Skip to main content

গরজে-প্রত্যয়ে, বিশুদ্ধ বানানে বিন্যস্ত ‘বরাক নন্দিনী’


সদ্য প্রয়াত কবি সুশান্ত ভট্টাচার্য লিখেছেন -
রক্তে রঞ্জিত এই শহর এই ভূমি এই ঘাস
এইখানে ভাষা শহিদদের পড়েছিল শেষ নিঃশ্বাস...
তারপর সময় গড়িয়ে গেছে কুড়ি কুড়ি বছরের পার
এখন আর সময় আছে কার এসব নিয়ে ভাববার... (কবিতা আত্মকথা)
আবার কবি শতদল আচার্য লিখছেন -
একদিন সংসদে হবে উনিশের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ভারত জুড়ে উনিশের বেদি হবে পথে পথে...
এসব আমার স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছে উনিশ... (কবিতা - উনিশের গান)
এভাবেই কবিতায় কবিতায়, স্মৃতিচারণে, প্রবন্ধ-নিবন্ধে প্রত্যয় ও আত্মবিশ্বাসের সুরে, কথায়, স্বপ্ন দেখার অভিলাষায়, অধিকারে সেজে উঠেছে বরাক উপত্যকা নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের নিয়মিত ‘বরাক নন্দিনী’ পত্রিকার সাম্প্রতিক চতুর্বিংশতিতম কৃষ্ণচূড়া উৎসব সংখ্যা, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। প্রথমেই যে বিষয়টি নজরে এল তা হচ্ছে পত্রিকার আকার। এবারই প্রথম বারের মতো প্রচলিত ঢাউস সাইজের পত্রিকাটি হয়ে উঠেছে তন্বী তথা পঠনবান্ধব। এমন একটি দাবি সম্ভবত পাঠকমহল থেকে উচ্চারিত হয়েছিল সম্প্রতি। সেই সাড়ায় সহমত হয়েছেন সম্পাদকমণ্ডলী। এ সংখ্যার প্রচ্ছদে বীর শহিদ কমলা ভট্টাচার্য ধরা দিয়েছেন জ্যোতির্ময়ী আলোকে আলোকিত হয়ে।
মূলত উনিশ নিয়েই ‘বরাক নন্দিনী’ পত্রিকা। সুচয়িত সম্ভারে সমৃদ্ধ এ সংখ্যায় সন্নিবিষ্ট হয়েছে একগুচ্ছ লেখা। প্রথমেই নিয়মিত বিভাগে রয়েছে সুনির্দিষ্ট সম্পাদকীয়, যার কিয়দংশ উল্লেখনীয় - ‘জ্যৈষ্ঠ্যের কাঠফাটা রোদ্দুরে যখন কৃষ্ণচূড়ার ডাল জুড়ে রক্তিম ফুল্ল সমারোহ, পাখিরা উড়ে এসে বসে ছায়ায় - তৃষ্ণার্ত পখি ও মানুষের জীবন, ভাবি - বরাক মায়ের শহিদ সন্তানরাও তো তৃষ্ণার্ত, প্রতীক্ষারত - ভাষা শহিদ স্বীকৃতির আনন্দধারায় তারা স্নান করবে বলে; সেই প্রত্যাশার প্রহর দিন গড়িয়ে আজ চলছে বঞ্চনার তেষট্টি বছর...।’ এই অপুর্ব জবানবন্দি বরাকের গণমননের ভাষা।
এরপর রয়েছে দুটি শুভেচ্ছাপত্র। লিখেছেন সুলতানা রিজিয়া, প্রতিষ্ঠাতা, নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র, ঢাকা, বাংলাদেশ ও ড. সুমিতা ঘোষ, সংস্থা প্রধান, বরাক উপত্যকা নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র। এবারের সংখ্যাটির সম্পাদক বনানী চৌধুরী ‘নন্দিত প্রিয়জন কথা’ বিভাগে লিখেছেন একটি সাক্ষাৎকার ভিত্তিক প্রতিবেদন - ‘শ্রীযুক্ত বিনোদলাল চক্রবর্তী - দেশ কাল নাগরিকদের সময়ের সাতকাহনের কথাকার’। এই সাক্ষাৎকারে ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ সৈনিকের কথায় উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে হাল আমলের ভাষা সংকট সংক্রান্ত হাল হকিকত। ‘শ্রেষ্ঠ নন্দিনীদের কথা’ অনুলেখনে মঞ্জরী হীরামণী রায় কলম ধরেছেন পারিবারিক সম্মাননা প্রাপক সুপ্রিয়া পাল, শ্রেষ্ঠ নন্দিনীত্রয় বনানী চৌধুরী, অরুন্ধতী দেব কর পুরকায়স্থ ও বেবী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। প্রচ্ছদ-কথা বিষয়ক নিবন্ধ ‘কমলা ভট্টাচার্য - বিশ্বের প্রথম নারী ভাষা শহিদ’ শিরোনামে বীরাঙ্গনা কমলার এক সার্বিক জীবন ছবি ও আত্মত্যাগের জীবন্ত পোর্ট্রেট এঁকেছেন সম্পাদকআরোও এক নারী ভাষা শহিদ সুদেষ্ণা সিংহের উপর সংক্ষিপ্ত হলেও তথ্যভিত্তিক নিবন্ধ লিখেছেন সুচরিতা সিনহা।
নবপ্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলন ও ভাষা সংকট কতটা প্রাসঙ্গিক তারই এক আলোকপাত নবপ্রজন্মের দুই সন্তান সোমদত্তা বৃষ্টি ও শুকতারা সংকল্পের কথায়। বিষয়ভিত্তিক একাধিক নিবন্ধ সংখ্যাটিকে করেছে সমৃদ্ধ। পরিসরের অভাবে প্রতিটি রচনার উপর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে। নানা আঙ্গিকে, ভাষায় ও গরজে যেসব প্রবন্ধ-নিবন্ধ সন্নিবিষ্ট হয়েছে সেগুলো হচ্ছে - প্রতিমা শুক্লবৈদ্যের ‘হৃদয়ে উনিশ চেতনায় একুশ’, শান্তশ্রী সোমের ‘চরৈবেতি যাদের রক্তে তাদের কথা’, শাশ্বতী ভট্টাচার্যের ‘ভাষাতীর্থ বরাক’, দীপংকর ঘোষের ‘বাহান্ন আর উনিশ এক নয় তবে এক সংলগ্ন সত্য’, কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্যের ‘রাজধানীতে বাংলা ভাষা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির চর্চা’, বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ‘ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মাতৃভাষা চর্চা’, গৌরী দত্ত বিশ্বাসের ‘উনিশে মে এবং বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনুভব’ এবং দীপক সেনগুপ্তের ‘উনিশ এবং একুশের সাঁকোতে দাঁড়িয়ে বর্তমান সময়কে অবলোকন’। ৬১র আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আরোও দুইবার বরাক প্রত্যক্ষ করেছে বাংলা ভাষার শহিদ কাণ্ড। ১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই শহিদ হয়েছিলেন জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাস (জগন-যিশু) এবং ১৯৭২ সালের ১২ জুন শহিদ হয়েছিলেন বাচ্চু চক্রবর্তী। করিমগঞ্জের সেই শহিদদের নিয়ে কলম ধরেছেন যথাক্রমে নির্মাল্য দাস ও বনানী চৌধুরী।
সংখ্যাটিতে আছে ৪টি অণুগল্প। বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে লিখেছেন ড. রমা পুরকায়স্থ, শর্মিলী দেব কানুনগো, মঞ্জরী হীরামণি রায় ও জয়া ভাওয়াল। প্রতিটি গল্পের মান উচ্চ স্তরের, যা নিশ্চিতই ভাবাতে বাধ্য করবে পাঠককে। ‘টুকরো কথায় উনিশের ভাবনা’ প্রকাশ করেছেন কবি ও সাহিত্যিকবৃন্দ - সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, শুক্লা চন্দ, গীতা মুখার্জি, নমিতা আচার্য, অনিন্দিতা চক্রবর্তী ও জয়শ্রী কর। সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারভিত্তিক আলোচনায় উঠে এসেছে ১৯-এর উপত্যকায় মাতৃভাষা চর্চা, বর্তমান প্রজন্মের মাতৃভাষা নিয়ে অনীহা, ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা, বিভিন্ন ভাষাগোষ্ঠীর মাতৃভাষার অবক্ষয় ইত্যাদি বিষয়। আলাপচারিতায় যোগদান করলেন যাঁরা তাঁরা হলেন গৌতম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় সমিতি, বরাক উপত্যকা মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি তথা কবি ও নাট্যকর্মী পরিমল কর্মকার, কবি রফি আহমেদ মজুমদার, বিবেকানন্দ কলেজ অব এড্যুকেশনের প্রভাসিকা দেবলীনা দেব, শিক্ষিকা ও বাচিক শিল্পী পূবালী দাশ পুরকায়স্থ এবং এমএমএমসি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সংযুক্তা সিনহা।
তিনটি বিভাগে বিন্যস্ত ‘কবিতার খোলা বারান্দা’য় নানা আঙ্গিকে লেখা বিষয়ভিত্তিক একগুচ্ছ কবিতার সৌজন্যে রয়েছেন প্রবীণ থেকে নবীন কবিবৃন্দ - চান্দ্রেয়ী দেব, স্বাতীলেখা রায়, শমিতা ভট্টাচার্য, শতদল আচার্য, মীনাক্ষী চক্রবর্তী সোম, নীতা বিশ্বাস, নিরুপম শর্মা চৌধুরী, রঞ্জিতা চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা দত্ত, ড. গীতা সাহা, দেবযানী ভট্টাচার্য, স্মৃতি দাস, কল্পিতা দেব, সুপ্রিয়া পাল, কণিকা দাস, সুচরিতা সিংহ, দেবলীনা রায়, প্রগতি দে চৌধুরী, ড. অর্পিতা দাস, লীনা নাথ, সুশান্ত ভট্টাচার্য, অরুন্ধতী দেব, স্বর্ণালী দত্ত, সুদীপ্তা বিশ্বাস, সোনালী গোস্বামী, রানা চক্রবর্তী, শর্মি দে, সুমিতা গোস্বামী দাস, মিনতিরানি রায়, সন্ধ্যা রায়, ছন্দা দাম ও বন্দনা সেনগুপ্ত।
সব মিলিয়ে পরিপাটি বিভাগ বিন্যাসযুক্ত বিশাল সম্ভারসমৃদ্ধ একটি সংখ্যা যার পাতায় পাতায় ধরা আছে যত্ন ও গরজের সুস্পষ্ট ছাপ। আধুনিক বানানের যথাযথ প্রয়োগ সংখ্যাটিকে প্রদান করেছে এক অনন্য মাত্রা যা সচরাচর এ অঞ্চলের পত্রপত্রিকায় দুর্লভ। প্রকাশকাল জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ (মে ২০২৪)। প্রচ্ছদ পরিকল্পনা বরাক নন্দিনী পরিবার। নান্দনিক ভাবনা ও অলংকরণ - উজ্জ্বলেন্দু দাস ও মান্না দেব। স্পষ্ট ছাপা ও অক্ষরবিন্যাসযুক্ত মুদ্রণে রাইমা প্রেস, শিলচর। শেষ মলাটের ভেতরে বন্দনা দাসের ‘কমলা পোট্রেট’ ও বাইরে কবি চন্দ্রিমা দত্তের কবিতাংশ নান্দনিক ভাবনার প্রতিফলন। 

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

মূল্য - ২০০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪৭৬৭৬৩২৫১ 

Comments

  1. খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন বিদ্যুৎদা। আপনাকে নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

শেকড়ের টানে নান্দনিক স্মরণিকা - ‘পরিযায়ী’

রামকৃষ্ণনগর । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবহে বরাক উপত্যকার এক ঐতিহ্যময় শহর । বিশেষ করে শিক্ষাদীক্ষার ক্ষেত্রে চিরদিনই এক অগ্রণী স্থান হিসেবে উচ্চারিত হয়ে আসছে এই নাম । বৃহত্তর রামকৃষ্ণনগরের গোড়াপত্তনের ইতিহাস বহুদিনের । দেশভাগের আগে ও পরে , উত্তাল সময়ে স্থানচ্যূত হয়ে এখানে থিতু হতে চাওয়া মানুষের অসীম ত্যাগ ও কষ্টের ফলস্বরূপ গড়ে ওঠে এক বিশাল বাসযোগ্য অঞ্চল । শুধু রুটি , কাপড় ও ঘরের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রই নয় , এর বাইরে শিক্ষা অর্জনের ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মমনশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেইসব মহামানবেরা । ফলস্বরূপ এক শিক্ষিত সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যদিও উচ্চশিক্ষার জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে বেরোতে হয়েছিল নিজ বাসস্থান ছেড়ে । শিলচর তখন এ অঞ্চলের প্রধান শহর হওয়ায় স্বভাবতই শিক্ষা ও উপার্জনের স্থান হিসেবে পরিগণিত হয় । এবং স্বভাবতই রামকৃষ্ণনগর ছেড়ে এক বৃহৎ অংশের মানুষ এসে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন এই শিলচরে । এই ধারা আজও চলছে সমানে । শিলচরে এসেও শেকড়ের টানে পরস্পরের সাথে যুক্ত থেকে রামকৃষ্ণনগর মূলের লোকজনেরা নিজেদের মধ্যে গড়ে তোলেন এক সৌহার্দমূলক বাতাবরণ । এবং সেই সূত্রেই ২০০০ সালে গঠিত হয় ‘ ...

নিবেদিত সাহিত্যচর্চার গর্বিত পুনরাবলোকন - ‘নির্বাচিত ঋতুপর্ণ’

সাধারণ অর্থে বা বলা যায় প্রচলিত অর্থে একটি সম্পাদনা গ্রন্থের মানে হচ্ছে মূলত অপ্রকাশিত লেখা একত্রিত করে তার ভুল শুদ্ধ বিচার করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সম্পাদনার পর গ্রন্থিত করা । যেমনটি করা হয় পত্রপত্রিকার ক্ষেত্রে । অপরদিকে সংকলন গ্রন্থের অর্থ হচ্ছে শুধুই ইতিপূর্বে প্রকাশিত লেখাসমূহ এক বা একাধিক পরিসর থেকে এনে হুবহু ( শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংশোধনসাপেক্ষে ) একত্রীকরণ । সেই হিসেবে আলোচ্য গ্রন্থটি হয়তো সম্পাদনা গ্রন্থ নয় , একটি সংকলন গ্রন্থ । বিস্তারিত জানতে হলে যেতে হবে সম্পাদক ( সংকলক ) সত্যজিৎ নাথের বিস্তৃত ভূমিকায় । পুরো ভূমিকাটিই যদি লেখা যেতো তাহলে যথাযথ হতো যদিও পরিসর সে সায় দেয় না বলেই অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো এখানে - ‘ সালটা ১৯৯০ । ‘ দৈনিক সোনার কাছাড় ’- এ একবছর হল আসা - যাওয়া করছি । চাকরির বয়স হয়নি তাই চাকরি নয় , এই ‘ আসা - যাওয়া ’ । …. হঠাৎ করেই একদিন ভূত চাপল মাথায় - পত্রিকা বের করব । ‘… সেই শুরু । অক্টোবর ১৯৯০ সালে শারদ সংখ্যা দিয়ে পথচলা শুরু হল ‘ঋতুপর্ণ’র। পরপর দুমাস বের করার পর সেটা হয়ে গেল ত্রৈমাসিক। পুরো পাঁচশো কপি ছাপাতাম ‘মৈত্রী প্রকাশনী’ থেকে।...

মহানিষ্ক্ৰমণ

প্রায় চল্লিশ বছর আগে গ্রামের সেই মায়াময় বাড়িটি ছেড়ে আসতে বেজায় কষ্ট পেয়েছিলেন মা ও বাবা। স্পষ্ট মনে আছে অর্ঘ্যর, এক অব্যক্ত অসহায় বেদনার ছাপ ছিল তাঁদের চোখেমুখে। চোখের কোণে টলটল করছিল অশ্রু হয়ে জমে থাকা যাবতীয় সুখ দুঃখের ইতিকথা। জীবনে চলার পথে গড়ে নিতে হয় অনেক কিছু, আবার ছেড়েও যেতে হয় একদিন। এই কঠোর বাস্তব সেদিন প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করতে পেরেছিল অর্ঘ্যও। সিক্ত হয়ে উঠছিল তার চোখও। জন্ম থেকে এখানেই যে তার বেড়ে ওঠা। খেলাধুলা, পড়াশোনা সব তো এখানেই। দাদাদের বাইরে চলে যাওয়ার পর বারান্দাসংলগ্ন বাঁশের বেড়াযুক্ত কোঠাটিও একদিন তার একান্ত ব্যক্তিগত কক্ষ হয়ে উঠেছিল। শেষ কৈশোরে এই কোঠাতে বসেই তার শরীরচর্চা আর দেহজুড়ে বেড়ে-ওঠা লক্ষণের অবাক পর্যবেক্ষণ। আবার এখানে বসেই নিমগ্ন পড়াশোনার ফসল ম্যাট্রিকে এক চোখধাঁধানো ফলাফল। এরপর একদিন পড়াশোনার পাট চুকিয়ে উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে দাদাদের মতোই বাইরে বেরিয়ে যায় অর্ঘ্য, স্বাভাবিক নিয়মে। ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে যায় দিদিরও। সন্তানরা যখন বড় হয়ে বাইরে চলে যায় ততদিনে বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা মায়ের পক্ষে আর ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বহু জল্পনা কল্পনার শেষে ত...