Skip to main content

বৃষ্টিস্নাত

 

বৃষ্টিস্নাত

কেমন আছ হাসনুহানা
?
নীল সাগরের সাহস দেখেছ, আকাশ জুড়ে ?
ঝরতে দাওনা অবিশ্রান্ত
তোমার তো নেই হাসতে মানা
 
মেঘে মল্লারে মন খারাপের
দিন জোড়া আজ মুহুর্মুহু কতই ঘটা ঘনঘটায়-
তুমিই বা কম কীসে যাও
বাজুক তান আজ সুর বাহারের
 
পৃথিবী আজ পালটে গেছে
আকাশ তলায়, সাগর ঝরে অঝোর ধারায়
তোমার স্থিতি পথের ধারে
মুক্তোঝরা অরূপ হাসি একই আছে
 
ওই ধারাতে আনচান মন
কাজলা কালো হরিণ চোখের ইতিউতি
চাউনি তোমার চকিত চপল
পরখ তোমায়, রিক্ত আমি অগুণতি ক্ষণ
 
খেত খামারে ধারায় ঝরে মুক্তোদানা
ভরাট যত ফুটিফাটা, আঁকাবাঁকা কৃষ্ণবিবর
সাকিন তোমার নতুন সাজে
সাজবে মুক্তো হার না মানা
 
জঙ্ঘা বেয়ে নামবে ধীরে পাগল পারা
গর্ভধারণ উল্লাসে আজ মত্ত নদীর শান্ত জঠর
পারে পারে তোমারও তো অগুণতি সব
নতুন ছবি, চিত্রকরের পট যে ভরা
  
উচ্ছল মীন, চাতক মেটায় তৃষ্ণা আপন
ময়না, শালিক, মাছরাঙা আজ মন্দ্রবিভোর
তোমার বাহার সামলে রেখো
রঙবাহারের পত্রে আমার দিন যে যাপন
 
ঘোমটা তলে উদাস নয়ন তাকিয়ে থাকে
ঝিরঝির ওই শব্দনিনাদ বাজায় বুকে বিষাদবীণা
ফুৎকারে আজ দাও উড়িয়ে
বিলিয়ে দিয়ে রঙমশালের ছন্দটাকে
 
পিয়াসী পাতায় ছলকে পড়া শান্তিধারা
সিঞ্চিত ধরিত্রীর একবুক বুভুক্ষা
জীবন ধারণ রসদ তোমার প্রোথিতমূলে
অঙ্গে অঙ্গে তোমার বাহার পাগলপারা
 
তপ্ত ধরার অবগাহন সুখের তান
রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুরবাহারের বিরামহীন কোরাস সুর
উন্নত শির, তোমার লক্ষ্য নবীন জনম
তুমিতো গাও প্রজন্মেরই আগাম গান
 
জীবন যেথায় অবিন্যস্ত খেই হারিয়ে
বিরামবিহীন বুকের মোচড় দুচোখ বেয়ে অবিশ্রান্ত
তোমার তখন হাসনুহানা জলসা সভায়
দিবস রাত্র গড়ায় সোহাগ সুতনুকার অঙ্গ বেয়ে 

         ------------------ 

Comments

Popular posts from this blog

শেকড়ের টানে নান্দনিক স্মরণিকা - ‘পরিযায়ী’

রামকৃষ্ণনগর । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবহে বরাক উপত্যকার এক ঐতিহ্যময় শহর । বিশেষ করে শিক্ষাদীক্ষার ক্ষেত্রে চিরদিনই এক অগ্রণী স্থান হিসেবে উচ্চারিত হয়ে আসছে এই নাম । বৃহত্তর রামকৃষ্ণনগরের গোড়াপত্তনের ইতিহাস বহুদিনের । দেশভাগের আগে ও পরে , উত্তাল সময়ে স্থানচ্যূত হয়ে এখানে থিতু হতে চাওয়া মানুষের অসীম ত্যাগ ও কষ্টের ফলস্বরূপ গড়ে ওঠে এক বিশাল বাসযোগ্য অঞ্চল । শুধু রুটি , কাপড় ও ঘরের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রই নয় , এর বাইরে শিক্ষা অর্জনের ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মমনশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেইসব মহামানবেরা । ফলস্বরূপ এক শিক্ষিত সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যদিও উচ্চশিক্ষার জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে বেরোতে হয়েছিল নিজ বাসস্থান ছেড়ে । শিলচর তখন এ অঞ্চলের প্রধান শহর হওয়ায় স্বভাবতই শিক্ষা ও উপার্জনের স্থান হিসেবে পরিগণিত হয় । এবং স্বভাবতই রামকৃষ্ণনগর ছেড়ে এক বৃহৎ অংশের মানুষ এসে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন এই শিলচরে । এই ধারা আজও চলছে সমানে । শিলচরে এসেও শেকড়ের টানে পরস্পরের সাথে যুক্ত থেকে রামকৃষ্ণনগর মূলের লোকজনেরা নিজেদের মধ্যে গড়ে তোলেন এক সৌহার্দমূলক বাতাবরণ । এবং সেই সূত্রেই ২০০০ সালে গঠিত হয় ‘ ...

নিবেদিত সাহিত্যচর্চার গর্বিত পুনরাবলোকন - ‘নির্বাচিত ঋতুপর্ণ’

সাধারণ অর্থে বা বলা যায় প্রচলিত অর্থে একটি সম্পাদনা গ্রন্থের মানে হচ্ছে মূলত অপ্রকাশিত লেখা একত্রিত করে তার ভুল শুদ্ধ বিচার করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সম্পাদনার পর গ্রন্থিত করা । যেমনটি করা হয় পত্রপত্রিকার ক্ষেত্রে । অপরদিকে সংকলন গ্রন্থের অর্থ হচ্ছে শুধুই ইতিপূর্বে প্রকাশিত লেখাসমূহ এক বা একাধিক পরিসর থেকে এনে হুবহু ( শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংশোধনসাপেক্ষে ) একত্রীকরণ । সেই হিসেবে আলোচ্য গ্রন্থটি হয়তো সম্পাদনা গ্রন্থ নয় , একটি সংকলন গ্রন্থ । বিস্তারিত জানতে হলে যেতে হবে সম্পাদক ( সংকলক ) সত্যজিৎ নাথের বিস্তৃত ভূমিকায় । পুরো ভূমিকাটিই যদি লেখা যেতো তাহলে যথাযথ হতো যদিও পরিসর সে সায় দেয় না বলেই অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো এখানে - ‘ সালটা ১৯৯০ । ‘ দৈনিক সোনার কাছাড় ’- এ একবছর হল আসা - যাওয়া করছি । চাকরির বয়স হয়নি তাই চাকরি নয় , এই ‘ আসা - যাওয়া ’ । …. হঠাৎ করেই একদিন ভূত চাপল মাথায় - পত্রিকা বের করব । ‘… সেই শুরু । অক্টোবর ১৯৯০ সালে শারদ সংখ্যা দিয়ে পথচলা শুরু হল ‘ঋতুপর্ণ’র। পরপর দুমাস বের করার পর সেটা হয়ে গেল ত্রৈমাসিক। পুরো পাঁচশো কপি ছাপাতাম ‘মৈত্রী প্রকাশনী’ থেকে।...

মহানিষ্ক্ৰমণ

প্রায় চল্লিশ বছর আগে গ্রামের সেই মায়াময় বাড়িটি ছেড়ে আসতে বেজায় কষ্ট পেয়েছিলেন মা ও বাবা। স্পষ্ট মনে আছে অর্ঘ্যর, এক অব্যক্ত অসহায় বেদনার ছাপ ছিল তাঁদের চোখেমুখে। চোখের কোণে টলটল করছিল অশ্রু হয়ে জমে থাকা যাবতীয় সুখ দুঃখের ইতিকথা। জীবনে চলার পথে গড়ে নিতে হয় অনেক কিছু, আবার ছেড়েও যেতে হয় একদিন। এই কঠোর বাস্তব সেদিন প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করতে পেরেছিল অর্ঘ্যও। সিক্ত হয়ে উঠছিল তার চোখও। জন্ম থেকে এখানেই যে তার বেড়ে ওঠা। খেলাধুলা, পড়াশোনা সব তো এখানেই। দাদাদের বাইরে চলে যাওয়ার পর বারান্দাসংলগ্ন বাঁশের বেড়াযুক্ত কোঠাটিও একদিন তার একান্ত ব্যক্তিগত কক্ষ হয়ে উঠেছিল। শেষ কৈশোরে এই কোঠাতে বসেই তার শরীরচর্চা আর দেহজুড়ে বেড়ে-ওঠা লক্ষণের অবাক পর্যবেক্ষণ। আবার এখানে বসেই নিমগ্ন পড়াশোনার ফসল ম্যাট্রিকে এক চোখধাঁধানো ফলাফল। এরপর একদিন পড়াশোনার পাট চুকিয়ে উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে দাদাদের মতোই বাইরে বেরিয়ে যায় অর্ঘ্য, স্বাভাবিক নিয়মে। ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে যায় দিদিরও। সন্তানরা যখন বড় হয়ে বাইরে চলে যায় ততদিনে বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা মায়ের পক্ষে আর ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বহু জল্পনা কল্পনার শেষে ত...