Skip to main content

শারদীয় ১৪৩১ - ‘সাহিত্য সম্ভার’


সাহিত্য সম্ভার - নামেই তার পরিচয়…’ - এভাবেই শুরু হয়েছে সম্পাদকীয় এবং ১/৪ ডিমাই কাগজে প্রকাশিতসাহিত্য সম্ভারপত্রিকাটির শারদীয় ১৪৩১ সংখ্যাটিরপ্রায়পৃষ্ঠাজোড়া সম্পাদকীয়তে রয়েছে আত্মপরিচিতির আরও কিছু প্রকাশ - ‘…গবেষণাধর্মী ও লোক-সংস্কৃতিকে বরাক উপত্যকা তথা উত্তরপূর্বের সাহিত্য জগতে প্রতিষ্ঠিত করতে এক অনন্য অবদান রেখে চলেছে সাহিত্য সম্ভার গত পঁচিশ বছর ধরে গুটি গুটি পায়ে পথ চলে আজ এই সাহিত্য পত্রিকারজত জয়ন্তীবর্ষে উপনীত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সাহিত্য পত্রিকাটি বিতরণ করা হয়েছে আজ অবধিএটুকুতেই বহু কথা সন্নিবিষ্ট হয়ে আছে সৌজন্যে সম্পাদক প্রণবকান্তি দাস এটুকু কথায় যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তার সত্যতা নিরূপণ পত্রিকাটির পূর্ণপাঠেই সম্ভব প্রথমতসাহিত্য সম্ভারসত্যিকার অর্থেই এক সম্ভার একাধিক খ্যাতনামা কবি-লেখকদের রচনায় সমৃদ্ধ এই পত্রিকা রয়েছে একাধিক উন্নত মানের প্রবন্ধ নিবন্ধ এই বিশালাকায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের বাইরে শুধু লেখালেখি বিষয়ক ১০৭ পৃষ্ঠার সম্ভার বিনামূল্যে পৌঁছে যাচ্ছে পাঠকের হাতে এ নিশ্চিতই এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ স্রোতের বিপরীত ভাবনাই বটে
এতসব বিশেষত্বের উপস্থিতি সত্ত্বেও একটি পত্রিকার বিস্তৃত মূল্যায়ন নির্ভর করে তার ভেতরের উপাদানসমূহের উৎকর্ষে সেই লক্ষ্যে এগোতে দেখা যায় প্রথমেই যে সূচিপত্রের পৃষ্ঠাটি রয়েছে সেখানে রয়ে গেছে বিভাগ বিন্যাসে কিছু বিভ্রাটবিশেষ প্রবন্ধএবং অন্যান্য প্রবন্ধ নিবন্ধের বিভাগ বিন্যাস যথাযথ হয়নি একেবারেই ব্যতিক্রমীভাবে সংখ্যাটির কোনো টাইটেল পেজ নেই টাইটেল পেজের উপাদান ঠাঁই পেয়েছে সম্পাদকীয় পৃষ্ঠার এক কোণে ভিন্নার্থে পরিসরের যথাযথ উপযোগ
প্রবন্ধ বিভাগে মঙ্গলাচরণ হয়েছে শারদীয় সংখ্যাসমূহের চিরাচরিত ধারায় - ভারত সেবাশ্রম সংঘ, শিলচরের ব্র: গুণসিন্ধু লিখিত ‘শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গোৎসব ও জাতীয় সংহতি’ দিয়ে। শিরোনাম অনুযায়ী একটি তাত্ত্বিক নিবন্ধ। ‘বিশেষ প্রবন্ধ’ হিসেবে চিহ্নিত অমলেন্দু ভট্টাচার্যের ‘নদীর নাম বরাক’ যথার্থই একটি বিশেষ এবং দলিল-স্বরূপ নিবন্ধ। তত্ত্ব ও তথ্যের উল্লেখে লেখা পুরাণ, প্রাচীন হাতে লেখা পুঁথি ইত্যাদি থেকে বরাক, বরবক্র বা খলংমা নামক নদীর বিষয়ে রচিত নিবন্ধটি সংখ্যাটির অন্যতম সম্পদ হয়ে উঠেছে। তপোধীর ভট্টাচার্যের ‘এ সময়ের ভাবনা’ মূলত জাতীয় সমাজ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আজকের পরিবর্তিত আবহের প্রেক্ষিতে এক স্বকৃত চুলচেরা বিশ্লেষণ। সুবিস্তৃত, দীর্ঘ প্রবন্ধ। কস্তুরী হোমচৌধুরীর ‘ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়’ সাহিত্যিক বিভূতিভূষণের জীবন ও সাহিত্যকর্মের উপর অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত অথচ সুলিখিত একটি প্রবন্ধ। দীপক সেনগুপ্ত লিখেছেন - ‘বিজিৎকুমার ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক অবস্থান’। প্রয়াত কবি বিজিৎকুমার ভট্টাচার্যের লেখালেখির বাইরেও তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান জনমানসে এক বহুচর্চিত বিষয় ছিল এবং আজও প্রাসঙ্গিক বলেই হয়তো এ নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধ। উপসংহার হিসেবে নিবন্ধের শেষ লাইনটি প্রণিধানযোগ্য - ‘বিজিৎবাবুকে খুঁজতে হবে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতায়, প্রতিবাদী মিছিলে ও সভায়। সাহিত্য আসরের ফুল-শয্যায় নয় সংগ্রামের ময়দানে তিনি পথ হেঁটেছেন, হাঁটছেন, হাঁটবেন অনন্তকাল। বেঁচেছিলেন, বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন বিদ্রোহের বহ্নিশিখায়, মশালের আগুনে।’ মহবুবুল বারীর নিবন্ধ ‘পল্লিগীতির কালজয়ী সম্রাট আব্বাস উদ্দিন’ তথ্যাদির উল্লেখে একটি সুলিখিত নিবন্ধ। ড. রমজান আলির ‘পুড়িয়ে ফেলার উৎসব’ রমজান মাস, রোজা ও ইদ বিষয়ক একটি ব্যতিক্রমী রচনা। রূপরাজ ভট্টাচার্যের বিস্তৃত প্রবন্ধ ‘অগ্নিগর্ভ সময় ও দুই বাংলার কথাকার’ একেবারেই এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটের উপস্থাপনা। সাহিত্য, বিশেষ করে উপন্যাস ও গদ্যসাহিত্যের উল্লেখে দেশভাগ প্রসঙ্গে একটি উৎকৃষ্ট রচনা। এটিও সংখ্যার একটি অন্যতম সম্পদ। ‘ভারতবর্ষের নাট্যজগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বাঁকবদলের নাটক ‘নবান্ন’-র জনক প্রবাদপ্রতিম কিংবদন্তি নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যকে’ নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী প্রবন্ধ - তমোজিৎ সাহার ‘চিরকালীন বিজন-কথা’। তমালশেখর দে লিখেছেন - ‘সময়ের জীবন্ত দলিল ধরা পড়ে মলয়কান্তি দে-র গল্পে’ শিরোনাম অনুযায়ী একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনাভিত্তিক রচনা। শহর শিলচর নিয়ে গদ্যে পদ্যে নস্টালজিক রচনা সুপ্রদীপ দত্তরায়ের ‘আমার শহর’। দুর্গোৎসব বিষয়ে প্রিয়ব্রত নাথ-এর ‘দুর্গোৎসব : লোকসংস্কৃতির দর্পণে’ একটি সংক্ষিপ্ত ব্যতিক্রমী প্রবন্ধ। ড. মলয় দেব-এর নিবন্ধ ‘বাংলার ভাবগানে আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাবনা’। একগুচ্ছ ভাবগানের উল্লেখ সহ একটি নান্দনিক তথা ব্যতিক্রমী তাত্ত্বিক রচনা। সংখ্যাটির অন্যতম সম্পদ। এই বিভাগের শেষ উপস্থাপনা আগমনি বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ সঞ্জীব লস্করের ‘প্রসঙ্গ আগমনি’। নান্দনিক ও সুলিখিত।
ছোটগল্প বিভাগে রয়েছে ১০টি গল্প। রয়েছে সমকালীন একাধিক বিশিষ্ট গল্পকারের নানা স্বাদের গল্প। বিষয়ে, বুনোটে ব্যতিক্রমী হিসেবে উল্লেখ করা যায় মিথিলেশ ভট্টাচার্যের ‘ফুলগুলি আগলে রাখ !’, শর্মিলী দেবকানুনগোর ‘জাগরণ’, সত্যজিৎ নাথের ‘বিসর্জনের মা’ ও প্রাঞ্জল পাল-এর ‘উপহার’ গল্পগুলিকে। এছাড়াও রয়েছে রণবীর পুরকায়স্থের ‘অপাপবিদ্ধ’, মলয়কান্তি দে’র ‘জঠরাগ্নি উপাখ্যান’, মহুয়া চৌধুরীর ‘দ্বিপ্রাহরিক’, ঝুমুর পান্ডের ‘কথোপকথন’, হিমাশিস ভট্টাচার্যের ‘জীবনের অবয়ব’ ও দীপঙ্কর ঘোষের ‘স্বপ্নের সংসার’। কিছু কিছু গল্প সংলাপে, বুনোটে, চলনে সমৃদ্ধ হলেও শেষটায় কতটুকু গল্প হয়ে উঠেছে তার নির্ণয় পাঠকের দায়। বিষয় কিংবা বিষয়ের উপস্থাপনা অস্পষ্ট রয়ে গেছে কিছু গল্পে। পরিস্ফুট হয়েছে ছোট পত্রিকার সম্পাদকীয় দায়বদ্ধতা।
কবিতা বিভাগে বৈচিত্র লক্ষণীয়। এই বিভাগেও উপস্থিতি রয়েছে বহু নামিদামি কবির। রয়েছে প্রয়াত কয়েকজন কবির ‘সংগৃহীত’ কবিতাও। বিশেষোল্লেখে রাখতেই হয় যাঁদের কবিতা তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পবিত্র সরকার, পীযূষ রাউত, বিকাশ সরকার (এখানে ছাপায় পঙ্‌ক্তিবিন্যাস ব্যাহত হয়েছে), বিজয়কুমার ভট্টাচার্য, স্বর্ণালী বিশ্বাস ভট্টাচার্য, অমিতাভ সেনগুপ্ত, দীপালি দত্তচৌধুরী, কাজল দেমতা ও কিরণ দেবী। এছাড়াও রয়েছে যাঁদের সুলিখিত কবিতা, তাঁরা হলেন - বিভূতিভূষণ গোস্বামী, রাজীব ভট্টাচার্য, মাশুক আহমেদ, দেবেন্দ্রকুমার পালচৌধুরী, আশিসরঞ্জন নাথ, ড. রুণা পাল, সত্যজিৎ দত্ত, মানস ভট্টাচার্য, অশোক বার্মা, বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত, মৃদুলা ভট্টাচার্য, প্রণব কান্তি দাস, মৃন্ময় রায়, শতদল আচার্য, আভা সরকার মন্ডল, দীপক হোম চৌধুরী, মমতা চক্রবর্তী, হিমাংশু প্রকাশ দাস, দেবলীনা রায়, শুভব্রত দত্ত, নাহিদ শারমিন শান্তা ও শ্রাবণী সরকার। রয়েছে ‘গণ্ডি’ ছবিতে লেখা বিশ্বরাজ ভট্টাচার্যের দুটি গান।
তিনটি সুচিন্তিত বিভাগে রয়েছে একটি করে প্রতিবেদনধর্মী লেখা। নাটক বিভাগে চিত্রভানু ভৌমিকের ‘থিয়েটার ও আজকের শিশু’, স্বাস্থ্য বিভাগে ডা. শ্রীদীপ রায়ের ‘আর্থ্রাইটিস ও হোমিও চিকিৎসা’ এবং খেলা বিভাগে তাজ উদ্দিনের ‘বরাকের ভলিবলে সম্ভাবনা প্রচুর’ তিনটি রচনাই তথ্য ও উপস্থাপনায় সুলিখিত। এই রচনাসমূহ পত্রিকাটিকে প্রদান করেছে এক বাণিজ্যিক উৎকর্ষ যদিও আগেই বলা হয়েছে অমূল্য এই পত্রিকাটি সততই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
মুদ্রণ ও বানান বিভ্রাট উভয়ই কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ণ করেছে পত্রিকার মান। কিছু রচনার শিরোনামেও বানানবিভ্রাট রয়েছে। একাধিক রচনার অগুনতি লাইনের শেষে দাঁড়ি (।)-র স্থানে ‘হ্ল’-জাতীয় মুদ্রণ বিভ্রাট এবং বহু জায়গায় ‘কী’-এর জায়গায় ক্রমান্বয়ে ‘কি’ ছাপা/লেখা হয়েছে। এসব কাটিয়ে উঠে নিশ্চিতই উত্তরণের পথে এগিয়ে যাবে এই পত্রিকা এমন প্রত্যয় লুকিয়ে রয়েছে সংখ্যাটির ভিতরেই। গণেশ নন্দীর নান্দনিক প্রচ্ছদ আকর্ষণীয় হয়েছে। কাগজ, ছাপার স্পষ্টতা যথাযথ। যেহেতু বিনামূল্যে তাই বিজ্ঞাপনের বাহুল্য স্বাভাবিক। এমনিতেও পাঠকের দায়বদ্ধতা থাকে প্রতিটি বিজ্ঞাপন পড়ার।
 
প্রকাশক - পঞ্চদীপ দাস
যোগাযোগ - ৯৭০৭৯৩৭৪৬৪

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

Comments

Popular posts from this blog

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে

একক কিংবা যৌথ সম্পাদনায় বিগত কয়েক বছরে উত্তরপূর্বের বাংলা লেখালেখি বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনা করে এই সাহিত্যবিশ্বকে পাঠকের দরবারে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার এক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ তরুণ লেখক ও সম্পাদক নিত্যানন্দ দাস । হালে এপ্রিল ২০২৪ - এ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সম্পাদনা গ্রন্থ ‘ উত্তর - পূর্বাঞ্চলের বাংলা গল্প : বিষয়ে বিশ্লেষণে ’ ( প্রথম খণ্ড ) । প্রকাশক - একুশ শতক , কলকাতা । আলোচ্য গ্রন্থটিতে দুই ছত্রে মোট ২৮ জন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকের ২৮টি প্রবন্ধ রয়েছে । উপযুক্ত বিষয় ও আলোচকদের নির্বাচন বড় সহজ কথা নয় । এর জন্য প্রাথমিক শর্তই হচ্ছে নিজস্ব জ্ঞানার্জন । কালাবধি এই অঞ্চল থেকে প্রকাশিত উৎকৃষ্ট সাহিত্যকৃতির সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল না হলে তা সম্ভব নয় মোটেও । নিত্যানন্দ নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন গভীর অধ্যয়ন ও আত্মপ্রত্যয়কে সম্বল করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আলোচ্য গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন প্রতিষ্ঠিত কথাকার রণবীর পুরকায়স্থ । বস্তুত সাত পৃষ্ঠা জোড়া এই ভূমিকা এক পূর্ণাঙ্গ আলোচনা । ভূমিকা পাঠের পর আর আলাদা করে আলোচনার কিছু থাকে না । প্রতিটি নিবন্ধ নিয়ে পরিসরের অভাবে সংক্ষিপ্ত হলেও ...

প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'স্বপ্নতরী'

  স্বপ্নতরী                         বিদ্যুৎ চক্রবর্তী   গ্রন্থ বিপণী প্রকাশনা  বাবা - স্বর্গীয় সুধীর চন্দ্র চক্রবর্তী মা - শ্রীমতী বীণাপাণি চক্রবর্তী               জনম দিয়েছ মোরে এ ভব ধরায় গড়েছ সযতনে শিক্ষায় দীক্ষায় জীবনে কখনো কোথা পাইনি দ্বন্দ্ব দেখিনি হারাতে পূত - আদর্শ ছন্দ বিন্দু বিন্দু করি গড়ি পদ্য সংকলন তোমাদেরই চরণে করি সমর্পণ প্রথম ভাগ ( কবিতা )   স্বপ্নতরী ১ স্বপ্ন - তরী   নিটোল , নিষ্পাপ কচিপাতার মর্মর আর কাঁচা - রোদের আবোল - তাবোল পরিধিস্থ নতুন আমি ।   আনকোরা নতুন ঝরনাবারি নিয়ে এখন নদীর জলও নতুন বয়ে যায় , তাই শেওলা জমে না ।   দুঃখ আমার রয়ে গেছে এবার আসবে স্বপ্ন - তরী চেনা পথ , অচেনা ঠিকানা ।         ২ পাখমারা   সেই উথাল - পাথাল পাখশাট আজও আনে আরণ্যক অনুভূতি । একটু একটু হেঁটে গিয়ে বয়সের ফল্গুধারায় জগৎ নদীর দু ’ পার ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস - সময়ের কাঠগড়াতে আমি বন...

খয়েরি পাতার ভিড়ে ...... ‘টাপুর টুপুর ব্যথা’

ব্যথা যখন ঝরে পড়ে নিরলস তখনই বোধ করি সমান তালে পাল্লা দিয়ে ঝরে পড়ে কবিতারা । আর না হলে একজন কবি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ব্যথাকেও কী করে ধরে রাখতে পারেন কবিতার পঙক্তি জুড়ে ? নষ্টনীড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন - ‘মনে যখন বেদনা থাকে, তখন অল্প আঘাতেই গুরুতর ব্যথা বোধ হয়’। তাঁর অসংখ্য গান, কবিতা ও রচনায় তাই বেদনার মূর্ত প্রকাশ লক্ষ করা যায়।    এমনই সব ব্যথা আর ভিন্ন ভিন্ন যাপনকথার কাব্যিক উপস্থাপন কবি বিশ্বজিৎ দেব - এর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - ‘ টাপুর টুপুর ব্যথা ’ । মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। কিছু সংক্ষিপ্ত, কিছু পৃষ্ঠাজোড়া। ভূমিকায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক রতীশ দাস লিখছেন - ... বিশ্বজিতের কবিতাগুলো অনেকটা তার কাঠখোদাই শিল্পের রিলিফ-এর মতোই উচ্ছ্বাসধর্মী - যেন উত্তলাবতল তক্ষণজনিত আলো-আঁধারি মায়াবিজড়িত, পঙক্তিগুলো পাঠক পাঠিকার মনোযোগ দাবি করতেই পারে...। এখান থেকেই আলোচ্য গ্রন্থের কবিতাগুলোর বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে। এখানে উচ্ছ্বাস অর্থে আমাদের ধরে নিতে হবে কবির ভাবনার উচ্ছ্বাস, সে বিষাদেই হোক আর তাৎক্ষণিক কোনও ঘটনার জের হিসেবেই হোক। তাই হ...