আজ সকাল সকালই তিনি এলেন। নিজেই এগিয়ে গিয়ে তাঁকে নিয়ে এলাম। প্রতি বছরই তিনি আসেন। বছরে একদিন। ধরাবাঁধা নিয়ম। তিন দিন থাকবেন নিয়ম করে। যে কয়দিন থাকেন - সারা ঘরে কেমন একটা মিঠে আমেজ লেগেই থাকে।
বয়স হয়েছে। আগে রঙিন কাপড় জামা পরতেন। এখন সাদা কাপড়। আগে শক্ত সমর্থ টানটান শরীর ছিল। তর্জনীর চাটিতে টং করে শব্দ হতো। টিপে টিপেও গায়ের চামড়া ঢোকানো যেতো না। এখন বয়সের ভারে থলথলে হয়ে গেছে চামড়া। আঙুলের আঘাতে ভেট ভেট শব্দ হয়। টিপে দিলে ভেতরে ঢুকে যায় বহিরঙ্গ। তবুও নিয়ম করে আসেন। বলেছেন - আপনি যত দিন থাকবেন, আমি আসবো।
সব ঠিক আছে। কিন্তু মূল কথা হলো আমি এভাবে প্রতি বছর নিয়ম করে আজকের দিনে তাঁর আসাটা পছন্দ করি না। এমনিতে অন্যদিন আসলে আসুন। কিন্তু আজ নয়।
কিন্তু সব কিছু তো আর আমাদের ইচ্ছায় অর্থাৎ কর্তার ইচ্ছায় হয় না। কিছু কিছু কর্ম কর্ত্রীর ইচ্ছায়ও হয়। গত বাইশ বছর ধরে আন্দোলন করেও নড়াতে পারিনি। নরম গরম সব ঔষধই সেরেছি প্রয়োগ করে। কিন্তু পারিনি। তবুও হার মানিনি এখনো। কিন্তু কী করবো ? এখন তো মেয়েটাও আজকের দিন এলে আমার তর্জন গর্জন শুনে মুখ টিপে হাসে আর ওর মা'কে বলে- 'মা, বাবার শুরু হলো আবার।'
যুদ্ধে প্রতি বার হারি। একাধিক বার প্রায় জিততে জিততে শেষে ব্রহ্মাস্ত্রে (চোখের জলে) বাধ্য হয়ে হেরেছি। তাই নিজেই এগিয়ে গিয়ে তাঁকে আনতে হয় - দুলাল বাবুকে।
এবার তো সঙ্গে আরেক চমক। এক্কেবারে ডাবল ধমাকা। দুলাল বাবুর সঙ্গে তাঁর সহধর্মিণী দুলাও এসে উপস্থিত। আমি তো প্রথমে চিনতেই পারিনি। পরে দেখি - ও মা, কী সুন্দর !! যেমন দেখতে তেমনিই তো নামের কী মিল !!
তো নিন, এসেই গেছেন যখন তখন থাকুন তিন দিন। সামনের বছর এই দিনটি ছেড়ে অন্য দিন আসবেন। কেমন ?
এবারের জন্য - জয় মা সাবিত্রী।
Comments
Post a Comment