Skip to main content

হৃষিকেশ নাথের ‘প্রসঙ্গ চর্যাপদ এবং ত্রিপুরা’


বাংলা সাহিত্যের আকর হিসেবে স্বীকৃত চর্যাপদ নিরন্তর এক রহস্য হিসেবে চর্চিত হয়ে আসছে যুগ থেকে যুগান্তরে এই চর্চা অনি:শেষ বাংলা ভাষা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন এই চর্যাপদ যা একাধারে ভাবীকালের জন্য রেখে গেছে সাহিত্যের ক্রমমিকাশের ধারাকে জানার, তৎকালীন সমাজ-সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, বিশ্বাস, জীবনযাত্রা ও ভৌগোলিক ক্ষেত্র অধ্যয়নের এক বিশাল সুযোগ যা আজও চলে আসছে আত্মোপলব্ধি ও গবেষণালব্ধ প্রক্রিয়ায় অতীত ইতিহাসকে হৃদয়ঙ্গম করার তীব্র বাসনার ফলস্বরূপ
চর্যাপদের ভাষাবিন্যাস, কাব্যগুণ, রূপক ও সাংকেতিক অনুষঙ্গ, ছন্দের বৈচিত্র, লোকায়ত উপাদান এবং সর্বোপরি চর্যা কবিদের জীবন ও কাব্যসাধনার পাশাপাশি তাঁদের অবস্থানগত পরিচিতি আজও গবেষকদের কাছে এক অপার রহস্যাবৃত বিষয় চর্যাপদ বা চর্যাকবিদের অবস্থান যে শুধু উত্তর ভারত, নেপাল, ভূটান নয় বরং অবিভক্ত অসম, বাংলা, ওডিশা ও ত্রিপুরা জুড়েই যে ছিল তার পটভূমি তাতে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়
চর্যাপদ এবং বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যে চর্যাপদ, চর্যাকবিদের উপস্থিতি, তাঁদের পরিচিতি তথা নাথসিদ্ধা যোগীদের সাহিত্যকর্ম ও জীবনযাত্রা বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে গবেষক, সংকলক হৃষিকেশ নাথ-এর ৯৯ পৃষ্ঠার গ্রন্থ ‘প্রসঙ্গ চর্যাপদ এবং ত্রিপুরা’আত্মকথনে গ্রন্থকার জানাচ্ছেন - ‘... যখন জানতে পারি বাঙলা ভাষার আদি গ্রন্থ চর্যাপদের বেশ কয়েকজন কবিসাধক বা চর্যাকবিদের সঙ্গে ক্ষুদ্র রাজ্য ত্রিপুরার একটি সম্পর্ক রয়েছে তখন থেকেই ত্রিপুরা ও ওই চর্যাকবিদের নিয়ে কিছু একটা লেখার তাগিদ অনুভব করতে থাকি...’দীর্ঘ পাঁচ পৃষ্ঠাব্যাপী প্রাক্‌কথন লিখে গ্রন্থের শ্রীবৃদ্ধি করেছেন বঙাইগাঁও, অসমে অবস্থিত শিব গোরক্ষনাথ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী কৈবল্যনাথ। বস্তুত এই প্রাক্‌কথনেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে প্রাসঙ্গিক বহু তথ্য ও কথা। ‘চর্যাগীতি পরিক্রমা : প্রাসঙ্গিক’ শিরোনামে গ্রন্থের তথ্য ও তত্ত্বভিত্তিক মূল্যবান ভূমিকা লিখেছেন ত্রিপুরা (কেন্দ্রীয়) বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নির্মল দাশ।
সূচিপত্র অনুযায়ী এগোলে ২৮টি অধ্যায়ের প্রথমেই রয়েছে ‘চর্যাপদ ও বাঙলা ভাষা উপক্রমিকা’। এই পর্বে রয়েছে চর্যাপদ, নাথ সাহিত্য ও ত্রিপুরার সঙ্গে চর্যাপদের সম্পর্ক বিষয়ক সম্যক আলোকপাত। বলা হয়েছে - ‘...চর্যাপদ আবিষ্কারের পর এবং অন্যান্য গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে চর্যাপদই বাংলার প্রাচীনতম নিদর্শন। দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে পদসংখ্যা ও সিদ্ধা পরিচয় সম্বলিত চর্যাকবিদের সম্পূর্ণ তালিকা। তৃতীয় অধ্যায় ‘ত্রিপুরার সঙ্গে সম্পর্কিত চর্যাকবিদের জন্মস্থান, কর্মক্ষেত্র এবং ধর্মভাবনা’। নাথপন্থ ধর্ম, সম্প্রদায় ও চর্যাচর্য বিনিশ্চয় গ্রন্থ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা। সংক্ষিপ্ত এই অধ্যায়ে শিরোনাম সম্পর্কিত আলোচনা সেভাবে আসেনি এই অধ্যায়ে। পরবর্তী বিস্তৃত অধ্যায়ে একদিকে চর্যাকবি মীননাথ, লুই, মৎসেন্দ্রনাথ একই ব্যক্তি নাকি ভিন্ন এবং অন্যদিকে নাথধর্ম বা নাথপন্থ নিয়ে রয়েছে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা। পরবর্তী দুটি অধ্যায়ে রয়েছে লুইপাদের দুটি চর্যার বিশ্লেষণ ও লেখককৃত ভাবানুবাদ। সপ্তম অধ্যায়ে আছে তেরোটি পদের আবিষ্কর্তা কাহ্নপাদের কথা ও কাহিনি। পদকর্তার বহু নাম - যথা কাহ্ন, কানুপা, কৃষ্ণপাদ, কৃষ্ণচারী, কৃষ্ণ বজ্রপাদ, কৃষ্ণাচার্য, কাহ্ননাথ, কাহ্নপা, কাহ্নিল ইত্যাদি। পরবর্তী বারোটি অধ্যায় জুড়ে রয়েছে তাঁর তেরোটি পদের বিশ্লেষণ, শব্দার্থ ও লেখককৃত ভাবানুবাদ। পরবর্তী দুটি অধ্যায় ডোম্বিপা ও তাঁর পদ এবং তৎপরবর্তী দুটি অধ্যায়ে রয়েছে বিরুআ/বিরুপার পদবিষয়ক আলোচনা।
২৪তম অধ্যায় ‘রাজন্য ত্রিপুরা, ধর্মীয় ভাবনা, বঙ্গদেশ ও চাকলে রোশনাবাদ’-এ ইতিহাস ঘেঁটে তুলে আনা হয়েছে বহু তথ্য ও ধারণা। কিছু বাক্য এখানে সরাসরি তুলে দিলে তার কিছুটা আঁচ হয়তো পাওয়া যেতে পারে - ‘...চর্যাপদের সময়সীমা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌-এর মতে - সপ্তম শতাব্দী। এই সমস্ত বিবেচনা করিয়া আমরা মৎসেন্দ্রনাথের সময়কাল সপ্তম শতকের মধ্যভাগে স্থাপন করিতে পারি। ইহাই বাংলা সাহিত্যের উৎপত্তিকাল। বাঙগলা ভাষা ইহার অন্তত একশত বৎসর পূর্বের হইবে...’। আবার - ‘...ত্রিপুরা রাজন্যবর্গের প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দির ও ত্রিপুরার গ্রাম্য অঞ্চলে শিব মন্দির, শিব থলির প্রাচুর্য দেখলে প্রতীয়মান হয় যে ত্রিপুরা শৈব প্রধান রাজ্য ছিল। কিছু সময়কাল কয়েকজন রাজা বৈষ্ণব ধর্মে প্রবিষ্ট হয়েছিলেন। কিন্ত কোন রাজা বৌদ্ধ ধর্মে প্রবিষ্ট হয়েছিলেন তেমন কোন নিদর্শন নেই। বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের আনুকূল্যে ১৯৪৩ ইংরাজি সনে আগরতলায় ‘বেণুবন বিহার’ নামে বৌদ্ধ মন্দির নির্মিত হয়...।’
২৫ তম অধ্যায়ে ‘সামন্ত মরুন্ডনাথের কালাপুর তাম্রশাসন (শ্রীহট্টে প্রাপ্ত)’ থেকে প্রাপ্ত তৎকালীন কুমিল্লা অর্থাৎ ত্রিপুরা ও সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গদেশের সামন্ত রাজাদের পরিচিতি লিপিবদ্ধ আছে। এখানে উল্লিখিত তথ্যানুযায়ী - ‘...খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীতে দক্ষিণ বাঙলার চন্দ্রদ্বীপ (বাকরগঞ্জ জেলায়) নামে এক রাজ্য ছিল। এই রাজ্যের তাম্রশাসন থেকে আমরা লড়হচন্দ্র ও গোবিন্দচন্দ্র নামের দুই রাজার নাম পাই ... এই চন্দ্রদ্বীপ ড. শহীদুল্লাহ্‌-এর মতে মীননাথের জন্মস্থান। (ওই আদি সিদ্ধা মীননাথ ত্রিপুরার অধিবাসী। তাঁর জন্ম চন্দ্রদ্বীপ (বর্তমান নোয়াখালি জেলার সন্দ্বীপ)। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মনে করেন চন্দ্রদ্বীপ ছিল বরিশাল (বাকরগঞ্জ জেলায়)। এই অধ্যায়ের দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘রামপাল তাম্রশাসন’-এ বর্ণিত হয়েছে সপ্তম থেকে একাদশ শতাব্দী পর্যন্ত বাঙলা ও ত্রিপুরের শাসক রাজাদের সংক্ষিপ্ত উল্লেখ। আছে ‘ভাটেরা তাম্রশাসন’ ও অসমের কামরূপে মীননাথ বা মৎসেন্দ্রনাথের বাস সম্পর্কিত কিছু তথ্যের উল্লেখ।
শেষ অধ্যায় - গ্রন্থনাম অনুযায়ী - ‘প্রসঙ্গ চর্যাপদ এবং ত্রিপুরা’এখানে পূর্বোক্ত নানা তথ্যাদির সংক্ষিপ্ত পুনরুল্লেখ ছাড়াও রয়েছে বিশ্লেষিত কিছু সিদ্ধ ধারণা। যেমন - ‘আদি সিদ্ধা বর্ণিত লুই পা, লুই অর্থাৎ মৎসেন্দ্রনাথ পূর্বোক্ত ত্রিপুরার অধিবাসী ছিলেন। অনুরূপভাবে সবচেয়ে বেশি চর্যাপদের চর্যাকার কাহ্ন, কানুপা(নাথ সিদ্ধা)ও ত্রিপুরার অধিবাসী ছিলেন’ ইত্যাদি। উপসংহারে বর্তমান ত্রিপুরার বাসিন্দা লেখক নিজেই বিস্ময়ের সঙ্গে লিখছেন - ‘...ভাবতে অবাক লাগে ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে বাঙলার আদি পুঁথি চর্যাপদ বা চর্যাচর্য বিনিশ্চয় বা চর্যাগীতিকোষবৃত্তির।
পরিশেষে লেখক নিজেই লিখছেন যে চর্যাপদ নিয়ে আরও চর্চা ও গবেষণার প্রয়োজন - যে কথাটির উল্লেখ রয়েছে ড. নির্মল দাসে ভূমিকায়। সব মিলিয়ে অতীত ও ইতিহাসকে ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে একটি কষ্টসাধ্য প্রয়াস আলোচ্য গ্রন্থটি। গ্রন্থের বাঁধাই, কাগজ, অক্ষর বিন্যাস আদি যথাযথ। লেখক গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর পিতৃদেব ও মাতৃদেবীকে। কিছু বানান ও ছাপার ভুলের বাইরে চর্যাপদ সংক্রান্ত গবেষণার এই নিরন্তর চর্চায় উল্লিখিত গ্রন্থটি নি:সন্দেহে এক উৎকৃষ্ট সংযোজন।

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

প্রকাশক - অক্ষর পাবলিকেশন, আগরতলা
মূল্য - ২০০ টাকা। 

Comments

Popular posts from this blog

শেকড়ের টানে নান্দনিক স্মরণিকা - ‘পরিযায়ী’

রামকৃষ্ণনগর । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবহে বরাক উপত্যকার এক ঐতিহ্যময় শহর । বিশেষ করে শিক্ষাদীক্ষার ক্ষেত্রে চিরদিনই এক অগ্রণী স্থান হিসেবে উচ্চারিত হয়ে আসছে এই নাম । বৃহত্তর রামকৃষ্ণনগরের গোড়াপত্তনের ইতিহাস বহুদিনের । দেশভাগের আগে ও পরে , উত্তাল সময়ে স্থানচ্যূত হয়ে এখানে থিতু হতে চাওয়া মানুষের অসীম ত্যাগ ও কষ্টের ফলস্বরূপ গড়ে ওঠে এক বিশাল বাসযোগ্য অঞ্চল । শুধু রুটি , কাপড় ও ঘরের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রই নয় , এর বাইরে শিক্ষা অর্জনের ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মমনশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেইসব মহামানবেরা । ফলস্বরূপ এক শিক্ষিত সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যদিও উচ্চশিক্ষার জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে বেরোতে হয়েছিল নিজ বাসস্থান ছেড়ে । শিলচর তখন এ অঞ্চলের প্রধান শহর হওয়ায় স্বভাবতই শিক্ষা ও উপার্জনের স্থান হিসেবে পরিগণিত হয় । এবং স্বভাবতই রামকৃষ্ণনগর ছেড়ে এক বৃহৎ অংশের মানুষ এসে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন এই শিলচরে । এই ধারা আজও চলছে সমানে । শিলচরে এসেও শেকড়ের টানে পরস্পরের সাথে যুক্ত থেকে রামকৃষ্ণনগর মূলের লোকজনেরা নিজেদের মধ্যে গড়ে তোলেন এক সৌহার্দমূলক বাতাবরণ । এবং সেই সূত্রেই ২০০০ সালে গঠিত হয় ‘ ...

নিবেদিত সাহিত্যচর্চার গর্বিত পুনরাবলোকন - ‘নির্বাচিত ঋতুপর্ণ’

সাধারণ অর্থে বা বলা যায় প্রচলিত অর্থে একটি সম্পাদনা গ্রন্থের মানে হচ্ছে মূলত অপ্রকাশিত লেখা একত্রিত করে তার ভুল শুদ্ধ বিচার করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সম্পাদনার পর গ্রন্থিত করা । যেমনটি করা হয় পত্রপত্রিকার ক্ষেত্রে । অপরদিকে সংকলন গ্রন্থের অর্থ হচ্ছে শুধুই ইতিপূর্বে প্রকাশিত লেখাসমূহ এক বা একাধিক পরিসর থেকে এনে হুবহু ( শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংশোধনসাপেক্ষে ) একত্রীকরণ । সেই হিসেবে আলোচ্য গ্রন্থটি হয়তো সম্পাদনা গ্রন্থ নয় , একটি সংকলন গ্রন্থ । বিস্তারিত জানতে হলে যেতে হবে সম্পাদক ( সংকলক ) সত্যজিৎ নাথের বিস্তৃত ভূমিকায় । পুরো ভূমিকাটিই যদি লেখা যেতো তাহলে যথাযথ হতো যদিও পরিসর সে সায় দেয় না বলেই অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো এখানে - ‘ সালটা ১৯৯০ । ‘ দৈনিক সোনার কাছাড় ’- এ একবছর হল আসা - যাওয়া করছি । চাকরির বয়স হয়নি তাই চাকরি নয় , এই ‘ আসা - যাওয়া ’ । …. হঠাৎ করেই একদিন ভূত চাপল মাথায় - পত্রিকা বের করব । ‘… সেই শুরু । অক্টোবর ১৯৯০ সালে শারদ সংখ্যা দিয়ে পথচলা শুরু হল ‘ঋতুপর্ণ’র। পরপর দুমাস বের করার পর সেটা হয়ে গেল ত্রৈমাসিক। পুরো পাঁচশো কপি ছাপাতাম ‘মৈত্রী প্রকাশনী’ থেকে।...

মহানিষ্ক্ৰমণ

প্রায় চল্লিশ বছর আগে গ্রামের সেই মায়াময় বাড়িটি ছেড়ে আসতে বেজায় কষ্ট পেয়েছিলেন মা ও বাবা। স্পষ্ট মনে আছে অর্ঘ্যর, এক অব্যক্ত অসহায় বেদনার ছাপ ছিল তাঁদের চোখেমুখে। চোখের কোণে টলটল করছিল অশ্রু হয়ে জমে থাকা যাবতীয় সুখ দুঃখের ইতিকথা। জীবনে চলার পথে গড়ে নিতে হয় অনেক কিছু, আবার ছেড়েও যেতে হয় একদিন। এই কঠোর বাস্তব সেদিন প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করতে পেরেছিল অর্ঘ্যও। সিক্ত হয়ে উঠছিল তার চোখও। জন্ম থেকে এখানেই যে তার বেড়ে ওঠা। খেলাধুলা, পড়াশোনা সব তো এখানেই। দাদাদের বাইরে চলে যাওয়ার পর বারান্দাসংলগ্ন বাঁশের বেড়াযুক্ত কোঠাটিও একদিন তার একান্ত ব্যক্তিগত কক্ষ হয়ে উঠেছিল। শেষ কৈশোরে এই কোঠাতে বসেই তার শরীরচর্চা আর দেহজুড়ে বেড়ে-ওঠা লক্ষণের অবাক পর্যবেক্ষণ। আবার এখানে বসেই নিমগ্ন পড়াশোনার ফসল ম্যাট্রিকে এক চোখধাঁধানো ফলাফল। এরপর একদিন পড়াশোনার পাট চুকিয়ে উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে দাদাদের মতোই বাইরে বেরিয়ে যায় অর্ঘ্য, স্বাভাবিক নিয়মে। ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে যায় দিদিরও। সন্তানরা যখন বড় হয়ে বাইরে চলে যায় ততদিনে বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা মায়ের পক্ষে আর ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বহু জল্পনা কল্পনার শেষে ত...