মন খারাপ করা এক হৈমন্তী সকালে আনমনে বারান্দার বাইরে তাকিয়ে আছে অপরাজিতা । ভোরের শিশিরের আস্তরণ খসে যেতেই উঠোনের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা অতসীগুলো প্রথম সূর্যের আলো গায়ে মেখে নিজেদের পাপড়িগুলো মেলে ধরছে আপন গরিমায় । শিশিরবিন্দু মাখা জালগুলো গুটিয়ে নিচ্ছে দুষ্টু মাকড়সাগুলো । কিছুই নজর এড়ায় না অপরাজিতার । কামিনীর গন্ধে ম ম করছে সারা বাড়ি । উঠোন জুড়ে কাল রাতের ধান মাড়াইয়ের পর ধানী গন্ধে ছেয়েছিল চরাচর । রাতে কামিনী তার সৌরভ ছড়িয়ে আচ্ছা জব্দ করেছে ধানের গন্ধকে । সব মিলিয়ে এক নতুন আবেশ যেন ছেয়ে থাকে বাড়িটার আনাচে কানাচে । ওপাশের শিউলিও রোজ রাতে ফুল ঝরায় এখনো । রূপ আর সৌরভের যেন এক অলিখিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে এখন । চলবে বহুদিন । সেই শেষ চৈত্র ইস্তক । দেখে অপরাজিতা - তারিয়ে তারিয়ে আর ভাবে যতই তোরা জারিজুরি দেখাস না কেন কে আর তোদের দিকে ফিরে তাকায় ? এ বাড়ির আদি বাসিন্দা হয়েও তোরা একাই থাকিস । অথচ এই আমাকে দেখ । উদ্বাস্তু হয়ে এসেও আমি কেমন আদরে যত্নে রসেবশে থাকি । অবশ্য তোদের সাথে আমার তো আর তুলনা চলে না । প্রাণে প্রাণেও ফারাক থাকে । তোরা থাকিস বাইরে পড়ে আর আমি মালিকের খাস মহলে ।...
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা