Skip to main content

নিমগ্ন, নিরলস সাধনার আরেক নাম বাসুদেব দাস


বাংলা ভাষা সাহিত্যের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্তরে উচ্চতর সম্মান প্রাপকদের মধ্যে এপার বাংলার যাঁরা রয়েছেন তার সামান্য সংখ্যকই উত্তরপূর্বের বা এই ঈশান বাংলার। এই তালিকায় স্বভাবতই পশ্চিমবঙ্গের প্রাধান্য। তবু মাঝে মাঝে স্ফুলিঙ্গের মতো কিছু ব্যক্তির উৎকৃষ্ট সৃষ্টি সর্বভারতীয় স্তরে স্বীকৃত হওয়ার ঘটনাও বিরল নয়।
বাসুদেব দাস তেমনই একজন ব্যক্তি যিনি বিভিন্ন স্তরে অবহেলা ও প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উঠে আসতে পেরেছেন শুধুমাত্র অধ্যবসায় ও নিরলস সাহিত্য সাধনার ফলে। অনুবাদ সাহিত্যে সম্প্রতি তাঁর অবদানের জন্য তিনি ভূষিত হয়েছেন ২০২৪ সালের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে। অসমিয়া ভাষার খ্যাতনামা সাহিত্যিক হোমেন বরগোহাঞির ‘সাউদর পুতেকে নাও মেলি যায়’ গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ ‘সওদাগরের পুত্র নৌকা বেয়ে যায়’-এর জন্য। প্রকাশক ‘প্রতিভাস’, কলকাতা। এই পুরস্কার প্রাপ্তির সূত্র ধরে উত্তরপূর্ব এবং বিশেষ করে এই রাজ্য আজ আপন গরিমায় গর্বিত। বাসুদেব বর্তমানে কলকাতার বাসিন্দা হলেও মূলত তিনি এখান থেকেই শুরু করেছেন তাঁর জয়যাত্রা। তাঁর জন্ম ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার নগাঁও জেলার যমুনামুখে ১৯৫৮ ইংরেজির ৩১ ডিসেম্বর। বাবা প্রয়াত ভরতচন্দ্র দাস। মা প্রয়াত হেমলতা দাস। গৌহাটী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে দুবার মাস্টার্স করার পর অনুবাদ সাহিত্যের উপর বিশেষ ভাবে নির্মিত এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করেছেন তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রতী রয়েছেন নিরলস সাহিত্য চর্চায়। বিশেষত অনুবাদ সাহিত্যের উপর তাঁর কাজকর্ম অধিক হলেও রয়েছে বহু মৌলিক সৃষ্টি। 
###  
সাক্ষাৎকার শব্দের অভিধানগত অর্থ হচ্ছে মুখোমুখি কথোপকথন। প্রযুক্তির এই উন্নত যুগে সরেজমিনে না পৌঁছেও মুখোমুখি হওয়া যায়। এই প্রযুক্তিগত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেই আমরা অনুবাদক বাসুদেবের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করব। চেষ্টা করব তাঁর জীবন ও সৃষ্টির অন্তরালে ও প্রকাশ্যে থাকা বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করার।
প্র: প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাই সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে অভিহিত হওয়ার জন্য। এই পুরস্কার আপনার কাছে কতটুকু ?
উ: ধন্যবাদ। পুরস্কার পেতে অবশ্যই ভালো লাগে। তবে লেখালেখি মূলত অন্তরের গরজ থেকেই করে গেছি। চেষ্টা করেছি সততা বজায় রাখতে। সচেষ্ট থেকেছি প্রতিনিয়ত উৎকর্ষের দিকে এগিয়ে যেতে। পুরস্কারের চাইতেও বেশি চেয়েছি স্বীকৃতির যা খুবই বিরল ও কষ্টসাধ্য।
প্র: আপনার অনুবাদ বরাবরই আমার প্রিয়। তবে বিরুদ্ধ মন্তব্যও আমি শুনেছি। কী বলবেন ?
উঃ এমন বিরূপ মন্তব্য আমারও কর্ণগোচর হয়েছে। দুঃখ পেয়েছি যদিও এইসব নিন্দুকদের কাছে আমি পরোক্ষে কৃতজ্ঞও। নিজের অন্তরে যা ছিলই তাই যেন এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আরও প্রগাঢ় হয়েছে। সমালোচিত হয়েছি যত, ততই নিজেকে ঘষে মেজে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
প্র: অনুবাদ কর্মটি আপনি কতটা ভালোবাসেন সে তো জানাই। কিন্তু জন্মভূমি এবং শিক্ষাভূমি ছেড়ে কলকাতায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর আপনার সাহিত্যকর্ম কতটা পুষ্ট হয়েছে বলে ভাবেন ?
উ: অনুবাদ কর্মে আত্মনিয়োগ আগেই করেছি। তবে কলকাতায় এসে যেন একটি দ্বার খুলে গেছে আমার সামনে। বস্তুত এখানে বসেই আমার অসমিয়া চর্চা। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে এখানেও যথেষ্ট কদর আছে অসমিয়া ভাষার। অসম্ভব ভালোবাসা পেয়েছি এখানে। বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় বিশিষ্ট কবি সুবোধ সরকারের ‘ভাষানগর’ পত্রিকার কথা। এই পত্রিকা এবং কবি স্বয়ং আমার কাজে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন নিরন্তর। এই পত্রিকায় বিভিন্ন প্রাদেশিক ভাষার অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আমার কৃত অনুবাদও প্রকাশিত হয়েছে অনেক। বাংলা থেকে অসমিয়া এবং অসমিয়া থেকে বাংলা। আমার গ্রন্থের ভূমিকাও লিখে দিয়েছেন শ্রদ্ধেয় কবি। আমিও তাঁর বেশ কিছু কবিতার অনুবাদ করেছি। এখানে গত ২০ বছর ধরে অন্তত ৫০/৬০টি পত্রিকায় আমার অনুবাদ বেরিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অকাদেমি প্রাপ্ত কবি সমীর তাঁতির বেশ কিছু কবিতা, সনন্ত তাঁতির গোটা চল্লিশেক, প্রাণজিৎ বরার ৬০টি কবিতার সংকলন, নীলিম কুমারের ৫০টি কবিতার সংকলন এবং আরও অনেক অনেক। প্রকাশিতব্য নীলিম কুমারের আরও একটি অনূদিত কবিতার সংকলন এবং একটি উপন্যাস। সমীর তাঁতির কবিতার একটি অনূদিত সংকলনও প্রকাশের পথে। প্রকাশিতব্য ১০০ জন কবির ৩০০টি কবিতার সংকলন।
প্র: কতটা মসৃণ ছিল অনুবাদ সাহিত্যে আপনার যাত্রা ?
উ: অনুবাদকে মূল ধারার সাহিত্যকর্ম বলে মেনে নিতে দ্বিধা আছে অনেকেরই। সেকাল থেকে একাল অবধি। এমনও হয়েছে আমার অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু প্রচ্ছদে অনুবাদকের নাম দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি প্রকাশক। এমনকি প্রকাশিত হওয়ার পর আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। অনুবাদকের প্রতি এক হেয়জ্ঞান আছে অনেকের। এই কাজে সম্মান কম, অমার্যাদা বেশি।
প্র: অনুবাদ বিষয়ে উত্তরপূর্ব সম্বন্ধে আপনার প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির কথা জানতে চাই।       
উ: উত্তরপূর্ব আজও সাহিত্যের স্বর্ণখনি। অসমিয়া সাহিত্য এক উচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। আমি ভাবি এইসব সাহিত্য আমাদের পড়া উচিত। অপ্রীতি যেন আর না হয়। অসমিয়া-বাঙালির মধ্যে সম্প্রীতির প্রয়োজন। দু:খের কথা এই যে অসমিয়া সাহিত্যের এই প্রীতি নিয়ে আমি বরাকে এক সময় কিছুটা হলেও নিন্দিত হয়েছি। আবার অন্যদিকে সাহিত্যিক তপোধীর ভট্টাচার্য সহ অনেকের প্রশংসালাভেও ঋদ্ধ হয়েছি। আসলে সাহিত্য তথা সমাজকে জানতে হলে সেই সমাজের ভাষাকে জানার প্রয়োজন। প্রীতি ও সৌহার্দের এক বাতাবরণ গড়ে তুলতে এগিয়ে আসতে হবে উভয় উপত্যকার মানুষদেরই। বরাকের সাহিত্য আমার সেভাবে পড়া হয়ে ওঠেনি। এই ত্রুটি অনস্বীকার্য। তবে এবার বরাকের কিছু বইয়ের উপর আমার অনুবাদ প্রকাশিত হবে শীঘ্রই। আমার সীমিত ক্ষমতা দিয়ে উত্তরপূর্বকে যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করে যাব।
প্র: অনুবাদ কর্মে আপনি পুরস্কৃত হয়েছেন। এই কাজের পেছনে কারও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি ?
উ: একটি অতি আবশ্যক প্রশ্নের অবতারণা করেছেন আপনি। অনুবাদের প্রতি ভালোবাসা অন্তরে ছিলই। তা পুষ্ট হয়েছে যাঁদের অনুপ্রেরণায় তাঁদের কথা না বললেই নয়। গুয়াহাটিতে বসবাসকালীন আমার এই কাজে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গেছেন সাহিত্যিক মানিক দাস, লেখক সম্পাদক তুষারকান্তি সাহা প্রমুখ ব্যক্তিরা। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তবে সর্বাগ্রে যাঁদের নাম নেওয়া প্রয়োজন তাঁরা হলেন গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিশোর ভট্টাচার্য এবং প্রাগজ্যোতিষ মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিষয়ের অধ্যাপক পরমানন্দ মজুমদার - যাঁর কাছে আমার অনুবাদ কর্মের হাতেখড়ি বলা যায়।
প্র: সাহিত্যের এই পথ চলায় অকাদেমি পুরস্কারের বাইরে আপনার অপরাপর প্রাপ্তি ও সাহিত্যকৃতির বিষয়ে কিছু বলুন।
উ: এ যাবৎ আমি সাড়ে পাঁচশোরও বেশি অসমিয়া ছোটগল্প, কবিতা ও অন্যান্য লেখার বাংলা অনুবাদ করেছি যা প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা, পাটনা, মুম্বই, দিল্লি, ঝাড়কণ্ড, অসম ও বাংলাদেশের বহু উল্লেখযোগ্য পত্রপত্রিকায়। অনুবাদ তথা সামগ্রিক সাহিত্যবিষয়ক বক্তৃতা প্রদান করেছি প্রায় ত্রিশটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে। একগুচ্ছ গ্রন্থাবলির অনুবাদ করলেও প্রকৃতপক্ষে আজও আমি শিখছি। নিজেকে আজও আমি এক শিক্ষার্থী বলেই ভাবি। পথ চলার এখনও অনেক বাকি।
প্র: আপনার অধিকাংশ অনুবাদই অসমিয়া থেকে বাংলা। এর বাইরে কোনও অনুবাদ করেছেন কি ? অনুবাদ সাহিত্যের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কিছু শুনতে চাই।
উ: আমি বাংলা থেকে অসমিয়া এবং হিন্দি থেকে বাংলায়ও বেশ কিছু অনুবাদ করেছি। অনুবাদের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বসাহিত্য, সমাজ ও প্রকৃতিকে জানার এক বৃহৎ পরিসর আমাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হয়। তাই দেশীয় ও বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ একান্ত প্রয়োজন বলে ভাবি। আমাদের দেশের ভাষাবৈচিত্র অতুলনীয়। বিভিন্ন ভাষায় নিরন্তর সৃষ্টি হচ্ছে উৎকৃষ্ট সাহিত্য। সেইসব সাহিত্যকৃতিকে সবার পড়া ও জানা একান্ত আবশ্যক বলে ভাবি। আমি বর্তমানে Esparanto ভাষা শিখছি বিশ্ব সাহিত্যে প্রবেশের বাসনা নিয়ে।
প্র: আপনার ধৈর্য ও অধ্যবসায়কে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। আপনি গোটা উত্তরপূর্বকে গর্বিত করেছেন। আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। শেষ প্রশ্ন - নিজেকে নিয়ে আপনার একান্ত নিজস্ব ভাবনা কী ?
উ: আগেই বলেছি আমি এখনও শিখছি। অনেক কিছুই হল না এখনও। মনে হয় যাত্রা শুরু হল সবে। আমি একাধারে শিখছি এবং প্রায়শ্চিত্ত করছি অজ্ঞতা থেকে উত্তরণের পথ ধরে। এই পুরস্কার আমার প্রতি আপনাদের ভালোবাসারই ফসল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

Comments

  1. সাক্ষাৎকার পড়ে খুব ভালো লাগল। অনুবাদক হিসেবে অনুপ্রেরণা পেলাম।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে

একক কিংবা যৌথ সম্পাদনায় বিগত কয়েক বছরে উত্তরপূর্বের বাংলা লেখালেখি বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনা করে এই সাহিত্যবিশ্বকে পাঠকের দরবারে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার এক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ তরুণ লেখক ও সম্পাদক নিত্যানন্দ দাস । হালে এপ্রিল ২০২৪ - এ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সম্পাদনা গ্রন্থ ‘ উত্তর - পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে ’ ( প্রথম খণ্ড ) । প্রকাশক - একুশ শতক , কলকাতা । আলোচ্য গ্রন্থটিতে দুই ছত্রে মোট ২৮ জন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকের ২৮টি প্রবন্ধ রয়েছে । উপযুক্ত বিষয় ও আলোচকদের নির্বাচন বড় সহজ কথা নয় । এর জন্য প্রাথমিক শর্তই হচ্ছে নিজস্ব জ্ঞানার্জন । কালাবধি এই অঞ্চল থেকে প্রকাশিত উৎকৃষ্ট সাহিত্যকৃতির সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল না হলে তা সম্ভব নয় মোটেও । নিত্যানন্দ নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন গভীর অধ্যয়ন ও আত্মপ্রত্যয়কে সম্বল করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আলোচ্য গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন প্রতিষ্ঠিত কথাকার রণবীর পুরকায়স্থ । বস্তুত সাত পৃষ্ঠা জোড়া এই ভূমিকা এক পূর্ণাঙ্গ আলোচনা । ভূমিকা পাঠের পর আর আলাদা করে আলোচনার কিছু থাকে না । প্রতিটি নিবন্ধ নিয়ে পরিসরের অভাবে সংক্ষিপ্ত হলেও ...

প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'স্বপ্নতরী'

  স্বপ্নতরী                         বিদ্যুৎ চক্রবর্তী   গ্রন্থ বিপণী প্রকাশনা  বাবা - স্বর্গীয় সুধীর চন্দ্র চক্রবর্তী মা - শ্রীমতী বীণাপাণি চক্রবর্তী               জনম দিয়েছ মোরে এ ভব ধরায় গড়েছ সযতনে শিক্ষায় দীক্ষায় জীবনে কখনো কোথা পাইনি দ্বন্দ্ব দেখিনি হারাতে পূত - আদর্শ ছন্দ বিন্দু বিন্দু করি গড়ি পদ্য সংকলন তোমাদেরই চরণে করি সমর্পণ প্রথম ভাগ ( কবিতা )   স্বপ্নতরী ১ স্বপ্ন - তরী   নিটোল , নিষ্পাপ কচিপাতার মর্মর আর কাঁচা - রোদের আবোল - তাবোল পরিধিস্থ নতুন আমি ।   আনকোরা নতুন ঝরনাবারি নিয়ে এখন নদীর জলও নতুন বয়ে যায় , তাই শেওলা জমে না ।   দুঃখ আমার রয়ে গেছে এবার আসবে স্বপ্ন - তরী চেনা পথ , অচেনা ঠিকানা ।         ২ পাখমারা   সেই উথাল - পাথাল পাখশাট আজও আনে আরণ্যক অনুভূতি । একটু একটু হেঁটে গিয়ে বয়সের ফল্গুধারায় জগৎ নদীর দু ’ পার ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস - সময়ের কাঠগড়াতে আমি বন...

কবির মজলিশ-গাথা

তুষারকান্তি সাহা   জন্ম ১৯৫৭ সাল৷ বাবা প্ৰয়াত নিৰ্মলকান্তি সাহা ও মা অমলা সাহার দ্বিতীয় সন্তান   তুষারকান্তির ৮ বছর বয়সে ছড়া রচনার মাধ্যমে সাহিত্য ভুবনে প্ৰবেশ৷ ‘ ছায়াতরু ’ সাহিত্য পত্ৰিকায় সম্পাদনার হাতেখড়ি হয় কলেজ জীবনে অধ্যয়নকালীন সময়েই৷ পরবৰ্তী জীবনে শিক্ষকতা থেকে সাংবাদিকতা ও লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে গ্ৰহণ করেন৷ প্ৰথম ছড়া প্ৰকাশ পায় সাতের দশকে ‘ শুকতারা ’ য়৷ এরপর ‘ দৈনিক যুগশঙ্খ ’ পত্ৰিকার ‘ সবুজের আসর ’, দৈনিক সময়প্ৰবাহ ও অন্যান্য একাধিক কাগজে চলতে থাকে লেখালেখি৷ নিম্ন অসমের সাপটগ্ৰামে জন্ম হলেও বৰ্তমানে গুয়াহাটির স্থায়ী বাসিন্দা তুষারকান্তির এ যাবৎ প্ৰকাশিত গ্ৰন্থের সংখ্যা ছয়টি৷ এগুলো হচ্ছে নগ্ননিৰ্জন পৃথিবী (দ্বৈত কাব্যগ্ৰন্থ) , ভবঘুরের অ্যালবাম (ব্যক্তিগত গদ্য) , একদা বেত্ৰবতীর তীরে (কাব্যগ্ৰন্থ) , প্ৰেমের গদ্যপদ্য (গল্প সংকলন) , জীবনের আশেপাশে (উপন্যাস) এবং শিশু-কিশোরদের জন্য গল্প সংকলন ‘ গাবুদার কীৰ্তি ’ ৷ এছাড়াও বিভিন্ন পত্ৰপত্ৰিকায় প্ৰকাশিত হয়েছে শিশু কিশোরদের উপযোগী অসংখ্য অগ্ৰন্থিত গল্প৷ রবীন্দ্ৰনাথের বিখ্যাত ছড়া , কবিতা ও একাধিক ছোটগল্প অবলম্বনে লিখেছেন ...