‘পোয়েটিক জানালায় কবিতার
মেঘ’ - কাব্যগ্রন্থটির এমন নামকরণ প্রথম প্রচ্ছদে চোখ রাখলেই
ধন্দে ফেলে দেয় বৈকি। অনুসন্ধিৎসু পাঠক এরপর দুই মলাটের ভেতর পৌঁছে গেলেই উন্মোচিত
হয় রহস্য। প্রায় আদ্ধেক কবিতার শিরোনামই
ইংরেজিতে। এবার কাব্যগ্রন্থের নামকরণের
সার্থকতা প্রকাশিত হয়। এমনি
অভিনব সব কাব্যিক কর্মকাণ্ড কবি নীলদীপ চক্রবর্তীর স্বভাবজাত। এবং এরই জন্য তাঁর কথা কিংবা কবিতা
সবেতেই ব্যতিক্রম - উৎকর্ষে ব্যতিক্রমী।
ব্যতিক্রমী ভাবেই কবির এ গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট প্রায় সব কবিতার মেঘ-এর রঙই কালো। হতাশা, দুঃখ, মৃত্যুর কাব্যিক উপস্থাপনা। পুস্পল দেব-এর স্বচ্ছ সুন্দর প্রচ্ছদ ও নামলিপি বই-এর অন্তর্নিহিত সারবত্তার সঙ্গে মানানসই। আগরতলার নান্দীমুখ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত গ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেছেন এ অঞ্চলের আরেক স্বনামধন্য কবি - সঞ্জয় চক্রবর্তীকে।
৪৯টি কবিতা সম্বলিত ৬৪ পৃষ্ঠার গ্রন্থটির প্রথম কবিতা থেকেই কবির ব্যতিক্রমধর্মী রচনার সঙ্গে পাঠককে পরিচিত হতে হয়। ‘পোয়েটিক জানালা’ শিরোনামে ছয়টি স্তবকে লিখা কবিতায় বিচিত্র এক ককটেল সাজিয়েছেন কবি। এক একটি স্তবকের নামও বিচিত্র - মাইকেল, হাঙ্গর, অ্যাসল্ট, লভ, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, স্টোভ।
আমি বঙ্কিম পা বাইকের ধারে
তুমি মাধবীলতা কলেজের গেটে
এ বাইক বন্ধুর থেকে ধার করে আনা
ভালো মানিয়েছে তোমায় মাধবীর শাড়িটিতে
(লভ)
মাত্র চারটি সারিতে কেমন যেন এক রিক্ততার আবেশকে অসাধারণ নৈপুণ্যে - রূপকে, ব্যঞ্জনায় সাজিয়ে দিলেন কবি।
এমনি সারাটি গ্রন্থ জুড়ে চমৎকার সব পংক্তির বিন্যাস। ‘ভালো’র থেকে ‘বেশি ভালো’কে বেছে নেওয়া দুরূহ কাজ। তবু কিছু কবিতার নামোল্লেখ না করলে প্রতিবেদন থেকে যায় অসম্পূর্ণ। ‘ডেথ অফ দা মুন’, ‘দ্য মিথিকেল সাগা’, ‘ভিক্টিম’, ‘গাছ নয়’, ‘উদ্বাস্তুর জমি জিরেত’, ‘সীমানার দু’ধারে’, ‘সৃষ্টি গাথা’ আদি কবিতা ভাবতে বাধ্য করে পাঠককে - তার বিষয় বৈচিত্রে, তার ফর্মাট, তার শৈলীতে।
একজন কবি তাঁর জন্মভূমি, বাসভূমির মাটি জলে বেড়ে ওঠেন বলেই কবির জন্ম উপত্যকার ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ এসে ধরা দেয় কবিতায়। নীলদীপের কবিতায় তাই উজান আসামের পরিবেশজনিত ভাব, ভাষা, সমাজের নানা উচ্চারিত শব্দসমূহের সঠিক উল্লেখ ঋদ্ধ করে কবিতাকে। আসে কাকপথার থেকে অগ্নিগড়ের বাখান। আটপৌরে জীবনের রোজনামচা কবিতায় ধরা থাকে অন্তর্নিহিত ছন্দ ও ব্যঞ্জনার চমৎকারিত্বে -
আমি কাটি পুরোনো কাস্তে দিয়ে
হেলে দুলে পড়া কালো কালো জোহা ধান
আমি কাটি দিন, কাটি রাত - নিদ্রাহীন।
স্কুলের মাইনে দি,
মায়ের ওষুধ আনি শেষ সন্ধ্যায়।
পুরোনো কাস্তে ঝোলে, বাঁশের দেয়ালে
ধ্রুপদী নাচে তেলচিটে গামছার ছায়া
নেশা গন্ধে কাটে বাবার অলীক রাত
কাশির ঘোরে মা অনর্গল বকেন -
অস্পষ্ট মনসা মঙ্গল থেকে বড়ুচণ্ডিদাস।
(কবিতা - রোজনামচা)।
কবিতায় একদিকে যেমন উচ্চারিত হয় দেশ ও সমাজে অপ্রাসঙ্গিক ও লুপ্তপ্রায় মার্ক্সবাদের বহু ব্যবহৃত আনুষঙ্গিক শব্দাবলি - কাস্তে, বাঁকা চাঁদ, কিউবা, কাস্ত্রো, চে - অন্যদিকে দেশ ও সমাজ জুড়ে অপ্রাপ্তি, অ-সুখের দুঃখবোধে ঝরে পড়ে শ্লেষ।
আমি তার সুদিনের বন্ধু
আমি তার রাষ্ট্র প্রেম গান
শাসকের উল্লসিত সুরে
আহা দেশ। মায়ের সমান।
কালো হাত ভাঙা শিরদাঁড়া
কালো অর্থে যমুনা পুলিন
বেধড়ক মৃত্যু লিখে দাও
অহো রাষ্ট্র। তোমার অধীন
পাঁজরের জিরজিরে হাড়ে
রাষ্ট্র মাখো বসন্ত আবির
উল্লসিত জাফরান রং দিয়ে
বাহ্ দেশ। গড়ো নষ্ট নীড়।
(কবিতা - হোলি)।
দুঃখবোধ, শ্লেষ ঝরে পড়ে দেশভাগ নিয়েও একাধিক কবিতায় -
‘... মেঘনায় বরাকের পালতোলা তরী
নববর্ষ বারতায় রঙিন আকাশ
কাঁটাতারের দু’দিকেই স্বপ্নভরা চোখ
সুফিয়া কামাল নাকি জীবনানন্দ দাস ?’
- তবু কোথাও প্রতিবাদী হতে এগিয়ে আসেননি কবি, অধরা সমাধানসূত্র। কবির যাবতীয় কবিতায় ফিরে ফিরে এসেছে প্রেম, বেদনা, মৃত্যুর বিভীষিকা। শেষ কবিতা ‘প্রেম যেন এক রেল স্টেশন’-এ এক অনবদ্য প্রেমের ছবি একেছেন কবি - একেবারেই ব্যতিক্রমধর্মী বিন্যাসে। মৃত্যু সঞ্জাত একাধিক ভাবনাবিধুর কবিতা এ গ্রন্থের একটি বিশেষ দিক। উল্লেখযোগ্য - ম্যানিয়াক, হ’লি ডিপ, রিড টু ডাই, উল্টোপিঠ, যাপন, সমুদ্র উল্লাস, বসন্ত সৈনিক এবং আরোও বেশ ক’টি।
হয়তো তারই সূত্র ধরে পোয়েটিক জানালায় কবিতার কালো মেঘ দেখতে পান বা দেখাতে চেয়েছেন কবি। কিন্তু পাঠক মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে - আজ মেঘের রঙ কি শুধুই কালো ?
আছে ভাষা জননী নিয়েও দু’টি কবিতা। আছে অপরাধ, অপকর্মে বিধ্বস্ত অন্তরকে জাগিয়ে দেওয়ার মতো একাধিক কবিতা, একাধিক কাব্যময়তার পংক্তি -
‘...কিশোরীর কাঞ্চন শরীর অস্ত যেতে থাকে
নদীটির পশ্চিম শরীরে
অষ্টমী স্নানের মোহনায় ফুটে থাকে
বসন্ত কিশোরীর পদচিহ্ন।’ (কবিতা - হ’লি ডিপ),
‘...এখনো অটুট আছে ফাগুনের
ধুলোময় খালি পায়ে হাঁটা
সাজি আছে ধুতুরার সাথে
জলে দুধে পূর্ণপাত্রখানি
এখনো অটুট আশা - দেহ ক্লিষ্ট উপবাসী তবু
বুকে বোঝা শিবলিঙ্গ -
সংসারের স্বপ্ন টেনে আনা।’ (কবিতা - দ্য রিচুয়েল),
‘...মহাবোধি শ্যামলিমা, পাতা সাজ ইতিহাসে লেখা -
মরমী ক্লান্ত ডানায় আছে ফুটে সেই কষ্ট রেখা
সকলেরই পাতা দিয়ে ঘর, সব ঘরে ভাঙা ডালপালা
সব ঘরে ভয় পাখি ওড়ে, এই হল শেষটুকু বলা।’
(কবিতা - বাসার গন্ধ)।
বেশ কিছু বানান ভুল রয়ে গেছে গ্রন্থে। তবু সকলেরই পাতা দিয়ে ঘর, জানালায় মেঘে মেঘে আছে দুঃখ - আছে মৃত্যু ...... কেমন এক ঘোর লাগা আবেশে এভাবেই শেষ কথাটি বলেন কবি - ব্যঞ্জনায়, কবিতার স্নিগ্ধ বিন্যাসে।
ব্যতিক্রমী ভাবেই কবির এ গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট প্রায় সব কবিতার মেঘ-এর রঙই কালো। হতাশা, দুঃখ, মৃত্যুর কাব্যিক উপস্থাপনা। পুস্পল দেব-এর স্বচ্ছ সুন্দর প্রচ্ছদ ও নামলিপি বই-এর অন্তর্নিহিত সারবত্তার সঙ্গে মানানসই। আগরতলার নান্দীমুখ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত গ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেছেন এ অঞ্চলের আরেক স্বনামধন্য কবি - সঞ্জয় চক্রবর্তীকে।
৪৯টি কবিতা সম্বলিত ৬৪ পৃষ্ঠার গ্রন্থটির প্রথম কবিতা থেকেই কবির ব্যতিক্রমধর্মী রচনার সঙ্গে পাঠককে পরিচিত হতে হয়। ‘পোয়েটিক জানালা’ শিরোনামে ছয়টি স্তবকে লিখা কবিতায় বিচিত্র এক ককটেল সাজিয়েছেন কবি। এক একটি স্তবকের নামও বিচিত্র - মাইকেল, হাঙ্গর, অ্যাসল্ট, লভ, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, স্টোভ।
আমি বঙ্কিম পা বাইকের ধারে
তুমি মাধবীলতা কলেজের গেটে
এ বাইক বন্ধুর থেকে ধার করে আনা
ভালো মানিয়েছে তোমায় মাধবীর শাড়িটিতে
(লভ)
মাত্র চারটি সারিতে কেমন যেন এক রিক্ততার আবেশকে অসাধারণ নৈপুণ্যে - রূপকে, ব্যঞ্জনায় সাজিয়ে দিলেন কবি।
এমনি সারাটি গ্রন্থ জুড়ে চমৎকার সব পংক্তির বিন্যাস। ‘ভালো’র থেকে ‘বেশি ভালো’কে বেছে নেওয়া দুরূহ কাজ। তবু কিছু কবিতার নামোল্লেখ না করলে প্রতিবেদন থেকে যায় অসম্পূর্ণ। ‘ডেথ অফ দা মুন’, ‘দ্য মিথিকেল সাগা’, ‘ভিক্টিম’, ‘গাছ নয়’, ‘উদ্বাস্তুর জমি জিরেত’, ‘সীমানার দু’ধারে’, ‘সৃষ্টি গাথা’ আদি কবিতা ভাবতে বাধ্য করে পাঠককে - তার বিষয় বৈচিত্রে, তার ফর্মাট, তার শৈলীতে।
একজন কবি তাঁর জন্মভূমি, বাসভূমির মাটি জলে বেড়ে ওঠেন বলেই কবির জন্ম উপত্যকার ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ এসে ধরা দেয় কবিতায়। নীলদীপের কবিতায় তাই উজান আসামের পরিবেশজনিত ভাব, ভাষা, সমাজের নানা উচ্চারিত শব্দসমূহের সঠিক উল্লেখ ঋদ্ধ করে কবিতাকে। আসে কাকপথার থেকে অগ্নিগড়ের বাখান। আটপৌরে জীবনের রোজনামচা কবিতায় ধরা থাকে অন্তর্নিহিত ছন্দ ও ব্যঞ্জনার চমৎকারিত্বে -
আমি কাটি পুরোনো কাস্তে দিয়ে
হেলে দুলে পড়া কালো কালো জোহা ধান
আমি কাটি দিন, কাটি রাত - নিদ্রাহীন।
স্কুলের মাইনে দি,
মায়ের ওষুধ আনি শেষ সন্ধ্যায়।
পুরোনো কাস্তে ঝোলে, বাঁশের দেয়ালে
ধ্রুপদী নাচে তেলচিটে গামছার ছায়া
নেশা গন্ধে কাটে বাবার অলীক রাত
কাশির ঘোরে মা অনর্গল বকেন -
অস্পষ্ট মনসা মঙ্গল থেকে বড়ুচণ্ডিদাস।
(কবিতা - রোজনামচা)।
কবিতায় একদিকে যেমন উচ্চারিত হয় দেশ ও সমাজে অপ্রাসঙ্গিক ও লুপ্তপ্রায় মার্ক্সবাদের বহু ব্যবহৃত আনুষঙ্গিক শব্দাবলি - কাস্তে, বাঁকা চাঁদ, কিউবা, কাস্ত্রো, চে - অন্যদিকে দেশ ও সমাজ জুড়ে অপ্রাপ্তি, অ-সুখের দুঃখবোধে ঝরে পড়ে শ্লেষ।
আমি তার সুদিনের বন্ধু
আমি তার রাষ্ট্র প্রেম গান
শাসকের উল্লসিত সুরে
আহা দেশ। মায়ের সমান।
কালো হাত ভাঙা শিরদাঁড়া
কালো অর্থে যমুনা পুলিন
বেধড়ক মৃত্যু লিখে দাও
অহো রাষ্ট্র। তোমার অধীন
পাঁজরের জিরজিরে হাড়ে
রাষ্ট্র মাখো বসন্ত আবির
উল্লসিত জাফরান রং দিয়ে
বাহ্ দেশ। গড়ো নষ্ট নীড়।
(কবিতা - হোলি)।
দুঃখবোধ, শ্লেষ ঝরে পড়ে দেশভাগ নিয়েও একাধিক কবিতায় -
‘... মেঘনায় বরাকের পালতোলা তরী
নববর্ষ বারতায় রঙিন আকাশ
কাঁটাতারের দু’দিকেই স্বপ্নভরা চোখ
সুফিয়া কামাল নাকি জীবনানন্দ দাস ?’
- তবু কোথাও প্রতিবাদী হতে এগিয়ে আসেননি কবি, অধরা সমাধানসূত্র। কবির যাবতীয় কবিতায় ফিরে ফিরে এসেছে প্রেম, বেদনা, মৃত্যুর বিভীষিকা। শেষ কবিতা ‘প্রেম যেন এক রেল স্টেশন’-এ এক অনবদ্য প্রেমের ছবি একেছেন কবি - একেবারেই ব্যতিক্রমধর্মী বিন্যাসে। মৃত্যু সঞ্জাত একাধিক ভাবনাবিধুর কবিতা এ গ্রন্থের একটি বিশেষ দিক। উল্লেখযোগ্য - ম্যানিয়াক, হ’লি ডিপ, রিড টু ডাই, উল্টোপিঠ, যাপন, সমুদ্র উল্লাস, বসন্ত সৈনিক এবং আরোও বেশ ক’টি।
হয়তো তারই সূত্র ধরে পোয়েটিক জানালায় কবিতার কালো মেঘ দেখতে পান বা দেখাতে চেয়েছেন কবি। কিন্তু পাঠক মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে - আজ মেঘের রঙ কি শুধুই কালো ?
আছে ভাষা জননী নিয়েও দু’টি কবিতা। আছে অপরাধ, অপকর্মে বিধ্বস্ত অন্তরকে জাগিয়ে দেওয়ার মতো একাধিক কবিতা, একাধিক কাব্যময়তার পংক্তি -
‘...কিশোরীর কাঞ্চন শরীর অস্ত যেতে থাকে
নদীটির পশ্চিম শরীরে
অষ্টমী স্নানের মোহনায় ফুটে থাকে
বসন্ত কিশোরীর পদচিহ্ন।’ (কবিতা - হ’লি ডিপ),
‘...এখনো অটুট আছে ফাগুনের
ধুলোময় খালি পায়ে হাঁটা
সাজি আছে ধুতুরার সাথে
জলে দুধে পূর্ণপাত্রখানি
এখনো অটুট আশা - দেহ ক্লিষ্ট উপবাসী তবু
বুকে বোঝা শিবলিঙ্গ -
সংসারের স্বপ্ন টেনে আনা।’ (কবিতা - দ্য রিচুয়েল),
‘...মহাবোধি শ্যামলিমা, পাতা সাজ ইতিহাসে লেখা -
মরমী ক্লান্ত ডানায় আছে ফুটে সেই কষ্ট রেখা
সকলেরই পাতা দিয়ে ঘর, সব ঘরে ভাঙা ডালপালা
সব ঘরে ভয় পাখি ওড়ে, এই হল শেষটুকু বলা।’
(কবিতা - বাসার গন্ধ)।
বেশ কিছু বানান ভুল রয়ে গেছে গ্রন্থে। তবু সকলেরই পাতা দিয়ে ঘর, জানালায় মেঘে মেঘে আছে দুঃখ - আছে মৃত্যু ...... কেমন এক ঘোর লাগা আবেশে এভাবেই শেষ কথাটি বলেন কবি - ব্যঞ্জনায়, কবিতার স্নিগ্ধ বিন্যাসে।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
‘পোয়েটিক জানালায় কবিতার মেঘ’
নীলদীপ চক্রবর্তী
মূল্য - ১৩০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪০১১০১৬৪৩
মূল্য - ১৩০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪০১১০১৬৪৩
Comments
Post a Comment