Skip to main content

অধরা সবুজ

জীবন বা পরিবেশ সম্বন্ধে কতখান উদাসীন অইলে এমন কুনো হঠকারী পরিস্থিতির শিকার অইতে লাগে, আইজ তার এক মোক্ষম হদিশ পাইলা দীপেন্দুবাবু শীতর দিন। বন্ধবারে সকালো নরম রইদর আমেজ মাখিয়া একটু ফুরফুরা অইতে কার না মন চায় ? বউত ভাবিয়া চিন্তিয়া কইতে গেলে এক আনুক্কা অভিযানো বারইলা দীপেন্দু, তবে বেশি দূর কুনুখানো নায় - কাছাকাছি অউ, নূতন কিনা স্কুটি অখান লইয়া
বছরখানেক অইল দীপেন্দু তারা নূতন কিনা ফ্ল্যাটো আইয়া উঠছইন টাউনর এক কিনারো সবুজ-ঘিরা, প্রদূষণহীন এই এলাকাত এলাকাটা খালি টাউনর অউ নায়, অবস্থিত রাজ্যসীমানারও কাছে এর ধারো অউ আছে মেঘালয়র লম্বা সীমানা। কাছর রাজ্য থাকি নামিয়া আওয়া লম্বা পাড়র নীচদিক ঘিরিয়া ই নুতন আবাসিক এলাকা ইখান ইনো আবহাওয়া বারোমাস অউ মধুর শীতর সকালো কুয়াশার চাদ্দরে ঢাকা থাকে বউত সময় গরমে পাড়র নরম, ঠাণ্ডা বাতাস আইয়া জান বাঁচায় রাস্তাবায় চলা মানুষর, আবাসিকহকলর এলাকার রাস্তাঘাট ইতা ওখনও চিনা জানা অইছে না পুরাপুরি তবে সরকারি ব্যবস্থায় প্রত্যেকটা রাস্তার ধারো সন্ধ্যা অইলে অউ জ্বলি উঠে ইলেকট্রিক লাইট কিছু লাইট জ্বলে পাড়র গাতও যারা পাড়র গাত বসতি স্থাপন করিয়া থাকে তারার উঠান পারইয়া ই বাত্তি রাস্তার মানুষর মনমগজো উৎসবর আমেজ জাগায়
দীপেন্দু প্রায় অউ সান্ধ্য ভ্রমণো বারইয়া আশ্চর্য অইয়া দেখইন বাত্তির বাহারপাড়র বুক চিরিয়া যেমন আলোর ফুলঝুরি মানুষে ভরি যার পাড়-পর্বত। ই কয়দিনো অউ তান বড় ভালা লাগি গেছে এলাকাটাতবে সান্ধ্য ভ্রমণো বারইয়া এক আনুক্কা জীবনধারার আত্মচিন্তাত মগ্ন অই যাইন তাইন রোজপাও দুইটা যখন চলাত থাকে ছন্দ মিলাইয়া, মন তখন অফসরএই অফসরে প্রত্যেক দিন নিজর জীবনোর স্ন্যাপশট যেমন সাজাইল গুছাইল ছবির মতন ভাসিয়া উঠে চউখর সামনে
সন্ধ্যাকাল তান সবথাকি সমৃদ্ধ আছিল কিশোর বেলায় বা প্রথম যৌবনর দিনগুলায়পরীক্ষার পড়ার চাপ যখন থাকত না তখন এক দঙ্গল বন্ধু মিলিয়া কদমতলার চা দোকানো ঝড় উঠত কথারঅনর্গল কথা শেষ অইতে না অইতে অউ দঙ্গল যাইত বাসরাস্তা ধরিয়া আটিয়া আটিয়া কুনু এক কালভার্টর ধারোপাশ-কম রাস্তার দুইধারো কালভার্টর রেলিংরে বেঞ্চ বানাইয়া বইয়া চলত জমাইল আড্ডাপ্রত্যেকটা ঘরোর দুর্দশার দিন কাটানির বদলা যেমন আরকিধর্মীয় রেষারেষির জেরে ভিটামাটি হারাইল পরিবারগুলা একলগে আইয়া বাড়ি বানাইছলা হিখানোদীপেন্দু তারার হনো অউ জন্ম, হনো অউ প্রাথমিক শিক্ষামাথা থাকা কিশোর বা সদ্য যুবক দীপেন্দু আছিল আড্ডার শিরোমণিপড়াশোনা বা পরীক্ষার ডর থাকি বাঁচার লাগি কিছু অইলেও বাকি বন্ধুরার দায় তাইন মাথা পাতিয়া লইছিল।। কথা ইখান ই বয়সো আইয়াও স্বীকার করে সবে
কয়েকদিন আগে ছুটোবেলার বন্ধু, আইজকুর প্রতিষ্ঠিত চাকরিয়ান বন্ধু ধ্রুব আইছিল দীপেন্দুর টাউনো, গৌহাটিধ্রুবর মেয়ের চাকরির পরীক্ষা আছিলদীপেন্দু অউ গাড়ি করিয়া লইয়া গেল পরীক্ষা হলওমেয়ে পরীক্ষা হলও ঢুকার পরে প্রায় ঘণ্টা তিনেক অফসর প্রস্তাবটা দীপেন্দু অউ দিল - চল দীপর বিলর পারও গিয়া বইগৌহাটির অন্য এক কিনারো দীপর বিল 
প্রস্তাব লুফিয়া লইল ধ্রুবয়সময় কাটানির এমন মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইল না কেউ অউপ্রকৃতির কুলো তারা বড় অইছে, গতিকে প্রাকৃতিক পরিবেশ তারার খুব প্রিয়। ইদিন ছিল রবিবারশীতর আমেজো বিলর ধারো বিরাট এলাকা লইয়া চলের বনভোজন উৎসব, মানে পিকনিক আরকিমানুষ আর গাড়ির মেলা বইছে যেমনদীপেন্দু গাড়িটারে বেশ কিছু দূরই আউজ্ঞাইয়া লইয়া গিয়া ভিড়মুক্ত অইয়া দাঁড় করাইলা একটা বড় বটজাতীয় গাছর নীচে, বিলর পার ঘেষিয়ানামিয়া আইলা দুই বন্ধুখোলা দুই চউখর সামনে বিশাল দীপর বিলকিন্তু মনর মধ্যে ভাসিয়া উঠল শৈশবর হউ আপন শনবিলআয়তনে শনবিলর কাছে শিশু বিল ইখানতবুও চউখর সামনে ইলাখান বিশাল জলাশয় যেমন দুই বন্ধুর বুকো আবার ঢেউ তুলছে বউতদিন পরেদুনিয়ার সব কথা আইয়া যেমন আচ্ছন্ন করি লাইছে দুই হৃদয়ধ্রুবয় কয় - তোর মনো আছে নি আমরার দল বান্ধিয়া হউ শনবিল ভ্রমণর কথা ?
মনো নাই ? আমার সাইকেলটা অউত্তো আছিল সবর শেষেআর পারছিলাম না চালাইতেঅতো দূর চালাইতে চালাইতে আমি যেন নিঃশেষ হই গেছলামতোমরা তখন আউজ্ঞাই গেছ কত দূর
ঠিক, ঠিকচাইয়া দেখি তুই নাইফিরিয়া পিছাইয়া আইয়া আবিষ্কার করলাম তোরেএরপরে এক দুকানো সাইকেল রাখিয়া নৌকা লইয়া মোকাম কালীবাড়িকী যে সুন্দর আছিল রে দিনটাইন
একদম রেফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যাহিদিন সন্ধ্যার সময় কালীবাড়ি বাজারর চা দোকানো কিতা হইছিল মনো আছে নি ?
হো হো করি হাসিয়া ওঠে ধ্রুবচউখর সামনে ভাসিয়া উঠে অপরিণত বয়সর প্রেমভাবজনিত হউ অপরূপ ঘটনাবলির দৃশ্যচা পরিবেশনকারী হউ সুন্দরী মেয়েটার কথা আইজও ভুলছে না ধ্রুব
কথায় কথায় পার অই গেছে বউত সময় ফিরিয়া আইলা দুইও জন পরীক্ষা হলও পরীক্ষার পরে ধ্রুব আর তার মেয়ে গেল গিয়া সুজা বাস ডিপোর দিকে বাড়িত ফিরিয়া যাওয়ার লাগি ইবায় একলা একলা ঘরো ফিরিয়া আইয়া আর হিদিন সান্ধ্য ভ্রমণো বারইলা না মনমরা দীপেন্দু পরর দিন সকাল অইতে ওউ ফির মন আনচান কিতা যে লুকাই রইছে ভিতরে, খালি বাইরম বাইরম মন জীবনর কত কত দিন ধরিয়া হউ যে সবুজ যেতা আছিল তান নিত্যদিনর আওয়া যাওয়া পথোর ধারো ছড়াইল রাশি রাশি, হউ সবুজর আলিঙ্গন থাকি পড়ি রইছইন বউত দূর আইজ কয়দিন থাকি অউ মনর মধ্যে হউ সবুজর এক তীব্র টান হউ সবুজ ই পাড়র দূর থাকি দেখা সবুজ নায় হি সবুজ আছিল হাতের লাগালও, হাটা পথর দুইধারো - বেজান
হি সবুজ ছাড়িয়া আইতে গিয়া অতো কিচ্ছু অনুভব করছিলা না দীপেন্দু কিন্তু পরে যত দিন গড়াইছে তত অউ যেমন বুকর মধ্যে গাড়িয়া বইছে বেশি করিয়া প্রত্যেক দিন রাইত বিছনাত গেলে অউ মন ছুটিয়া যায়গি হউ পারইয়া আওয়া দিনো স্পষ্ট বাস্তব অইয়া যেমন ধরা দেয় কল্পনার হউ ছবিগুলা লায় লায় এক সবুজঘিরা শান্ত শরীরর দুই চউখ জড়াইয়া ঘুম আয় স্বপ্নেও আয় হউ ছবি প্রায় অউ, স্ন্যাপশটর মতো সাজাইল গুছাইল
ইস্কুল থাকি ফিরার সময় হউ ছুটো হাটা পথ দুই আত বাড়াইলে অউ পাড়র গাত লাগি থাকা গাছগাছালির আলিঙ্গনআর হউ পথখান পারইলে অউ হাটা পথর দুই সাইডে শস্যসবুজ ধানর খেতহালি থাকি ভরন্ত যৌবনবতী ধানর বাড়িয়ায় উঠা দেখি দেখি চউখে মনে কী যে এক বিরাট শান্তিমাজে মাজে ইস্কুল বন্ধর দিনো আইলপথ ধরি ঘুরিয়া বেড়ানি বা বৃষ্টির জলো ভাইয়া আওয়া ছুটো ছুটো মাছরে পাকড়াও করার লাগি ইবায় হিবায় ছুটাছুটিহিতা পারইয়া আওয়া দিনর জ্বলজ্বল ছবি যেমন ভিতরে বাসা বান্ধিলাইছে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত মতো
### 
কয়দিন ধরি অউ তেমন এক পরিবেশর মধ্যে নিজেরে লইয়া যাওয়ার লাগি উন্মুখ হই রইছইন দীপেন্দুনানা কামর চাপে আর সম্ভব অইছিল না অতদিনআইজ রবিবারআগের দিন সারিলাওয়ায় বাজারহাটর চাপ কমসকাল সকাল হকলতা সারিয়া সকালর চা-টিফিন খাইয়া অউ গৃহিণীরে কইলা - ‘আমি একটু আই গিয়ে জবাবর অপেক্ষা না করিয়া অউ তাইন বারই গেলা স্কুটি লইয়াআইজ কিছু সময় কাটাইতে অউ লাগব সবুজর লগে
পাড়র গা ঘেষিয়া যে রাস্তাটা গেছে তার প্রথম দিকে পাড় অইলেও পরে আছে পাড়র উলটা সাইডে কিছু সমতল ভূমিহউ ভূমি অউ আইজ তান গন্তব্যবুকর ভিতরে ফলবতী ধানখেতর ডাক, সবুজর ডাকসফর শুরু করলা দীপেন্দুউচা পথ পারইয়া অখন রাস্তা নীচে নামছে যদিও রাস্তার দুই দিকে অউ খালি বাড়িঘর চউখো পড়ল দীপেন্দুরইতা দেখিয়া মুটে অউ ভালা লাগের না যদিও কিছু নূতন বসতি যেমন গড়িয়া উঠছে দেখলা অউ অঞ্চল জুড়িয়াদীপেন্দুর জানা আছিল নাইতা এলাকার নামও শুনছইন না তাইনগোবিন্দপুর, উদয়পুর, পাথরকুচি, লতাকাটা অতা এলাকা পারইয়া ছুটিয়া যাইরা তাইন আর দেখরা সব কলম্বাসের চউখ দিয়া, পাওয়া নি যায় সবুজ খেতকিন্তু কই তান ভিতরে থাকা হি সবুজ ? আবার একটু উপরে উঠা, একটু নীচে নামাবাউদিকে কাছে অউ পার্শ্ববর্তী রাজ্যর পাড়র ঢলগতিকে তাইন ডাইনদিকে চাইয়া চাইয়া যাইরা হউ ধানিজমি খুঁজিয়াস্কুটি চলের মাইলর পরে মাইল কিন্তু সবুজ খেত আর চউখো পড়ে না দীপেন্দুরএক এক করিয়া জনবসতি পারইয়া হঠাৎ করি কিছু খালি সমভূমি চউখো পড়ল দীপেন্দুরআনন্দে আর ধরে নাকিন্তু উৎসাহী অইয়া কাছে আইতে অউ নিরাশ অইলানা, ধানর জমি নায় ইতাবা অইলেও অখন খালি এবড়োখেবড়ো মাটির উপরে জঞ্জালের মতো কিছু ঘাসর মতোহতাশ অইয়া ফির চলতে থাকলাযাইতে যাইতে অলা আরো কিছু সমভূমি বা মাঠর মতো জমি চউখো পড়ল যদিও সব অউ ফাঁকাযাইতে যাইতে দূর, বউত দূর পৌঁছার পরে দীপেন্দুয়ে আবিষ্কার করলা তাইন ঘুরিয়া ঘুরিয়া আবার তান আবাসনর কাছাকাছি আই গেছইনইদিকে পথঘাট কিছুটা তান চিনাগতিকে নিরাশ অইয়া অখন ঘরর দিকে অউ স্কুটির মুখ ঘুরাইলা দীপেন্দু বুঝলা আইজ আর হি সবুজর দর্শন তান কপালো নাই।  
মনে মনে আশ্চর্য অইলা দীপেন্দুঅত অত নিচু জেগা থাকলেও কুনু ধান গাছ নাই কেনে ? জমিত ফসল নাই কেনে ? ইতা জেগাত তো অনায়াসে ফলানো যাইত ফসলভাবতে ভাবতে আবাসনো পৌছতে অউ চউখো পড়ল সরস্বতী পুজার প্যান্ডেল বানানির কাম শুরু অইছেআর ঠিক তখন হঠাৎ করিয়া যেন চমকাইয়া উঠলা ভিতরে ভিতরে। নিজে অউ আবিষ্কার করলা তান চিন্তাশক্তির দুর্বলতাএই ভরা মাঘ মাসো মাঠ কিতা আর ভরা থাকে নি ধানর গাছে ? আবিষ্কার করলা নিজেরে আর একবারবড় অসহায়, বড় দুর্বল লাগল নিজেরে। প্রকৃতির রূপটা অউ খালি উপভোগ করছইন অতদিনগাছর জীবনযাত্রার লগে নিজেরে পরিচিত করাইছইন না কুনুদিন
হতাশার মধ্যেও নিজর নির্বুদ্ধিতার লাগি নিজেরে অউ শাপশাপান্ত করতে থাকলা দীপেন্দুমনে মনে ভাবলা মাস তিনেক পরে আরেকবার বারইবা এমন অউ এক সফরো

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

Comments

Popular posts from this blog

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে

একক কিংবা যৌথ সম্পাদনায় বিগত কয়েক বছরে উত্তরপূর্বের বাংলা লেখালেখি বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনা করে এই সাহিত্যবিশ্বকে পাঠকের দরবারে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার এক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ তরুণ লেখক ও সম্পাদক নিত্যানন্দ দাস । হালে এপ্রিল ২০২৪ - এ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সম্পাদনা গ্রন্থ ‘ উত্তর - পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে ’ ( প্রথম খণ্ড ) । প্রকাশক - একুশ শতক , কলকাতা । আলোচ্য গ্রন্থটিতে দুই ছত্রে মোট ২৮ জন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকের ২৮টি প্রবন্ধ রয়েছে । উপযুক্ত বিষয় ও আলোচকদের নির্বাচন বড় সহজ কথা নয় । এর জন্য প্রাথমিক শর্তই হচ্ছে নিজস্ব জ্ঞানার্জন । কালাবধি এই অঞ্চল থেকে প্রকাশিত উৎকৃষ্ট সাহিত্যকৃতির সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল না হলে তা সম্ভব নয় মোটেও । নিত্যানন্দ নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন গভীর অধ্যয়ন ও আত্মপ্রত্যয়কে সম্বল করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আলোচ্য গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন প্রতিষ্ঠিত কথাকার রণবীর পুরকায়স্থ । বস্তুত সাত পৃষ্ঠা জোড়া এই ভূমিকা এক পূর্ণাঙ্গ আলোচনা । ভূমিকা পাঠের পর আর আলাদা করে আলোচনার কিছু থাকে না । প্রতিটি নিবন্ধ নিয়ে পরিসরের অভাবে সংক্ষিপ্ত হলেও ...

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হ...

প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'স্বপ্নতরী'

  স্বপ্নতরী                         বিদ্যুৎ চক্রবর্তী   গ্রন্থ বিপণী প্রকাশনা  বাবা - স্বর্গীয় সুধীর চন্দ্র চক্রবর্তী মা - শ্রীমতী বীণাপাণি চক্রবর্তী               জনম দিয়েছ মোরে এ ভব ধরায় গড়েছ সযতনে শিক্ষায় দীক্ষায় জীবনে কখনো কোথা পাইনি দ্বন্দ্ব দেখিনি হারাতে পূত - আদর্শ ছন্দ বিন্দু বিন্দু করি গড়ি পদ্য সংকলন তোমাদেরই চরণে করি সমর্পণ প্রথম ভাগ ( কবিতা )   স্বপ্নতরী ১ স্বপ্ন - তরী   নিটোল , নিষ্পাপ কচিপাতার মর্মর আর কাঁচা - রোদের আবোল - তাবোল পরিধিস্থ নতুন আমি ।   আনকোরা নতুন ঝরনাবারি নিয়ে এখন নদীর জলও নতুন বয়ে যায় , তাই শেওলা জমে না ।   দুঃখ আমার রয়ে গেছে এবার আসবে স্বপ্ন - তরী চেনা পথ , অচেনা ঠিকানা ।         ২ পাখমারা   সেই উথাল - পাথাল পাখশাট আজও আনে আরণ্যক অনুভূতি । একটু একটু হেঁটে গিয়ে বয়সের ফল্গুধারায় জগৎ নদীর দু ’ পার ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস - সময়ের কাঠগড়াতে আমি বন...