Skip to main content

উত্তর পূর্ব বিশেষ সংখ্যা রূপে প্রকাশিত - সম্ভাব্য শেষ সংখ্যা ‘পূর্বাদ্রি’


উত্তরপূর্বে যে কটি ছোট পত্রিকা ধারে ও ভারে নিজস্ব প্রতিষ্ঠা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়ে আসছে, ‘পূর্বাদ্রিতাদের মধ্যে অন্যতম অন্য আরও পাঁচটি পত্রিকার তুলনায় পূর্বাদ্রির আছে এক আলাদা বিশেষত্বও ধারাবাহিকতায় ও উৎকৃষ্টতায় পূর্বাদ্রি আগাগোড়া স্বতন্ত্র তবে এটাই পূর্বাদ্রির শেষ কথা নয় নয় মূল কথাও পূর্বাদ্রির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তার অন্য এক বিশেষত্ব নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যের বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রের কঠিন জমিতে পূর্বাদ্রি নিয়মিত জুগিয়ে আসছে উর্বরতা, ফলিয়ে আসছে সোনার ফসল আর এর নেপথ্য কারিগর হলেন এই উত্তর পূর্বের অন্যতম বলিষ্ঠ লেখক, সাহিত্যিক, সম্পাদক দেবাশিস দত্ত তাঁর মেধাসম্বলিত সাহিত্যকৃতি শুধু উত্তর পূর্বেই সীমাবদ্ধ নয়, ছাড়িয়ে গেছে এই ভৌগোলিক পরিসরের সীমানাও
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছেপূর্বাদ্রির বিশেষ উত্তর-পূর্ব সংকলন ১৪২৯ প্রকাশের কাজ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখনই শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অমৃতলোকে পাড়ি জমালেন কৃতী সাহিত্যব্রতী, সম্পাদক দেবাশিস দত্ত এমনকি সম্পাদকীয়টুকুও লিখে যেতে পারলেন না পূর্বাদ্রি প্রকাশে তাঁর দীর্ঘ দিনের সঙ্গী আরেক কৃতি কবি-সাহিত্যিক বিকাশ সরকার শেষ পর্যন্ত হাল ধরলেন তাঁর অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রকাশের আলো দেখাতে উপযুক্ত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন স্বর্গীয় দত্তের সুপুত্র দীপন দত্ত প্রকাশ্যে এলপূর্বাদ্রির এই সংখ্যা - সম্ভবত শেষ সংখ্যা
এ সংখ্যার সম্পাদক হিসেবে উপযুক্ত সম্মান প্রদানের চিহ্ন স্বরূপ রেখে দেওয়া হয়েছে স্বর্গীয় দেবাশিস দত্তের নাম তাই বলা যায় তাঁর সম্পাদনায় এটাই শেষ সংখ্যা সম্পাদকীয়তে এ নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন শ্রী বিকাশ সরকার - “পূর্বাদ্রির সম্পাদকীয় কলমটি এতদিন ধরে যিনি লিখে এসেছেন, সুসম্পাদনার মাধ্যমে তিন দশক ধরে যিনি ‘পূর্বাদ্রি’কে নাগাল্যান্ডের ভৌগোলিক সীমানা থেকে বের করে বইয়ে দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের মূলস্রোতে, সেই অনুপম, সুভদ্র, পরমাত্মীয় দেবাশিস দত্ত আর আমাদের মধ্যে নেই। ...’পূর্বাদ্রি’র সেই সৃষ্টিলগ্ন থেকেই দেবাশিস দত্তকে আমি নানাভাবে সাহায্য করে এসেছি... এতদর্থে ‘পূর্বাদ্রি’ তাঁর মতো আমারও নয়নের মণি। ...... তিনি বহুবার আমাকে সম্পাদকীয় লেখার জন্য অনুরোধ করেছেন, কিন্তু আমি তা শ্রদ্ধাভরে প্রত্যাখ্যান করেছি। কী পরিহাস, আজ তাঁর অবর্তমানে সেই কাজটিই আমাকে করতে হচ্ছে অত্যন্ত বিষণ্ণতা নিয়ে।”
লেখা চয়ন ও প্রকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন প্রয়াত সম্পাদক দেবাশিস দত্ত। এই সংখ্যাটি উত্তর পূর্ব সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হবার দরুণ তিনি তাঁর অগ্রজ আরেক বিশিষ্ট সাহিত্যিক অমরেন্দ্র দত্ত - যিনি বহিঃরাজ্যের বাসিন্দা এবং এ যাবৎ সব ক’টি সংখ্যায় যাঁর লেখা রয়েছে - তাঁর লেখাও সন্নিবিষ্ট করেননি। পূর্বাদ্রির ব্যাপারে এতটাই নিবেদিত ছিলেন তিনি।
এ সংখ্যায়ও সন্নিবিষ্ট হয়েছে একের পর এক কৃতী কবি সাহিত্যিকদের উৎকৃষ্ট রচনা সম্ভার। প্রথমেই রয়েছে বিদগ্ধ সাহিত্যিক ঊষারঞ্জন ভট্টাচার্যের লিখা নিবন্ধ ‘শত শরতের শরদিন্দু অমরেশ দত্ত’। সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক অমরেশ দত্তের ৮৯ বছর বয়সে লিখা উপন্যাসকে কেন্দ্র করে এক অনবদ্য তথ্যভিত্তিক নিবন্ধ যেখানে বিস্তৃত পরিসরে লিপিবদ্ধ হয়েছে ঔপন্যাসিকের জীবনের বহু অমূল্য জীবনগাথা। নিবন্ধ বিভাগে নন্দিতা বসু বিস্তৃতভাবে লিখেছেন অসমিয়া সাহিত্যের প্রথিতযশা সাহিত্যিক মামণি রয়সম গোস্বামীর সাহিত্যকৃতি নিয়ে। স্পষ্ট, প্রাঞ্জল, উপযোগী এবং বুনোটের নৈপুণ্যে উপস্থাপিত এক অবশ্যপাঠ্য নিবন্ধ। ‘শিলং-এর অতীতের শিক্ষক সমাজ ও আজকের শিলং’ শিরোনামে নিবন্ধ লিখেছেন উমা পুরকায়স্থ। অত্যন্ত মূল্যবান একটি নিবন্ধ যা ভবিষ্যতের এক দলিল হিসেবে থেকে যাবে নিঃসন্দেহে। তেমনই আরেকটি নিবন্ধ কল্পনা রায়-এর ‘খাসি-জয়ন্তীয়া পাহাড়ে খ্রিস্টধর্মের প্রারম্ভিক সূচনা’। প্রয়াত সম্পাদক দেবাশিস দত্ত কলম ধরেছেন আবারও এবং শেষবারের মতো। তাঁর লেখনী থেকে নিসৃত হল ‘মেঘালয়ের বাংলা চর্চা, একটি অবলোকন’ শীর্ষক গবেষণালব্ধ প্রবন্ধটি। তাঁর শেষ প্রকাশিত রচনা হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়ে রইল এই রচনা।
ছোটগল্প বিভাগে কলম ধরেছেন সব প্রতিষ্ঠিত গল্পকাররা। পরিতোষ তালুকদার, কুমার অজিত দত্ত, মিথিলেশ ভট্টাচার্য, রণবীর পুরকায়স্থ এবং শঙ্কু চক্রবর্তী। প্রত্যেকেই এই উত্তরপূর্বের প্রথম সারির গল্পকার। প্রতিটি গল্পই বিষয় বৈচিত্রে, উপস্থাপনায়, বুনোটে, ভাষায় এক একটি উৎকৃষ্ট সুখপাঠ্য পরিবেশনা। আলাদা করে আলোচনা বাহুল্য মাত্র। তবে মিথিলেশ ভট্টাচার্যের মতো বিদগ্ধ গল্পকারের গল্পে বেশ ক’টি বানান/ছাপার ভুল পীড়াদায়ক হয়েছে।
কৃতি লেখক শংকর দেব এর স্মৃতিচারণামূলক প্রবন্ধ - ‘আমার দেখা ডিমাপুর, নাগাল্যান্ড’ প্রবন্ধটি এই সংখ্যার এক বিশেষ রচনা হিসেবে দলিল হয়ে থাকবে। ডিমাপুরের নান্দনিক ক্ষেত্রটির এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন। বলা যায় এই সংখ্যার শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
কবিতার বিভাগটিও যথেষ্ট শক্তিশালী। কবিরা প্রত্যেকেই এ অঞ্চলের কবিতাক্ষেত্রে নামী এবং সুপরিচিত। নকুল রায়, বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য, শঙ্করজ্যোতি দেব, অপর্ণা দেব, সজল পাল, চিরশ্রী দেবনাথ, শ্রী দামো, স্বর্ণালী বিশ্বাস ভট্টাচার্য, সঞ্জয় চক্রবর্তী, ছোটন দে এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। স্বভাবতই একাধিক উৎকৃষ্ট কবিতায় সমৃদ্ধ এই বিভাগ। শেষোক্ত কবির কবিতাটির শেষ দু’টি স্তবক ভুলবশত ছাপা হয়ে গেছে কবিতার শিরোনামের আগেই - মনে হয় যেন পূর্বপৃষ্ঠার কবিতার বিস্তার।  
সূচিপত্রের পরই রয়েছে প্রয়াত দেবাশিস দত্তের সর্বশেষ প্রকাশিত গ্রন্থ ‘রবীন্দ্র নাটকে মৃত্য’ থেকে নেওয়া অংশবিশেষ। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এই সংযোজন যেন তাঁরই মৃত্যুকে ভাস্বর করে রেখেছে। প্রয়াত সম্পাদকের স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল ছবিসম্বলিত প্রচ্ছদের বাইরে অন্য প্রচ্ছদ হতেই পারে না। এই ছবি ও প্রচ্ছদ পরিকল্পনায় আছেন এ সংখ্যার সম্পাদক বিকাশ সরকার। পূর্বাদ্রি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই ‘জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, জুন ২০২২ সাল’ সংখ্যাটি মিথ, গুয়াহাটি থেকে মুদ্রিত। স্পষ্ট ছাপাই ও বাঁধাই। অক্ষর, শব্দ, বাক্য বিন্যাসে সুবিন্যস্ত এই সংখ্যার প্রকাশে সহায়তা করেছেন বিষ্ণু ভট্টাচার্য ও বিপ্লব চক্রবর্তী।
পরিশেষে আবারও সম্পাদকীয়ের কিয়দংশ প্রাসঙ্গিক বলে বিবেচিত - “...দেবাশিস দত্তের প্রয়াণ উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাহিত্য ক্ষেত্রে যে শূন্যতার সৃষ্টি করেছে তা পূরণ করা কোনোকালেই সম্ভবপর নয়। ...... বাংলা ভাষার সাহিত্যক্ষেত্রে এক প্রবল ডামাডোলের সূচনা হয়েছে, একের পর এক পত্রিকার অপমৃত্যু দেখতে হচ্ছে আমাদের... আমাদের এক অসহায় পরিস্থিতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
তাঁর প্রয়াণের বিষাদ কাটিয়ে ওঠে তাঁরই পরিকল্পিত ‘উত্তরপূর্ব বিশেষ সংখ্যা’টি অবশেষে হাজির করতে পারছি পাঠকের দরবারে... সন্দেহ নেই এ আমাদের পরম সৌভাগ্য। দেবাশিস দত্তের প্রতি এ আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ্য
পাঠকের দরবারে ৯৬ পৃষ্ঠার সমৃদ্ধ এই সংখ্যা পূর্বাদ্রি এবং এর প্রকাশের পিছনে যাঁদের সার্বিক সহায়তা তাঁদের অবদান নিশ্চিত ভাবেই অবিস্মরণীয় হয়ে রইবে। মননশীল পাঠক ও সংগ্রাহকের কাছে নিশ্চিতভাবেই এই সংখ্যাটি এক অমূল্য সংগ্রহ হিসেবে বন্দিত হয়ে রইবে।

- বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

 

‘পূর্বাদ্রি’
উত্তর পূর্ব বিশেষ সংখ্যা
মূল্য - ১০০ টাকা
যোগাযোগ - ৯৪৩৫৫৯৮৭১৮, ৭৮৯৬০১৮৫৯৯

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হয়তো কবি করোনার

অবশ্যপাঠ্য এক সার্থক উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’

উত্তরপূর্বের বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টিক্ষেত্রে একটি উপন্যাসের সৃষ্টি কিংবা জন্মের ইতিহাস বহু পুরোনো হলেও এই ধারা যে সতত প্রবহমান তা বলা যাবে না কোনওভাবেই। বিশেষ করে আজকের দিনে অন্তত এই ঘটনাকে একটি ‘বিরল’ ঘটনা বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়। এমনও দেখা যায় যে ৪০ থেকে ৮০ পৃষ্ঠার বড় গল্প বা উপন্যাসিকাকে দিব্যি উপন্যাস বলেই বিজ্ঞাপিত করা হচ্ছে। তবে প্রকৃতই এক উপন্যাসের জন্মের মতো ঘটনার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সংযোজিত হয়েছে সাহিত্যিক সজল পালের উপন্যাস ‘হাজার কণ্ঠে মা’। ২৫৩ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটির প্রকাশক গুয়াহাটির মজলিশ বইঘর। তথাকথিত মানবপ্রেমের বা নায়ক নায়িকার প্রেমঘটিত কোনো আবহ না থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসটিকে মূলত রোমান্সধর্মী উপন্যাস হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায় যদিও আঞ্চলিকতা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও উপন্যাসটিকে যথার্থই এক সার্থক উপন্যাস বলা যায় নির্দ্বিধায়। প্রেম এখানে বিচিত্র এক অনুষঙ্গ নিয়ে এসেছে। সংস্কৃতিমনষ্কতা, নান্দনিকতা এবং প্রেম একসূত্রে গ্রথিত হয়ে আছে এখানে। উপন্যাসটি ‘সার্থক’ অর্থে এখানে সচরাচর একটি উপন্যাসের আবশ্যকীয় ধর্মসমূহ যথা প্রাসঙ্গিক ঘটনাবিন্যাস , কাহিনির জমজমাট বুনোট , মানানসই চরিত্র

ভালোবাসার আস্তরণে ঢেকে রেখেছি, না-বলা কথা……'

তোমাকে দেখব বলে, প্রতিদিন জেগে উঠি। তোমার নবযৌবনার সৌন্দর্য আমাকে প্রাণ চঞ্চল করে তোলে।   তোমার রূপ, তোমার স্বর্ণআভা সৌন্দর্য, আমার দেহমনে শিহরণ জাগায়……। (কবিতা - স্বর্ণআভা)   গ্রন্থের নাম স্বর্ণআভা। কবি পরিমল কর্মকারের সদ্য প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ভাবনা ও ভালোবাসার বিমূর্ত প্রকাশ - কবিতায় কবিতায়, পঙক্তিতে পঙক্তিতে। অধিকাংশ কবিতাই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে। সুতরাং এই গ্রন্থকে অনায়াসে প্রেমের কবিতার সংকলন বলতেও আপত্তি থাকার কথা নয়। কবির কাব্যভাবনা, কাব্যপ্রতিভার ঝলক দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিভাত হয়ে আসছে উপত্যকা ও উপত্যকার সীমানা ছাড়িয়ে। তারই একত্রীকরণের দায়ে এই কাব্য সংকলন। তবে এই গ্রন্থে ভালোবাসার বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে অন্য স্বাদের কিছু কবিতা। এর মধ্যে আছে জীবনবোধ ও জীবনচর্চার ভাবনা, শরৎ, স্মৃতি, উনিশের ভাবনা, দেশপ্রেম, সমাজের অন্দরে লুকিয়ে থাকা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আদি। ‘পাঠকের উদ্দেশে’ শিরোনামে ভূমিকায় এমনটাই ব্যক্ত করেছেন পরিমল - ‘আমার কবিতার গরিষ্ঠাংশই জীবনমুখী। বাস্তব জীবনের নির্যাসসম্পৃক্ত এই কবিতাগুলি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবে সমাজের অনেক গভীর ও অনস্বীকার্য রূঢ়