Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2025

সম্মিলিত ভাবনায় নব আঙ্গিকের কবিতাপত্র - ‘অনুভূতি-১’

কবি সাহিত্যিকের অন্তর সদাই নতুনের অনুসন্ধানে মগ্ন । নতুন সৃষ্টিতেই কবির হৃদয় সতত জেগে ওঠে নবআনন্দে । তাই তো কবিগুরু লিখেছেন - ‘… এ শুভলগনে জাগুক গগনে অমৃতবায়ু , আনুক জীবনে নবজনমের অমল আয়ু … । জীর্ণ যা কিছু যাহা কিছু ক্ষীণ নবীনের মাঝে হোক তা বিলীন -- ধুয়ে যাক যত পুরানো মলিন নব - আলোকের স্নানে । ’ নবীন, নতুন মানেই পুরোনো যত গ্লানি, যত গ্লানিমা সব কিছু মুছে দিয়ে শুদ্ধতার অভিমুখে সজীব পদক্ষেপ। কবির কাব্যান্বেষণ এমনই এক নিত্য নতুন পদক্ষেপের প্রতীক্ষায় নিয়ত উদ্‌গ্রীব। তারই এক ঝলক সম্প্রতি দীপ্যমান হয়ে উঠল এক নতুন পত্রিকার আত্মপ্রকাশে। সাহিত্যক্ষেত্রে নিরন্তর আত্মনিবেদিত ত্রয়ীর অন্তরের এই নবভাবনা আবেগ, অনুভব, অনুভূতির প্রকাশ হয়ে জন্ম দিল ‘অনুভূতি-১’ শীর্ষক পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা - নববর্ষ সংখ্যা, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ । কবির শহর - বরাক উপত্যকার শিলচর থেকে প্রস্ফুটিত হল জয়শ্রী ভট্টাচার্য, রাখী দেব ও শর্মি দে সম্পাদিত এক নবীন, নিটোল কবিতাপত্র। সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় আলাদাভাবে তিনজন সম্পাদকেরই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ধরা দেয় একাধারে কবিতার গরজ ও একত্রে পথ চলার দৃপ্ত প্রত্যয়।  সতর্ক পদক্ষেপের এই প্রথম প্রচ...

বৃহৎ বাংলার সার্থক ছোটগল্পের সংকলন ‘অগ্নিশুদ্ধা’

বলা যেতেই পারে একটি ব্যতিক্রমী গল্প সংকলন প্রকাশিত হল বরাক উপত্যকা তথা উত্তরপূর্বের গল্পবিশ্ব থেকে । কেন ব্যতিক্রমী সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে চোখ রাখা যাক গ্রন্থের সাজসজ্জার দিকে । এক এক করে এগোলে প্রথমেই আসে প্রচ্ছদের কথা । অ্যাবস্ট্র্যাক্ট প্রচ্ছদ অপেক্ষাকৃত কম চোখে পড়ে এ অঞ্চলের প্রকাশনায় । সম্প্রতি শীতালং পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত সবকটি গ্রন্থে আশু চৌধুরীর এ ধরনের প্রচ্ছদ গ্রন্থকে প্রদান করছে এক অনন্য মর্যাদা । শর্মিলী দেব কানুনগোর আলোচ্য গ্রন্থ ‘অগ্নিশুদ্ধা’র ক্ষেত্রেও ঘটেনি ব্যত্যয় । খালি থাকেনি ব্লার্বগুলোও । নিয়মমাফিক প্রথম ব্লার্বে রয়েছে গ্রন্থ বিষয়ক কিছু বর্ণনা - নান্দনিক ভাষায় সমৃদ্ধ । গল্পসমূহের ভিতর থেকে উঠে আসা অনুভবের কথা , গল্পের প্যাটার্ন । তবে ব্লার্বে তো আর সবটুকু বলে দেওয়া যায় না । তাই বহুর পরেও রয়ে গেছে আরও অনেক কথা । দ্বিতীয় ব্লার্বে যথারীতি রয়েছে গল্পকারের সম্যক সচিত্র পরিচিতি । শেষ পৃষ্ঠায় শর্মিলীর গল্পের গতি প্রকৃতি নিয়ে বিশিষ্ট কবি চন্দ্রিমা দত্তের মূল্যায়ন । অর্থাৎ সব মিলিয়ে ষোলো আনা ব্যাকরণ মেনে প্রকাশিত হল এই গল্প সংকলন । ‘ লেখকের কথ...

পথের শেষে

পথের শেষে হারিয়ে যাওয়াই দস্তুর। কেউ জানে না শেষের রাগিণীক্ষণ ।   শেষের বেলায় পথ চলারও আছে কিছু দস্তুর। যেখানে জটাজুট জুড়ে শ্বেতবলাকার পালক যেখানে পথের ধারে খানাখন্দ জুড়ে কীটপতঙ্গের ওড়াউড়ি আর জটিল আস্তরণে এবড়োখেবড়ো স্মৃতির দাগ, সেখানেই শেষের শুরু কিংবা শুরু থেকে শেষ।   সেখানেই থামতে হয়, পাশে দাঁড়িয়ে থাকে অতীতের ছায়ামানুষের সন্তান-সন্ততি - যারা করজোড়ে জানায় অভিবাদন। প্রত্যাভিবাদন জানাতে হয় তাদের হাতের মুদ্রায় থাকতে হয় আশীর্বচনের ভঙ্গি একদিন যা কুড়িয়েছি মুঠো ভরে ।   সেখান থেকে পিছন ফিরে তাকানোর অনুমতি থাকে না। এসব শুধুই প্রগল্ ‌ ভতা। ফেলে আসা কুসুম-সুবাস ঝেড়ে ফেলতে হয় নাহলে খসে পড়ে যত উপার্জিত শিরোপা । বড় কষ্টার্জিত এই অনুশীলন। অথচ … অতীত উচ্চারণ ঝেড়ে ফেলে দিলে কী আর থাকে জীবনে, সবই ললাট-লিখন। 

সে ছবি আমার নয়

চোখে চোখ পড়তেই কী যেন এসে বিঁধেছে বুকে, কোথাও দেখেছি তারে। হাতড়ে বেড়াই এক বিশাল জীবন - এক জীবনে কত মানুষের মুখ মনে রাখা যায় ? বিষম এ দায়। চোখে তার চোখ রেখে দেখেছি যে ছবি সে ছবি আমার নয়, এইটুকু সার বাকি সব বর্জ্য শুধু, সবই অসার।

কাকতাড়ুয়া জীবন

কাকতাড়ুয়ার সংসার থেকে চঞ্চু ভরে যে সাহসী পক্ষীটি নিয়ে যায় এক টুকরো ছিন্ন বসন আমি তার চোখে দেখেছি এক মৃত মানুষের ছায়া - যে মানুষটি জীবদ্দশায় রোপণ করেছিল এক টুকরো ভবিষ্যৎ, ভাবীকালের চিহ্ন রেখে যেতে। কাকতাড়ুয়ার নগ্ন শরীরে সযতনে পরিয়ে দিয়েছিল শখের কামিজ।   পক্ষীর চঞ্চুতে উড়ে যায় খণ্ডিত শখ - খণ্ডিত সুখ - অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে যেখানে সুখশয্যায় লালিত হবে পক্ষীশাবক জীবন থেকে জীবনে হস্তান্তরিত হবে এক অন্য ভবিষ্যৎ, এক ভিন্ন ভাবীকাল। 

বিচারশালা

হে মহামহিম, ‘সেদিন যাহা বলিয়াছিলাম তাহা ছিল সর্বৈব মিথ্যা।‘ অসাধু হয়ে বলেছিলাম সাধু কথায় - ‘যাহা বলিব, সত্য বলিব। সত্য বই ......’ আজ কবুলনামা দাখিল করছি বিধাতার এজলাসে এক মিথ্যাবাদীর মুখে সেদিন এক তরুণ তুর্কির দল হেনেছিল অম্লমধুর চপেটাঘাত। এরপর উর্দিধারীর দৌরাত্ম্যে চাঁদের আলোয় আসর বসেছিল মিষ্টিমধুর কণ্টকবনে, আমরা ক’জন, সাধুজন চুপিসারে উপভোগ করেছি সত্যের জয়। হে মুদিতনয়না, আপনি তো অন্ধ ছিলেন আমরা ছিলাম না। আমরা আজও অন্ধ নই মিথ্যার ইতিহাস যাঁরা লিখে যান, তাঁদের আমরা কোনো এজলাসে যেতে দিতে চাই না, বিচার হোক তাঁদের পথের বিচারশালায়, যে পথ ধরে বেজে ওঠে রোজ নওজোয়ানের মার্চপাস্টের ভেরি, সত্যের ঠিকানা লেখা হোক প্রতিটি মাইলফলকে। 

উনিশের মায়া

এই যে কথায় কথায় ভালোবাসাবাসি কিংবা ঠোকাঠুকি সাঁঝসন্ধ্যা জুড়ে কী তার ইতিহাস ? ভেবেছি কখনও ? হয়তো ভাবিনি , অথচ ফি বছরে স্বেদবিন্দু যখনই বেয়ে নামে প্রথম গ্রীষ্মবেলায় , পথের ধারে নিয়ম মেনে কৃষ্ণচূড়া আকাশে ছড়ায় লাল , তখনই কোথা থেকে যে ঘিরে ধরে এসে একগুচ্ছ অভিমান আর দুঃখসুখের ছায়া , গায়ে মাখি প্রত্যয়ে - আমাদের উনিশের মায়া ।

‘যদি ছুঁতে পারতাম মাথার উপরের খোলা আকাশটাকে…’ আকাশছোঁয়া অনুভব আর অভিমানে ভরপুর - ‘রোদের চিঠি’

এই বয়সে এতটা অনুভব ? অনুভূতির এত সূক্ষ্ম পর্যালোচনা ? সামনে পড়ে রয়েছে এক দীর্ঘ কবি-জীবন। কবি চান্দ্রেয়ী দেব তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘রোদের চিঠি’তে পাতার পর পাতা জুড়ে অনুভবের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন কবিতায় কবিতায় তা থেকে একটি কথাই স্পষ্ট যে আখেরে লম্বা রেসের ঘোড়া হওয়ার এক স্পষ্ট ঘোষণা হয়েই গেল এই চেনা কবিতাবিশ্বে। পৃথিবীর বুকে বোধবুদ্ধি জন্মাবার পর যে সামান্য সময়টুকু কবি অতিক্রম করেছেন তাতেই ভরে উঠেছে তাঁর অনুভূতির ভাণ্ডার। জীবন্ত অতীত আর সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের মাঝখানে একাকী দাঁড়িয়ে একদিকে কবি যেমন লিখতে পারেন - যদি ছুঁতে পারতাম মাথার উপরের খোলা আকাশটাকে হাজার রকম প্রশ্নেরা ঘুরপাক খেত সাদামাটা হৃদয়ের দালান জুড়ে... ...দিনগুলো বড্ড বড্ড ভালো ছিল আলোয় মোড়ানো কল্পনা ছিল ভাবনাহীন ছোট্ট জগৎ ছিল এক নির্ভেজাল শৈশব ছিল। (কবিতা মন যেতে চায়) তেমনি আবার লিখেন - একা থাকতে শেখো... সেখানে তুমি হবে রাজার রাজা সেখানে তুমি হবে আসমানের পূর্ণিমার চাঁদ তুমি পৌঁছে যাবে সাফল্যের অন্তিম দোরগোড়ায় তুমি খুঁজে পাবে শ্রেষ্ঠত্বের নিজ ঠিকানা। (কবিতা - একা হয়ে যাও) শব্দ, কথা ও গল্পদের নিয়ে কবি সাজিয়েছেন তা...

অকপট ভাবনার কাব্যগ্রন্থ ‘শান্তি-নীড়’

সুন্দর-অসুন্দর আর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরমাণু নিয়েই তো সৃষ্ট এ জগৎ সংসার। সংসারে বৃহতের সৃষ্টিই হয় ক্ষুদ্রের সমন্বয়ে। তাই বৃহতের জয়গাথা শুধু নয় - ক্ষুদ্রের আরাধনাতে, ক্ষুদ্রের উল্লেখেই প্রকাশিত হয় প্রকৃত মূল্যায়ন। এই ভাবধারার অনুসারী হয়ে, এই গভীর বাস্তবের উচ্চারণেই ‘কণিকা’ কাব্যগ্রন্থে কবিগুরু লিখেছেন - কে লইবে মোর কার্য, কহে সন্ধ্যারবি। শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি। মাটির প্রদীপ ছিল, সে কহিল, স্বামী, আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি। (কর্তব্যগ্রহণ)। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কবি মহেন্দ্র চন্দ্র দাসের কাব্যগ্রন্থ ‘শান্তি-নীড়’। পেপারব্যাকে নান্দনিক ও প্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদযুক্ত ১০০ পৃষ্ঠার গ্রন্থটিতে রয়েছে মোট ৬৭টি কবিতা। স্বভাবতই ক্ষুদ্র নয় এ গ্রন্থের পরিসর। তবু আলোচনার সূত্রপাতে ‘ক্ষুদ্র’ বিষয়ের উল্লেখের মূল কারণ হচ্ছে বৃহতের প্রতি আমাদের স্বভাবজাত আকর্ষণ। সাড়া জাগানো না হলে, বিশিষ্টতার ছাপ গায়ে লাগানো না থাকলে বস্তুর প্রতি আমাদের অনীহা চিরকালীন। ‘শান্তি-নীড়’ কাব্যগ্রন্থ বিশিষ্টতায় নয় - আবেগে, সারল্যে, দৃঢ় সংকল্পে, ভাবে, নিবেদনে গ্রন্থিত এক অপেক্ষাকৃত স্বল্পখ্যাত অথচ বিশিষ্ট দ্বিভাষিক কবির ক...

যাপিত জীবন ও সমাজের নির্মোহ মন্থন - ‘সবুজ স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম’

উত্তর পূর্বের, বিশেষ করে বরাক উপত্যকার লেখালেখির জগতে লীনা নাথ এক পরিচিত নাম। আজকের দিনে কবি হিসেবে তাঁর বিশেষ পরিচিতি থাকলেও ছোটগল্পের জগতেও তাঁর উপস্থিতি ছিল চমকপ্রদ। একসময় নিয়মিত প্রকাশিত হতো তাঁর গল্প - লিখেছেন দুশোরও অধিক। হারিয়ে যায় কতকিছু, কত সৃষ্টি, কত যাপন কথা ও ব্যথা। সাম্প্রতিক সময়ে সাহিত্য জগতে বহুদিন ধরে তাঁর উপস্থিতি নিতান্তই কম লক্ষ করা গেলেও সদ্য প্রকাশিত হয়েছে এই লেখকের ৩০টি ছোটগল্পের সংকলন - ‘সবুজ স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম’। ১/৮ ডিমাইয়ের ২৮৮ পৃষ্ঠার হার্ড বোর্ড বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় লেখক তাঁর যাবতীয় অনুভবকে সবুজ স্বপ্নের প্রলেপ দিয়ে এঁকেছেন তাঁর নিজস্ব যাপনভূমির প্রেক্ষাপটে থাকা আপামর মানুষের সুখ-দু:খের যাপিত বেলার নির্মোহ ক্যানভাস। ভূমিকায় তিনি লিখেছেন তাঁর গল্পযাপনের বিস্তৃত আখ্যান - তাঁর গল্পের রেলগাড়ির স্বপ্নের প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে যাওয়ার কথা। গল্পের ধারা বা ধরন সবারই কম বেশি ভিন্ন। ব্যতিক্রম নন লীনাও। তাঁর গল্প চলতে থাকে সাবলীল, স্বত:স্ফুর্ত ধারায়। কোথাও আটকে থাকে না যদিও আবেগের অত্যাচারে বাক্য গঠনে ক্ষণিক অসংলগ্নতাও যে অনুভূত হয় না কখনও - তাও নয়। তবু হারায় না খেই। চরি...

যাপনের প্রহসনে গদ্যে পদ্যে অনবদ্য আলপনা

সব্যসাচী লেখক তপন মহন্ত মূলত কবি হিসেবেই পরিচিত হলেও গদ্যের হাতটিও যে তাঁর পাকাপোক্ত সে হদিস পাওয়া গেল সম্প্রতি । চলতি বছরের গোড়ায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর দু - দুটি অণুগ্রন্থ । দুটিই এক ফর্মার । প্রকাশক দৌড় প্রকাশনা , কলকাতা । উভয় গ্রন্থের ক্ষেত্রেই যে কথাটি প্রযোজ্য তা হল কবি এবং গল্পকার - দুই ভিন্ন সত্তার অধিকারী তপন উভয় ক্ষেত্রেই একশো ভাগ নিবেদিতপ্রাণ । সে বিষয়েই হোক বা শৈলীতে । ছন্দে হোক বা বুনোটে। ভাষার নান্দনিক ও মোক্ষম প্রয়োগ তাঁর লেখার অন্যতম সম্পদ। স্বল্পকালীন পঠনের উপযুক্ত গ্রন্থদুটির নিবিড় পাঠশেষে পাঠকের জন্য থেকে যাবে এক অনাবিল পঠনসুখ - এ অনিবার্য।   কুয়াশার জলছবি   ১৬ পৃষ্ঠার আলোচ্য কাব্যগ্রন্থটিতে রয়েছে ১১টি কবিতা। চার লাইন থেকে শুরু করে প্রায় পৃষ্ঠাজোড়া। প্রথম কবিতা ‘ছায়া’। চার লাইনে কবি এঁকেছেন জীবনের জলছবি। রূপকাশ্রিত কবিতাটির সারমর্ম শুধু নিবিড় পাঠেই সম্ভব। কিছু কবিতা পূর্বপুরুষের স্বদেশ, এদেশ আর নাগরিকত্বের বিড়ম্বনা নিয়ে লেখা। এক একটি পঙ্‌ক্তি, এক একটি পদ্যাংশ যেন গভীর ব্যঞ্জনাপ্রসূত প্রহসন, শ্লেষ আর প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ। এর বাইরেও আছে লকডাউন আ...

হৃষিকেশ নাথের ‘প্রসঙ্গ চর্যাপদ এবং ত্রিপুরা’

বাংলা সাহিত্যের আকর হিসেবে স্বীকৃত চর্যাপদ নিরন্তর এক রহস্য হিসেবে চর্চিত হয়ে আসছে যুগ থেকে যুগান্তরে । এই চর্চা অনি : শেষ । বাংলা ভাষা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন এই চর্যাপদ যা একাধারে ভাবীকালের জন্য রেখে গেছে সাহিত্যের ক্রমমিকাশের ধারাকে জানার , তৎকালীন সমাজ - সংস্কৃতি , আচার - ব্যবহার , বিশ্বাস , জীবনযাত্রা ও ভৌগোলিক ক্ষেত্র অধ্যয়নের এক বিশাল সুযোগ যা আজও চলে আসছে আত্মোপলব্ধি ও গবেষণালব্ধ প্রক্রিয়ায় অতীত ইতিহাসকে হৃদয়ঙ্গম করার তীব্র বাসনার ফলস্বরূপ । চর্যাপদের ভাষাবিন্যাস , কাব্যগুণ , রূপক ও সাংকেতিক অনুষঙ্গ , ছন্দের বৈচিত্র , লোকায়ত উপাদান এবং সর্বোপরি চর্যা কবিদের জীবন ও কাব্যসাধনার পাশাপাশি তাঁদের অবস্থানগত পরিচিতি আজও গবেষকদের কাছে এক অপার রহস্যাবৃত বিষয় । চর্যাপদ বা চর্যাকবিদের অবস্থান যে শুধু উত্তর ভারত , নেপাল , ভূটান নয় বরং অবিভক্ত অসম , বাংলা , ওডিশা ও ত্রিপুরা জুড়েই যে ছিল তার পটভূমি তাতে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয় । চর্যাপদ এবং বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যে চর্যাপদ , চর্যাকবিদের উপস্থিতি , তাঁদের পরিচিতি তথা নাথসিদ্ধা যোগীদের সাহিত্যকর্ম ও জীবনযাত্রা বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ...

সম্ভারে, বৈচিত্রে নান্দনিক শারদীয় সংখ্যা ‘সংযোগ‘ - ২০২৪

প্রকাশিত হতে হতে অনেকটাই দেরি হলেও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে নিয়মিত হিসেবে এই পত্রিকার প্রকাশ এতদঞ্চলের সাহিত্য পরিমণ্ডলে নিশ্চিতভাবেই বয়ে এনেছে এক সুখ ও সন্তুষ্টির বার্তা । অন্যথা দু ’ একটির বাইরে অধিকাংশ পত্রিকাই ইতোমধ্যে অনিয়মিতের পর্যায়ে চলে গিয়েছিল ।   বাংলা সাহিত্য সভা , অসম - এর মুখপত্র তথা সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে রাজ্যিক পর্যায়ে প্রকাশিত ‘ সংযোগ ’ পত্রিকার শারদীয় সংখ্যা ২০২৪ ধারে ও ভারে পূর্ববর্তী সংখ্যার মতোই সাহিত্যপিপাসু পাঠকের দরবারে স্থান লাভ করতে সক্ষম হবে নিঃসন্দেহে । সম্পাদকীয় পাতায় বিলম্বিত প্রকাশের কথাটি উল্লেখও করেছেন সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র দাস। এছাড়া প্রকাশক সংস্থা, বাংলা সাহিত্য সভার উদ্দেশ্য ও কর্মোদ্যোগের খতিয়ানও তুলে ধরা হয়েছে বিস্তৃতভাবে। গদ্য ও পদ্যের যথাযথ সংমিশ্রণের পরেও বলা যেতে পারে গদ্য বিভাগের চাইতে পদ্য বিভাগের পাল্লা ভারী হয়েছে আলোচ্য সংখ্যায়। প্রথমেই ‘বিশেষ গদ্য’ বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক তথা বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী, সংগীত শিল্পী, প্রাবন্ধিক ও কবি প্রয়াত সুভাষ দে’র অপ্রকাশিত রচনা ‘রবীন্দ্রসৃষ্টি পরিক্...

প্রচ্ছন্ন নিবেদনের পত্রিকা - ‘শব্দনীল’ - ২৭তম সংখ্যা

২১ মার্চ , ২০২৫ - বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষে উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর থেকে ‘ পয়েটস্ ‌ ইউনিট ’- এর নিবেদন - ‘ শব্দনীল ’ পত্রিকার ২৭তম সংখ্যা । প্রায় লেটার সাইজের পত্রিকার দুই মলাটের ভিতর রয়েছে গদ্য পদ্যের ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী সম্ভার। যদিও disclaimer- এ লেখা আছে - A Magazine of Poems তবু শুরু ও শেষে যথাক্রমে একটি মূল্যবান নিবন্ধ ও একটি সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন জুড়ে দিয়ে পত্রিকাটিকে শুধু কবিতার পাঠকদের উপভোগ্য না করে আপামর সাহিত্য পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে । বিশিষ্ট সাহিত্যিক তথা কবি এবং পয়েটস্ ‌ ইউনিট , ধর্মনগর ও পত্রিকা সম্পাদক হৃষিকেশ নাথের সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে অনেক গরজের কথা । রয়েছে চরাচর জুড়ে বারুদের গন্ধ , প্রতিবেশী পরিসরে দ্বিতীয় স্বাধীনতার প্রহসন আর ভারী বাতাসের উল্লেখ । রয়েছে আপন সাহিত্যবিশ্বের কয়েকজন সদ্য প্রয়াত ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি - ‘… আমাদের ছোট্ট শহরের তিনজন কবি সাহিত্যিক আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন অজানার ওই পারে । সদ্য প্রয়াত ওইসব কবি সাহিত্যিকের শোক এখনও আমাদের চোখে হৃদয়ে রক্ত ঝরায় । কবি নিরঞ্জন দাস , কবি সাহিত্যিক সুনীতি দেবনাথ এবং কবি প্রাবন্ধিক ও সাং...