কবি
সাহিত্যিকের অন্তর সদাই নতুনের অনুসন্ধানে মগ্ন। নতুন
সৃষ্টিতেই কবির হৃদয় সতত জেগে ওঠে নবআনন্দে। তাই
তো কবিগুরু লিখেছেন -
‘…এ শুভলগনে জাগুক গগনে অমৃতবায়ু,
আনুক জীবনে নবজনমের অমল আয়ু…।
জীর্ণ যা কিছু যাহা কিছু ক্ষীণ
নবীনের মাঝে হোক তা বিলীন--
ধুয়ে যাক যত
পুরানো মলিন
নব-আলোকের স্নানে।’
নবীন, নতুন
মানেই পুরোনো যত গ্লানি, যত গ্লানিমা সব কিছু মুছে দিয়ে শুদ্ধতার অভিমুখে সজীব
পদক্ষেপ। কবির কাব্যান্বেষণ এমনই এক নিত্য নতুন পদক্ষেপের প্রতীক্ষায় নিয়ত উদ্গ্রীব।
তারই এক ঝলক সম্প্রতি দীপ্যমান হয়ে উঠল এক নতুন পত্রিকার আত্মপ্রকাশে। সাহিত্যক্ষেত্রে
নিরন্তর আত্মনিবেদিত ত্রয়ীর অন্তরের এই নবভাবনা আবেগ, অনুভব, অনুভূতির প্রকাশ হয়ে
জন্ম দিল ‘অনুভূতি-১’ শীর্ষক পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা - নববর্ষ সংখ্যা, ১৪৩২
বঙ্গাব্দ। কবির শহর - বরাক উপত্যকার শিলচর থেকে
প্রস্ফুটিত হল জয়শ্রী ভট্টাচার্য, রাখী দেব ও শর্মি দে সম্পাদিত এক নবীন, নিটোল
কবিতাপত্র। সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় আলাদাভাবে তিনজন সম্পাদকেরই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ধরা
দেয় একাধারে কবিতার গরজ ও একত্রে পথ চলার দৃপ্ত প্রত্যয়।
সতর্ক পদক্ষেপের এই প্রথম প্রচেষ্টায় মাত্র দুই ফর্মার পেপারব্যাকে সন্নিবিষ্ট হল ৩ থেকে ১১ লাইনের ৫৬টি কবিতা। উপত্যকার ৫৬ জন কবির স্বল্পদৈর্ঘের নামহীন (শিরোনামহীন) কবিতায় ভাস্বর হয়ে উঠল অনুভব, অনুভূতির প্রকাশ। প্রবীণ থেকে নবীন একগুচ্ছ কবির কবিতায় ধরা রইল এক নূতন সময়, এক নূতন প্রচেষ্টা।
প্রথমেই বর্ষীয়ান কবি মহুয়া চৌধুরী যেন তাঁর কবিতায় প্রকৃতার্থেই সেরে নিলেন পত্রিকাটির চলার পথের মঙ্গলাচরণ -
পা বাড়ালেই
জেগে উঠে পথরেখা
আমরা চলতে শুরু করি,
হাত বাড়ালেই
এগিয়ে আসে হাত
আমরা বন্ধু হই,
মন খুলে দিলে জীবন কাছে আসে
মানুষকে কাছে পাই।
এ যেন চলার পথের এক মাভৈ বাণী। এগিয়ে চলার বার্তা। আরেক বর্ষীয়ান কবি অতীন দাস মাত্র চারটি লাইনে ব্যক্ত করেছেন কবিতা নিয়ে তাঁর হৃদয়ের অনুভূতি -
খর রোদ্দুরে কবিতাই
একমাত্র ছায়া
ধূসর দিগন্তে রচে
অনাবিল মায়া
আবার নবীন প্রজন্মের কবি প্রাঞ্জল পাল লিখছেন -
...হঠাৎ করে গন্ধ অসুখ
নাড়িয়ে দিল ভিতরখানা
ভালো লাগে শুধুমাত্র
মায়ের গন্ধ, আর কিছু না।
এভাবেই প্রত্যেক কবির কবিতায় ধরা দিয়েছে অনুভূতির বিচিত্র সব অনুষঙ্গ, পঙ্ক্তিমালার বিচিত্র আঙ্গিক আর জীবনপথের আরব্ধ অনুভবের কাব্যিক উচ্চারণ। উপর্যুক্ত কবিদের বাইরেও আর যাঁরা কবিতা লিখেছেন তাঁরা হলেন - কিরণ দেবী, নিরুপম শর্মা চৌধুরী, ঝুমুর পাণ্ডে, অনন্যা ভট্টাচার্য, চন্দ্রিমা দত্ত, মৌসুমী চক্রবর্তী, শ্যামলী কর ভাওয়াল, সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সপ্তমিতা নাথ, মানস ভট্টাচার্য, ববশ্রী চৌধুরী, শতদল আচার্য, শমিতা ভট্টাচার্য, অভিজিৎ চক্রবর্তী, মুন চক্রবর্তী, ভাষ্করজ্যোতি দাস, দেবলীনা রায়, রাজীব ভট্টাচার্য, নীলাক্ষ চৌধুরী, দীপান্বিতা ভট্টাচার্য, ড. অর্পিতা দাস, গোপাল চক্রবর্তী, মঞ্জরী হীরামণি রায়, অভিজিৎ পাল, নীলাদ্রি ভট্টাচার্য, ড. দেবাশিস গুহ ঠাকুরতা, সুজিৎ দাস, শিপ্রা দাশ, কল্লোল চৌধুরী, অলকা গোস্বামী, ড. কাত্যায়নী দত্ত চৌধুরী, জাহানারা মজুমদার, সুপ্রদীপ দত্তরায়, চান্দ্রেয়ী দেব, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য, ছন্দা দাম, দোলনচাঁপা দাসপাল, মীরা পাল, হাসনা আরা শেলী, মীনাক্ষী চক্রবর্তী সোম, দীপক সেনগুপ্ত, রাণা চক্রবর্তী, দীপাঞ্জলি চৌধুরী, সুখেন দাস, দেবযানী ভট্টাচার্য, লীনা নাথ, নিরুপম পাল, সুমা দাস, স্বাতীলেখা রায়, জয়শ্রী ভট্টাচার্য, চিরসবুজ অভিজিৎ ও শর্মি দে।
পত্রিকার কাগজ, ছাপার স্পষ্টতা যথাযথ। পৃষ্ঠাসমূহে কবিতার স্থাপন, অক্ষরবিন্যাসও যথাযথ তবে পঙ্ক্তিবিন্যাসে কিছু বিসঙ্গতি অনুভূত হয়েছে। সূচিপত্রে প্রত্যেক কবির নামের সঙ্গে স্থাননামের সংযোজন এক ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা, পৃষ্ঠাসংখ্যার জায়গায় কবিতাসংখ্যা দেওয়া আছে যা ভিতরের পাতায় রক্ষিত হয়েছে যথাযথ। বানানের ক্ষেত্রে রয়ে গেছে বেশ কিছু বিভ্রাট, বিশেষ করে সূচিপত্রে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে ভাবনার অবকাশ রয়েছে নিশ্চিত। নান্দনিক প্রচ্ছদের সৌজন্যে কে তার উল্লেখ নেই। বরাকভূমের বহু কবির কবিতা যা সন্নিবিষ্ট হয়নি এ সংখ্যায় তা নিশ্চিতই আসবে পরবর্তী সংখ্যাসমূহে - এমন আশা করাই যায়। সব মিলিয়ে কাব্যময় গন্তব্যের তীব্র বাসনায় এক নান্দনিক সম্মিলিত প্রয়াস আলোচ্য এই কবিতাপত্র।
আনুক জীবনে নবজনমের অমল আয়ু…।
জীর্ণ যা কিছু যাহা কিছু ক্ষীণ
নবীনের মাঝে হোক তা বিলীন--
নব-আলোকের স্নানে।’
সতর্ক পদক্ষেপের এই প্রথম প্রচেষ্টায় মাত্র দুই ফর্মার পেপারব্যাকে সন্নিবিষ্ট হল ৩ থেকে ১১ লাইনের ৫৬টি কবিতা। উপত্যকার ৫৬ জন কবির স্বল্পদৈর্ঘের নামহীন (শিরোনামহীন) কবিতায় ভাস্বর হয়ে উঠল অনুভব, অনুভূতির প্রকাশ। প্রবীণ থেকে নবীন একগুচ্ছ কবির কবিতায় ধরা রইল এক নূতন সময়, এক নূতন প্রচেষ্টা।
প্রথমেই বর্ষীয়ান কবি মহুয়া চৌধুরী যেন তাঁর কবিতায় প্রকৃতার্থেই সেরে নিলেন পত্রিকাটির চলার পথের মঙ্গলাচরণ -
পা বাড়ালেই
জেগে উঠে পথরেখা
আমরা চলতে শুরু করি,
হাত বাড়ালেই
এগিয়ে আসে হাত
আমরা বন্ধু হই,
মন খুলে দিলে জীবন কাছে আসে
মানুষকে কাছে পাই।
এ যেন চলার পথের এক মাভৈ বাণী। এগিয়ে চলার বার্তা। আরেক বর্ষীয়ান কবি অতীন দাস মাত্র চারটি লাইনে ব্যক্ত করেছেন কবিতা নিয়ে তাঁর হৃদয়ের অনুভূতি -
খর রোদ্দুরে কবিতাই
একমাত্র ছায়া
ধূসর দিগন্তে রচে
অনাবিল মায়া
আবার নবীন প্রজন্মের কবি প্রাঞ্জল পাল লিখছেন -
...হঠাৎ করে গন্ধ অসুখ
নাড়িয়ে দিল ভিতরখানা
ভালো লাগে শুধুমাত্র
মায়ের গন্ধ, আর কিছু না।
এভাবেই প্রত্যেক কবির কবিতায় ধরা দিয়েছে অনুভূতির বিচিত্র সব অনুষঙ্গ, পঙ্ক্তিমালার বিচিত্র আঙ্গিক আর জীবনপথের আরব্ধ অনুভবের কাব্যিক উচ্চারণ। উপর্যুক্ত কবিদের বাইরেও আর যাঁরা কবিতা লিখেছেন তাঁরা হলেন - কিরণ দেবী, নিরুপম শর্মা চৌধুরী, ঝুমুর পাণ্ডে, অনন্যা ভট্টাচার্য, চন্দ্রিমা দত্ত, মৌসুমী চক্রবর্তী, শ্যামলী কর ভাওয়াল, সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সপ্তমিতা নাথ, মানস ভট্টাচার্য, ববশ্রী চৌধুরী, শতদল আচার্য, শমিতা ভট্টাচার্য, অভিজিৎ চক্রবর্তী, মুন চক্রবর্তী, ভাষ্করজ্যোতি দাস, দেবলীনা রায়, রাজীব ভট্টাচার্য, নীলাক্ষ চৌধুরী, দীপান্বিতা ভট্টাচার্য, ড. অর্পিতা দাস, গোপাল চক্রবর্তী, মঞ্জরী হীরামণি রায়, অভিজিৎ পাল, নীলাদ্রি ভট্টাচার্য, ড. দেবাশিস গুহ ঠাকুরতা, সুজিৎ দাস, শিপ্রা দাশ, কল্লোল চৌধুরী, অলকা গোস্বামী, ড. কাত্যায়নী দত্ত চৌধুরী, জাহানারা মজুমদার, সুপ্রদীপ দত্তরায়, চান্দ্রেয়ী দেব, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য, ছন্দা দাম, দোলনচাঁপা দাসপাল, মীরা পাল, হাসনা আরা শেলী, মীনাক্ষী চক্রবর্তী সোম, দীপক সেনগুপ্ত, রাণা চক্রবর্তী, দীপাঞ্জলি চৌধুরী, সুখেন দাস, দেবযানী ভট্টাচার্য, লীনা নাথ, নিরুপম পাল, সুমা দাস, স্বাতীলেখা রায়, জয়শ্রী ভট্টাচার্য, চিরসবুজ অভিজিৎ ও শর্মি দে।
পত্রিকার কাগজ, ছাপার স্পষ্টতা যথাযথ। পৃষ্ঠাসমূহে কবিতার স্থাপন, অক্ষরবিন্যাসও যথাযথ তবে পঙ্ক্তিবিন্যাসে কিছু বিসঙ্গতি অনুভূত হয়েছে। সূচিপত্রে প্রত্যেক কবির নামের সঙ্গে স্থাননামের সংযোজন এক ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা, পৃষ্ঠাসংখ্যার জায়গায় কবিতাসংখ্যা দেওয়া আছে যা ভিতরের পাতায় রক্ষিত হয়েছে যথাযথ। বানানের ক্ষেত্রে রয়ে গেছে বেশ কিছু বিভ্রাট, বিশেষ করে সূচিপত্রে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে ভাবনার অবকাশ রয়েছে নিশ্চিত। নান্দনিক প্রচ্ছদের সৌজন্যে কে তার উল্লেখ নেই। বরাকভূমের বহু কবির কবিতা যা সন্নিবিষ্ট হয়নি এ সংখ্যায় তা নিশ্চিতই আসবে পরবর্তী সংখ্যাসমূহে - এমন আশা করাই যায়। সব মিলিয়ে কাব্যময় গন্তব্যের তীব্র বাসনায় এক নান্দনিক সম্মিলিত প্রয়াস আলোচ্য এই কবিতাপত্র।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
মূল্য - ১০০
টাকা
যোগাযোগ - ৬০০২১৯৬৪১৪
যোগাযোগ - ৬০০২১৯৬৪১৪
Comments
Post a Comment