একটি সকাল নাকি একটি দিনের
পরিচায়ক। তাঁর কবি-জীবন বহু দিনের নয়। স্বল্প সময়ে যাঁরা স্বকীয়তায়, সৌকর্যে জায়গা
করে নেন পাঠক হৃদয়ে তাঁদের মধ্যে অন্যতম গীতাঞ্জলী রায়। সদ্য প্রকাশিত তাঁর প্রথম
কাব্যগ্রন্থ ‘জল দর্পণ’-এ নিজের সহজাত প্রতিভা ও জাত চিনিয়ে দিতে গীতাঞ্জলী
সর্বাংশে সফল। পাঠক মহলে নিশ্চিতই জাগাতে সক্ষম হয়েছেন ভবিষ্যতের প্রত্যাশা।
৩২ পৃষ্ঠার কাব্যগ্রন্থে মোট ২৬ টি কবিতার প্রতিটি কবিতা যেন মূর্ত হয়ে উঠেছে বিষয় বৈভবে, প্রতিটি পঙ্ক্তিকে যেন ক্ষুরধার মর্মকথায় গেঁথে দিতে পেরেছেন কবিতা-শরীরে। সব ক’টি কবিতাই জল-বিষয়ক। আসলেই এ জীবন তো এক জল কথা। গর্ভজল থেকে চিতাজল অবধিই তো জীবনের ধারাপাত। জল নিয়েই কবিতায় জলকেলিতে মেতে উঠেছেন কবি বইয়ের পাতায় পাতায়। অধিকাংশ কবিতার শিরোনামও তেমনি - ভেজা মন, সুখ বর্ষা, বর্ষা বন্ধু, বৃষ্টি পর্দা, বৃষ্টি সোহাগ, বৃষ্টি কাল, সুখ বৃষ্টি, বজ্রকালের অভ্যাস, বেপরোয়া বর্ষা আদি। এত এত জলবৃষ্টি-কথার মধ্যেই কিন্তু কবি তাঁর অন্তরের যাবতীয় সুখ, দুঃখের যাপন কথা, যাপন ব্যথাকে সুনিপুণ শব্দে এঁকে দিয়েছেন কাব্য সুষমায়। বৃষ্টির আয়নায় কবি দেখেছেন এবং দেখাতে চেয়েছেন কিছু অন্যায়, কিছু অন্যায্য যাপন। এবং সেই অনিয়মকে তীব্র সংলাপে করেছেন বিদ্ধ। বেপরোয়া, খোলামেলা উচ্চারণে কোমল কাব্যিকতার মোড়কে আবদ্ধ শক্ত প্রতিবাদী সত্তাকে করেছেন উন্মোচিত। গ্রীষ্ম আর বর্ষার রূপকে কেমন অনায়াসে যেন সাজিয়ে দিয়েছেন সংলাপে, রূপকে -
সুখ ছুঁতে চাই না আর / দুঃখের সাথে সখ্য আমার, / বালিশে সারাবছর থাকে বৃষ্টিকাল, / অথচ ! / বুকে বাসা বেঁধে আছে অগ্নিভ / গ্রীষ্মকাল। (কবিতা - অজানা আকর্ষণ)। কিংবা - ‘ইচ্ছে হয়’ কবিতায় কবি লিখছেন - মনের ভেতরের মানুষটা চায় / একটু হলেও জীবন খেলা দেখতে, / পুকুর জোড়া হাঁসের খেলা দেখলে / আমারও ইচ্ছে হয় বৃষ্টি হতে। নারীত্বের অসহায়তা কবিমনে সঞ্চার করে বাউলপনা - ভেজা শরীর সতীত্ব ঢাকতে পারেনি সেদিন, /.... সে জানতো না / ভিজে গেলে বুকের ভাঁজটা স্পষ্ট বোঝা যায়, / আর এই ঠাণ্ডা শরীর দেখেও, / মানুষের ভেতরে উষ্ণতা পায়।/ ... তারপর, / মাথার উপর চালের লোভে / কাপড় খোলে অনিচ্ছার ঘোরে...। (কবিতা - বাউল মন)। এভাবেই এগিয়েছে সব কবিতা।
কলকাতার অন্বেষা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত পেপারব্যাক সংকলনটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন আয়ুশ দত্ত। গ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেছেন তাঁর মা, শ্রীমতী নির্মলা দেবীকে। কিছু ভুল বানান - যেমন সখ্যতা (সখ্য), আসলে (এলে) ইত্যাদির প্রয়োগ এবং পঙ্ক্তি বিন্যাসে কিছু অস্বচ্ছতা তথা ‘তোমার দিকে’ এবং ‘সুখের অন্বেষণ’ কবিতা দুটিতে কিছু পঙ্ক্তির পুনর্ব্যবহার জনিত প্রাথমিক ভ্রান্তি কাটিয়ে স্বচ্ছ ছাপা, যথাযথ শব্দ বিন্যাসযুক্ত এক সার্বিক উৎকর্ষের ভূমিকাবিহীন কাব্যগ্রন্থ ‘জল দর্পণ’।
৩২ পৃষ্ঠার কাব্যগ্রন্থে মোট ২৬ টি কবিতার প্রতিটি কবিতা যেন মূর্ত হয়ে উঠেছে বিষয় বৈভবে, প্রতিটি পঙ্ক্তিকে যেন ক্ষুরধার মর্মকথায় গেঁথে দিতে পেরেছেন কবিতা-শরীরে। সব ক’টি কবিতাই জল-বিষয়ক। আসলেই এ জীবন তো এক জল কথা। গর্ভজল থেকে চিতাজল অবধিই তো জীবনের ধারাপাত। জল নিয়েই কবিতায় জলকেলিতে মেতে উঠেছেন কবি বইয়ের পাতায় পাতায়। অধিকাংশ কবিতার শিরোনামও তেমনি - ভেজা মন, সুখ বর্ষা, বর্ষা বন্ধু, বৃষ্টি পর্দা, বৃষ্টি সোহাগ, বৃষ্টি কাল, সুখ বৃষ্টি, বজ্রকালের অভ্যাস, বেপরোয়া বর্ষা আদি। এত এত জলবৃষ্টি-কথার মধ্যেই কিন্তু কবি তাঁর অন্তরের যাবতীয় সুখ, দুঃখের যাপন কথা, যাপন ব্যথাকে সুনিপুণ শব্দে এঁকে দিয়েছেন কাব্য সুষমায়। বৃষ্টির আয়নায় কবি দেখেছেন এবং দেখাতে চেয়েছেন কিছু অন্যায়, কিছু অন্যায্য যাপন। এবং সেই অনিয়মকে তীব্র সংলাপে করেছেন বিদ্ধ। বেপরোয়া, খোলামেলা উচ্চারণে কোমল কাব্যিকতার মোড়কে আবদ্ধ শক্ত প্রতিবাদী সত্তাকে করেছেন উন্মোচিত। গ্রীষ্ম আর বর্ষার রূপকে কেমন অনায়াসে যেন সাজিয়ে দিয়েছেন সংলাপে, রূপকে -
সুখ ছুঁতে চাই না আর / দুঃখের সাথে সখ্য আমার, / বালিশে সারাবছর থাকে বৃষ্টিকাল, / অথচ ! / বুকে বাসা বেঁধে আছে অগ্নিভ / গ্রীষ্মকাল। (কবিতা - অজানা আকর্ষণ)। কিংবা - ‘ইচ্ছে হয়’ কবিতায় কবি লিখছেন - মনের ভেতরের মানুষটা চায় / একটু হলেও জীবন খেলা দেখতে, / পুকুর জোড়া হাঁসের খেলা দেখলে / আমারও ইচ্ছে হয় বৃষ্টি হতে। নারীত্বের অসহায়তা কবিমনে সঞ্চার করে বাউলপনা - ভেজা শরীর সতীত্ব ঢাকতে পারেনি সেদিন, /.... সে জানতো না / ভিজে গেলে বুকের ভাঁজটা স্পষ্ট বোঝা যায়, / আর এই ঠাণ্ডা শরীর দেখেও, / মানুষের ভেতরে উষ্ণতা পায়।/ ... তারপর, / মাথার উপর চালের লোভে / কাপড় খোলে অনিচ্ছার ঘোরে...। (কবিতা - বাউল মন)। এভাবেই এগিয়েছে সব কবিতা।
কলকাতার অন্বেষা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত পেপারব্যাক সংকলনটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন আয়ুশ দত্ত। গ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেছেন তাঁর মা, শ্রীমতী নির্মলা দেবীকে। কিছু ভুল বানান - যেমন সখ্যতা (সখ্য), আসলে (এলে) ইত্যাদির প্রয়োগ এবং পঙ্ক্তি বিন্যাসে কিছু অস্বচ্ছতা তথা ‘তোমার দিকে’ এবং ‘সুখের অন্বেষণ’ কবিতা দুটিতে কিছু পঙ্ক্তির পুনর্ব্যবহার জনিত প্রাথমিক ভ্রান্তি কাটিয়ে স্বচ্ছ ছাপা, যথাযথ শব্দ বিন্যাসযুক্ত এক সার্বিক উৎকর্ষের ভূমিকাবিহীন কাব্যগ্রন্থ ‘জল দর্পণ’।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
মূল্য - ৮০ টাকা। যোগাযোগ - ৯৩৬৫৮৩০৬২১
Comments
Post a Comment