নতুন মোনালিসা
ব্যালকনিতে সদ্য প্রোথিত বনসাই।
তালে তালে পায়ে মিলিয়ে পা
ডাগর হতে চায় অঘোরবাসীর কন্যা।
অঘোরবাসী দিনের বেলা গতর খাটে
রাতে জমে যায় কীর্তনের আসরে।
কীর্তন এখনো চলছে রমরমিয়ে
কীর্তনীয়া লুপ্তপ্রায়।
অঘোরবাসীর তাই নামডাক খুব,
শ্রাদ্ধবাসরে অপরিহার্য অঘোরবাসী।
দেখলে আমার রাগ হয় ওর বাবার উপর
কেন যে এত কঠিন নামটা রেখেছে ওর।
###
এখন দিনের বেলা বেকার অঘোরবাসী
রাতের বেলা কীর্তনও আর হয় না।
কীর্তনে পালিয়ে যেত প্রেতাত্মা
তুষ্ট হতেন দেবতা।
ধুরন্ধর ভাইরাস আজ কীর্তন মানে না
বেকার অঘোরবাসী তাই আধপেটা খেয়ে
সাইকেল চড়ে ফলমূল ফেরি করে।
ডাগর মেয়েটি নুইয়ে পড়া লতার মতো
প্রাণপণে সামলে রাখে নিজেকে।
###
আজ বহুদিন পর সে পথ দিয়ে যেতে
কানে এল - অঘোরবাসীর গান,
"ভিখারি বানিয়ে কী রঙ্গ তুমি করিলে" ?
দোহার লাগায় অঘোরবাসীর মেয়ে -
কী রঙ্গ তুমি করিলে - - - - ।
আমি চমকে গিয়ে থমকে দাঁড়াই খানিক,
হাতড়ে আমার সম্বল, বাড়াই আমার হাত
করযোড়ে কৃতজ্ঞতায় জীর্ণ অঘোরবাসী
গান থামিয়ে চোখের জলে ভেসে
বলে - দাদা বাঁচান মেয়েটিকে।
কাজকর্ম অনেকটাই ও জানে,
আমার কিছু চাই না, শুধু -
দু'বেলা খাবার বিনিময়ে
রাখুন ওকে নিজের ঘরে নিয়ে।
কাতর চোখে তাকায় মেয়ে আমার পানে
খাওয়ার কথা শুনে -
ঠোঁটের কোণে ছলকে বেরোয়
এক চিলতে মুচকি হাসির ছোঁয়া।
আমার চোখে শুধুই যে এক -
স্বর্গ ফেরত অপাপবিদ্ধা নতুন মোনালিসা।
Comments
Post a Comment