Skip to main content

খোলা বাতায়ন

()
কী যেন আড়াল করে রাখি আজীবন
বুজে রাখি দুচোখের পাতা
একদিন ছাই হবে সত্তা,
ফুসমন্তর হবে সব কথা
 
তাসের ঘরে বসে আর যাই হোক
যাপন কথা তো রাখা যায় না লিখে
জীবন মানেই কালের বিস্মরণ
এ অমোঘ সত্য - জানে বা কজন ?
 
()
কিছু মুখ ফিরে ফিরে আসে বার বার
অন্তর-নয়নে ভাসে ছবি আপাদমস্তক
পারি না ফেরাতে তারে কিছুতে
কিছু সরল পাটিগণিত পারি না মেলাতে
 
এমনই ব্যর্থ যাপন, রুদ্ধ বাতায়ন
এ মনই হল শেষে কাল
মন বাতায়ন কে আর পেরেছে খুলে দিতে
জানতে কিংবা অজানিতে ?
 
()
যে কথা যে মুখ রোজ আসে মনজানালায়
হয়তো সে কিছু নয়, কিছুই নয়
অথচ অযথা কম্পিত তনু মন
এই তো কিমাশ্চর্যম্‌, রহস্য যাপন।
 
নিথর থর জুড়ে দেখেছি যে বালুকা
চোখে হারাই তারে সাগর সৈকতে
গরাদে হাত রেখে ক্ষণিকের কত স্ন্যাপশট
দাঁড়ায় চকিতে এসে, বাজে ছায়ানট।
 
(৪)
নিজেকে দেখে দেখেই যায় আধেক জীবন
‘তুমি’ যে কী, সে আমি কী বা জানি ?
শেষের বেলায় শেষে দরোজায় মৃদু করাঘাত
হা-হুতাশ আর শুধু হত, গত মিঠে মধুরাত।
 
পাহাড়িয়া পথ ধরে যত আসা যাওয়া
মন্দমধুর যত ইতিউতি পাথুরে যাপন
সব ছবি জমে থাকে পথের ধুলায়
চোখে এসে বিঁধে শেষে জ্বালায়, পোড়ায়।
 
(৫)
বসন্ত শেষেই আসে তীব্র দহন
জেনেও হৃদয়পুরে জমে থাকে আশা
দিনশেষে ঝরে পড়ে আকাশ-কুসুম
রাতের বিছানা জুড়ে স্বপ্নিল ঘুম
 
ইচ্ছেদের কে আর কবে পেরেছে দমাতে
অলীক জেনেও তাই আসে ফিরে ফিরে
না চাওয়ার ফাঁক গলে বিমর্ষ বেলায়
রোজ রাতে মেতে উঠি অবৈধ খেলায়
 
()
কে আর হিসেব রাখে বসন্ত বর্ষার
সব কথা একদিন হবেই তো ছাই
তবু যে যায় না বলা সে কথাই সার
ভস্মবেলায় এসে জীবনই অসার
 
এসো মধুমক্ষিকা, এসো যত বন্ধু সুদামা
আমাদের বেলা হোক সুখ সমাপন
ছবি হবে এ জীবন, তাই আজ মন উতলা
বুকে ধরে ছবি আজ - রাখি সব বাতায়ন খোলা।

Comments

Popular posts from this blog

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হয়তো কবি করোনার

ভালোবাসার আস্তরণে ঢেকে রেখেছি, না-বলা কথা……'

তোমাকে দেখব বলে, প্রতিদিন জেগে উঠি। তোমার নবযৌবনার সৌন্দর্য আমাকে প্রাণ চঞ্চল করে তোলে।   তোমার রূপ, তোমার স্বর্ণআভা সৌন্দর্য, আমার দেহমনে শিহরণ জাগায়……। (কবিতা - স্বর্ণআভা)   গ্রন্থের নাম স্বর্ণআভা। কবি পরিমল কর্মকারের সদ্য প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ভাবনা ও ভালোবাসার বিমূর্ত প্রকাশ - কবিতায় কবিতায়, পঙক্তিতে পঙক্তিতে। অধিকাংশ কবিতাই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে। সুতরাং এই গ্রন্থকে অনায়াসে প্রেমের কবিতার সংকলন বলতেও আপত্তি থাকার কথা নয়। কবির কাব্যভাবনা, কাব্যপ্রতিভার ঝলক দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিভাত হয়ে আসছে উপত্যকা ও উপত্যকার সীমানা ছাড়িয়ে। তারই একত্রীকরণের দায়ে এই কাব্য সংকলন। তবে এই গ্রন্থে ভালোবাসার বাইরেও সন্নিবিষ্ট হয়েছে অন্য স্বাদের কিছু কবিতা। এর মধ্যে আছে জীবনবোধ ও জীবনচর্চার ভাবনা, শরৎ, স্মৃতি, উনিশের ভাবনা, দেশপ্রেম, সমাজের অন্দরে লুকিয়ে থাকা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আদি। ‘পাঠকের উদ্দেশে’ শিরোনামে ভূমিকায় এমনটাই ব্যক্ত করেছেন পরিমল - ‘আমার কবিতার গরিষ্ঠাংশই জীবনমুখী। বাস্তব জীবনের নির্যাসসম্পৃক্ত এই কবিতাগুলি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবে সমাজের অনেক গভীর ও অনস্বীকার্য রূঢ়

নান্দনিক ও গোছালো আয়োজন দ্বিতীয় সংখ্যা ‘সম্পর্ক’

‘…বলা যায়, একটি বই-ই পারে গোটা বিশ্বের কিছু জীর্ণ প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে। বইয়ের এই অমোঘ শক্তি সর্বজনবিদিত। বেদের ঋষি থেকে শুরু করে সমকালীন সময়ের অনেক লেখক তাঁদের সৃষ্টিসম্ভার দিয়ে কিছু প্রচলিত ধারণাকে সময়ে সময়ে বদলে দিয়ে এক নতুন পথের সন্ধান দিতে সক্ষম হয়েছেন। বই পড়ার মধ্যে রয়েছে এক অপার্থিব আনন্দ। বই আমাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করে। এই যান্ত্রিকতার যুগে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বিচলিত মানুষের বইয়ের প্রতি রয়েছে অকৃত্রিম টান। আজকের সামাজিক মাধ্যমের বাড়বাড়ন্ত অবস্থায় বই পড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেলেও, বই প্রকাশের কাজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। বরং পূর্বের তুলনায় তা অনেকটাই বেড়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে পাঠকের সংখ্যা বই প্রকাশের তুলনায় তেমন হারে বৃদ্ধি পায়নি। এই পাঠক সংকট বিশ্বব্যাপী…।’ - এমনই কিছু মূল্যবান তত্ত্ব ও তথ্যের সমাহারে এক প্রাসঙ্গিক সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের মধ্য দিয়েই শ্রীগণেশ হল বাংলা সাহিত্য সভা, অসমের লংকা শাখার দ্বিতীয় বার্ষিক মুখপত্র, বিশ্ব বই দিবস সংখ্যা ‘সম্পর্ক’ -এর । সৌরভ চৌধুরীর নান্দনিক প্রচ্ছদটি প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে পাঠকের। এবং এই নান্দনিকতা ছড়িয়ে আছে শেষ পৃষ্ঠা অবধি