মাত্রই দুই ফর্মার
একটি সাহিত্য পত্রিকা। অথচ আলোচনার
টেবিলে উঠে আসার যোগ্যতা নিরুপণে উত্তীর্ণ হল স্বকীয়তায় ও সৌকর্যে। দীর্ঘ
২৮ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে চুরাইবাড়ি, উত্তর ত্রিপুরা থেকে। সম্প্রতি
এপ্রিল ২০২৫-এ প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকাটির ২৮তম বর্ষ
: উৎসব সংখ্যা।
৩২ পৃষ্ঠার ছিমছাম পত্রিকাটি হাতে নিয়েই অনুভূত হল একরাশ গরজ ও ভালোবাসার নিবেদন। সামান্য পরিসরেই অসামান্য কাজ করেছেন সম্পাদক রতন চন্দ। নিজেও লেখালেখি করেন বলেই গরজটুকু ঢেলে দিয়ে বৈচিত্রে সাজিয়ে তুলেছেন পুরো পত্রিকা। প্রথমেই আবেগিক অলংকরণে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত দুইজন গুণী ব্যক্তির প্রতি। মাত্রই ২৪ বছর বয়েসি উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী মৌমিতা চন্দ ও ত্রিপুরা তথা ঈশান বাংলার বিশিষ্ট লেখক, সুবক্তা ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি জ্যোতির্ময় রায়ের প্রয়াণে একটি পৃষ্ঠা নিবেদিত হয়েছে ব্যতিক্রমী আঙ্গিকে।
পৃষ্ঠাজোড়া সূচিপত্রে লেখালেখির সম্ভার। ৩৩জন কবির সমসংখ্যক কবিতা, ৪জন গল্পকারের পাঁচটি অণুগল্প এনং একটি মূল্যবান প্রবন্ধ সন্নিবিষ্ট হয়েছে আলোচ্য সংখ্যাটিতে। সমৃদ্ধ সম্পাদকীয়তে রয়েছে কিছু মূল্যবান উচ্চারণ - ‘...জীবনের পথ ফুল বিছানো থাকে না। অন্তত আমাদের অভিজ্ঞতা এটাই বলে। কিন্তু এই চড়াই উতরাই যখন মানবসৃষ্ট হয়, তখন পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে হয়... সভ্যতা থেমে নেই। থেমে নেই সৃষ্টিশীল মানুষ। সৃজনশীল মানুষের হাত ধরে সভ্যতা এগিয়ে যাবে, জয় হবে মানবতার, জাগবে বিবেক। ......’ মণিপুর থেকে পড়শি দেশ বাংলাদেশের বর্তমান অশান্ত প্রেক্ষিত নিয়েও রয়েছে উদ্বেগ এবং শেষে এই প্রত্যাশার বাণী। সবকিছু সামলে স্পষ্ট বার্তাসমন্বিত এক ছিমছাম সম্পাদকীয়।
প্রায় সবগুলি কবিতাই সুপাঠ্য, সুলিখিত। তবু ভালো লাগার তালিকায় প্রথম সারিতে রাখতেই হয় যাঁদের কবিতা তাঁরা হলেন - মধুমিতা ভট্টাচার্য, মাহফুজ রিপন, অমলকান্তি চন্দ, বিল্লাল হোসেন, সিদ্ধার্থ নাথ, মিতালী দে, অমিত চট্টোপাধ্যায়, গোপালচন্দ্র দাস, গুড়িয়া সিংহ, চিরশ্রী দেবনাথ, জয়ত্রী চক্রবর্তী, প্রণবেশ চক্রবর্তী। এর বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে যাঁদের নানা স্বাদের কবিতা তাঁরা হলেন - হৃষিকেশ নাথ, সমর চক্রবর্তী, সন্তোষ রায়, নিবারণ নাথ, নারায়ণ মোদক, গোবিন্দ ধর, শশাঙ্কশেখর পাল, রসরাজ নাথ, শান্তনু মজুমদার, চন্দন পাল, নির্মল দেবনাথ, সুবল চক্রবর্তী, মনোজকান্তি ধর, মোহিত চন্দ, রাণা চক্রবর্তী, পরিমল কর্মকার, ঐশী শীল, হিমাংশু মোহন্ত, রামকৃষ্ণ দাস ও প্রদীপ চক্রবর্তী। কবিতা বিভাগে বিশেষ সংযোজন - ‘জীবন’ শীর্ষক কবিতাটির মাধ্যমে শতদল সাহিত্য পত্রিকা ও সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রাহুল ভট্টাচার্যের দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ের পর কবিতার জগতে পুনরাগমন।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত কবিতাংশ - ‘ঝলসানো রুটি’র আবহে রতন চন্দের অণুগল্প ‘ভোরের সূর্য’ প্রতীকী। একই আবহে শংকর দেব-এর গল্প ‘অসমাপ্ত’ যেন অসমাপ্তই হয়ে রইল। দিব্যেন্দু নাথ তাঁর গল্প কবিতায় মাটির কথা বুনন করেন। প্রেম-প্রেম আবহে এক গ্রামীণ প্রেক্ষাপট উঠে এল তাঁর গল্প ‘ভরা পুকুর’-এ। বিধান চন্দ্র দে লিখেছেন একটি অণু ও একটি পরমাণু গল্প।
পত্রিকার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে শেষ পাতে পায়েসের মতো রয়েছে লোকসংস্কৃতি গবেষক মন্টু দাসের নিবন্ধ ‘ভাটেরা তাম্রশাসন : শ্রীহট্ট রাজ্য ও দেবরাজ বংশ’। শিরোনাম অনুযায়ী এক বিস্তৃত গবেষণামূলক নিবন্ধ পত্রিকার এই সংখ্যাটিএ মান বাড়িয়ে দিয়েছে নি:সন্দেহে।
কাগজ, ছাপা, অক্ষর-শব্দ-পঙ্ক্তি বিন্যাস যথাযথ। প্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদের সৌজন্যে মৌলী দাস। বানাএর ব্যাপারে অধিক সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। তরুণ সম্পাদক ও কৃতী উপদেষ্টামন্ডলীর প্রচেষ্টায় পরবর্তী সংখ্যাসমূহ যে অধিকতর নান্দনিক হবে তা বলাই বাহুল্য।
৩২ পৃষ্ঠার ছিমছাম পত্রিকাটি হাতে নিয়েই অনুভূত হল একরাশ গরজ ও ভালোবাসার নিবেদন। সামান্য পরিসরেই অসামান্য কাজ করেছেন সম্পাদক রতন চন্দ। নিজেও লেখালেখি করেন বলেই গরজটুকু ঢেলে দিয়ে বৈচিত্রে সাজিয়ে তুলেছেন পুরো পত্রিকা। প্রথমেই আবেগিক অলংকরণে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত দুইজন গুণী ব্যক্তির প্রতি। মাত্রই ২৪ বছর বয়েসি উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী মৌমিতা চন্দ ও ত্রিপুরা তথা ঈশান বাংলার বিশিষ্ট লেখক, সুবক্তা ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি জ্যোতির্ময় রায়ের প্রয়াণে একটি পৃষ্ঠা নিবেদিত হয়েছে ব্যতিক্রমী আঙ্গিকে।
পৃষ্ঠাজোড়া সূচিপত্রে লেখালেখির সম্ভার। ৩৩জন কবির সমসংখ্যক কবিতা, ৪জন গল্পকারের পাঁচটি অণুগল্প এনং একটি মূল্যবান প্রবন্ধ সন্নিবিষ্ট হয়েছে আলোচ্য সংখ্যাটিতে। সমৃদ্ধ সম্পাদকীয়তে রয়েছে কিছু মূল্যবান উচ্চারণ - ‘...জীবনের পথ ফুল বিছানো থাকে না। অন্তত আমাদের অভিজ্ঞতা এটাই বলে। কিন্তু এই চড়াই উতরাই যখন মানবসৃষ্ট হয়, তখন পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে হয়... সভ্যতা থেমে নেই। থেমে নেই সৃষ্টিশীল মানুষ। সৃজনশীল মানুষের হাত ধরে সভ্যতা এগিয়ে যাবে, জয় হবে মানবতার, জাগবে বিবেক। ......’ মণিপুর থেকে পড়শি দেশ বাংলাদেশের বর্তমান অশান্ত প্রেক্ষিত নিয়েও রয়েছে উদ্বেগ এবং শেষে এই প্রত্যাশার বাণী। সবকিছু সামলে স্পষ্ট বার্তাসমন্বিত এক ছিমছাম সম্পাদকীয়।
প্রায় সবগুলি কবিতাই সুপাঠ্য, সুলিখিত। তবু ভালো লাগার তালিকায় প্রথম সারিতে রাখতেই হয় যাঁদের কবিতা তাঁরা হলেন - মধুমিতা ভট্টাচার্য, মাহফুজ রিপন, অমলকান্তি চন্দ, বিল্লাল হোসেন, সিদ্ধার্থ নাথ, মিতালী দে, অমিত চট্টোপাধ্যায়, গোপালচন্দ্র দাস, গুড়িয়া সিংহ, চিরশ্রী দেবনাথ, জয়ত্রী চক্রবর্তী, প্রণবেশ চক্রবর্তী। এর বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে যাঁদের নানা স্বাদের কবিতা তাঁরা হলেন - হৃষিকেশ নাথ, সমর চক্রবর্তী, সন্তোষ রায়, নিবারণ নাথ, নারায়ণ মোদক, গোবিন্দ ধর, শশাঙ্কশেখর পাল, রসরাজ নাথ, শান্তনু মজুমদার, চন্দন পাল, নির্মল দেবনাথ, সুবল চক্রবর্তী, মনোজকান্তি ধর, মোহিত চন্দ, রাণা চক্রবর্তী, পরিমল কর্মকার, ঐশী শীল, হিমাংশু মোহন্ত, রামকৃষ্ণ দাস ও প্রদীপ চক্রবর্তী। কবিতা বিভাগে বিশেষ সংযোজন - ‘জীবন’ শীর্ষক কবিতাটির মাধ্যমে শতদল সাহিত্য পত্রিকা ও সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রাহুল ভট্টাচার্যের দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ের পর কবিতার জগতে পুনরাগমন।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত কবিতাংশ - ‘ঝলসানো রুটি’র আবহে রতন চন্দের অণুগল্প ‘ভোরের সূর্য’ প্রতীকী। একই আবহে শংকর দেব-এর গল্প ‘অসমাপ্ত’ যেন অসমাপ্তই হয়ে রইল। দিব্যেন্দু নাথ তাঁর গল্প কবিতায় মাটির কথা বুনন করেন। প্রেম-প্রেম আবহে এক গ্রামীণ প্রেক্ষাপট উঠে এল তাঁর গল্প ‘ভরা পুকুর’-এ। বিধান চন্দ্র দে লিখেছেন একটি অণু ও একটি পরমাণু গল্প।
পত্রিকার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে শেষ পাতে পায়েসের মতো রয়েছে লোকসংস্কৃতি গবেষক মন্টু দাসের নিবন্ধ ‘ভাটেরা তাম্রশাসন : শ্রীহট্ট রাজ্য ও দেবরাজ বংশ’। শিরোনাম অনুযায়ী এক বিস্তৃত গবেষণামূলক নিবন্ধ পত্রিকার এই সংখ্যাটিএ মান বাড়িয়ে দিয়েছে নি:সন্দেহে।
কাগজ, ছাপা, অক্ষর-শব্দ-পঙ্ক্তি বিন্যাস যথাযথ। প্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদের সৌজন্যে মৌলী দাস। বানাএর ব্যাপারে অধিক সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। তরুণ সম্পাদক ও কৃতী উপদেষ্টামন্ডলীর প্রচেষ্টায় পরবর্তী সংখ্যাসমূহ যে অধিকতর নান্দনিক হবে তা বলাই বাহুল্য।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
প্রকাশক -
শতদল সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষে প্রদীপ চক্রবর্তী
মূল্য - ৫০ টাকা। যোগাযোগ - ৯৮৬২৬১৭৬৮৩
মূল্য - ৫০ টাকা। যোগাযোগ - ৯৮৬২৬১৭৬৮৩
গঠনমূলক আলোচনা। ধন্যবাদ।
ReplyDelete💚💚
ReplyDelete