Skip to main content

Posts

রজনী-গন্ধা ভ্রমণ

সে রাতে পাহাড় চূড়ায় আলোর রোশনাই ঘন কালো আঁধার পথে এক জোড়া টর্চের আলো চড়াই ভেঙে ভেঙে ক্লান্ত দু’পা পাশেই আরো দু’টি পা - দু’টি হাত তবু হাতে হাত ধরার অধিকার নেই আছে শুধু নিভৃত যাপন আর - মেপে মেপে কথা আলাপন। অথচ বুকের মধ্যে এক বুক ভালোবাসা নিয়ে মূক হয়ে থাকে এক জোড়া মুখ। আজ রাতে বড়দিন উৎসব পাহাড় আজ রাতভর মুখরিত কথার পাহাড় নিয়ে পথ চলা মৌন মুখরিত। বনানী পথে আজ রজনী-গন্ধা ভ্রমণ মৌন আবেশে অবিরাম মুখাবলোকন মুখবন্ধেই বন্ধ হয়েছে মুখ দেখে দেখে কুড়িয়ে পাওয়া জনমের সুখ।   উতরাই পথে আলো থেকে আঁধারের মায়া সে মায়ায় ইতিহাস জেগে ওঠে নিভৃতে জেগে ওঠে নতুন এক - কথাসুখ পাহাড়।

তুমি গোলাপি হও বাতিঘর

আমি তোমার মতো লাল গোলাপ হব একদিন নিজেই নিজের মালিক । আমি তোমাকে ফিরিয়ে দিতে চাই অন্তরঙ্গ রাতের প্রত্যাখ্যানসুখ । পারবে তো আমার মতো নীলকণ্ঠ হতে ? আমি কারো মালিক হতে চাইনি আমি গোলাপ হতে চাই - তোমার মতো , অধিকার বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা চাই , তোমারই মতো । ঝরে যাওয়ার আগে - অভিসম্পাতে ঝরুক শোণিত , ঝরুক লাল আজ তুমি গোলাপি হও বাতিঘর ।   রাতের আঁধারে গোলাপি আলোয় পারাবার জুড়ে জাগুক চরাচর । রূপকথারা আড়াল থাকুক কালো সাগর জলে চুপকথারা সঞ্চিত হোক অথৈ সাগরতলে নিভে যাক সব দিনের আলো, আর চিরতরে - তুমি গোলাপি হও বাতিঘর।

অন্তর্দাহ

খোলা বাতায়নটি যেদিন অভেদ্য হয়েছিল নিজে থেকে কোথাও সেদিন হয়েছিল ইন্দ্রপতন নিজেরই অন্দরে। আকাশলীন শূন্যতার বাইরে সেদিন নিঃস্ব ছিল চরাচর ছিল শুধু কঠিনতম এক লড়াই - মায়াবী শত্ৰুর সাথে নিজেরই অন্দরে। কিছু খড়কুটো, কিছু আলোহাওয়া কিছু ভিন্ন জগৎসংসার খুঁজে ধ্বস্ত জীবন শেষে প্রতিষ্ঠার অসম লড়াই নিজেরই অন্দরে। এবার মহাসংগ্ৰাম শেষে খুলেছে বাতায়ন কেউ কি দাঁড়ায় এসে দু'হাতে গরাদ ধরে বদলে গেছে কি যুদ্ধ পথ ? কেউ কি মহাকাল স্রোতে রোজ দহনবেলায় জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয় আমারই মতো ? নিজেরই অন্দরে   ?

বৃক্ষ পথিক

যে বৃক্ষ পেরিয়ে এসেছে বহু বর্ষা , শরৎ বেলা...... তার আবার থাকা না থাকা । আজ বৃক্ষপথিক কেউ, কেউ সুখবিভোর পাতাঝরা আনন্দে। পাতা কুড়োনোর আনন্দে কেউ স্বপ্ন রচে যায় সারাক্ষণ, নতুন স্বপ্ন - সংসারসুখ । যুগান্তরের সঞ্চিত স্বপ্ন হারিয়ে যাবার বেলায় , গভীর বনানী তলে,   কচি কিশলয় পতনবেলায়, দাঁড়িয়ে থাকে বৃক্ষহৃদয় - অসার দুঃখে পাথর হয়ে । আজ পড়ুক ঝরে সব পাতারা বৃক্ষ হৃদয় সত্যি এবার পাথর হবে ঝরা পাতার দুঃখ এবার সত্যি সত্যি ভুলেই যাবে । বসন্তে যে রিক্ত আবহমান তার আবার পত্রবাহার গান !!

বহতা নদী

এক বহতা নদী হতে চেয়েছিল কেউ তার তাপিত শরীর বেয়ে চুঁইয়ে পড়ত জল শুধু জল… বিষাদিত অগ্নিজলে ভেসে যেত চরাচর উপহাস আর অবজ্ঞার বিষাদগাথা নদীমুখো অথৈ বর্ষাজলের ধারা তবু জলসুখ থাকে অধরা বীতশোক জল হয়ে নিথর জীবন এই ছিল ললাটলিখন।   সে জেগেছিল একদিন তার অঙ্গে অঙ্গে সুখাবগাহনে ধরা দিয়েছিল অব্যক্ত জলধারা যে ধারা একদিন নদী হয়ে মিশেছিল সাগরে সে এক অন্য নদীর কথা যে নদী বয়ে আনে বনানীবিধৌত দুঃখসুখের সজ্জিত উপকথা।

ললাটলিখন

দীর্ঘ দহন শেষে অদগ্ধ নাভিকুণ্ড খুঁজে বিধিলিপি চণ্ডাল খুঁজে খুঁজে ফেরে ললাটলিখন কেন এই পিছুটান ? সেই তো ছিন্ন পাণ্ডুলিপির হারানো ইতিহাস বিস্মৃত যাপন কথার বয়ে চলা নিরন্তর। তিল তর্পণের আর কামিনী কাঞ্চনের অলিখিত পরিহাস।   হে মানব, স্থিতপ্রজ্ঞ হও সাগর কিংবা একান্ত এক নদী জলতনু পরিব্রজন অমোঘ সত্য, অমোঘ ললাটলিখন। আশাপথ থেকে ছায়াপথের যাত্রাপথের যুগতামামি সব মিলিয়ে থেকে যায় শুধু এক অনন্ত ভাসানের কথা আর মহাশূন্য গাথা।

প্রত্যাশার প্রথম সংখ্যা - ‘হৃদিকথা’

হৃদমাঝারে ফেসবুক গ্রুপ - এর সুচিন্তিত বাংলা ম্যাগাজিন - ‘ হৃদিকথা ’ র প্রথম সংখ্যাটি সম্প্রতি উন্মোচিত হলো কোলকাতায় । প্রকাশক কর্পোরেট পাবলিসিটি , বসিরহাট । সম্পাদিকা ( যেভাবে লিখা আছে ম্যাগাজিনে ) বরাক উপত্যকার শিলচরের কবি শর্মি দে । এছাড়াও সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন সভাপতি এবং উপদেষ্টা উজ্জ্বল দত্ত চৌধুরী , দু’জন সহ সম্পাদক - শুভজিৎ দাস দাঁ ও মীরা পাল । সৃজনশীল সাহিত্যে সবাই পরিচিত নাম । সুতরাং এই ম্যাগাজিনটি যে একটি বিশাল আয়োজন হবে সেটাই স্বাভাবিক । এবং হয়েছেও তাই । সংকলন-গ্রন্থসম পত্রিকাটির চারজন সম্পাদকই আলাদা আলাদা ভাবে স্বল্প কথায় লিপিবদ্ধ করেছেন সুস্পষ্ট সম্পাদকীয় - যার সূত্র ধরে ফুটে উঠেছে একটি সাহিত্য গ্রুপের সাহিত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা ও গরজের স্বচ্ছ একটি ছবি । ১৩৬ পৃষ্ঠার এই পত্রিকায় রয়েছে মোট ৬৩ টি কবিতা, ৭ টি অণু কবিতা, ৩ টি সনেট, চার পর্বের ১ টি লিমেরিক,  ২ টি সপ্তপদী কবিতা, ৪ টি সপ্তশব্দের কবিতা, ১ টি আত্মকথন, ১ টি গল্পিকা (?), ১ টি পত্র সাহিত্য, ৪ টি অণু গল্প এবং ১৩ টি গল্প। সত্যিকার অর্থেই বিশাল আয়োজন। বরাক উপত্যকা, পশ্চিমবঙ্গ এবং দেশ বিদেশের বহু কবি লেখকদের লেখ...

শেষ শ্রাবণে

আজ এই শেষ শ্রাবণের নিঝুম রাতে স্বচ্ছ আকাশ- কোথাও নেই মেঘ বৃষ্টি বাদলা হাওয়া - এ তোমার কেমন আসা যাওয়া ? পথ চেয়ে রয় কুসুম লতা পথ চেয়ে রয় কাব্য কথা - এ তোমার কেমন উদাসীনতা ? ঝিলের জলের বৃষ্টিফোঁটায় দেখতে পেতাম মুক্তো দানা , তার মুক্তোঝরা হাসির ছটায় মন কেমনের বৃষ্টিধারায় বিভোর শ্রাবণ মন না মানা - এ তোমার কেমন দেউলেপনা ? এই শেষ শ্রাবণের শেষের বেলা পয়ার সুরে উঠত জেগে লখাই , বৃষ্টি নিয়ে আসত উতল হাওয়া - তার প্রাণের কথা করত আনাগোনা। তার ' জলকে চল ' আর ফানুস কথার বড়াই আজ শ্রাবণ শেষে খেই হারিয়ে - এ তোমার কেমন কাঙালপনা ? চাল গড়িয়ে আল পেরিয়ে ছুটোছুটির ছল স্ফটিক ধারার বড্ড তাড়া ' ঘরকে চল ', তার গরম চায়ে মায়ার চুমুক বৃষ্টিভেজা ছত্রছায়ায় সেলফি সুখ আজ বর্ষাবিদায় , বিষণ্ণ সংসার এ তোমার কেমন ' কাজির বিচার ' ?

পথ চলার কাব্যগ্রন্থ - ‘কিছু শব্দ… কবিতা নয়’

এই তো সেদিনও ছিল ব্যস্ততা , ট্রেন থামা স্টেশনের কোলাহলে … স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই ফেরে না সহজে যারা গেছে , তারা গেছে অবহেলে … চলে যাব , দৃষ্টিতে চোখের শূন্যতা এপিটাফে লিখে যাই জীবনের সমূহ ব্যর্থতা ।   এই যাত্রা , এই চলমানতা - এ যেন শেষের কবিতা । কিন্তু বাস্তবে একেবারেই এক ভিন্ন চিত্রকল্প । বলা যায় শেষের শুরু । প্রথম কবিতার কিছু পঙ্‌ক্তি সেজে উঠেছে এভাবেই । এবং … ৬৪ পৃষ্ঠার পুরো কাব্যগ্রন্থটি জুড়ে বজায় থেকেছে এই পথ চলার বৃত্তান্ত । সাথে পারিপার্শ্বিকতার , সমাজের যত অনিয়ম , অব্যবস্থা তার বিরুদ্ধে একরাশ ঘৃণা , প্রতিবাদ এবং শ্লেষ । নৈতিকতার পতন পীড়িত করে তোলে কবিমন। বরাক মূলের কবি উজ্জ্বল দত্ত চৌধুরী । জন্মসূত্রে এবং বর্তমানে কলকাতার বাসিন্দা । হাতে এল তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ - ‘ কিছু শব্দ … কবিতা নয় ’ । গ্রন্থের নামকরণে কবিতা নিয়ে যে দ্বিধা , যে জড়তা এবং সেই পথ চলা আর প্রতিবাদের ভাষা ব্যক্ত হয়েছে ভূমিকাতেও - “... জীবনের বিভিন্ন সংগ্রামের সাথি হয়ে যে পথ চলা শুরু হয়েছিল কয়েক দশক আগে, আজও সেই সংগ্রাম অব্যাহত। এই সমাজের বুকে আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন ...

নিঃশব্দ কথামালা

পথ হাঁটি আমি রোজ দিনান্তের আঁধারে   ঘর্মাক্ত কায়াময় আমি মাড়িয়ে চলি ক্রোশ ক্রোশ ছায়াহীন পাহাড়িয়া পথ। তবু জেগে থাকে সারা পথ জুড়ে অদৃশ্য অবয়ব , অশ্রুত ফিসফাস। কারা ওরা ? কায়াহীন মায়াময় সাথি ?   পথসখা সুদামা আজও আসে মাঝে মাঝে দুদ্দাড় দুঃখসুখের খোলে ঝাঁপি আমার অঙ্গে অঙ্গে বয়ে যায়   গোধূলির এক ঝাঁক সুরেলা শিহরণ।   আসে আজকের বন্ধ বাতায়ন পেরিয়ে গরাদ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো এক সুখমুখ   আগল ঝুলানো বাতায়নের ওপার থেকে ভেসে আসে একরাশ হাসিমুখ ঝরনাধারা অবিরাম , অনর্গল কথোপকথন বেয়ে রোজ আমি পথ হারাই , খেই হারিয়ে ফিরে আসি বরাবরের রিক্ত নিঃস্ব এই পৃথিবীর বুকে রোজ সন্ধ্যায় পথ হাঁটি আমি, কথা বলি নিজেরই সাথে , অব্যক্ত - অফুরান কথামালা যে কথা হয়নি বলা কদাপি , অশ্রুত কথামালা।

আমার শেষ ভালোবাসা

ঘাসের মাদুর বিছানো এক চিলতে ঠাঁই পড়ে আছে অনাদরে - চালচুলোহীন ছাদহীন , ছিরিহীন , জনহীন একেলা একা।   একদিন ..... আহা !! থাক সে কথা।   কথা উঠলেই উঠে আসে ইতিহাস   আদর সোহাগ - রাশি রাশি ভালোবাসা।   ভোরের শিশিরে সিক্ত পায়ের কায়া ভরদুপুরের নিরুদ্বিগ্ন শীতল ছায়া ধুনোগন্ধময় নিত্য সাঁঝের প্রার্থনা   আর গভীর রাতের চার আনা স্বপ্নসুখ। একে একে বিবর্ণ হয়েছে সব চিত্রপট ষোলো আনা সুখের খোঁজে হারিয়ে গেছে সব - আছে শুধু খোলা আকাশের নীচে ঝড়ে জলে প্রখর রোদে মালিকানাহীন ঠায় দাঁড়িয়ে   অনন্ত প্রতীক্ষায় - সাথি শুধু   অকাল বেলার নবীন বনানী -   আমার শেষ ভালোবাসা - জন্মভিটেখানি।  

ভাষা ও বুনোটের যুগলবন্দিতে বিন্যস্ত গল্প সংকলন মিথিলেশ ভট্টাচার্যের ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’

উত্তরপূর্ব তথা বাংলা সাহিত্যের গল্পবিশ্বে ‘অনিশ’ এবং ‘শতক্রতু’ যুগ থেকে শুরু করে আজও যে ক’জন লেখক, গল্পকার নিরলস ব্রতী রয়েছেন কলম হাতে তাঁদের মধ্যে উজ্জ্বল একটি নাম মিথিলেশ ভট্টাচার্য। সম্প্রতি এ বছরের গোড়ার দিকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ সংকলনটি। এ নামের ব্যাখ্যায় গল্পকার লিখছেন “শ্রেষ্ঠ ও সেরা শব্দ দু’টি সমপর্যায়ভুক্ত। তবুও শ্রেষ্ঠ শব্দটি আমার বেশি পছন্দ। তাই এই সংকলন গ্রন্থের নাম রেখেছি শ্রেষ্ঠ গল্প। ......” অগণিত গল্প থেকে সেরা গল্পসমূহকে বাছেই করে যদি মানগত বিচারে তালিকাভুক্ত করা যায় তবে প্রথম দিকের গল্পগুলোকেই শ্রেষ্ঠ গল্পের মর্যাদা প্রদান করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ গল্পের এই সংকলনটি পাঠকের দরবারে পরিবেশন করে গল্পকার এ অঞ্চলের পাঠকদের উপহার দিয়েছেন এক অনবদ্য সাহিত্যসুধা। মিথিলেশের গল্প পাঠককে বেঁধে রাখে গল্পের বুনোট ও প্রাঞ্জল গল্পময়তায়। গল্পের অবয়বের মধ্যে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না বিশাল কোনও ঘটনাপ্রবাহ, পাওয়া যাবে না কোনও ঘটনার ঘনঘটা, চাপান উতোর, বিশাল কোনও চমক কিংবা এক দম বন্ধ করা ক্লাইম্যাক্স। তবু পাঠককে পড়ে শেষ করতেই হবে গল্প। এবং পাঠান্তে পাঠক চিত্তে অবধারিত ...

শব্দকুহকের কাব্যগ্রন্থ - ‘ইউটিউব ও লালটিপ’

‘ কবিতা লিখে এখন কেউ অর্থ বা পুরস্কার প্রাপ্তির কথা ভাবে না । কবিতা এখন অধ্যাপকদের দাপটমুক্ত । কবি স্থা - শক্তি পালিত নয় । কবি অন্ধকারে ঝুল মাপে না । তার জার্নি বর্ণব্রহ্মের ভাঁজে ভাঁজে , বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে । এইরকম ছুটতরাজ মেধাব্রহ্মের কবি প্রাণজি বসাক । যার অত্যন্ত ম্যাসকুলিন ভাষাভাবনা , উত্তম চেতনাবোধ । … আমার যতদূর জানা আছে , প্রাণজি তার নিজের কথা শুধু কবিতাতেই বলেছে । তার কোন গ্রন্থে ব্যক্তিগত ভূমিকা নেই । কবিতাতেই তার মিথ উৎসব , চিত্তজিজ্ঞাসা , আত্মরতির আলোড়ন । … অফুরান প্রাণশক্তির অধিকারী সে , শূন্য থেকে মহাবিশ্বের অধিকারী , প্রাণজি - যার কাছে জীবনের জ্বালা জুড়নো মলম মানেই কবিতা । ‘ গ্রন্থের শ্রীগণেশেই কবি প্রাণজি বসাকের কবিতা এবং তাঁর একাধিক কাব্যগ্রন্থ নিয়ে ছয় পৃষ্ঠা জোড়া আলোচনা করলেন রবীন্দ্র গুহ - যা গ্রন্থটির নির্যাস যেমন ছড়িয়ে দিল পাঠকের মনমানসে তেমনি বাড়িয়ে দিল কবিতার অবয়বে সন্তরণের আকাঙ্ক্ষা । সদ্য কোভিড পরবর্তী সময়ের কাব্যগ্রন্থ ‘ ইউটিউব ও লালটিপ ’ প্রাণজি বসাকের কুড়িতম কাব্যগ্রন্থ । কবিতাবিশ্বে প্রাণজির সঘন প্রকাশ্য পদচারণা সহজে অনুমেয়। প্রাণজি ভৌগোলিক দ...

নারায়ণ মোদক-এর উপন্যাসোপম সুখপাঠ্য রচনা - ‘সাঁঝবেলা’

‘ হাজারো লাখো মানুষের ভিড়ে টিপু ছুটে চলেছে , এক নির্জন গন্তব্যের দিকে । পথ গাড়ি জনতার কোলাহল ছুটোছুটিতে ও কিছুই দেখতে পারছে না । অনেক অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল , ফিরে যাচ্ছে শুধুমাত্র একজনের ভালোবাসার চিহ্ন বুকে নিয়ে । আর সব ফাঁকি পড়ে আছে । জীবনের অনেকখানি সময় চলে গেছে সাধনার বেড়াজাল অতিক্রম করে সাহিত্যের অঙ্গনে ব্যর্থ প্রেমিকের কান্না বুকে চেপে সব কিছুকে বিদায় জানিয়ে । ’ …… কবি , সাহিত্যিক নারায়ণ মোদকের ত্রয়ী উপন্যাস ‘ সাঁঝবেলা ’ র প্রথম উপন্যাস - ‘ সাঁঝবেলা ’ । ৫৭ পৃষ্ঠার ব্যাপ্তি । পরবর্তী উপস্থাপনা - ‘ কমলেশ ’ , ৬৬ পৃষ্ঠার এবং শেষটি - ‘ সময় বয়ে যায় ’ , ৪৫ পৃষ্ঠার । ব্যাপ্তি বা দৈর্ঘের দিকে তাই এগুলোকে উপন্যাস না বলে উপন্যাসিকা বলাই শ্রেয় । লেখক নিজেও তাঁর ভূমিকায় এগুলোকে ‘ উপন্যাস ’ বলে অভিহিত করেননি । বরং ‘ গল্প ’ কিংবা ‘ লেখা ’ বলে উল্লেখ করেছেন । তিনটি উপন্যাসেই বর্ণিত হয়েছে ‘সাঁঝবেলা’র সেই টিপুর মতোই শুধু ছুটে চলার কাহিনি। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কষ্টকর সংগ্রামের চিত্র। ভিন্ন পরিবেশে ও ভিন্ন পটভূমিতে কিছু চরিত্রের অমোঘ জীবন ধারায় প্রবাহিত হওয়ার কাহিনি। বেঁচে থাকতে...

আসবে কি বাতিঘর ?

ঝড়ের শেষে এ দুঃসহ নীরবতা আমার সত্ত্বা জুড়ে এই খাঁ খাঁ শূন্যতা এ আমার প্রাপ্য নয় - বাতিঘর। রাতের আঁধারকে তুমি আপন গরবে ছিন্ন করে দিতে পারো নিমিষে অথচ দিনের নিস্পৃহ বিষাদময়তা আমাকে নিষ্প্রতিভ করে রাখে আপাদমস্তক। ভালোবাসাহীনতার বেদনা এত তীব্র ?   সেদিন সেলফিজোনে তোমার রাতচেরা রাতরানি হাসির ছটায় মূর্ছা যেত যে রাজপুত্তুর; যে অবোধ দয়িত তাকে তুমি কতটুকু চেনো বাতিঘর ? সে তোমার আলোর পথে আশায় আশায় কুসুম ছড়ায় রোজ, নতুন আশায় বুক বাঁধে রোজ তোমার জন্য বাতিঘর, তোমার জন্য সকাল সন্ধে পথ চেয়ে রয় অপলকে তোমারই জন্য। আসবে কি বাতিঘর ?