, প্রবীণ নাগরিকদের সংস্পর্শকে, লেখক পাঠকের সাহচর্যকে তুলে ধরা হয়েছে বিস্তৃত পরিসরে লেখিকা, সমাজসেবিকা, সম্পাদিকা অপর্ণা দেব-এর সম্পাদকীয়তে -
গত দুবছর ধরে বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ এক অভেদ্য-অজানা পৃথিবীতে বসবাস করছে যে মানুষ জানে না এই রাত পোহালে ভোরের সূর্য সে দেখবে কিনা সেই ব্যক্তি মানুষটি জানেনা পরবর্তী মুহূর্তবিন্দু তাঁর হাতের মুঠোয় থাকবে কিনা …… এই টলোমলো সময়ের আবহে খুব নীরবে জীবনে জীবন যোগভূমি মিলনক্ষেত্রবেলাভূমি বারো বছরে পদার্পণ হল ……
এবারের সেবা পত্রিকা  ২৫/২৬ যুগ্ম সংখ্যা উন্মোচিত হওয়ার মুহূর্তে পত্রিকা ত্রয়োদশ বর্ষ পূর্ণ করছে বহু প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই করে পত্রিকা ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলতে চাইছে পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকে পত্রিকাবন্ধুরা পাশে রয়েছেন, আগামী দীর্ঘ পথ আমরা একসাথে চলবো এবং এই বন্ধন আরো দৃঢ় হবে এই আশা লালন করছিআমরা সমস্ত কলমবন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি
আসন্ন শারদোৎসব সবার জীবনে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়ে আনুক, আমাদের অপার শুভেচ্ছা সবার প্রতি
সেবাপত্রিকাটি একাধারে সাহিত্য পত্রিকা, বর্ষীয়ান নাগরিকের ইতিকথা এবং বৃদ্ধাশ্রমবেলাভূমি মুখপত্র তাই এই পত্রিকার লেখালেখি কিংবা বিষয়বস্তুর মান আলোচনার ঊর্ধ্বে তবু কিছু প্রতিষ্ঠিত এবং উঠতি কবি, সাহিত্যিকের রচনা বিশেষোল্লেখের দাবি রাখে নিশ্চিত এবং এক বিশাল সংখ্যক লেখকের লেখা সংগ্রহ করে ছাপানোর মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীর গরজ, দায় উৎসর্জন ফুটে ওঠে স্পষ্ট হয়ে
আলোচ্য বিশাল সংখ্যাটিতে সন্নিবিষ্ট হয়েছে ২১ টি কবিতা, টি প্রবন্ধ, ১৪ টি গল্প, টি সাক্ষাৎকার, টি অণুগল্প এবং টি স্মৃতিচারণ
কবিতার বিভাগে আলাদা করে উল্লেখ করতে হয় শরদিন্দু চক্রবর্তী, সমরবিজয় চক্রবর্তী, লুৎফুর রহমান, কুমুদরঞ্জন মল্লিক, জ্যোতিষ কুমার দেব, অভিজিৎ চক্রবর্তী এবং মনোমোহন মিশ্রের কবিতা কিছু পংক্তি শরদিন্দু চক্রবর্তীরবাবুইকবিতা থেকে -
সেদিন যখন গেলাম
আমার সাত বছর বয়সে ফেলে আসা বাড়িতে
দেখলাম সে ঘর নেই
সে নিকানো দাওয়া নেই, সে তালগাছ নেই,
তালগাছ নেই তাই বাবুই পাখি নেই
বাবুই নেই তাই তার বাসা নেই
বাসা নেই তাই জোনাকি নেই
জোনাকি নেই তাই আলো নেই
আলোমাখা ফেলে আসা ছেলেবেলা নেই
সব নেইনেইআর নেই
বড়ো হয়ে গেলে কত কিছু থাকে না
শব্দ থাকে, অক্ষর থাকে, যতি থাকে
কিন্তু বাবুই পাখির মতো
মানামের কবিতা থাকে না
করোনার করাল গ্রাসে সদ্যপ্রয়াত কবি, সাহিত্যিক জ্যোতিষ কুমার দেব-এর কবিতাএভাবেই বেঁচে আছিপাঠে সিক্ত হয়ে আসে দুচোখ কবিতার পাশাপাশি একই পৃষ্ঠায়সেবাপরিবারের শ্রদ্ধাঞ্জলি নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক কবিতা বিভাগে এর বাইরেও কবিতা লিখেছেন পৃথ্বীশ দত্ত, রামমোহন বাগচি, অভীক কুমার দে, কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য, ইমানুল হক, আর্যতীর্থ, ঝুমা সরকার এবং আছে কিছু কবিনামহীন কবিতা
প্রবন্ধ বিভাগে লিখছেন সোমশুভ্র দাস, বিনোদলাল চক্রবর্তী, সঞ্জয় গুপ্ত, প্রবীর আচার্য এবং সজল পাল প্রতিটি প্রবন্ধই বরিষ্ঠ নাগরিকদের নিয়ে অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং সুলিখিত সঞ্জয় গুপ্ত এবং প্রবীর আচার্যের প্রবন্ধ গতানুগতিকতার বাইরে একটুখানি ভিন্নধর্মী স্বাদ এনে দিয়েছে পঠনে  এছাড়াও রয়েছে নবজাগরণের প্রাতঃস্মরণীয় নারী ব্যক্তিত্ব সুকুমারী ভট্টাচার্যের জীবনের উপরআহরণ’-উল্লিখিত একটি প্রাবন্ধিকনামহীন তথ্যনির্ভর প্রবন্ধ
গল্প বিভাগে কলম ধরেছেন মিথিলেশ ভট্টাচার্য, শ্যামল বৈদ্য, কুমার অজিত দত্ত, মৃণ্ময় রায়, কস্তুরী, বিজয়া দেব, পরিতোষ তালুকদার, অর্ঘ্য দত্ত, সরজিৎ ঘোষ, রাজা সিংহ, দেব মুখার্জী, সান্নিধ্যান সোম এবং অলোক রায় এছাড়াও আছে হেড পণ্ডিতনামে একটি গল্প যেখানে গল্পকারের নামোল্লেখ নেই
মিথিলেশ ভট্টাচার্যের গল্প গীতবিতান খুব ভালো একটি গল্প কিছু বাক্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক রিটায়ার্ড, সিনিয়র সিটিজেন বৃদ্ধের তালিকায় পড়া মানুষেরা তো শেষ বয়সে ধর্মকর্ম নিয়েই দিন কাটায় বদ্ধমূল এই ধারণা নিয়েই চলছে চারপাশের গতানুগতিক জীবনধারাতাই তো পাড়ার এক মুসলমান ভদ্রলোকের ছেলে বলছিল - দাদু, আপনে তো রিটায়ার করছইন অখন তো মন্দিরর কাজ নিয়া ব্যস্ত, নানি ? ‘মন্দির-মসজিদ-ধর্মকর্ম এসবের বাইরে যেতে গেলে যে শিক্ষা সংস্কৃতির দরকার তা সমাজ কেন যে ওদের দিতে অক্ষম’ ‘তখনকার দিনে একান্নবর্তী পরিবারের মেয়েদের সুর সাধতে হয়েছে, শুধুমাত্র বিয়ের পিড়িতে বসার অন্যতম যোগ্যতা হিসেবে’ ‘মানুষের শরীরের রক্তেই তো শয়তানের বাস সময় সুযোগ বুঝে সে প্রকটিত হয়’ - ইত্যাদি এ ছাড়াও কস্তুরি, পরিতোষ তালুকদার, রাজা সিংহ (ঝরঝরে ভাষা), দেব মুখার্জী ও আলোক রায়ের গল্প বিশেষোল্লেখের দাবি রাখে
পি এইচ ডি পাঠরতা ছাত্রের থিসিসের জন্য বেলাভূমির কর্ণধার একান্ত সাক্ষাৎকারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানিয়েছেন বৃদ্ধাবাসের হাল ককিকৎ এখানে তার অংশ বিশেষ তুলে ধরা হয়েছে
চারটি ভালো অণুগল্প লিখেছেন পল্লব কুমার চ্যাটার্জী, কল্পদেব চক্রবর্তী, রজত কান্তি দাস (ফেসবুকে পুর্ব প্রকাশিত) এবং মন্দিরা নন্দীকর
সোনাঝরা সেই দিনগুলোশিরোনামে চমৎকার দুটি স্মৃতিচারণ লিখেছেন পৃথা দাস এবং রীতা বিশ্বাস পাণ্ডে
সূচিপত্র সহ মাঝের কিছু পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠাসংখ্যার উল্লেখে রয়ে গেছে কিছু ত্রুটি যা পাঠককে ধন্দে ফেলে দেয় সাময়িক অপর দিকে আগের সব কটি সংখ্যার মতো এবারের সংখ্যা, যা কলেবরে অনেকটাই বড়, সেখানেও বানান/ছাপার ভুলের সংখ্যা খুবই নগণ্য এই দিকটি এই পত্রিকার বরাবরের সম্পদ বললেও অত্যুক্তি হয় না তাৎপর্যপূর্ণ প্রচ্ছদ - সৌজন্যে অপর্ণা দেব সম্পাদকমণ্ডলীতে সম্পাদকের বাইরেও রয়েছেন প্রবালকান্তি সেন, অনুপ কুমার বণিক এবং বনানী চৌধুরী পুরো বইটি জুড়ে সন্নিবিষ্ট হয়েছে বেলাভূমিসম্পর্কিত বহু চিত্রাবলি আছে কিছু সংবাদ, কিছু উক্তিও সবকিছু মিলে এবারের সেবাপত্রিকা এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আয়োজন

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

সেবা
সম্পাদক - অপর্ণা দেব
মূল্য - ১০০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪৩৫৫৯৬৭২০

Comments

  1. পড়লাম,
    খুব যত্ন করে আলোচনা করেছেন। অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

    ReplyDelete
  2. বেলাভূমির ষান্মাসিক আয়োজন 'সেবা ' নিয়ে মননশীল সাহিত্য সেবক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মনখোলা (আনুপূর্বিক) সযত্ন মূল্যায়ন আমাকে সেবার পাতায় নিবিষ্ট করে দিয়েছে। এই খণ্ডিত অংশে পেলে, সুযোগটি গ্রহণ করার বাসনা পোষণ করি। মিতকথনে এমন মেধাবী বীক্ষণ কর্মকে অভিনন্দিত করি

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হয়তো কবি করোনার

অবশ্যপাঠ্য এক সার্থক উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’

উত্তরপূর্বের বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টিক্ষেত্রে একটি উপন্যাসের সৃষ্টি কিংবা জন্মের ইতিহাস বহু পুরোনো হলেও এই ধারা যে সতত প্রবহমান তা বলা যাবে না কোনওভাবেই। বিশেষ করে আজকের দিনে অন্তত এই ঘটনাকে একটি ‘বিরল’ ঘটনা বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়। এমনও দেখা যায় যে ৪০ থেকে ৮০ পৃষ্ঠার বড় গল্প বা উপন্যাসিকাকে দিব্যি উপন্যাস বলেই বিজ্ঞাপিত করা হচ্ছে। তবে প্রকৃতই এক উপন্যাসের জন্মের মতো ঘটনার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সংযোজিত হয়েছে সাহিত্যিক সজল পালের উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’। ২৫৩ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটির প্রকাশক গুয়াহাটির মজলিশ বইঘর। তথাকথিত মানবপ্রেমের বা নায়ক নায়িকার প্রেমঘটিত কোনো আবহ না থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসটিকে মূলত রোমান্সধর্মী উপন্যাস হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায় যদিও আঞ্চলিকতা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও উপন্যাসটিকে যথার্থই এক সার্থক উপন্যাস বলা যায় নির্দ্বিধায়। প্রেম এখানে বিচিত্র এক অনুষঙ্গ নিয়ে এসেছে। সংস্কৃতিমনষ্কতা, নান্দনিকতা এবং প্রেম একসূত্রে গ্রথিত হয়ে আছে এখানে। উপন্যাসটি ‘সার্থক’ অর্থে এখানে সচরাচর একটি উপন্যাসের আবশ্যকীয় ধর্মসমূহ যথা প্রাসঙ্গিক ঘটনাবিন্যাস , কাহিনির জমজমাট বুনোট , মানানসই চরিত্র

ভালোবাসার আস্তরণে ঢেকে রেখেছি, না-বলা কথা……'

তোমাকে দেখব বলে, প্রতিদিন জেগে উঠি। তোমার নবযৌবনার সৌন্দর্য আমাকে প্রাণ চঞ্চল করে তোলে।   তোমার রূপ, তোমার স্বর্ণআভা সৌন্দর্য, আমার দেহমনে শিহরণ জাগায়……। (কবিতা - স্বর্ণআভা)   গ্রন্থের নাম স্বর্ণআভা। কবি পরিমল কর্মকারের সদ্য প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ভাবনা ও ভালোবাসার বিমূর্ত প্রকাশ - কবিতায় কবিতায়, পঙক্তিতে পঙক্তিতে। অধিকাংশ কবিতাই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে। সুতরাং এই গ্রন্থকে অনায়াসে প্রেমের কবিতার সংকলন বলতেও আপত্তি থাকার কথা নয়। কবির কাব্যভাবনা, কাব্যপ্রতিভার ঝলক দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিভাত হয়ে আসছে উপত্যকা ও উপত্যকার সীমানা ছাড়িয়ে। তারই একত্রীকরণের দায়ে এই কাব্য সংকলন। তবে এই গ্রন্থে ভালোবাসার বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে অন্য স্বাদের কিছু কবিতা। এর মধ্যে আছে জীবনবোধ ও জীবনচর্চার ভাবনা, শরৎ, স্মৃতি, উনিশের ভাবনা, দেশপ্রেম, সমাজের অন্দরে লুকিয়ে থাকা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আদি। ‘পাঠকের উদ্দেশে’ শিরোনামে ভূমিকায় এমনটাই ব্যক্ত করেছেন পরিমল - ‘আমার কবিতার গরিষ্ঠাংশই জীবনমুখী। বাস্তব জীবনের নির্যাসসম্পৃক্ত এই কবিতাগুলি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবে সমাজের অনেক গভীর ও অনস্বীকার্য রূঢ়