কবিতায় কবিতায় নিরেট সোনায় মোড়া
সংকলন। ৪৪ পৃষ্ঠার কাব্য সংকলনের মোট ৩৪ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে দু’লাইন থেকে দুই
পৃষ্ঠা জোড়া গভীর কাব্যসুষমামণ্ডিত ৩৬ টি কবিতা। অপর্ণা দেব যতটা কবি তার চাইতেও বেশি
পরিচিত প্রাবন্ধিক এবং সমাজসেবী হিসেবে। অথচ আলোচ্য এই সংকলনে সন্নিবিষ্ট কবিতাগুলি
কবির কাব্যপ্রতিভাকে প্রথমবারের মতো উদভাসিত করে তুলল পাঠকের সামনে যেখানে রয়েছে
শুধু বিস্ময় আর কবির কৌলীন্য।
গোটা সংকলন জুড়ে পাতায় পাতায় রয়েছে এক শৈল্পিক সুষমা। আধুনিক কবিতায়, চিরন্তন চিত্রকল্পে। রুচিবোধের পরিচায়ক এই চমৎকার অলংকরণ। কবির ভাবনাবিশ্ব আজীবন বিস্তৃত। হয়তো বা এর বিস্তৃতি ছড়িয়ে রয়েছে জীবনের পরও। কবিতায় উঠে এসেছে সমাজ, জীবনবোধের অনুভব, অনুভূতি, স্থান-কাল-পাত্র, ভাষা, মাতৃভাষার গরজ। তবে যে কথাটি খোদিত রয়েছে অধিকাংশ কবিতার অন্দরে তা হলো নিখাদ প্রকৃতি প্রেম। একের পর এক কবিতায় কবি তাই নিজের মতো করে সাজিয়েছেন প্রকৃতির প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা, প্রখর পর্যবেক্ষণ। কখনও জাগতিক প্রেমও নিখাদ বন্ধনে মিশে একাকার হয়ে যায় প্রকৃতি প্রেমের বিশালত্বে। কিছু পঙক্তি নিশ্চিত দোলা দেয় পাঠক মনে -
এখানে কোনো বর্ষাকথকতা নেই/ নেই রুনুঝুনু নূপুরের জলধ্বনি/ বর্ষণ এখানে নির্বাক নিস্পন্দ নীরব/ বটবৃক্ষসম স্থিতধী গম্ভীর/ নিঃশব্দে ভেজায় চরাচর/ ... অঝোরধারায় বসুন্ধরার সমস্ত ক্ষত ধুয়ে/ রেখে যায় প্রণাম,/ মেঘ ভেঙে বৃষ্টি নামার পর। (কবিতা - মেঘ ভেঙে বৃষ্টি নামার পর)। কিংবা - অকাল সন্ধ্যা নামে আমার উঠোনে/ মুখ লুকোয় সুগন্ধি নক্ষত্ররা,/ গহিন অন্ধকারে হৃদয়ের আকুল জলধারায়/ বহতা নদীর পাশে নতজানু হই।/ ভেজা চন্দনে নৈবেদ্য আয়োজনে দেখি/ নদী যেন, নিথর মায়ের সজল দুটি চোখ। (কবিতা - অকাল সন্ধ্যা)। কবি তাই তাঁর ঘরের কাছের কুশিয়ারাকে লিখেন - ওই বিশাল বটবৃক্ষের যে শাখাটি নেমে এসে/ তোমাকে ছুঁয়ে থাকতে চাইছে,/ আমি সেখানে আমার স্বপ্নবীজ রেখেছি। (কবিতা - কুশিয়ারা আমার সকালবেলার সই)। এমনি কত গুচ্ছ গুচ্ছ সহজ পঙক্তিমালায় সুসজ্জিত হয়েছে কবিতা। তাই বলা যায় যথার্থ নামকরণ সংকলনটির। বিশেষ ভালো লাগা কিছু কবিতার উল্লেখ করা যেতেই পারে - দেবী আপনি নির্বাসিত, ওরা প্রেম রেখে যায়, স্মৃতিপট, জ্যৈষ্ঠের অস্তমিত সূর্যের আমন্ত্রণে, যাও পাখি, সম্মানিত এক ভোরের অপেক্ষায়, স্বপ্নে তোমার প্রেম পাবো বলে, মরুতৃষা, এলোমেলো...। স্পষ্ট ছাপাই, সুবিন্যস্ত অক্ষর বিন্যাস, শ্রী মজুমদারের মনোরম প্রচ্ছদ সংকলনটির সম্পদ। উৎসর্গ করা হয়েছে বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামলরঞ্জন দেবকে। প্রকাশক - সৃষ্টিবিন্দু, করিমগঞ্জ। দু’একটি ছাপার ভুল এবং গ্রন্থনামে অনবধানতায় বানান বিভ্রাটের বাইরে এক পরিপাটি সুখপাঠ্য সংকলন।
গোটা সংকলন জুড়ে পাতায় পাতায় রয়েছে এক শৈল্পিক সুষমা। আধুনিক কবিতায়, চিরন্তন চিত্রকল্পে। রুচিবোধের পরিচায়ক এই চমৎকার অলংকরণ। কবির ভাবনাবিশ্ব আজীবন বিস্তৃত। হয়তো বা এর বিস্তৃতি ছড়িয়ে রয়েছে জীবনের পরও। কবিতায় উঠে এসেছে সমাজ, জীবনবোধের অনুভব, অনুভূতি, স্থান-কাল-পাত্র, ভাষা, মাতৃভাষার গরজ। তবে যে কথাটি খোদিত রয়েছে অধিকাংশ কবিতার অন্দরে তা হলো নিখাদ প্রকৃতি প্রেম। একের পর এক কবিতায় কবি তাই নিজের মতো করে সাজিয়েছেন প্রকৃতির প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা, প্রখর পর্যবেক্ষণ। কখনও জাগতিক প্রেমও নিখাদ বন্ধনে মিশে একাকার হয়ে যায় প্রকৃতি প্রেমের বিশালত্বে। কিছু পঙক্তি নিশ্চিত দোলা দেয় পাঠক মনে -
এখানে কোনো বর্ষাকথকতা নেই/ নেই রুনুঝুনু নূপুরের জলধ্বনি/ বর্ষণ এখানে নির্বাক নিস্পন্দ নীরব/ বটবৃক্ষসম স্থিতধী গম্ভীর/ নিঃশব্দে ভেজায় চরাচর/ ... অঝোরধারায় বসুন্ধরার সমস্ত ক্ষত ধুয়ে/ রেখে যায় প্রণাম,/ মেঘ ভেঙে বৃষ্টি নামার পর। (কবিতা - মেঘ ভেঙে বৃষ্টি নামার পর)। কিংবা - অকাল সন্ধ্যা নামে আমার উঠোনে/ মুখ লুকোয় সুগন্ধি নক্ষত্ররা,/ গহিন অন্ধকারে হৃদয়ের আকুল জলধারায়/ বহতা নদীর পাশে নতজানু হই।/ ভেজা চন্দনে নৈবেদ্য আয়োজনে দেখি/ নদী যেন, নিথর মায়ের সজল দুটি চোখ। (কবিতা - অকাল সন্ধ্যা)। কবি তাই তাঁর ঘরের কাছের কুশিয়ারাকে লিখেন - ওই বিশাল বটবৃক্ষের যে শাখাটি নেমে এসে/ তোমাকে ছুঁয়ে থাকতে চাইছে,/ আমি সেখানে আমার স্বপ্নবীজ রেখেছি। (কবিতা - কুশিয়ারা আমার সকালবেলার সই)। এমনি কত গুচ্ছ গুচ্ছ সহজ পঙক্তিমালায় সুসজ্জিত হয়েছে কবিতা। তাই বলা যায় যথার্থ নামকরণ সংকলনটির। বিশেষ ভালো লাগা কিছু কবিতার উল্লেখ করা যেতেই পারে - দেবী আপনি নির্বাসিত, ওরা প্রেম রেখে যায়, স্মৃতিপট, জ্যৈষ্ঠের অস্তমিত সূর্যের আমন্ত্রণে, যাও পাখি, সম্মানিত এক ভোরের অপেক্ষায়, স্বপ্নে তোমার প্রেম পাবো বলে, মরুতৃষা, এলোমেলো...। স্পষ্ট ছাপাই, সুবিন্যস্ত অক্ষর বিন্যাস, শ্রী মজুমদারের মনোরম প্রচ্ছদ সংকলনটির সম্পদ। উৎসর্গ করা হয়েছে বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামলরঞ্জন দেবকে। প্রকাশক - সৃষ্টিবিন্দু, করিমগঞ্জ। দু’একটি ছাপার ভুল এবং গ্রন্থনামে অনবধানতায় বানান বিভ্রাটের বাইরে এক পরিপাটি সুখপাঠ্য সংকলন।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
মূল্য - ১০০ টাকা, যোগাযোগ - ৯৪৩৫৫৯৬৭২০।
Comments
Post a Comment