Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2024

নয়ন ও মনন-সুন্দর পূজা সংখ্যা ‘মৈত্রী’

সুন্দরী বড়াইলসংলগ্ন বরাক ও ডিমা হাসাও বা এক সময়ের ডিমাসা কাছাড়ি রাজ্যের মধ্যে যে এক ঐতিহাসিক বা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে তা সর্বজনবিদিত । স্বভাবতই বাংলা এবং কাছাড়ি ভাষা - সাহিত্যের নৈকট্যও এক অবিসম্বাদিত সত্য । ইতিহাস থেকে আধুনিক কাল অবধি নিরন্তর ঘটে যাওয়া সামাজিক , আর্থিক ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তন সত্ত্বেও এই বন্ধন অবিচ্ছেদ্য । বহু গভীরে প্রোথিত এই ইতিহাস। আজ তাই স্বায়ত্ত শাসিত ডিমা হাসাও - এর দ্বিতীয় অফিসিয়াল ভাষা হচ্ছে বাংলা - যার রেশ শোনা যায় রেল স্টেশনসমূহের ঘোষণা শুনলে । সেই ডিমা হাসাও - এর প্রতিটি অঞ্চলের পাশাপাশি প্রধান শহর তথা প্রাণকেন্দ্র হাফলং - এ বাঙালি ও বাংলার রয়েছে এক যুগব্যাপী ইতিহাস, এক ঐতিহ্যপূর্ণ অবস্থান । তা সে স্বাধীনতা আন্দোলনই হোক , পুরাণমিশ্রিত , রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক সম্পর্ক যাই হোক না কেন আজও হাফলঙে বাঙালিদের অস্তিত্ব ও অবদান একই ধারায় প্রবাহিত । আর এই ধারারই অঙ্গ হিসেবে শরৎ এলেই সেজে ওঠে পাহাড় , শরন্ময়ীর আবাহনে , উদ্দীপনায় , উৎসাহে । এই শারদ আয়োজনে স্বভাবতই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে প্রধান কেন্দ্রস্থল হাফলং । আর এই আবহেই প্রতি বছর এই শারদোৎসবকে কেন্দ্র করেই প্র

উৎকর্ষ ও নান্দনিকতার সমাহার ‘শামিয়ানা’ - পঞ্চম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা

খোলা আকাশের নীচে যেন তৈরি হচ্ছে একের পর এক শামিয়ানা । তার অবারিত অন্দরপথে এসে নিরন্তর জমা হচ্ছে চন্দ্র , সূর্য , নক্ষত্রের আলোকচ্ছটা - তত্ত্ব - মেধা - ধীশক্তির নান্দনিক সমাহার । এমনই আবহে সম্প্রতি হাতে এল পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটির রেজিস্ট্রেশন তথা আইএসএসএনপ্রাপ্ত পত্রিকা ‘ শামিয়ানা ’ র পঞ্চম বর্ষ , পঞ্চম সংখ্যা ২০২৩ । ‘ শামিয়ানা ’ - সৃজনী ভাবনার গবেষণাগার । সম্পাদক শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী।   পত্রিকা হলেও এ আসলে ২৫৫ পৃষ্ঠার এক বিশাল গ্রন্থ । চারপৃষ্ঠাব্যাপী সম্পাদকীয় ‘ প্রাককথন ’- এ ভিতরগত সম্ভারের এক রূপরেখা টানা হয়েছে । সেই হিসেবে এবারের সংখ্যার পরিচিতিটা এমন - ‘পত্রিকার বিষয় ত্রিষ্টুপ। কিন্তু এই পত্রিকা ছন্দবিষয়ক বিশেষ সংখ্যা নয়। বরং ত্রিষ্টুপ ছন্দে লেখা সেইসব অনবদ্য, অবিনশ্বর সাহিত্যসৃষ্টির অক্ষয়তাকে স্পর্শ করার প্রচেষ্টা এই সংখ্যা। ...পত্রিকার তিনটি মূল ভাগ। প্রথম ভাগে বিশেষ ক্রোড়পত্র - ‘রসতত্ত্ব ফিরে দেখা’ । প্রথমে অভিলাষা এটাই ছিল যে ‘বীভৎস রস’ নিয়েই গোটা একটা সংখ্যা করব। ...আপাতত অঙ্কুরটুকু থাক এইখানে।’ দ্বিতীয় ভাগে বাংলাভাষার প্রিয় তিন অনবদ্য ও কালজয়ী কবি আলোক সরকার, ভাস্কর চ

বর্ষার সব জল কেন ঝরে আমার উঠোনে… ? ‘অবেলার রোদ্দুর’

দিনাবসানে দিকচক্রবালে যে রক্তিম আভা প্রতিভাত হয় , দিনমানে সম্ভবত সেই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা সুষমামণ্ডিত দৃশ্য । সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে একাধারে ঘোর কালো রাত্রির আড়ালে তলিয়ে যাওয়ার যে বেদনা তাকেও ছাড়িয়ে যায় অস্তমিত সূর্যের অপরূপ রূপমাধুরী । সাহিত্যে , বিশেষ করে কবিতার ক্ষেত্রে বোধ করি সব থেকে বেশি উৎকর্ষ ফুটে ওঠে বেলাশেষের কবিতাতেই । ব্যতিক্রম নন কবিগুরু থেকে শুরু করে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত কবি সাহিত্যিকগণ । দীর্ঘায়িত অতীত আর অনাগত ভবিষ্যতের অজানা ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কপোলকল্পনায় গড়ে ওঠে যে ভাবনা , বয়ানে বুনোটে তা পরিস্ফুট হয় এক ব্যতিক্রমী চমৎকারিত্বে ।     বর্ষীয়ান কবি শিখা দাশগুপ্তের কাব্যগ্রন্থ ‘ অবেলার রোদ্দুর ’ এমনই এক সাম্প্রতিক উদাহরণ । কবি যেন নিজেকে মেলে ধরেছেন আদ্যোপান্ত । সুখ দুঃখ , প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি , অনুভব অনুভূতি , আশা আকাঙ্ক্ষা সব উজাড় করে দিয়েছেন । কোথাও যেন এক সুন্দরের আবাহন , অনন্ত প্রতীক্ষা , স্মৃতি রোমন্থন , অতীত - চিন্তা পাশাপাশি বর্ণমালার দুঃখ , প্রেম , প্রকৃতি , নারী জীবন , সমকাল - সবটুকু ধরা দিয়েছে স্তবক জুড়ে কবিতার শরীরে । প্রাসঙ্গিক ভূমিকায় তাই কবি , সম্পাদক নারায়ণ মোদকও

বিষয়ে, কাব্যিকতায় অপ্রতিম কাব্যগ্রন্থ ‘রক্ত ঝরছে দস্তাবেজ থেকে’

এ কথা অনস্বীকার্য যে অস্তিত্বের নথিপত্র আর দলিল দস্তাবেজ নিয়ে যতটা মহাভারত, যতটা কুরুক্ষেত্র কাণ্ড ঘটেছে, ঘটছে ঈশান কোণের এই রাজ্যটিতে তার নিদর্শন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না এই ভূভারতে। শুধু রক্ত নয় - প্রাণও ঝরেছে, বন্ধ কুঠুরিতে সত্তাও ভুলুণ্ঠিত হয়েছে, লঙ্ঘিত হয়েছে মানবাধিকার। নাগরিকত্বের মহাকাব্য এখানে অনিঃশেষ লিখিত হয়ে চলেছে। আর এমন আবহে এমন গ্রন্থনাম স্বভাবতই তীব্র এক পঠনক্ষুধা জাগিয়ে তোলে আপামর পাঠকের হৃদয়ে। অসংখ্য গ্রন্থের প্রণেতা তপোধীর ভট্টাচার্যের কবি বা সাহিত্যিক পরিচিতির পুনরুল্লেখ ঈশান বাংলার এই মঞ্চে নিতান্তই বাহুল্য। শিলচরের নতুন দিগন্ত প্রকাশনী কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘রক্ত ঝরছে দস্তাবেজ থেকে’। ভূমিকা বা আত্মকথনহীন এই গ্রন্থের একেকটি পৃষ্ঠায় রয়েছে রচনার স্থান, তারিখ ও সময়যুক্ত ৬ থেকে ১৫ লাইনের ৫৬টি শিরোনামবিহীন কবিতা। কবিতাগুলি লেখা হয়েছে ইংরেজি ২০২১ বছরটিতে। উল্লেখ করা যেতে পারে কোভিডোত্তর এই সদ্যপীড়িত সময়কাল ছিল দেশ তথা বিশ্বের কাছে এক বিভীষিকাময় সময় থেকে উত্থানপর্বের মহা-কাল।  গদ্য ও কবিতা লেখার ধরন যে সম্পূর্ণ আলাদা সে তো সর্বজনবিদিত। কিন্তু একজন প

মায়াবী কাব্যশৈলীর প্রত্যয়িত কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা আমার শেষ ঠিকানা’

বইয়ের সমার্থক শব্দ গ্রন্থ , পুস্তক , কিতাব ইত্যাদি । আমাদের অতি পরিচিত এক বিশেষ্য পদ । আরোও একটি শব্দ আছে - পুস্তিকা । পুস্তক ও পুস্তিকার মধ্যে তাহলে ফারাক কোথায় ? অবশ্যই তার আকারে । আয়তনে এবং পৃষ্ঠা সংখ্যায় । এক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কোনও মাপ যেহেতু নেই তাই আলোচ্য বই অর্থাৎ কবি রঞ্জিতা চক্রবর্তীর ২৮ পৃষ্ঠার সদ্য প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা আমার শেষ ঠিকানা’কে আমরা পুস্তিকা নয় বরং বই বা গ্রন্থ হিসেবেই গ্রহণ করতে পারি । প্রতি পৃষ্ঠার আবছায়া অলংকরণ এবং প্রোজ্জ্বল প্রচ্ছদ বইটিকে এক আলাদা মর্যাদা প্রদান করেছে যদিও অলংকরণ বা প্রচ্ছদশিল্পীর নাম অনুল্লেখিত । বিষয় বৃত্তান্ত এগিয়েছে পরিকল্পনা মাফিক । টাইটেল ভার্সোর পরেই সচিত্র উৎসর্গ পাতা । কবি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর স্বর্গীয় ঠাকুরদা ও দিদাকে । টাইটেল ভার্সোতে অগতানুগতিকভাবে দেখা যাচ্ছে প্রকাশক যদিও কবি নিজেই কিন্তু সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন রঞ্জিত চক্রবর্তী ও নিরুপমা চক্রবর্তী । শুভেচ্ছা বার্তা লিখেছেন অধ্যাপক গদাপাণি শর্মা , সহকারী অধ্যাপক সুশোভন দাস , অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শিল্পী দেব এবং সহকারী শিক্ষিকা তমশ্রী চক

ধারাবাহিকতায় ছিমছাম অষ্টাদশী ‘মানবী’

প্রকাশিত হয়ে গেল আঠারোতম বছরের প্রথম সংখ্যা, জানুয়ারি - মার্চ ২০২৪। নিয়মিত ত্রৈমাসিক ‘মানবী’। বরাক উপত্যকার কবির শহর শিলচর থেকে সম্পাদকমণ্ডলীতে থাকা চারজন কবি-সাহিত্যিকের মধ্যে এ সংখ্যার সম্পাদক দোলনচাঁপা দাসপাল। ‘মানবী’ পত্রিকার যে বিশেষত্বটি প্রথম দর্শনেই পাঠকের অন্তর ছুঁয়ে যায় তা হল এর প্রচ্ছদ। প্রতিটি সংখ্যাতেই এই ব্যতিক্রম লক্ষণীয়। এবারেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। এ সংখ্যার প্রচ্ছদ সৌজন্যে ডা. কনকদীপ শর্মা। যেহেতু নিয়মিত সংখ্যা তাই ছিমছাম ৫৪ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে এই অষ্টাদশী ‘মানবী’। সুবিন্যস্ত সূচিপত্রে (এটাও ‘মানবী’র নিয়মিত উৎকর্ষ) রয়েছে ৭টি কবিতা, ৬টি ছোটগল্প এবং ১টি ভ্রমণ কাহিনি। কোনও প্রবন্ধ-নিবন্ধ বিহনেই সেজে উঠেছে ভেতরের পাতা। সম্ভার আপাতদৃষ্টিতে অপ্রতুল মনে হলেও আদপেই তা নয়। ‘মানবী’ সেই ধাঁচের পত্রিকা নয়। সংখ্যা নয়, গভীরতাই এখাস্নে বিচার্য। প্রতিটি রচনা সুচয়িত এবং গভীর মানসম্পন্ন। এখানেই ‘মানবী’র বিশেষত্ব - সতত। সমানুপাতিক সম্পাদকীয়তে নব আঙ্গিকে সম্পাদক লিখছেন - ‘মানবী এখন অষ্টাদশী, প্রতিবাদী সে… হয়তো খানিকটা স্পর্ধিতাও … এই বয়সটিই তো স্বপ্নের বয়স… কিছু কিছু ইচ্ছেরা ঘাটে এসে বাস

নান্দনিক ও গোছালো আয়োজন দ্বিতীয় সংখ্যা ‘সম্পর্ক’

‘…বলা যায়, একটি বই-ই পারে গোটা বিশ্বের কিছু জীর্ণ প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে। বইয়ের এই অমোঘ শক্তি সর্বজনবিদিত। বেদের ঋষি থেকে শুরু করে সমকালীন সময়ের অনেক লেখক তাঁদের সৃষ্টিসম্ভার দিয়ে কিছু প্রচলিত ধারণাকে সময়ে সময়ে বদলে দিয়ে এক নতুন পথের সন্ধান দিতে সক্ষম হয়েছেন। বই পড়ার মধ্যে রয়েছে এক অপার্থিব আনন্দ। বই আমাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করে। এই যান্ত্রিকতার যুগে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বিচলিত মানুষের বইয়ের প্রতি রয়েছে অকৃত্রিম টান। আজকের সামাজিক মাধ্যমের বাড়বাড়ন্ত অবস্থায় বই পড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেলেও, বই প্রকাশের কাজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। বরং পূর্বের তুলনায় তা অনেকটাই বেড়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে পাঠকের সংখ্যা বই প্রকাশের তুলনায় তেমন হারে বৃদ্ধি পায়নি। এই পাঠক সংকট বিশ্বব্যাপী…।’ - এমনই কিছু মূল্যবান তত্ত্ব ও তথ্যের সমাহারে এক প্রাসঙ্গিক সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের মধ্য দিয়েই শ্রীগণেশ হল বাংলা সাহিত্য সভা, অসমের লংকা শাখার দ্বিতীয় বার্ষিক মুখপত্র, বিশ্ব বই দিবস সংখ্যা ‘সম্পর্ক’ -এর । সৌরভ চৌধুরীর নান্দনিক প্রচ্ছদটি প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে পাঠকের। এবং এই নান্দনিকতা ছড়িয়ে আছে শেষ পৃষ্ঠা অবধি

উত্তরপূর্বের কবিদের কবিতার আন্তরিক বিনির্মাণ ‘অপার বাংলা’

‘নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস। নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।’ ...... রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সুখের সন্ধানে মানুষের অতৃপ্তির ভাবনা বিষয়ক ‘মোহ’ শিরোনামের এই কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণিকা গ্রন্থের অন্তর্গত এক বহুপঠিত কবিতা। মূল ভাবের দিকে দৃষ্টিপাত না করে অন্য এক দৃষ্টিকোণ থেকে কবিতাটিকে দেখলে পাওয়া যায় এপার-ওপারের এক নান্দনিক অর্থসূচক ব্যঞ্জনা। এপার ওপারের সংজ্ঞা লেখক, আলোচক কিংবা দর্শকের চোখে ভিন্ন আবহে ভিন্ন অর্থ নিয়ে আসে। নদী পার হলেই বদলে যায় এপার-ওপারের সংজ্ঞা। কবি সঞ্জয় চক্রবর্তীর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থও এমনই এক দ্ব্যর্থক ব্যঞ্জনা নিয়ে। গ্রন্থের নাম ‘অপার বাংলা। অপার অর্থে এপারও নয়, ওপারও নয় - এ হচ্ছে উভয়পারের বৃত্তান্ত। এক্ষেত্রেও এপার ওপার কিংবা অপারের সংজ্ঞা নির্ধারণ নির্ভর করে সেই বক্তা বা দর্শকের নিজস্ব অবস্থানের উপর। ইতিপূর্বে সঞ্জয়ের বিভিন্ন কবিতায় দেখা গেছে গঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ইছামতী, ধানশিরি থেকে শুরু করে ব্রহ্মপুত্র ও বরাক এসেছে অসংখ্যবার, ভিন্ন ভিন্ন আবহে, অনুষঙ্গে। ভৌগোলিক সীমারেখা কিংবা বিভাজনসূচক

ষোড়শবর্ষীয় পারিপাট্যে ‘স্বরিত’ - ষোড়শ সংখ্যা

নিয়ম মেনে বিশ্ব কবিতা দিবসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই করিমগঞ্জ থেকে কবি, লেখক নারায়ণ মোদক ও গৌতম চৌধুরীর সম্পাদনায় প্রকাশিত হল সাহিত্য পত্রিকা ‘স্বরিত’-এর ষোড়শ সংখ্যা। ১০৮ পৃষ্ঠার পত্রিকাটির প্রচ্ছদ দেখলেই মনে হবে সংখ্যাটি নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতি বিষয়ক। ‘আমাদের কথা’ শীর্ষক সম্পাদকীয় পাঠের শুরুতেই এর যাথার্থ্য প্রতিপন্ন হয়। সংক্ষিপ্ত সম্পাদকীয়তে বলা হচ্ছে - ‘আমার ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি আমাকেই বহন করতে হবে। তাকে পুষ্ট করতে যতটুকু প্রয়োজন তার থেকেও বেশি জোগান দিতে হবে। তবেই আমার ভাষা সংস্কৃতি কৃষ্টি বেঁচে থাকবে। পৃথিবীর যত ভাষা আছে তার প্রথম শর্তটি এটি। তার চলনে বলনে সাহিত্যে নিজের প্রাধান্য দিতে পারলেই জগতে নিজের এবং প্রতিটি ভাষা সংস্কৃতি বেঁচে থাকবে…।’ এমন বয়ানে এ অঞ্চলের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস নিয়েই ‘স্বরিত’-এর প্রকাশ ও পথ চলা। এমন প্রত্যয় ও গরজই প্রকাশ পেয়েছে সম্পাদকীয়তে। প্রতিবারের মতোই এ অঞ্চলের এবং এর বাইরেরও একগুচ্ছ কবিতা, অণুগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধে সজ্জিত হয়েছে সংখ্যাটি। কবি-লেখকের নির্বাচনে কিছু ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়েছে এবার। নিয়মিত লেখকদের অনেকেই অনুপস্থিত এবার। কিছু নতুন সংযোজনও স

ব্যতিক্রমী উচ্চারণের কাব্যগ্রন্থ ‘আমি অগ্নিস্নাতা’

অনেকেই বাংলা সাহিত্যে ভুবনায়নের সংজ্ঞাটি মানতে চান না । কিন্তু এই সীমায়নের ধারা যে সেকাল থেকে একাল অবধি বেশ পরিকল্পিতভাবেই চলে আসছে তা অমোঘ সত্য । এক সীমিত পরিসরের বাইরে উত্তরপূর্বে বাংলা সাহিত্যের চর্চা হয় এটাও অনেকের অজানা । উনিশে মে আজও ভিন্ন ভুবনে অনেকের কাছেই অশ্রুত । গৌরচন্দ্রিকায় এতসব কথা উঠে এল এজন্য যে আলোচ্য কাব্যগ্রন্থটি যদি এই তৃতীয় ভুবনের বাইরে প্রকাশিত হতো তাহলে এতদিনে এক বিপ্লব হয়ে যেত - এটা নিশ্চিত । এই সূত্রে প্রথমেই গ্রন্থের অন্তর্গত একটি কবিতা থেকে কিছু সোচ্চার পঙ্‌ক্তি সটান তুলে দেওয়া সমীচীন হবে -   ...টেনে হিচড়ে করবে উলঙ্গ, আঁচড়ে কামড়ে পথের পাশে ফেলবে যেন উচ্ছিষ্ট খাদ্য... উন্মুক্ত স্তন, যোনি তখন আলোকিত হবে মোমবাতি মিছিলে... হবে রগরগে উত্তেজক গদ্য। মায়ের মূর্তি গড়বে বুকে আঁচল, ঢেকে রাখবে নারীকে বোরখা হিজাবে, এ যে সমাজ নীতি... আর আঁধারে টেনে নিতে মনে থাকবে না কিছুই... এ যে মা, মেরি, মর্জিনা অথবা সতী। এসো, হোক না এবার দ্বৈরথ... পুরুষ ধর্ষনে লিপ্ত হও পথে ঘাটে, খোলা জনসভায়, নারী লুকিয়ে থেকো না ঘরের কোণে... টেনে আনো পুরুষ দেখাও কামভাব তোমাকেও পোড়ায় !! (কবিতা - বি

ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মাতৃভাষা চর্চা

মাতৃভাষা যেখানে মাতৃদুগ্ধ সমান বলেই এতদিন প্রচলিত ছিল সেখানে এই একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দুই দশক পেরিয়ে বলতে ব্যথা অনুভূত হয় যে আজ শিশু যেমন পৃথিবীব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা , প্রকৃতি ধ্বংস , মানবসৃষ্ট প্রদূষণ ইত্যাদির ফলশ্রুতিতে বেঁচে থাকার স্বার্থে মাতৃদুগ্ধের উপর পুরোপুরি নির্ভর করে থাকতে পারছে না , পরিপূরকের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর বুক থেকে নিত্যদিন হারিয়ে যাচ্ছে একের পর এক মাতৃভাষা। স্বভাবতই মাতৃদুগ্ধহীন, পুষ্টিহীন হয়ে বিচিত্র এক ভাষা-বিড়ম্বনার মধ্যেই আজকের শিশুর, আজকের প্রজন্মের বেড়ে ওঠা। ভারতবর্ষ - আসাম - ব্রহ্মপুত্র উপত্যকাও এই পৃথিবীর বুকেরই এক ভূমিখণ্ড। ভারতবর্ষের অনন্য সম্পদ ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ । এই ভূখণ্ডে ঐক্য যেমনই হোক ভাষাগত বৈচিত্র্য কিন্তু বিশাল। জাতি জনজাতি উপজাতি মিলিয়ে অগুনতি ভাষাভাষী মানুষের বাস প্রকৃতির কোলে বিস্তৃত এই সুন্দর উপত্যকায়। সরকারি, বেসরকারি তরফে যতই গুরুত্ব আরোপ করা হোক না কেন মাতৃভাষার চর্চা ও প্রসারের উপর, আখেরে ভারতবর্ষের মতো এক বিশাল জনসংখ্যার দেশে ভাষাবৈচিত্র্যের অবস্থিতির ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা ও গণমাধ্যমে সমতার লক্ষ্যে ইংরেজির ব