Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2024

ফিরে দেখা ভাবনার বিন্যস্ত প্রকাশ ‘অদেখা জলস্রোত’

‘ মাত্র আড়াইতম কাব্যগ্রন্থ ’ - কিছু লিখতে গিয়ে এই শব্দগুচ্ছটি প্রথমেই নিজর কাড়ল । অথচ এটা লেখা আছে ৬৮ পৃষ্ঠার পেপারব্যাক কাব্যগ্রন্থ ‘ অদেখা জলস্রোত ’- এর শেষ মলাটে , পরিচিতি হিসেবে । যেমন আছে পরিচিতি হিসেবে তা হুবহু তুলে দেওয়া যায় … ‘ অর্ধশতক আগে কবিতা লেখার শুরু দীপক চক্রবর্তীর । মাঝে দুই দশক ( দুই দশক ??) কলম তুলে রেখেছিলেন । তবুও , মানা যায় না যেন , ‘ অদেখা জলস্রোত ’ তাঁর মাত্র আড়াইতম কাব্যগ্রন্থ । নিজেকে গুটিয়ে রাখা পছন্দ কবির ( সে তো বটেই , নাহলে দুই দশক কেউ কলম গুটিয়ে রাখেন ??) । গল্প লিখেছেন বেশ কিছু , বই হয়ে বেরোয়নি আগে । এই আড়াল গড়ে তোলার প্রবণতা কবির চরিত্রকে প্রকাশ করে - যা প্রতিফলিত তাঁর কবিতার পঙ্ ‌ ক্তিতে … । কবির পূর্ব প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকা দেখে বোঝা গেল এই ‘ আড়াইতম ’ শব্দটির অর্থ । দুটি একক এবং একটি যৌথ গ্রন্থ রয়েছে তাঁর , এই অর্থে আড়াইতম । ব্লার্ব হিসেবে শেষ প্রচ্ছদের এই পরিচিতি সম্ভবত প্রকাশক - সৈকত প্রকাশন , আগরতলার পক্ষ থেকে । ৬২টি পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে কবির ৬০টি কবিতা । বড্ড তাৎপর্যময় গ্রন্থনাম । ‘ অদেখা ’ অর্থে আমরা ‘ ফিরে দেখা ’ ও বলতে পারতাম

ভয়ে ভয়ে কথা বলা - এসব জানে প্রেমিক মন… মায়াবী যাপনের কাব্যগ্রন্থ ‘মায়াময় সময়’

এতগুলো কবিতা অথচ জুতসই একটি ট্যাগলাইন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । আগে এমন ছিল না কবি শতদল আচার্যের কাব্যগ্রন্থের পাঠবেলায় । অবাক কাণ্ড যদিও এর একটাই কারণ । কবি এখানে কোনও একটি বিষয়কে পাখির চোখ করেননি । বিচিত্র বিষয়ের উপর ব্যক্ত করেছেন অব্যক্ত কথাছবি । আস্ত একটি সময়কে ধরে রাখতে চেয়েছেন কবি । সময় মানেই তো এক বিস্তৃত যাপনবেলার বিশাল অধ্যয়ন । স্বভাবতই বিষয় , যাপনকথা আর বহু সত্যকথনের কাছে হার মানতে হয়েছে কাব্যিকতাকে । আর কাব্যিক উচ্চারণ না হলে ট্যাগলাইন কোথায় ? তবে কাব্যিকতা যে পুরোপুরি অনুপস্থিত সে কথা বলা যাবে না একেবারেই । আছে সে বিষয় সাযুজ্যে , স্পষ্ট অনুভবে । যথেষ্ট মায়া মিশিয়ে দিয়েছেন কবি তাঁর কবিতায় । তবু সময় যে বড়ই নিঠুর । ‘ মায়াময় সময় ’ কবির কততম কাব্যগ্রন্থ তা বোঝার উপায় নেই কারণ ইতিপূর্বে প্রকাশিত গ্রন্থাদির কোনও উল্লেখ নেই আলোচ্য সংকলনটিতে । বইওয়ালা বুক কাফে , কলকাতা থেকে প্রকাশিত ৬৪ পৃষ্ঠার আলোচ্য সংকলনটিতে আছে মোট ৫৪টি কবিতা । বিষয় বিচিত্র হলেও সার্বিকভাবে দুটি বিষয়ভাগে একে উপস্থাপিত করা যায় । এক ভালোবাসা এবং দুই বন্ধুকৃত্য । এছাড়া যা রয়েছে তা কবির যাপন অনুভব , আপন

কবিতায় কোভিডকালের নির্মোহ দ্যোতনা - ‘লকডাউন সময়ের দহনকথা’

প্রভূত প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও যেসব কবিরা সচরাচর প্রচারের আড়ালে রয়ে যান কোনও এক অবোধ্য কারণে তাঁদের মধ্যে রত্নদীপ দেব একজন । অথচ ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অন্যূন চারটি কাব্যগ্রন্থ । রত্নদীপের কবিতায় যেন প্রথাগরভাবে ছলকে ওঠে শব্দসুষমার লহর , ঝলসে ওঠে অসহায় , অস্থির সময়ের , অন্যায্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শব্দের স্ফুলিঙ্গ । আলোচ্য গ্রন্থ ‘ লকডাউন সময়ের দহনকথা ’ ও যেন একই ধারায় সরেজমিনে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শীর নির্মোহ জবানবন্দি । বিচিত্র সব দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকের এক একটি জবানবন্দিতে যেন শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা বিভীষিকাময় ঘটনাটিকে কবি চিরস্থায়ী করে লিপিবদ্ধ করেছেন ইতিহাসের পাতায় । কোভিড অতিমারির প্রেক্ষাপটে লকডাউন সময়ের যাপনকালকে সযত্নে রক্ষিত করেছেন কবিতার অমোঘ পঙ্ ‌ ক্তিতে । ‘ সূচনা - ভাষ ’ শীর্ষক আত্মকথনে কবি লিখছেন - ‘… অসুখের আক্রমণে কর্মহীন মানুষ , ঘরবন্দি আস্ত একটি দেশ । একদিকে অদৃশ্য মারণ ভাইরাস সংক্রমণের ভয় , অন্যদিকে অসহায় বন্দিদশা । শোচনীয় অবস্থা দিনমজুরদের । প্রত্যেকের মুখে সেঁটে গেছে নাস্ক । মাস্কের আড়ালে অভুক্ত আতঙ্ক । সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত পরিস্থিতি

জল-জীবনের সাতকাহন - ‘জল দর্পণ’

একটি সকাল নাকি একটি দিনের পরিচায়ক। তাঁর কবি-জীবন বহু দিনের নয়। স্বল্প সময়ে যাঁরা স্বকীয়তায়, সৌকর্যে জায়গা করে নেন পাঠক হৃদয়ে তাঁদের মধ্যে অন্যতম গীতাঞ্জলী রায়। সদ্য প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জল দর্পণ’-এ নিজের সহজাত প্রতিভা ও জাত চিনিয়ে দিতে গীতাঞ্জলী সর্বাংশে সফল। পাঠক মহলে নিশ্চিতই জাগাতে সক্ষম হয়েছেন ভবিষ্যতের প্রত্যাশা। ৩২ পৃষ্ঠার কাব্যগ্রন্থে মোট ২৬ টি কবিতার প্রতিটি কবিতা যেন মূর্ত হয়ে উঠেছে বিষয় বৈভবে, প্রতিটি পঙ্‌ক্তিকে যেন ক্ষুরধার মর্মকথায় গেঁথে দিতে পেরেছেন কবিতা-শরীরে। সব ক’টি কবিতাই জল-বিষয়ক। আসলেই এ জীবন তো এক জল কথা। গর্ভজল থেকে চিতাজল অবধিই তো জীবনের ধারাপাত। জল নিয়েই কবিতায় জলকেলিতে মেতে উঠেছেন কবি বইয়ের পাতায় পাতায়। অধিকাংশ কবিতার শিরোনামও তেমনি - ভেজা মন, সুখ বর্ষা, বর্ষা বন্ধু, বৃষ্টি পর্দা, বৃষ্টি সোহাগ, বৃষ্টি কাল, সুখ বৃষ্টি, বজ্রকালের অভ্যাস, বেপরোয়া বর্ষা আদি। এত এত জলবৃষ্টি-কথার মধ্যেই কিন্তু কবি তাঁর অন্তরের যাবতীয় সুখ, দুঃখের যাপন কথা, যাপন ব্যথাকে সুনিপুণ শব্দে এঁকে দিয়েছেন কাব্য সুষমায়। বৃষ্টির আয়নায় কবি দেখেছেন এবং দেখাতে চেয়েছেন কিছু অন্যায়, কিছু অ

প্রত্যয় ও উৎসর্জনের পত্রিকা ‘উত্তীয়’

শবনম ও শিউলির আভাসযুক্ত প্রছদচিত্রে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে শতপৃষ্ঠার সাহিত্য পত্রিকা ‘ উত্তীয় ’ । ব্যতিক্রমী পত্রিকা নাম । ২০২৩ - ২৪ শারদ সম্ভার এই পত্রিকার দ্বিতীয় পর্যায় - দশম সংখ্যা । তৃতীয় পৃষ্ঠা কিংবা সম্পাদকীয়তে কোনও উল্লেখ নেই যদিও অনুমান করা যায় এটি একটি বার্ষিক পত্রিকা । লেখালেখির বিশাল সম্ভারও সেরকম ইঙ্গিতই দেয় । এমন সম্ভারযুক্ত পত্রিকা বছরে একাধিক প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা নিতান্তই কম । সম্পাদক স্নিগ্ধা চট্টোপাধ্যায় বিশ্বাস - এর নিবেদন ও গরজের ছাপ স্পষ্ট । এক পৃষ্ঠার সম্পাদকীয় যথেষ্ট বিস্তৃত । তা হতেই হবে কারণ পত্রিকার আয়তনও যে বিশাল । পড়ার সময় যথেষ্ট শক্ত হাতে ধরতে হবে পত্রিকাটি । শরৎ , দেশের বর্তমান সময়ের হাল হকিকত, চন্দ্রযান , প্রকৃতি , যুদ্ধ - সব কিছুই এসেছে পর্যায়ক্রমে । সব শেষে শারদ শুভেচ্ছা - ‘ সর্বে সুখিনো ভবন্তুঃ , সর্বে সন্তুঃ নিরাময়াঃ ’ । প্রায় পৃষ্ঠাজোড়া সূচিপত্রের প্রথম কলাম গদ্য বিভাগ ও দ্বিতীয় কলাম পদ্য বিভাগ। যদিও সেভাবে উল্লিখিত হয়নি বিভাগবিন্যাস। গদ্য বিভাগে আছে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, বড় থেকে অণু গল্প অবধি এবং স্বগতোক্তি, মুক্ত গদ্য সহ একটি একাঙ্ক নাটক।

নান্দনিক সাহিত্যসৃষ্টির সগর্ব, সোচ্চার আবাহন দশম সংখ্যা - ‘সীমান্ত’

ফেব্রুয়ারি মাস বিশ্ব জুড়ে ভাষার মাস। এই আবহে প্রকাশিত হল নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন নামের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ সংগঠনের গোসাইগাঁও (আসাম) শাখার দশম সংখ্যা মুখপত্র তথা সাহিত্য পত্রিকা ‘সীমান্ত’। বড়োল্যান্ড এলাকা থেকে নিয়মিত হিসেবে একটি বাংলা পত্রিকার প্রকাশ নিঃসন্দেহে শ্লাঘার বিষয়। একটি সম্পাদকীয় দপ্তর থাকলেও এ সংখ্যার সম্পাদক বন্দন দেব। সম্পাদকীয়তে প্রতিকূল অবস্থাতেও শুধুমাত্র ভাষার টানেই যে এমন এক আয়োজন সে কথা পরিপাটি করেই উল্লেখ করেছেন সম্পাদক। স্বভাবতই ভাষা সাহিত্যের প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আলোচ্য সংখাটিতে। ভাষা গরজে সমৃদ্ধ সম্পাদকীয়তে বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক বাক্য সংযোজিত হয়েছে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে - ‘শাখার মুখপত্র ‘সীমান্ত’ পত্রিকায় কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল বাক্য গঠন, গুরুচণ্ডালী দোষ ও বানানের ক্ষেত্রে ভুল থাকা স্বাভাবিক। আমরা যে ভৌগোলিক খণ্ডে ও বিভিন্ন ভাষাভাষীর সংমিশ্রণে থাকি তাতে স্মরণিকা প্রকাশ করাটাই আশ্চর্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়…।’ এরপর এ নিয়ে আর কথা হয় না। তবে এ ‘ভুল’কে যে ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠার প্রয়োজন এবং প্রচেষ্টা রয়েছে এমন ইঙ্গিত পেলে ভালো লাগত বইকী। প্রবন্ধ, কবিতা ছোটগল

খুশিতে বুকের ভেতর দ্রিমি দ্রিমি মাদলের তান...... 'কবিতার শব্দ ছুঁয়ে'

ব্লার্বগুলো খালি যদিও স্বল্প কথায় প্রাসঙ্গিক এক ভূমিকা লিখেছেন কবি জয়ন্তী দত্ত । সেখান থেকেই জানা যায় - ‘ এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ১৭ টি বই প্রকাশ করেছেন । কোলকাতা সাহিত্য একাডেমি থেকে গল্পকার হিসেবেও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত …… । ’ কবি শিবানী গুপ্তের আলোচ্য কাব্যগ্রন্থ ‘ কবিতার শব্দ ছুঁয়ে ’ প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি । গ্রন্থের শেষ প্রচ্ছদে তিনি লিখছেন - ‘ কবিতার শব্দ ছুঁয়ে ’ কাব্যগ্রন্থটি আমার সপ্তদশ রচনা । ইতিমধ্যেই আমার গল্প গ্রন্থ - কর্ডলেস , পঞ্চতপা , একটু তৃষ্ণার জল , ছড়া গ্রন্থ - ফুল কুঁড়ি , প্রবন্ধ গ্রন্থ - আলোর রোশনাই , সিলেটি কাব্যগ্রন্থ - সিলেটি বারোমজা , একটি লিমেরিক ও দুটি পঞ্চবাণ কাব্যগ্রন্থ এবং অণু কবিতা গ্রন্থ - অণু কবিতার অঞ্জলি প্রকাশিত হয়েছে … । ’ সার্বিক সাহিত্য নিয়ে এই বিশাল কর্মকাণ্ডের শেষতম প্রকাশ আলোচ্য কাব্যগ্রন্থটি । সম্ভবত এটিই তাঁর পৃষ্ঠাজোড়া বা পৃষ্ঠা পেরোনো কবিতার প্রথম সংকলন । দীর্ঘ দিন ধরে কবিতা লিখে চলেছেন শিবানী । এতদিন ধরে লিখে গেলে যে কারোরই লেখার ধাঁচ , মান , শৈলী পালটায় । সেই পরিবর্তনের ধারা মেনেই আলোচ্য কাব্যগ্রন্থে সন্নিবিষ্ট কবিতাগুলি কবির পূর্