কবির তো চিরদিনই উৎসব । দুঃখসুখের উৎসব । দিনশেষে কিংবা দিনের প্রথম আলোয় সৃষ্ট সব অনুভব , অনুভূতির বয়ান কবিতায় মূর্ত হয়ে ওঠার উৎসব । চরাচরে ছড়িয়ে দেওয়া নিমগ্ন কবির মনোজগতে উদ্ভূত বয়ানের লিখিত প্রতিরূপ । কবি আশুতোষ দাস কবিতা লিখছেন বহুদিন ধরে , লিখছেন প্রতিদিন । আসলে কবিতা লিখতে হয় না তাঁকে , কবিতা এসে নিজেই ধরা দেয় তাঁর কলমে , লিখিয়ে নেয় স্বতঃস্ফুর্ত ধারায় । সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কবির কাব্যগ্রন্থ ‘ আজ আমাদের উৎসব ’ । ১৫২ পৃষ্ঠার গ্রন্থের শেষ পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ কবি-পরিচিতির সূত্র ধরে জানা যায় - ‘...দীর্ঘ চার দশক থেকে সাহিত্যের বিভিন্ন মাধ্যমে সফলতার সঙ্গে বিচরণ করে চলেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে মৌলিকত্বের জন্য উচ্চারিত। ...তাঁর কবিতা ও গল্পের মূল বিষয় ভালোবাসা ও বহুবর্ণের অনন্ত সৌন্দর্যের বিদ্দুচ্ছটায় আলোকিত জীবনবোধ...।’ আলোচ্য গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট হয়েছে মোট ১০৬টি কবিতা যার অধিকাংশই কবির অনুভবসঞ্জাত মনোজগতের সরল বারতা। কবি-সম্পাদক-প্রকাশক মিতা দাসপুরকায়স্থ ভূমিকাস্বরূপ প্রাককথায় যথার্থ বর্ণনা করেছেন কবি ও কবিতার কথা। - ‘...কবি আশুতোষ দাসের কবিতায়ও রবীন্দ্রভাবনার মতো প্রোজ্জ্বল অলৌকিক ভ...
পাহাড়ি শরীরের ভাঁজে ভাঁজে মেঘের চুমুক চিবুক ধোয়া সন্ধ্যায় চুঁইয়ে পড়ে বৃষ্টিজল... (দার্জিলিং শীর্ষক প্রথম কবিতার প্রথম স্তবক)। কলকাতার পালক পাবলিশার্স পরিবেশিত ও ‘নির্বাণ’ প্রকাশিত আলোচ্য গ্রন্থের প্রথম থেকে ৫৬তম কবিতার এই সফরকে এক কথায় এক ডুবসাঁতারই বলা চলে , যাতে উঠে এসেছে কবিতার বহু ধনসম্পদ , মণিমাণিক্য । কী সেই সম্পদ , সেই হিরে জহরত ? তা ক্রমশ প্রকাশ্য । প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে ৬৪ পৃষ্ঠার এই কাব্যগ্রন্থের ৫৬ পৃষ্ঠা জুড়ে সংখ্যার হিসেবে রয়েছে ৫৬টি কবিতা । চার লাইন থেকে পৃষ্ঠা পেরোনো । সার্বিক ভাবে গ্রন্থনামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে উল্লিখিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যেসব সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় তার কিছু আছে গ্রন্থনাম শীর্ষক এই কবিতায় - দীর্ঘতর অন্ধকারে / বৃষ্টি ছুঁয়েছি বহুদিন , / স্বপ্ন দেখেছি / মাঝ সমুদ্রে … / এখন উত্তাল ঢেউয়ে / দিশেহারা গন্তব্য – / তবু , ডুবসাঁতারে / ছেকে আনি / শেকড় - মাটির ঘ্রাণ , আর / প্রতিস্রোতে টের পাই / পরিচিত স্বর … ( কবিতা - ডুবসাঁতার ) । শেকড় - মাটির ঘ্রাণের অনুষঙ্গ হয়ে উঠে আসে পাহাড়, মেঘ, বৃষ্টি, নদী, সাগর, স্রোত-প্রতিস্রোত, চাঁদ, গাছ, রোদ্দুর,...