(১)
আমার শ্রাবণ-কথা রোজ কেউ
শোনে চুপিসারে। সে চোখে শ্রাবণ ঝরে ?
আমার শ্রাবণ-কথা রোজ কেউ
শোনে চুপিসারে। সে চোখে শ্রাবণ ঝরে ?
রোজ রাতে পালা করে
বন্ধ জানালা ভেঙে
আমাকে একশা করে যে শ্রাবণ
আমার বন্ধকি জীবন
তারই কাছে রেখেছি গচ্ছিত।
(২)
হৃদয় দরোজা ভেঙে
হড়পা বানের মতো
যে শ্রাবণগন্ধে আমি হই মাতোয়ারা
পদ্মনাভিতে করি রোজ
তারই আবাহন, তারই স্তব স্তুতি
সেই তো মেঘডম্বরু, একেলা একা
শ্রাবণঘন আমার পাগলপারা।
(৩)
শ্রাবণ আমাকে যতটা করেছে নিঃস্ব
দিয়েছে ফিরিয়ে তার কিছুটা বেশি
শ্রাবণ আমাকে যতটা করেছে নিঃস্ব
দিয়েছে ফিরিয়ে তার কিছুটা বেশি
চোখে তার ভরা শ্রাবণের উতল নদী
চোখে হারাই তারে নিরবধি, কেন যে
একদিন শুধু ভিজেছি অকারণে
নদী ধারে - শ্রাবণ সুখে
কুড়িয়েছি মায়াবী সঙ্গসুধা, আঁজলা ভরে।
(৪)
মধ্য শ্রাবণ দিনে বৃষ্টিকথায়
উঠেছিল ধোঁয়া ওঠা পিরিচ পেয়ালায়
চুমুক চুম্বনে ঘোর মায়ার তুফান
সে তুফান একেবারেই কি গিয়াছে থামি ?
সেই থেকে স্বপ্নবিহীন যাযাবর আমি।
আজ মোহ নেই আর শ্রাবণ ধারাপাতে
ভিজে মরি শুধু একেলা রাতে।
(৫)
শ্রাবণ আমাকে ভিজিয়েছে বার বার
হর্ষ বিষাদে করেছে তোলপাড়
শ্রাবণ আবহে সঘনে মায়া ও মোহে
এসেছিল কেউ মেঘমল্লার হয়ে
সে গিয়াছে চলি কাঁটার পথেও
কুসুম বিছিয়ে বিছিয়ে,
মোহকণ্টকে আমি আছি ঠায় দাঁড়িয়ে।
(৬)
অবশেষে কোথাও এল সেই শ্রাবণ-বিস্ময়
অরণ্যে জেগেছে সব খুশিফুল পাতার বাহার
আমার বাগানে ফুটেছে এক
রোদন বসন্ত বিভ্রম, সব জল শেষে
বিধ্বস্ত অহং জুড়ে শ্রাবণ-বিদায়।
রাত যত আসে, যত রক্তিম দিন
শ্রাবণ-বিহ্বল আমি জলহীন, প্রাণহীন।
Comments
Post a Comment