‘হৃদয়নন্দন
বনে নিভৃত এ নিকেতনে এসো হে আনন্দময়, এসো চিরসুন্দর...।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ
হৃদয়কে একাধারে নন্দনবনের সঙ্গে এবং নিভৃত নিকেতনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর নিভৃত
নিকেতনেই যে হৃদয়ের কথা উথালপাথাল আবেগে ছুটে বেড়ায় দিগদিগন্ত সে কথা তো
সর্বজনবিদিত। এ পৃথিবীতে কতজনের যে হৃদয়ের কত কথা অহরহ জমা হতে থাকে মহাকালের
মহাফেজখানায় তার কি আর লেখাজোখা আছে ? সেইসব হৃদয়ের অফুরান কথামালা, সেইসব
হৃদিকথার সাজানো কোলাজই হল ‘হৃদিকথা’, লিখিত সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে যার সংরক্ষণ
সম্ভব।
সম্প্রতি কলকাতা/শিলচর থেকে প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য পত্রিকা (পত্রিকা না বলে একে গ্রন্থ বলেই আখ্যায়িত করা যায় অনায়াসে) ‘হৃদিকথা’র দ্বিতীয় সংখ্যা। অতি সংক্ষিপ্ত ভূমিকায় ‘আমাদের কথকতা’ শিরোনামে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন দুই সম্পাদক শর্মি দে ও মীরা পাল। লিখছেন - ‘হৃদিকথা যেন হৃদয়ে খোদাই করা এক শিল্পের চরম নিদর্শন। সকল সৃষ্টির পিছনে মানুষের আবেগময় মনের তাড়নাই কাজ করে যা এক শাশ্বত সত্য। মানুষ যুগ যুগ ধরে তার সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছে তার হৃদয়ের কথা। তাই ‘লিখনদ্বীপে আমরা আমরণ নির্বাসিত এক পবিত্র অপরাধী’। সেই দণ্ডিত সমাজে বিনিময় হোক হৃদিকথার, ভালোবাসার, ভালো থাকার।’
কী নেই এই ‘হৃদিকথা’য় ? ১৩৬ পৃষ্ঠার এই বিশাল আয়োজনের ১৩০ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৭০ জন কবির ৭৭টি কবিতা, ৫টি বড় গল্প, ৪টি ছোটগল্প, ৬টি অণুগল্প, ১টি শ্রুতি নাটক, ১টি মুক্ত গদ্য, ২টি প্রবন্ধ এবং একটি অণুপ্রবন্ধ। যদিও প্রকৃত অর্থে রচনাগুলির সংজ্ঞায়ন সব ক্ষেত্রে যথাযথ হয়নি বলেই মনে হয়েছে। বড়গল্পগুলি আসলে ছোট গল্পই এবং এভাবেই বাকি রচনাসমূহও। তবে একটি পত্রিকার পরিসরের কথা চিন্তা করলে এভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায়। ‘হৃদিকথা’কে আদতেই একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা বলে আখ্যায়িত করা যায়। এর ব্যাপ্তি ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বাইরে সারা বিশ্বেও। প্রতিটি রচনার শিরোনামের সঙ্গে লেখকের নাম ও ধাম দুটোই দেওয়া আছে বোল্ড হরফে। দেখা যাচ্ছে এ সংখ্যায় কলম ধরেছেন কলকাতা, বরাক, অসম, ত্রিপুরা, দিল্লি, বাংলাদেশ এবং সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকেও। অর্থাৎ কিনা সাহিত্যের পুরো ভুবনটিকেই সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে একখানে। সম্পাদকদ্বয় মূলত যে ভুখণ্ড থেকে এসেছেন সেই বরাকের সাহিত্য আকাশে এই মুহূর্তে যাঁরাই রত রয়েছেন কলমবাজিতে তাঁদের প্রায় সবাইকেই জায়গা দেওয়া হয়েছে এখানে। কবি লেখকদের এই সমাগমে উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম সম্পাদক শর্মি দে। কবিতার বিভাগে তাঁর অনুপস্থিতি চোখে লাগার মতো। হয়তো অন্যদের সুযোগ করে দিতে সরিয়ে নিয়েছেন নিজেকেই। অন্যথায় বরাকের কবিতার কর্ষণক্ষেত্রে শর্মি এক উজ্জ্বল নাম এতে সন্দেহ থাকার কোনও অবকাশই নেই। যেখানে কারোও কারোও একাধিক কবিতা এখানে সন্নিবিষ্ট হয়েছে সেখানে অনায়াসেই নিজেকে স্থান করে দিতে পারতেন সম্পাদক, হয়তো।
কবিতার বিভাগে সব কবিতাই কাব্যগুণসম্পন্ন হওয়ার কারণে আলাদা করে বেছে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। প্রবীণদের কবিতায় যেমন ধরা রয়েছে জীবনের লব্ধ অনুভবের কথা, বয়সের কথা, খেলাশেষের ইঙ্গিতবাহী কথা তেমনি নবীনদের কবিতায় এসেছে বিচিত্র সব জীবনগাথা, যেখানে উচ্চারিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গ, ভিন্ন চিন্তাধারা। কিছু কবিতার বিশেষোল্লেখ করা যায় - দেবাশীষ দাশগুপ্ত, গোপাল চক্রবর্তী, রাজীব ভট্টাচার্য, মমতা চক্রবর্তী, জাহানারা মজুমদার, সপ্তমিতা নাথ, দীপংকর নায়েক। কুন্তলা দে’র লিমেরিক এবং শাশ্বতী ভট্টাচার্যের হাইকু ব্যতিক্রমী।
প্রথম বড়গল্প দেবদত্তের ‘উপেক্ষিত’কে প্রবন্ধ বিভাগে ঠাঁই দিলে শ্রেয় হতো। চমৎকার রচনা। এছাড়াও বড়গল্প লিখেছেন দেবাশীষ দাশগুপ্ত, রাখী দেব, চম্পা নাগ ও সৌরভ বসু। দেবাশীষের বড়গল্প বুনোটে, বয়ানে সুলিখিত। বাকি গল্পগুলিও ভালো তবে বিস্তৃতির দাবি রাখে। ছোটগল্পে কলম ধরেছেন সুপ্রদীপ দত্তরায়, শ্যামলী ব্যানার্জী, মধুমিতা রায়, মৌসুমী চক্রবর্তী, মধুমিতা বক্সী, মেখলা ঘোষ দস্তিদার, সুশান্ত ঘোষ ও সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়। অধিকাংশ গল্পই সুপাঠ্য। মধুমিতা বক্সীর গল্প ব্যতিক্রমী। অণুগল্প বিভাগে রয়েছে তপতী বিশ্বাস, বিমল কুমার আগরওয়ালা, মধুমিতা রায়, কেকা চক্রবর্তী, সুদীপ্তা ভট্টাচার্য ও চান্দ্রেয়ী দেব-এর রচনা। তপতী ও কেকা অনবদ্য। চৈতালী রায়ের শ্রুতিনাটক নান্দনিক। খানিক বিস্তৃতি পেলে মঞ্চায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য হতো। জয়ন্তী দত্তের মুক্ত গদ্য ও দেবলীনা রায়ের পত্র-সাহিত্য সুচয়িত, সুলিখিত। প্রবন্ধ বিভাগে মুসলমান নারীদের নিয়ে লিখিত আদিমা মজুমদারের প্রবন্ধ বাস্তব প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক এবং সোচ্চার লেখনীপ্রসূত। দ্বিতীয় প্রবন্ধ অমিতাভ দত্তের ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট কবিতা বনাম বলাকা কবিতার বিমূর্ততা’ এ সংখ্যার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। নান্দনিক সাহিত্যগুণে কবিতার চুলচেরা আলোচনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে প্রবন্ধে। গ্রন্থের শেষ রচনা গৌতম দাশগুপ্তের অণুনিবন্ধ। বিশাল একটি বিষয়কে ‘অণু’তে যথাযথ ভাবে সন্নিবিষ্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠে না স্বভাবতই। তবু ছুঁয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন লেখক।
পাকা বাঁধাইয়ে দ্বিতীয় সংখ্যা ‘হৃদিকথা’ এবার জমে উঠেছে নিঃসন্দেহে। সম্পাদকদের নামের পাশে প্রুফ সংশোধকের নাম ব্যতিক্রমী। তবে এবারের সংখ্যায় বানান ভুল প্রায় নেই বললেই চলে। ছাপার ভুল রয়ে গেছে কয়েকটি। ছাপার মান যথাযথ হয়নি। যথেষ্ট ভালো মানের কাগজ। জ্যাকেট কভার প্রচ্ছদ দুর্দান্ত, সৌজন্যে সোমেন দে। সব মিলিয়ে এক সাহিত্য উৎসব হয়ে উঠেছে এ সংখ্যা ‘হৃদিকথা’।
সম্প্রতি কলকাতা/শিলচর থেকে প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য পত্রিকা (পত্রিকা না বলে একে গ্রন্থ বলেই আখ্যায়িত করা যায় অনায়াসে) ‘হৃদিকথা’র দ্বিতীয় সংখ্যা। অতি সংক্ষিপ্ত ভূমিকায় ‘আমাদের কথকতা’ শিরোনামে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন দুই সম্পাদক শর্মি দে ও মীরা পাল। লিখছেন - ‘হৃদিকথা যেন হৃদয়ে খোদাই করা এক শিল্পের চরম নিদর্শন। সকল সৃষ্টির পিছনে মানুষের আবেগময় মনের তাড়নাই কাজ করে যা এক শাশ্বত সত্য। মানুষ যুগ যুগ ধরে তার সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছে তার হৃদয়ের কথা। তাই ‘লিখনদ্বীপে আমরা আমরণ নির্বাসিত এক পবিত্র অপরাধী’। সেই দণ্ডিত সমাজে বিনিময় হোক হৃদিকথার, ভালোবাসার, ভালো থাকার।’
কী নেই এই ‘হৃদিকথা’য় ? ১৩৬ পৃষ্ঠার এই বিশাল আয়োজনের ১৩০ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৭০ জন কবির ৭৭টি কবিতা, ৫টি বড় গল্প, ৪টি ছোটগল্প, ৬টি অণুগল্প, ১টি শ্রুতি নাটক, ১টি মুক্ত গদ্য, ২টি প্রবন্ধ এবং একটি অণুপ্রবন্ধ। যদিও প্রকৃত অর্থে রচনাগুলির সংজ্ঞায়ন সব ক্ষেত্রে যথাযথ হয়নি বলেই মনে হয়েছে। বড়গল্পগুলি আসলে ছোট গল্পই এবং এভাবেই বাকি রচনাসমূহও। তবে একটি পত্রিকার পরিসরের কথা চিন্তা করলে এভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায়। ‘হৃদিকথা’কে আদতেই একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকা বলে আখ্যায়িত করা যায়। এর ব্যাপ্তি ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বাইরে সারা বিশ্বেও। প্রতিটি রচনার শিরোনামের সঙ্গে লেখকের নাম ও ধাম দুটোই দেওয়া আছে বোল্ড হরফে। দেখা যাচ্ছে এ সংখ্যায় কলম ধরেছেন কলকাতা, বরাক, অসম, ত্রিপুরা, দিল্লি, বাংলাদেশ এবং সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকেও। অর্থাৎ কিনা সাহিত্যের পুরো ভুবনটিকেই সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে একখানে। সম্পাদকদ্বয় মূলত যে ভুখণ্ড থেকে এসেছেন সেই বরাকের সাহিত্য আকাশে এই মুহূর্তে যাঁরাই রত রয়েছেন কলমবাজিতে তাঁদের প্রায় সবাইকেই জায়গা দেওয়া হয়েছে এখানে। কবি লেখকদের এই সমাগমে উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম সম্পাদক শর্মি দে। কবিতার বিভাগে তাঁর অনুপস্থিতি চোখে লাগার মতো। হয়তো অন্যদের সুযোগ করে দিতে সরিয়ে নিয়েছেন নিজেকেই। অন্যথায় বরাকের কবিতার কর্ষণক্ষেত্রে শর্মি এক উজ্জ্বল নাম এতে সন্দেহ থাকার কোনও অবকাশই নেই। যেখানে কারোও কারোও একাধিক কবিতা এখানে সন্নিবিষ্ট হয়েছে সেখানে অনায়াসেই নিজেকে স্থান করে দিতে পারতেন সম্পাদক, হয়তো।
কবিতার বিভাগে সব কবিতাই কাব্যগুণসম্পন্ন হওয়ার কারণে আলাদা করে বেছে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। প্রবীণদের কবিতায় যেমন ধরা রয়েছে জীবনের লব্ধ অনুভবের কথা, বয়সের কথা, খেলাশেষের ইঙ্গিতবাহী কথা তেমনি নবীনদের কবিতায় এসেছে বিচিত্র সব জীবনগাথা, যেখানে উচ্চারিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গ, ভিন্ন চিন্তাধারা। কিছু কবিতার বিশেষোল্লেখ করা যায় - দেবাশীষ দাশগুপ্ত, গোপাল চক্রবর্তী, রাজীব ভট্টাচার্য, মমতা চক্রবর্তী, জাহানারা মজুমদার, সপ্তমিতা নাথ, দীপংকর নায়েক। কুন্তলা দে’র লিমেরিক এবং শাশ্বতী ভট্টাচার্যের হাইকু ব্যতিক্রমী।
প্রথম বড়গল্প দেবদত্তের ‘উপেক্ষিত’কে প্রবন্ধ বিভাগে ঠাঁই দিলে শ্রেয় হতো। চমৎকার রচনা। এছাড়াও বড়গল্প লিখেছেন দেবাশীষ দাশগুপ্ত, রাখী দেব, চম্পা নাগ ও সৌরভ বসু। দেবাশীষের বড়গল্প বুনোটে, বয়ানে সুলিখিত। বাকি গল্পগুলিও ভালো তবে বিস্তৃতির দাবি রাখে। ছোটগল্পে কলম ধরেছেন সুপ্রদীপ দত্তরায়, শ্যামলী ব্যানার্জী, মধুমিতা রায়, মৌসুমী চক্রবর্তী, মধুমিতা বক্সী, মেখলা ঘোষ দস্তিদার, সুশান্ত ঘোষ ও সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়। অধিকাংশ গল্পই সুপাঠ্য। মধুমিতা বক্সীর গল্প ব্যতিক্রমী। অণুগল্প বিভাগে রয়েছে তপতী বিশ্বাস, বিমল কুমার আগরওয়ালা, মধুমিতা রায়, কেকা চক্রবর্তী, সুদীপ্তা ভট্টাচার্য ও চান্দ্রেয়ী দেব-এর রচনা। তপতী ও কেকা অনবদ্য। চৈতালী রায়ের শ্রুতিনাটক নান্দনিক। খানিক বিস্তৃতি পেলে মঞ্চায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য হতো। জয়ন্তী দত্তের মুক্ত গদ্য ও দেবলীনা রায়ের পত্র-সাহিত্য সুচয়িত, সুলিখিত। প্রবন্ধ বিভাগে মুসলমান নারীদের নিয়ে লিখিত আদিমা মজুমদারের প্রবন্ধ বাস্তব প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক এবং সোচ্চার লেখনীপ্রসূত। দ্বিতীয় প্রবন্ধ অমিতাভ দত্তের ‘অ্যাবস্ট্রাক্ট কবিতা বনাম বলাকা কবিতার বিমূর্ততা’ এ সংখ্যার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। নান্দনিক সাহিত্যগুণে কবিতার চুলচেরা আলোচনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে প্রবন্ধে। গ্রন্থের শেষ রচনা গৌতম দাশগুপ্তের অণুনিবন্ধ। বিশাল একটি বিষয়কে ‘অণু’তে যথাযথ ভাবে সন্নিবিষ্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠে না স্বভাবতই। তবু ছুঁয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন লেখক।
পাকা বাঁধাইয়ে দ্বিতীয় সংখ্যা ‘হৃদিকথা’ এবার জমে উঠেছে নিঃসন্দেহে। সম্পাদকদের নামের পাশে প্রুফ সংশোধকের নাম ব্যতিক্রমী। তবে এবারের সংখ্যায় বানান ভুল প্রায় নেই বললেই চলে। ছাপার ভুল রয়ে গেছে কয়েকটি। ছাপার মান যথাযথ হয়নি। যথেষ্ট ভালো মানের কাগজ। জ্যাকেট কভার প্রচ্ছদ দুর্দান্ত, সৌজন্যে সোমেন দে। সব মিলিয়ে এক সাহিত্য উৎসব হয়ে উঠেছে এ সংখ্যা ‘হৃদিকথা’।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
মূল্য
- ১৫০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪৩৫৩৯৯২১৮
যোগাযোগ - ৯৪৩৫৩৯৯২১৮
Comments
Post a Comment