Skip to main content

Posts

Showing posts from August, 2025

নিবেদিত সাহিত্যচর্চার গর্বিত পুনরাবলোকন - ‘নির্বাচিত ঋতুপর্ণ’

সাধারণ অর্থে বা বলা যায় প্রচলিত অর্থে একটি সম্পাদনা গ্রন্থের মানে হচ্ছে মূলত অপ্রকাশিত লেখা একত্রিত করে তার ভুল শুদ্ধ বিচার করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সম্পাদনার পর গ্রন্থিত করা । যেমনটি করা হয় পত্রপত্রিকার ক্ষেত্রে । অপরদিকে সংকলন গ্রন্থের অর্থ হচ্ছে শুধুই ইতিপূর্বে প্রকাশিত লেখাসমূহ এক বা একাধিক পরিসর থেকে এনে হুবহু ( শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংশোধনসাপেক্ষে ) একত্রীকরণ । সেই হিসেবে আলোচ্য গ্রন্থটি হয়তো সম্পাদনা গ্রন্থ নয় , একটি সংকলন গ্রন্থ । বিস্তারিত জানতে হলে যেতে হবে সম্পাদক ( সংকলক ) সত্যজিৎ নাথের বিস্তৃত ভূমিকায় । পুরো ভূমিকাটিই যদি লেখা যেতো তাহলে যথাযথ হতো যদিও পরিসর সে সায় দেয় না বলেই অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো এখানে - ‘ সালটা ১৯৯০ । ‘ দৈনিক সোনার কাছাড় ’- এ একবছর হল আসা - যাওয়া করছি । চাকরির বয়স হয়নি তাই চাকরি নয় , এই ‘ আসা - যাওয়া ’ । …. হঠাৎ করেই একদিন ভূত চাপল মাথায় - পত্রিকা বের করব । ‘… সেই শুরু । অক্টোবর ১৯৯০ সালে শারদ সংখ্যা দিয়ে পথচলা শুরু হল ‘ঋতুপর্ণ’র। পরপর দুমাস বের করার পর সেটা হয়ে গেল ত্রৈমাসিক। পুরো পাঁচশো কপি ছাপাতাম ‘মৈত্রী প্রকাশনী’ থেকে।...

ধারাবাহিক উত্তরণের ফসল - তৃতীয় সংখ্যা ‘সম্পর্ক’

বাংলা সাহিত্য সভা , লংকা শাখা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হয় বার্ষিক মুখপত্র ‘ সম্পর্ক ’ । প্রকাশিত হয় মূলত বিশ্ব বই দিবসের দিন যদিও এবারের এই তৃতীয় বার্ষিক মুখপত্র তথা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে খানিকটা পিছিয়ে রথযাত্রার শুভদিনে । আগের দুটি সংখ্যার মতোই এবারেও সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন খেয়ালি লেখক মনোজকান্তি ধর । ১ / ৪ ক্রাউন সাইজে ৬০ পৃষ্ঠার এই সংখ্যায় সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের বাইরেও রয়েছে স্পষ্ট বিভাগবিন্যাসযুক্ত একগুচ্ছ লেখালেখির সম্ভার । এবং তা ক্রমান্বয়ে বিন্যস্ত রয়েছে বিভাগ অনুযায়ী । প্রথম পৃষ্ঠার সম্পাদকীয়তে একে একে এসেছে বইবিষয়ক চিন্তাভাবনা , ভাষা বিলুপ্তির শঙ্কা এবং ‘ সম্পর্ক ’ সম্বন্ধিত কিছু তথ্যের খতিয়ান । পাঠকের অভাবের কথা বলতে গিয়ে লেখক লিখছেন - ‘… যারা বাস্তবিক অর্থে পাঠক , তারা বই পড়বেই । বইয়ের প্রতি মানুষের অন্তরের টান সেকালে যেমনটা ছিল আজও তেমনই রয়েছে … । ’ লিখছেন - ‘… আমরা চাই না পৃথিবীর একটি ভাষাও হারিয়ে যাক … । ’ এক ধনাত্মক বার্তা। রয়েছে এসব নিয়ে প্রকাশক গোষ্ঠীর কাজকর্মের খতিয়ানও । ‘সংবাদ’ বিভাগে রয়েছে দুটি রচনা। সুখপাঠ্য রম্য রচনার আঙ্গিকে সুব্রত দত্ত লিখেছেন ব...

দ্বৈত সম্পাদনায় মহৎ উদ্যোগ ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলা সাহিত্যচর্চা (খণ্ডিত) - একটি প্রবন্ধ সংকলন’

জ্যাকেট কভারের দুই ব্লার্বে রয়েছে দুই সম্পাদকের সচিত্র পরিচিতি। উত্তরপূর্বের সমকালিক বাংলা সাহিত্যচর্চার স্বরূপ উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে গবেষক, আলোচক ও সম্পাদক ড. বাপি চন্দ্র দাস ও নিত্যানন্দ দাস যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তারই ফলস্বরূপ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে যে আলোচ্য গ্রন্থটি তার শিরোনামেই বর্ণিত আছে সেই উদ্দেশ্য যদিও এই বিশাল সাহিত্যবিশ্ব থেকে তুলে আনা মোট আঠারোটি গ্রন্থ বা রচনার আলোচনামূলক নিবন্ধের মাধ্যমে এই লক্ষ্যের কত শতাংশ পূরণ করা যায় সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে নিশ্চিতভাবেই। তবু স্বস্তির বিষয় এই যে অন্তত মূল্যায়ন বা বহিরাঞ্চলে পরিচিতির এক মহৎ উদ্যোগ তো হাতে নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগও যে প্রথম তাও নয়। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ক আলোচনা বা বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধনিবন্ধ তথা সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। তবু এটাও সত্য এ নিয়ে যত কাজ হবে সবই আখেরে ফলদায়ক তথা আবশ্যক। উত্তরপূর্বের কবি-সাহিত্যিকদের সত্যিকারের মূল্যায়ন যে আজও বৃহত্তর সাহিত্যভুবনে যথাযথ মর্যাদায় হয়নি তাতে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। এমন একটি সংকলন গ্রন্থ প্রকাশ করা সহজ কথা নয় মোটেও। কারণ এর মাধ্যমে স্থান ও কালভিত্তিক সাহিত্যচর্চার এক ঐতিহাসিক মূল্যায়ন আবি...

সুপাঠ্য প্রবন্ধ সংকলন ‘দিগ্‌দিগন্ত’

সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রটিতে প্রবন্ধ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। এ নিয়ে এক ধরনের বিতর্ক বা বলা ভালো রসিকতাও প্রচলিত আছে সাহিত্যসমাজে যে- গল্প, কবিতা, উপন্যাস কিংবা নাটক ইত্যাদির রচনায় যে সৃষ্টিশীলতার প্রয়োজন - প্রবন্ধের ক্ষেত্রে তা নেই। প্রবন্ধ হচ্ছে ইতিপূর্বে বিদ্যমান তথ্যাদির আহরণ ও উপস্থাপন। কথাটি আসলে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং এর বিপরীত বলা হলেও আপত্তির কিছু নেই। প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে তথ্যাদি আহরণের বাইরেও রয়েছে তার যথোপযুক্ত উপস্থাপন বা প্রতিস্থাপন যেখানে সৃষ্টিশীল বয়ানে সজ্জিত ও পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার দায় রয়েছে একশভাগ। সেই দায় যথাযথ পালনের মাধ্যমেই এক একটি প্রবন্ধ হয়ে ওঠে সাহিত্যের অঙ্গনে এক একটি মূল্যবান দলিল। তাই কবি, গল্পকারদের পাশাপাশি একজন প্রাবন্ধিকও যে সাহিত্যক্ষেত্রে সমমানবিশিষ্ট স্রষ্টা এতে কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। প্রবন্ধ রচনার এই কলাকৌশল ও শৈলীর এক যথাযথ নিদর্শন অনুধাবন করা গেল উত্তরপূর্বের বরাক উপত্যকার হাইলাকান্দি থেকে প্রকাশিত প্রাবন্ধিক মানিক চক্রবর্তীর প্রবন্ধ সংকলন ‘দিগ্‌দিগন্ত’তে। ১৫৬ পৃষ্ঠার পেপারব্যাকে ১৪৪ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে মোট ...

গদ্যে পদ্যে নিবেদিত জ্যোতির্ময় রায় স্মৃতিচারণ সংখ্যা ‘সীমান্তরশ্মি-১০’

‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে…।’ মৃত্যু জীবনেরই এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জীবনের শেষ ঘটনা। সমাপন না থাকলে কি আর যাপন পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয় ? তাই মৃত্যু এক অনিবার্য প্রক্রিয়া। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে অজস্র মানুষ এই পৃথিবীর মায়া কাটিতে পাড়ি দিচ্ছেন পরলোকে। কতজন আর সবার হৃদয়ে থেকে যান চিরতরে ? কিন্তু গৌরবে, বৈভবে যে ক’জন মানুষ থেকে যান তার মধ্যে সদ্যপ্রয়াত জ্যোতির্ময় রায় অন্যতম। জন্মসূত্রে বরাকের সন্তান হলেও কর্মসূত্রে এবং স্বভাবতই বসতিসূত্রে তিনি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরার বাসিন্দা ছিলেন। উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরের ‘ছন্দনীড়’ ভবনের বাসিন্দা এবং সমৃদ্ধ ছোটপত্রিকা ‘প্রজন্ম চত্বর’-এর সম্পাদক জ্যোতর্ময় সত্যিকার অর্থেই ছিলেন জ্যোতির্ময়। ব্যক্তিগত জীবনে উচ্চশিক্ষিত তিনি সাহিত্য সংস্কৃতির জগতে এক ছাপ রেখে যেতে পেরেছেন স্বকীয়তায়, উৎকর্ষে। তাঁর অসাধারণ প্রজ্ঞা ও বাগ্মিতা সর্বজনপ্রিয় ছিল। সমধুর কণ্ঠে সুচয়িত বিষয়ের উপর তাঁর ভাষণ যাঁরা শুনেছেন - কোনোদিনই ভুলবেন না। আচার ব্যবহারে, আন্তরিকতায়, গল্পগুজবে সিদ্ধহস্ত নিপাট ভদ্রলোক এই মানুষটির প্রয়াণে স্বভাবতই মুহ্যমান সাহিত্য সংস্কৃতির জগৎ। তাঁরই স্মৃতিত...

সৌকর্য ও উৎকর্ষের সমাহার ‘কবিতাসংগ্রহ -১’

কোনও একজন মানুষের নয় শুধু, বয়স বাড়ছে পৃথিবীরও। স্বভাবতই পরিবর্তনশীল এই পৃথিবীতে থাকা জীবন ও জীবনধারণের শৈলীও বদলে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এই নিত্য নতুন পরিবর্তনই আজ একরকম নেশা হয়ে পড়েছে মানুষ নামের প্রাণীটির। বদলে যাচ্ছে চলনবলন, বদলে যাচ্ছে মানবিকতা, তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে অনুষঙ্গের প্যাটার্নও। সুতরাং সাহিত্য সংস্কৃতির প্যাটার্নও যে বদলাবে তাতে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। সে যুগধর্মের সূত্র ধরেই কবিতার রূপ পরিবর্তন আমাদের চোখের সামনে প্রোজ্জ্বল। বিদেশি কিংবা ভারতীয় অন্যান্য ভাষার কথা বাদ দিয়ে বাংলা কবিতার এই ক্রমপরিবর্তনশীল ধারার সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। বোধগম্যতার বিতর্কিত বিষয়টি বাদ দিয়েই বলা যায় কবিতার শৈলী কিংবা ধারা আজ বহুনুখী। বহুধাবিচিত্র। সাহিত্যের মূল নির্ণায়ক অনুষঙ্গ পাঠকের কাছে কবিতার গ্রহণযোগ্যতাও তেমনি বহুধাবিভক্ত। সুতরাং একটি কবিতা ভালো নাকি খারাপ, বিচারের সেই রায়ও সমভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকেনি আর। সেক্ষেত্রে একজন কবির কাছে কোনও এক বিশেষ ধারায় নিজেকে ব্যতিব্যস্ত রাখার দিনও আর নেই। তবু প্রত্যেক কবির স্বত:স্ফুর্ত একরৈখিকতা এক অনিবার্য বৈশিষ্ট্য হওয়া সত্ত্বেও বহুরৈখিক সৃষ্টি ...

তথ্যে, নান্দনিকতায়, বিনম্র স্মৃতিচারণে উজ্জ্বল ‘আলোহাওয়া ১৮তম সংখ্যা’

একটি পত্রিকা যদি সমাজের দর্পণ হয় তাহলে একটি লিটল ম্যাগাজিন বা ছোটপত্রিকা হল সমকালিক সাহিত্যের দর্পণ। এই ভাবধারাকে আক্ষরিক অর্থেই প্রাঞ্জল সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে বরাক উপত্যকার হাইলাকান্দি শহর থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘সাহিত্য শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক’ পত্রিকা ‘আলোহাওয়া’র ১৮তম সংখ্যা - ২৪তম বর্ষ, বইমেলা, পৌষ ১৪৩১ - ডিসেম্বর ২০২৪ সংখ্যা। নানারকম বাধ্যবাধকতায় পাঠকের দরবারে পৌঁছোতে যদিও মাসতিনেক বিলম্ব হয়েছে তবু বলা যায় এমন নান্দনিক একটি সংখ্যা দেরিতে হলেও আখেরে ‘সবুরে মেওয়া ফলে’ পাঠকের। কবি জিতেন্দ্র নাথ সম্পাদিত এই সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘অপরাজিত বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য স্মরণ সংখ্যা’ হিসেবে। প্রয়াত বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য এ অঞ্চলের সাহিত্যক্ষেত্রে যে অবদান রেখে গেছেন তা চিরস্মরণীয়। বলতে গেলে ‘সাহিত্য’ শব্দটির স্বরূপ উদ্ঘাটন করেছেন তিনি অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও নিবেদনের মাধ্যমে। তাঁর দেখানো পথে একদিকে যেমন ঋদ্ধ হয়েছে সাহিত্যের ভাণ্ডার অন্যদিকে পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছেন একাধিক কৃতী কবি, সাহিত্যিক। চূড়ান্ত দক্ষতায় পত্রিকাটিকে বৈভব প্রদান করেছেন সম্পাদক তাঁর সবটুকু প্রচেষ্টা উজাড় করে দিয়ে। সম্পাদকীয়ত...