Skip to main content

Posts

ছিমছাম নান্দনিকতায় শারদীয় ‘কল্পতরু’

পত্রিকাটি হাতে নিলে বিচিত্র অনুভূতি হয় । একটি শারদীয় সংখ্যার আকার এবং ওজন দেখে যখন মন খারাপ হবার জোগাড় তখনই আবার প্রচ্ছদ দেখে সেটা উধাও । তবে অবাক করা ব্যাপার হল এই যে আপাত দৃষ্টিতে বা প্রথম দেখায় যতটা চটি - বই ধরনের অনুভূতি আসে পাতা উলটে যেতে থাকলে তাও দূর হয়ে যাবে ধীরে ধীরে । নেই নেই করে ৫৫ পৃষ্ঠার পত্রিকাটি দেখলে মনে হবে এক - বসাতেই নিঃশেষ হয়ে যাবে পঠন কিন্তু আদপেই তা নয় । সাড়ে তিন ফর্মার স্টেটমেন্ট সাইজের পত্রিকার এই সংখ্যাটির ভিতর বিশাল সম্ভার হয়তো নেই কিন্তু যা রয়েছে তা ধারে কাটে পঠন - বিমুখতা । অর্থাৎ শুরু করলে শেষ করতেই হবে প্রতিটি রচনা । ‘কল্পতরু’ পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩১ হিসেবে স্বাগতা চক্রবর্তীর সম্পাদনায় শিলচর থেকে নীরবে প্রকাশিত হয়েছে অক্টোবর ২০২৪ সংখ্যটি । সম্পাদনা সহযোগিতায় রয়েছেন বিশিষ্ট গল্পকার মিথিলেশ ভট্টাচার্য যাঁর দুটি লেখা দিয়েই মোড়া আছে সংখ্যাটি । বিন্যস্ত হলেও সূচিপত্রে গদ্য ও পদ্য এসেছে পালাক্রমে। সংখ্যাটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবেই উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত কবি বিজয়কুমার ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে। তাঁর লেখা বিখ্যাত ‘জন্মদিনের কবিতা’ পুরোটাই ছাপা হয়েছে যা পত্র
Recent posts

তিথি যখন অতিথি

প্রকৃতি ও পঞ্জিকার নিয়ম মেনে ফের এলেনও দেবী এবার , আবার । দেখতে দেখতে যাবতীয় শঙ্কা আর টানাপোড়েন কাটিয়ে নির্ঘণ্ট মেনে ফের পুজো শেষ ! ‘ পুজো শেষ ’ বলতে কিংবা ভাবতেও বেদনায় ভরে ওঠে মনটা । তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিন থেকেই কেমন এক বিমর্ষতা , এক মন খারাপের সুর বেজে ওঠে অন্তর জুড়ে । এতগুলো বছর ধরে এই একই অনুভূতি । আমার শুধু নয় , আপামর পুজোপ্রিয় মানুষের , উৎসবপ্রিয় মানুষের । পুজোর সমান্তরাল অনুষঙ্গ উৎসব যদিও স্থান বিশেষে এবং জন বিশেষে এবার তারতম্য ঘটেছে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে । এই পর্বটুকু আপাতত সরিয়ে রাখলে এবারের অর্থাৎ ২০২৪ - এর পুজোর সেরা নায়িকা কিংবা খলনায়িকা যদি বাছতে হয় সে নিঃসন্দেহে এবং অবিসম্বাদিতভাবেই হচ্ছে ‘ তিথি ’ । এভাবে দেবদেবীকেও পিছনে ফেলে দিয়ে তিথির এই ট্র্যাজিক হিরোইন কিংবা খলনায়িকা হয়ে ওঠা একেবারেই অনভিপ্রেত যদিও ইতিহাসে তা বিরল নয় মোটেও । প্রতিটি মানুষ এবং বিশেষ করে পূজার উদ্যোক্তা ও পুরোহিতমশাইদের বলতে গেলে তিথি এবার একেবারে নাকানিচোবানি খাইয়ে দিয়েছে । পুজো থেকে উৎসবে নিজেকে জড়িয়ে নিতে অনেকেরই কষ্ট হয়েছে যদিও কিছু পারিবারিক , কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতার জেরে বেরোতে

শহরের ঘড়িতে রাত বাড়লে জোছনা খোলে মনকপাট... ‘যে সিরিজ ও.টি.টি. দেখায় না’

প্রথমেই আসা যাক গ্রন্থনামে। এই গ্রন্থনাম নিশ্চিতই এক সুচিন্তিত ভাবনার ফসল তবে কবিতার বইয়ের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী হলেও এবং এই গ্রন্থের কবিতাসমূহকে আওতায় এনেও হয়তো অ ন্য কোনও গ্রন্থনাম অধিকতর মানানসই হতো। অন্তত ডতগুলোকে তো বাদ দেওয়াই যেত। আজকের উত্তরপূর্বে অপেক্ষাকৃত কম বয়েসি কবিদের মধ্যে সাড়া জাগানো কবি কমলিকা মজুমদারের তৃতীয় বাংলা কাব্যগ্রন্থ, সার্বিক চতুর্থ। ‘…কিছু কিছু বই পুরো পড়তে নেই / কাব্যকথার ঠিক মাঝপাতা জুড়ে / ফুটিয়ে দিতে হয় লাল গোলাপ / মার্ক করা পাতারাই আসল প্রেম / প্রতিটা শেষ না-হওয়া সিরিজের বুকে। ’ - ৬৪ পৃষ্ঠার পাকা বাঁধাই গ্রন্থের ভূমিকাস্বরূপ ৯ লাইনের এক কবিতায় এমনই লেখা আছে যা কিছুটা হলেও খেই ধরিয়ে দেয় কবিতার ব্যতিক্রমী আঙ্গিকের। কবিতায় রয়েছে চিরাচরিত বৈচিত্র যা কবি ও কবির জন্য এক নির্ধারিত পরিচিতি। ফলে পুরোটাই পড়তে হয় এই বই। মোট ছয়টি দীর্ঘ কবিতার সমষ্টি এই গ্র ন্থের প্রতিটি কবিতা ১, ২, ৩... পর্বে লেখা ।   প্রথম কবিতা - ‘গল্পবিজ্ঞান’। গণিত কিংবা বিজ্ঞানকেও যে কবিতার সুললিত, কাব্যিক আবহে ধরতে পারা যায় তা করে দেখালেন কমলিকা। ডারউইন থেকে আইনস্টাইন, টেলিস্কোপ থেকে অক্সিজেন স

স্বল্পাবয়বে সুচয়িত সম্ভার শারদীয় সংখ্যা ‘সাঁকো’

উত্তর-পূর্বের সাহিত্যবিশ্বে নিরলস সাহিত্য সাধনায় ব্রতী হয়ে লেখক , কবিদের জুড়ে রেখেছেন যেসব সম্পাদক তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায় । প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে নিজস্ব লেখালেখির বাইরে ‘ সাঁকো ’ নামক একটি পত্রিকা , যার নিয়মিত অনলাইন সংস্করণের বাইরেও প্রকাশিত হয় বছরে দুটি ছাপা সংখ্যা , প্রকাশের মাধ্যমে এক চমৎকার ধারাবাহিকতার পরিচয় ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন তিনি । সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘ সাঁকো ’ পত্রিকার বিংশতিতম বর্ষ , পূজা সংখ্যা । প্রকাশক - বেবী চট্টোপাধ্যায়। পূজা সংখ্যা মানেই ভারে ও আয়তনে ঢাউস হতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই যদিও কলেবর নির্বিশেষে তার এক আলাদা মর্যাদা, মাদকতা আছে এ নিশ্চিত । সাধ ও সাধ্যের বৈপরীত্য এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতেই পারে । শারদীয় সংখ্যা ‘ সাঁকো ’ ধারে ও ভারে না হলেও প্রয়াসে , নিবেদনে অনন্য । বরাবরের মতোই অনন্য এবারেরও প্রচ্ছদ । সৌজন্যে বিশ্ব রায় । শরৎ ও শারদীয় পূজা নিয়ে স্টেটমেন্ট সাইজের ৪৪ পৃষ্ঠার সংখ্যায় সম্পাদক সুশান্ত মোহন লিখছেন - ‘...আমাদের ‘ সাঁকো ’ সাহিত্য পত্রিকা দুই দশকের বিরামহীন পথ চলায় এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরো

প্রতিবাদী শরৎ

এ কেমন শরৎ এল এবার ? বর্ষা শেষের পক্ষকাল আগে থেকে চারপাশ জুড়ে যে অস্থিরতার সূত্রপাত তা এসে নতুন করে প্রকাশিত হল শরতের সূচনায় । বাংলাদেশের পর পশ্চিমবঙ্গে । এমন শরৎ আগে দেখিনি কখনও । আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের জন্য শরতের এক অন্যরকম মাহাত্ম্য । পেঁজা তুলোর মেঘের ফাঁকে ফাঁকে একদিকে যেমন রংবেরং - এর ঘুড়ি ওড়ে আকাশে অন্যদিকে তেমনই শিশিরসিক্ত সকালের ঘাসবনে লুটিয়ে পড়ে রাতের বৃন্তচ্যুত শিউলি মা দুর্গার চরণপথে । দিকে দিকে এক গন্ধমাতন আলোড়ন । নদীচরে , পাহাড়ের ঢালে গুচ্ছ কাশের দোলায় দোলে ওঠে অঙ্গ । কাশের বনে খেলে বেড়ায় নব্যদুর্গারা।   আলোড়ন মনাকাশ জুড়েও । মাতন মনন জুড়েও । দোলন আবালবৃদ্ধের অঙ্গে অঙ্গে । আকাশে বাতাসে কান পাতলে , চোখ রাখলেই মাতৃমুখ - মননসুখ । মা আসছেন । দুর্গতিনাশিনী মা । বরাভয় হাতে তিনি ঘুচিয়ে দেবেন যত দুঃখশোক । অসুরশূন্য হবে এ পৃথিবী । প্রতিবারই এভাবে শরৎ আসে পৃথিবীর বুকে , প্রতিবারই আমরা এমনই ভাবনায় ডুবে থেকে এমনই কল্পনায় করি দিনাতিপাত । অথচ চোখের সামনেই